ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির প্রতি ১০ জন নারীর মধ্যে নয়জনই মনে করেন
দিল্লিতে তাঁরা নিরাপদ নন। এর মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ নারীরই রয়েছে শহরের
রাস্তাঘাটে চলাফেরার সময় অসদাচরণের শিকার হওয়ার অভিজ্ঞতা।
দিল্লিতে নারীদের কর্মজীবন ও ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে টাইমস অব ইন্ডিয়ার
পরিচালিত একটি জরিপের ফলাফলে এসব তথ্য উঠে এসেছে। আজ শুক্রবার পত্রিকাটির
অনলাইন সংস্করণে এ-বিষয়ক একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, একসময় নিরাপত্তার কথা ভেবে বলা হতো, ‘দিল্লি ফর ওমেন’।
আর সেই দিল্লিই আজ ভারতে নারীদের জন্য সবচেয়ে অনিরাপদ রাজ্যগুলোর মধ্যে
একটি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, দিল্লিতে নারীদের দুই-তৃতীয়াংশই বিভিন্ন দপ্তরে কাজ করে
থাকেন। কিন্তু সেখানে যৌন হয়রানি মোকাবিলার জন্য কোনো নিয়মকানুন নেই। আর
নারীদের প্রায় অর্ধেকই মনে করেন, বাবার সম্পত্তি ভাগের সময় তাঁদের সঙ্গে
বৈষম্য করা হয়।
জরিপের ফলাফলে দেখা গেছে, বাড়িতে বা কর্মস্থলে কিছু কিছু জিনিস পরিবর্তন
করা হলেও দিল্লি শহরে চলাফেরা ও জীবনধারণকে এখনো চ্যালেঞ্জ হিসেবেই দেখছেন
নারীরা। জরিপটি দিল্লির প্রধান প্রধান শহর ও উপশহরে বিভিন্ন বয়সী নারীদের
ওপর চালানো হয়।
জরিপের একটি গ্রাফচিত্রে দেখানো হয়েছে, দিল্লির ৯৪ শতাংশ নারী দিল্লিকে
অনিরাপদ বা মারাত্মক অনিরাপদ মনে করেন। ৯৬ শতাংশ নারী সূর্যাস্তের পর
নিজেদের নিরাপদ মনে করেন না। ৬৩ শতাংশ নারীই জানান, তাঁদের কর্মস্থলে যৌন
হয়রানি মোকাবিলায় নিজস্ব কোনো নিয়মনীতি নেই।
জরিপে দিল্লিতে নারীর চলাফেরা, কর্মস্থল, বাড়ি অথবা অবসর সময়ে কীভাবে
বিভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি হন, তা পর্যালোচনা করা হয়। পত্রিকাটি আশা করে এসব
সমস্যার সমাধানের উপায় খুঁজতে প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে এই জরিপটি কাজ করবে।
সম্প্রতি নয়াদিল্লিতে বাসে গণধর্ষণের শিকার হয়ে মেডিকেলের এক ছাত্রীর
মৃত্যু হয়েছে। এর প্রতিবাদে দিল্লিসহ পুরো ভারতে নারী-পুরুষ সবাই বিক্ষোভে
ফেটে পড়ে। এরপর সরকার নারী নির্যাতন প্রতিরোধে নতুন আইন প্রণয়ন করতে বাধ্য
হয়।