রিকশার নান্দনিক সৌন্দর্যে আমরা অনেকেই মুগ্ধ হই। তবে যাঁরা এই
দ্বিচক্রযানটি চালান, সৌন্দর্য থেকে পেটের দায় তাঁদের কাছে মুখ্য বিষয়।
রিকশা, রিকশাচালকদের জন্য কিছু একটা করতে হবে। এই চিন্তা থেকে নগরে হবে
রিকশা রেসসহ অন্যান্য আয়োজন।
গতকাল রোববার ‘ঢাকা রিকশা ফেস্টা উইক ২০১৩’ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে
রিকশা নিয়ে এভাবেই নিজের স্বপ্নের কথা জানালেন ঢাকা রিকশা উদ্যোক্তা
সেসিলিয়া আমি কিতাজিমা। সেসিলিয়ার জন্ম আর্জেন্টিনায়। তবে তাঁর বাবা ও মা
দুজনই জাপানের নাগরিক। সেসিলিয়া একজন চলচ্চিত্র পরিচালক। আর এ উৎসবে
সার্বিক সহযোগিতায় আছে বাংলাদেশের উন্নয়নে জাপানের সহযোগী প্রতিষ্ঠান জাইকা
এবং জেওসিভি। এই প্রতিষ্ঠান দুটি বাংলাদেশে কাজ করার অভিজ্ঞতার ৪০তম
বার্ষিকী পালন উপলক্ষে রিকশা উৎসবে সহায়তা করছে।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে জাইকা বাংলাদেশের
প্রধান তাকাও তোদা বলেন, এ ধরনের উৎসবের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ ও জাপানের
মধ্যে মৈত্রীর বন্ধন আরও দৃঢ় হবে। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের গ্রামীণ এলাকায়
রোগীদের হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়া থেকে শুরু করে রাজধানীতে রিকশা বর্তমানে
যানবাহনের তালিকায় একেবারেই অপরিহার্য। অন্যদিকে বাংলাদেশের রিকশাচালকেরা এ
কাজ করতে গিয়ে কতটুকু কষ্ট স্বীকার করছেন, সে বোধটুকু জাপানের তরুণদের
উৎসাহিত করবে।’
সপ্তাহব্যাপী উৎসবে ১৩ থেকে ১৯ মার্চ পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা
গ্যালারিতে অনুষ্ঠিত হবে রিকশা আর্ট প্রদর্শনী। এটি হবে বেলা ১১টা থেকে
রাত আটটা পর্যন্ত। ১৫ মার্চ সকাল নয়টায় জাতীয় সংসদের সামনে থেকে শুরু করে
পুরান ঢাকা হয়ে আবার জাতীয় সংসদ পর্যন্ত রিকশা রেস অনুষ্ঠিত হবে। এ
প্রতিযোগিতায় ২১টি রিকশা এবং ৮৪ জন রিকশাচালক অংশ নেবেন। প্রথম বিজয়ী পাবেন
এক লাখ টাকা। অন্য বিজয়ীরাও পর্যায়ক্রমে পুরস্কার পাবেন। আর প্রতিযোগিতায়
অংশগ্রহণকারী সব রিকশাচালকই দুই হাজার করে টাকা পাবেন।
সংবাদ সম্মেলনে ছিলেন পুরান ঢাকার আগামাসি লেনের রিকশাচালক আপেল।
মানিকগঞ্জে তাঁর বাড়ি। রাজধানীতে রিকশা চালাচ্ছেন ১৪ থেকে ১৫ বছর ধরে। তিনি
রিকশা রেসের একজন প্রতিযোগী। প্রথম আলোর এক প্রশ্নের উত্তরে আপেল জানালেন,
প্রতিযোগিতায় প্রথম হতে পারলে পুরস্কারের এক লাখ টাকা দিয়ে বর্তমানের
কষ্টকর পেশার পরিবর্তন ঘটাবেন।
গতকাল সংবাদ সম্মেলনে এ উৎসবের উপদেষ্টা শাহ খালেদ রেজা বলেন, যাঁরা বড়
অঙ্কের টাকার পুরস্কার পাবেন, তাঁরা পরবর্তী সময়ে এ কষ্টকর পেশা পরিবর্তন
করে অন্য পেশা যাতে বেছে নিতে পারেন, এটিও এ উৎসবের একটি লক্ষ্য।