Showing posts with label খেলা. Show all posts
Showing posts with label খেলা. Show all posts

Friday, May 17, 2013

আজীবন নিষেধাজ্ঞার পক্ষে গাঙ্গুলী

দোষী সাব্যস্ত হলে স্পট ফিক্সিংয়ের দায়ে আটক হওয়া তিন ক্রিকেটারের আজীবন নিষেধাজ্ঞার পক্ষে বললেন ভারতের সাবেক অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলী। বুধবার মধ্যরাতে মুম্বাই থেকে গ্রেফতার করা হয় রাজস্থান রয়্যালসের শ্রীশান্ত, অজিত চান্দিলা ও অঙ্কিত চৌহানকে।

স্পট ফিক্সিংয়ের এই ঘটনা আইপিএলকে সঙ্কটের মধ্যে ফেলবে মনে করেন গাঙ্গুলী। পুনে ওয়ারিয়র্স ও কলকাতা নাইট রাইডার্সের সাবেক এই তারকা ক্ষোভ প্রকাশ করলেন,‘আমি হতাশ। যা ঘটেছে তার জন্য ক্রুদ্ধ। দোষ প্রমাণ হলে তাদের আজীবন নিষিদ্ধ করা উচিত।’

এই কাজে শ্রীশান্তের জড়িত থাকায় মর্মাহত ভারতের সাবেক অধিনায়ক,‘শ্রীশান্ত জড়িত থাকায় আমি চমকে গেছি। একজন প্রতিভাকে হারাল দেশের ক্রিকেট। রাহুল দ্রাবিড়ের জন্য আমি সত্যিই দুঃখিত।’

নিজ প্রদেশের কেউ এমন কাজে জড়িত নয় বলে স্বস্তি প্রকাশ করলেন ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অব বেঙ্গলের প্রেসিডেন্ট জগমোহন ডালমিয়া। বিসিসিআইর সাবেক প্রেসিডেন্ট বললেন,‘ভালো লাগছে, বাংলার কোনো ক্রিকেটার এর সঙ্গে জড়িত না। কিন্তু লজ্জার কথা হলো, এই ঘটনা ক্রিকেটে কালিমা ফেলল। চূড়ান্ত রিপোর্ট শেষে আমি এনিয়ে কথা বলব। এই বিপথগামীদের বিরুদ্ধে পুলিশ কঠিন পদক্ষেপ নিবে বলেই আমি জানি।’

বিরক্তিকর ইংলিশ ব্যাটিং

১৬০ রান করতে ৮০ ওভার লাগালো ইংল্যান্ড। লর্ডসে এমন ব্যাটিং সত্যিই বিরক্তিকর। একেবারে শম্ভুকের ন্যায় খোলসবন্দী হয়ে খেলেছে।

নিউজিল্যান্ড বোলারদের তোপ সামলাতে না পেরে স্লো ব্যাটিং কৌশল বেছে নেয় ইংলিশ শিবির। এরপরেও চার উইকেট তুলে নিয়েছে সফরকারী দল।

এলিস্টার কুক ৩২, নিক কম্পটন ১৬, জোনাথন ট্রট ৩৯ ও ইয়ান বেল ৩১ রানে সাজঘরে ফেরেন। দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান জো রুট ২৫ ও জনি বিয়ারস্ট্রো ৩ রান করেছেন।

নিউজিল্যান্ডের ট্রেন্ট বোল্ট দুটি, ওয়াগনার ও মার্টিন একটি করে উইকেট নেন।

Thursday, May 16, 2013

প্রায় সেরে উঠেছেন মাশরাফি

অনেকদিন পর হাসি-খুশি দেখাল মাশরাফি বিন মুর্তজাকে। বোঝাই যায় পায়ের গোড়ালির সেই ব্যথা কমে গেছে। পুরোপুরি না সারলেও ৯০ ভাগ সেরেছে। আর কিছুদিন বিশ্রাম করলে বাকি সমস্যাটুকু কাটিয়ে উঠবেন, চিকিৎসকরা তাই মনে করেন।

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)’র প্রধান চিকিৎসক দেবাশিস চৌধুরী জানালেন, অনেকদিন পর বুধবার মাশরাফিকে দেখেছেন তারা। ব্যথা এখন যে পর্যায়ে রয়েছে তাতে করে বিশেষ কোনো চিকিৎসার প্রয়োজন নেই। ব্যথা না কমলে ইনজেকশন দেওয়া হতো।

এই মুহূর্তে খেলা না থাকায় বোলিং করার প্রয়োজনও নেই। এছাড়া রানিংয়ে না থাকায় ফিটনেসও হারিয়েছেন নড়াইল এক্সপ্রেস।

স্পট ফিক্সিংয়ের অভিযোগে গ্রেফতার শ্রীশান্থ

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) স্পট ফিক্সিংয়ের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে ভারতীয় জাতীয় দলের সাবেক পেসার ও রাজস্থান রয়্যালসের ক্রিকেটার শ্রীশান্থকে।

ভারতে চলছে আইপিএল ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ষষ্ঠ আসর। টুর্নামেন্ট চলা অবস্থায় রাজস্থান রয়্যালসের পেসার শ্রীশান্থ ছাড়াও দলের অঙ্কিত চৌহান ও অজিত চাণ্ডিলিয়া নামে আরও দু’জন গ্রেফতার হয়েছেন।

সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্র জানিয়েছে, তিনজনকেই দিল্লি পুলিশের স্পেশাল টিম গ্রেফতার করেছে। স্থানীয় পুলিশের সহায়তায় বুধবার গভীর রাতে মুম্বইয়ের ট্রাইডেন্ট হোটেল থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

বৃহস্পতিবার সকালে তাদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে দিল্লি। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ৪২০ ও ১২০ বি ধারায় মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। দিল্লি থেকে গ্রেফতার হয়েছেন সাত জুয়াড়িও। আরও দুই জুয়াড়ির খোঁজে চলছে তল্লাশি।

চলতি আইপিএলে দুরন্ত ছন্দে থাকা রাজস্থান রয়্যালসের খেলায় ছন্দপতনের শঙ্কায় এখন অনেকে।

এক সময় ভারতের জাতীয় ক্রিকেট দলের সদস্য শ্রীশান্থের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ উঠলেও এ ধরনের অভিযোগ তার বিরুদ্ধে এবারই প্রথম। মুম্বাই ও মোহালিতে দু’টি ম্যাচে স্পট ফিক্সিং চালানোর অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে। জুয়াড়িদের ফোন আড়ি পেতেই পুলিশ এ ব্যাপারে নিশ্চিত হয়েছে বলে জানিয়েছে পিটিআই।

অন্যদিকে, রাজস্থান রয়্যালসের পক্ষে দলটির মালিকদের একজন বলিউড অভিনেত্রী শিল্পা শেঠী জানান, তারা কখনই এ ধরনের ঘটনা বরদাস্ত করবে না।

শিল্পা বলেন, “আমরা আশ্চর্য হয়েছি। ঘটনার তদন্তের বিষয়ে আমরা কর্তৃপক্ষকে পূর্ণ সহযোগিতা করতে চাই।”

দলের নৈপুণ্য ধরে রাখতে এ ধরনের ঘটনাকে মোটেও গ্রাহ্য করা হবে না বলেও জানান শিল্পা।

ভারতীয় জাতীয় দলের হয়ে ৫৩টি একদিনের ও ২৭টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছেন পেসার শ্রীশান্থ।

Tuesday, May 14, 2013

ইংল্যান্ডের বর্ষসেরা ক্রিকেটার প্রায়র

টেস্ট ক্রিকেটে সেরা উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যানের তালিকাতে রাখা যায় ইংল্যান্ড তারকা ম্যাট প্রায়রকে। প্রথম কোনো উইকেটরক্ষক হিসেবে বর্ষসেরা ইংলিশ ক্রিকেটার নির্বাচিত হয়ে তা আরও পাকাপোক্ত করলেন তিনি।

এ মৌসুমে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে হার এড়ানো অপরাজিত সেঞ্চুরি করেছেন প্রায়র, সাতটি টেস্ট ফিফটিও রয়েছে। ইংল্যান্ড অধিনায়ক অ্যালিস্টার কুক ও জেমস এন্ডারসনকে টপকে সহজেই বর্ষসেরা হলেন এই ৩১ বছর বয়সী।

গত মার্চে হার না মানা ১১০ রানের ইনিংস খেলেন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। শেষ উইকেটে মন্টে পানেসারকে নিয়ে শেষ পাঁচ বল প্রতিরোধ গড়ে নিউজিল্যান্ডের কাছে সিরিজ হার থেকে দলকে রক্ষা করেন।

মঙ্গলবার লর্ডসে নিউজিল্যান্ডকে স্বাগত জানাচ্ছে ইংল্যান্ড। দলে জায়গাও পেয়েছেন এই বর্ষসেরা।

এদিন ইংল্যান্ডের নারী বর্ষসেরা ক্রিকেটার হয়েছেন বোলার ক্যাথেরিন ব্রান্ট। বিশ্বকাপে ১২ উইকেট নিয়ে তৃতীয়বারের মতো এ পুরস্কার জিতলেন তিনি।

নাজমুলের চিকিৎসা হবে তবে..

বোর্ড মিটিং বাতিল হয়ে গিয়েও শেষপর্যন্ত সেটা হলো। দ্রুত কয়েকটি সিদ্ধান্ত দিয়ে সভা মূলতবি করে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চলে গেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান। তড়িৎ নেওয়া সিদ্ধান্তগুলোর একটি চোটাক্রান্ত পেসার নাজমুল হোসেনকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাবে বিসিবি।

নাজমুলকে কবে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাবেন তা চূড়ান্ত হয়নি। তাকে কোথায় চিকিৎসার জন্য পাঠানো হবে সেটাও পুনরায় ঠিক করতে বলা হয়েছে বিসিবি মেডিক্যাল কমিটিকে। দুটো দেশ অস্ট্রেলিয়া এবং ভারত, যেকোনো একটিতে চিকিৎসা হবে নাজমুলের এটা নিশ্চিত।

অস্ট্রেলিয়ায় মাশরাফি বিন মুর্তজার চিকিৎসক ডেভিড ইয়াংয়ের কাছে নাজমুলকে পাঠানোর ব্যাপারে সুপারিশ ছিল বিসিবি মেডিক্যাল টিমের। কিন্তু বোর্ড হয়তো খরচ কমাতে নাজমুলকে ভারতে পাঠাতে আগ্রহী। সেজন্যই অস্ট্রেলিয়ার পাশাপাশি ভারতের কথাও উঠেছে বৈঠকে।

চিকিৎসা যেখানেই হোক, এনিয়ে আপত্তি নেই নাজমুলের। চিকিৎসার পর খেলতে পারলেই তিনি খুশি,‘ভারতে হলেও কোনো সমস্যা নেই। ওখানে ভালো চিকিৎসা হলেই ভালো। চিকিৎসা নিয়ে আমি যাতে খেলতে পারি সেটাই আসল।’

অস্ট্রেলিয়ার ভিসাও নিয়ে রেখেছেন নাজমুল। বিসিবি ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগ থেকেই ভিসা করিয়েছে। এখন হয়তো ভারতের ভিসা নিতে হবে জাতীয় দলের এই পেসারকে।

পেসার মাশরাফি বিন মুর্তজা, সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবালের চিকিৎসা হয়েছে অস্ট্রেলিয়া। রুবেল হোসেনের কাঁধে অস্ত্রোপচার হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকায়। নাসির হোসনে এবং শফিউল ইসলাম দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে চিকিৎসা নিয়ে দেশে ফিরবেন। আবুল হাসান রাজু একটি বিশেষ ক্লাবে খেলার সুবাদে জাতীয় দলের ক্রিকেটার না হয়েও অস্ট্রেলিয়ায় চিকিৎসার সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু নাজমুল জাতীয় দলে এত বছর খেলার পরও বোর্ডের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারেননি!
 
জাতীয় দলের এই পেসার শ্রীলঙ্কা সফরে নেটে বোলিং করার সময় বাঁ হাঁটুতে চোট পান। তরুনাস্থি এবং পারশিয়ার টিআর ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় তার হাঁটুতে অস্ত্রোপচার লাগবে বলে জানিয়েছেন, অস্ট্রেলিয়ান বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডেভিড ইয়াং।

সোনার মুদ্রায় শচীন

ক্রিকেট জগতের ‘লিটল মাস্টার’ শচীন টেনডুলকার এবার জায়গা পেলেন সোনার মুদ্রায়। মুদ্রার এক পাশে রয়েছে শচীনের মুখের প্রতিচ্ছবি ও অন্য পাশে তার স্বাক্ষর।
২৪ ক্যারেট সোনার মুদ্রা যে কেউ কিনতে পারবে। তবে আগ্রহী ব্যক্তিতে গাঁট থেকে খসাতে হবে ৩৪ হাজার রুপি।
হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের পবিত্র দিন ‘অক্ষয় তৃতীয়া’ উপলক্ষে সোমবার মুদ্রার মোড়ক উন্মোচন করেন শচীন নিজেই।
সীমিত সংখ্যক এসব সোনার মুদ্রা সরকারিভাবে তৈরি করা হয়নি। ভ্যালুমার্টগোল্ড নামের একটি জুয়েলারি কোম্পানির সঙ্গে চলতি বছর থেকে তিন বছরের জন্য ব্র্যান্ড দূত হিসেবে চুক্তি করেছেন শচীন। সেই চুক্তির আওতায় কোম্পানিটি তৈরি করেছে এসব মুদ্রা।
মুদ্রার মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে শচীন বলেন, “মাঠে আমার অনেক সোনালি মুহূর্ত রয়েছে। কিছু স্মৃতি খুবই চমৎকার কিন্তু এটি আসলেই ভিন্ন।”
অক্ষয় তৃতীয়ায় সবার মঙ্গল কামনা করে তিনি বলেন, “হিন্দুদের পঞ্জিকায় এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন।”
হিন্দুদের বিশ্বাস মতে, এই দিনে ভগবান বিষ্ণুর ষষ্ঠ অবতার হিসেবে জন্ম গ্রহণ করেন পরশুরাম। এদিনেই বেদ ব্যাস ও গণেশ মহাভারত রচনা শুরু করেন।

Sunday, May 12, 2013

স্বস্থির জয়ে জিম্বাবুয়ে সফর শেষ করলো টাইগাররা

দ্বিতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি জিতে জিম্বাবুয়ের সঙ্গে ১-১ ব্যবধানে সিরিজ ড্র করেছে বাংলাদেশ। টস জেতা মুশফিকুর রহিমরা প্রথমে ব্যাট করে সাত উইকেটে ১৬৮ রান সংগ্রহ করে। জবাবে সাকিব আল হাসান ও আবদুর রাজ্জাকের দুর্দান্ত বোলিংয়ে নয় উইকেটে ১৩৬ রানে থামে জিম্বাবুয়ে। হার ৩৪ রানের।

স্কোর কার্ডঃ

বাংলাদেশ ১৬৮/৭ (২০ ওভার)
তামিম ৪৩(৩০), সাকিব ৪০(২৮), নাসির ২৭(২৩)
উথসিয়া ১৫/২, ভিটোরি ২৬/১, মুসাঙ্গেওয়ে ২৯/১

জিম্বাবুয়ে ১৩৪/৯ (২০ ওভার)
সিবান্দা ৩২(১৯), রাজা ৩২(৩০)
সাকিব ২২/৪, রাজ্জাক ১৮/২, শফিউল ২০/২


ম্যান অফ দ্যা ম্যাচঃ সাকিব আল হাসান
ম্যান অফ দ্যা সিরিজঃ সাকিব আল হাসান

Saturday, May 11, 2013

টি-টোয়েন্টিতেও হারে শুরু বাংলাদেশের

জিম্বাবুয়ের ছুড়ে দেয়া ১৬৯ রানের লক্ষ্যে নেমে জয়ের কাছে গিয়েও ব্যর্থ হলো বাংলাদেশ। প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ৬ রানে হেরেছে তারা। জিম্বাবুয়ে: ১৬৮/৫ (২০ ওভার)
বাংলাদেশ: ১৬২/৮ (২০ ওভার)
ফল: জিম্বাবুয়ে ৬ রানে জয়ী
২ রানে তামিমকে প্রথম ওভারেই আউট করেন ব্রায়ান ভিটরি। এরপর শামসুর রহমানকে নিয়ে দারুণ ব্যাট করছেন সাকিব। ৩৪ বলে আট চারে তৃতীয় টি-টোয়েন্টি ফিফটি পেয়েছেন তিনি। ৪০ বলে আট চার ও দুই ছয়ে ৬৫ রানে প্রসপার উতসেয়ার শিকার হন সাকিব। পরের বলে ‍অভিষেক ফিফটি পান শামসুর, ৪৮ বলে সাত চার ও এক ছয়ে এ অর্জন করেন। আর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি, উতসেয়ার দ্বিতীয় শিকার হন ৫৩ রানে।
পরের ওভারে প্রথম ও শেষ বলে মুশফিকুর রহিম সিঙ্গেল নিতে গেলে নাসির হোসেন ও মাহমুদ উল্লাহ রান আউট হন। জিয়াউর রহমান ২ রানে উইকেট হারান। শেষ ওভারের প্রথম বলে মাঠ ছাড়েন মুশফিক। পাঁচ বলে ১০ রানের দরকার থাকলেও আব্দুর রাজ্জাক ও সোহাগ গাজী সফল হননি।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নামে জিম্বাবুয়ে। হ্যামিল্টন মাসাকাদজা ও ব্রেন্ডন টেলরের ব্যাটে পাঁচ উইকেটে ১৬৮ রান করে তারা।
প্রথম ওভারের তৃতীয় বলে ওপেনার ভুসি সিবান্দাকে সাজঘরে পাঠান সোহাগ গাজী। এরপর মাসাকাদজাকে নিয়ে অধিনায়ক টেলর ৭৫ রানের দারুণ এক জুটি গড়েন। ২৫ বলে ছয় চার ও এক ছয়ে সাকিব আল হাসানের কাছে উইকেট হারান টেলর। ৬ রানে মাহমুদ উল্লাহর শিকার হন শন উইলিয়ামস। শফিউল ইসলামের পেসে সাকিবের তালুবন্দি হন সিকান্দার রাজা (১৪)।
সপ্তম টি-টোয়েন্টি ফিফটি গড়ে খুব বেশি এগোতে পারেননি হ্যামিল্টন মাসাকাদজা। ৪৮ বলে চারটি চার ও এক ছক্কায় ৫৯ রানে সাকিবকে উইকেট দেন তিনি। ১৪ বলে তিন চার ও এক ছয়ে ২৬ রানে ম্যালকম ওয়ালার টিকে ছিলেন। অপর প্রান্তে টিনোটেন্ডা মুতুম্বজি ১২ রানে অপরাজিত ছিলেন।
সাকিব সর্বোচ্চ দুটি উইকেট দখল করেন। একটি করে পেয়েছেন মাহমুদ উল্লাহ, শফিউল ও গাজী।
মোহাম্মদ আশরাফুলের পরিবর্তে দলে অন্তর্ভুক্তি হয়েছে শামসুর রহমানের।
জিম্বাবুয়ে দল: ব্রেন্ডন টেলর (অধিনায়ক), টেন্ডাই চাতারা, হ্যামিল্টন মাসাকাদজা, মুতুম্বজি, পানিআঙ্গারা, ভুসি সিবান্দা, সিকান্দার রাজা, প্রসপার উতসেয়া, ব্রায়ান ভিটরি, ম্যালকম ওয়ালার ও শন উইলিয়ামস।
বাংলাদেশ দল: মুশফিকুর রহিম (অধিনায়ক), আব্দুর রাজ্জাক, সাকিব আল হাসান, মাহমুদ উল্লাহ, নাসির হোসেন, শফিউল ইসলাম, সাজিদুল ইসলাম, শামসুর রহমান, সোহাগ গাজী, তামিম ইকবাল ও জিয়াউর রহমান।

উইকেট শিকারে শুরু বাংলাদেশের

বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে টস জিতেছে জিম্বাবুয়ে। ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। তৃতীয় বলে সোহাগ গাজীর কাছে প্রথম উইকেট হারিয়েছে স্বাগতিকরা। এক ওভার শেষে এক উইকেটে পাঁচ রান সংগ্রহ তাদের। রানের খাতা না খুলে সাজিদুল ইসলামের তালুবন্দি হন ওপেনার ভুসি সিবান্দা। ব্রেন্ডন টেলর ৪ ও হ্যামিল্টন মাসাকাদজা ১ রানে খেলছেন।
মোহাম্মদ আশরাফুলের পরিবর্তে দলে অন্তর্ভুক্তি হয়েছে শামসুর রহমানের।
জিম্বাবুয়ে দল: ব্রেন্ডন টেলর (অধিনায়ক), টেন্ডাই চাতারা, হ্যামিল্টন মাসাকাদজা, মুতুম্বজি, পানিআঙ্গারা, ভুসি সিবান্দা, সিকান্দার রাজা, প্রসপার উতসেয়া, ব্রায়ান ভিটরি, ম্যালকম ওয়ালার ও শন উইলিয়ামস।
বাংলাদেশ দল: মুশফিকুর রহিম (অধিনায়ক), আব্দুর রাজ্জাক, সাকিব আল হাসান, মাহমুদ উল্লাহ, নাসির হোসেন, শফিউল ইসলাম, সাজিদুল ইসলাম, শামসুর রহমান, সোহাগ গাজী, তামিম ইকবাল ও জিয়াউর রহমান।

Friday, May 10, 2013

দায়িত্ব ছাড়বেন কারস্টেন

দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট দলের কোচ হিসেবে আর নয়। আগামী আগস্ট মাসে দুই বছর মেয়াদি চুক্তি শেষ হলেই দায়িত্ব ছেড়ে দেবেন গ্যারি কারস্টেন।
আজ শুক্রবার এক খবরে ‘ক্রিকইনফো’ জানিয়েছে, চুক্তির মেয়াদ না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কারস্টেন। পারিবারিক কারণ দেখিয়ে নিজের সিদ্ধান্তটা বোর্ডকে জানিয়েও দিয়েছেন তিনি। চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর আগ্রহ আছে কি না, এ ব্যাপারে ৩০ এপ্রিলের মধ্যে বোর্ডকে অবহিত করার কথা ছিল তাঁর।
২০১১ সালের এপ্রিলে ভারতকে বিশ্বকাপ উপহার দিয়ে দায়িত্ব ছাড়ার ঘোষণা দেন কোচ কারস্টেন। নিজ দেশ দক্ষিণ আফ্রিকা দলের দায়িত্ব নেন একই বছরের আগস্টে। আগামী মাসে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠেয় চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে শেষবারের মতো দক্ষিণ আফ্রিকার কোচ হিসেবে দেখা যাবে কারস্টেনকে।
চুক্তি নবায়ন করবেন না জানিয়ে কারস্টেন বলেন, ‘দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট বোর্ড আমার ওপর যে আস্থা ও বিশ্বাস রেখেছে, এ জন্য ধন্যবাদ। একজন খেলোয়াড় ও কোচ হিসেবে দেশকে প্রতিনিধিত্ব করা একটা বড় অর্জন।’
দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট বোর্ডের প্রেসিডেন্ট ক্রিস ন্যানজানি সাংবাদিকদের বলেন, ‘গ্যারি (কারস্টেন) পরিবারের সঙ্গে আরও বেশি সময় কাটাতে চান। গত দুই বছরের চেষ্টায় দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেটে তিনি যে অসামান্য অবদান রেখেছেন, এ জন্য তাঁকে ধন্যবাদ।’
ন্যানজানি জানান, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে ব্যস্ত সূচি। এ কারণে কারস্টেনের উত্তরসূরি নির্বাচনে খুব বেশি দেরি করবে না বোর্ড। তিনি বলেন, ‘জুলাই ও আগস্টে শ্রীলঙ্কা সফর, নভেম্বরে পাকিস্তান সফর, এরপর ঘরের মাঠে ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ সিরিজ। এ অবস্থায় দ্রুত কারস্টেনের উত্তরসূরি নির্বাচন করা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।’

আবেগতাড়িত হয়েই পদত্যাগ

রাতে বাইরে কোথাও খেতে গিয়েছিলেন। সাজেদুল ইসলাম আর শামসুর রহমানকে নিয়ে হোটেলে ফিরে রিসেপশনে কী নিয়ে যেন কথা বললেন। এরপর পা বাড়ালেন লিফটের দিকে। পেছনে থেকে ‘ক্যাপ্টেন...’ বলে ডাক দিতেই কপাল কোঁচকানো বিরক্তি নিয়ে তাকালেন মুশফিকুর রহিম, ‘আবার কী ভাই...?’
মুশফিকের বিরক্ত হওয়াটাই স্বাভাবিক। পরশু সিরিজ শেষের সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণার পর থেকে সময়টা কেমন যাচ্ছিল না বোঝার কথা নয়। একের পর এক কথা বলতে হয়েছে এটা নিয়েই। সন্ধ্যায় মাঠ থেকে হোটেলে ফিরেই মুশফিককে নিয়ে আলোচনায় বসেছিলেন দলের সঙ্গে থাকা বোর্ড কর্মকর্তা আহমেদ সাজ্জাদুল আলম, নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন ও কোচ শেন জার্গেনসেন। দু-একজন সতীর্থ রুমে গিয়ে বুঝিয়ে এসেছেন মাথা ঠান্ডা রাখতে। ঢাকা থেকে টেলিফোনে কথা বলেছেন বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান ও পরিবারের সদস্যরা। পদত্যাগের সিদ্ধান্তে বিস্ময় প্রকাশ করে সবাই সিদ্ধান্ত বদলানোর অনুরোধ করেছেন। মুশফিক সিদ্ধান্তে অনড়। এ ধরনের ‘যুদ্ধ’ আগে কখনো করেননি বলে ক্লান্তি আর বিরক্তি আসাটাই স্বাভাবিক।
কিন্তু কেন হঠাৎ পদত্যাগ করলেন মুশফিক? বোর্ড জানে না, টিম ম্যানেজমেন্ট জানে না, কোচ-সতীর্থ কেউ জানেন না, সংবাদ সম্মেলনে আকস্মিক এ ঘোষণার রহস্য কী?
পরশু রাতে হলিডে ইন হোটেলে দলের একাধিক খেলোয়াড় এবং টিম ম্যানেজমেন্ট সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে—সংবাদ সম্মেলনে মুশফিক যে ব্যাখ্যা দিয়েছেন, পদত্যাগের কারণ সেটাই। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ হারের হতাশা থেকেই এমন সিদ্ধান্ত। আহমেদ সাজ্জাদুল আলম বলেছেন, ‘সংবাদ সম্মেলনে যে কারণ দেখিয়েছে, আমাদেরও মুশফিক তাই বলেছে। এ ছাড়া আমি অন্যভাবেও খোঁজখবর নিয়েছি এখানে আর কোনো কারণ আছে কিনা। আমার মনে হয় এখানে অন্য কিছু নেই। সিরিজ হারায় আবেগপ্রবণ হয়ে সে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’ একই ধারণা মিনহাজুল আবেদীনেরও, ‘ও এটা ইমোশনালি করেছে। নইলে বোর্ড, পরিবার, টিমমেট কারও সঙ্গে কথা না বলে সে কী করে এত বড় সিদ্ধান্ত নেয়! আমরা ওকে বোঝানোর চেষ্টা করছি।’ দলের একাধিক খেলোয়াড়ের সঙ্গে কথা বলেও প্রায় একই বার্তা পাওয়া গেছে। মুশফিকের পদত্যাগের কারণ হিসেবে দলের সবার সহযোগিতা না পাওয়ার কথাও আসছে। তবে মুশফিকের খুব ঘনিষ্ঠরাও সমর্থন করছেন না এ ধারণাকে।
পদত্যাগ করলেও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে মুশফিকই অধিনায়কত্ব করবেন। আপাতত তাই বিষয়টা নিয়ে আর আলোচনা করতে আগ্রহী নয় টিম ম্যানেজমেন্ট। ‘টি-টোয়েন্টি ম্যাচে সে-ই অধিনায়কত্ব করবে। আর জিম্বাবুয়ে সফরের পর আপাতত খেলাও নেই। কাজেই এখানে আর নতুন করে কিছু হওয়ার সম্ভাবনা নেই। কথাবার্তা যা বলার দেশে ফিরে বলব’—জানিয়েছেন আহমেদ সাজ্জাদুল আলম।
দল সূত্রে জানা গেছে, সংবাদ সম্মেলনে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিলেও পরশু তৃতীয় ওয়ানডের শেষ দিকে মাঠেই তামিম ইকবালকে পদত্যাগের সিদ্ধান্তের কথা জানান মুশফিক। খেলা চলায় মাঠে তামিম এ নিয়ে আর কথা বাড়াননি। পরে খেলা শেষে নাকি মুশফিক নিজ থেকেই সংবাদ সম্মেলনে যাওয়ার আগ্রহ দেখান। তার আগে ড্রেসিংরুমে ‘একটা কথা আছে’ বলে সবার দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করলে এগিয়ে যান তামিম। অনুরোধ করেন মুশফিক যেন সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন। ততক্ষণে বিষয়টা আঁচ করতে পেরে মাহমুদউল্লাহ, রাজ্জাক, শামসুর রহমানসহ আরও কয়েকজনও তাঁকে বোঝানো শুরু করেন। মুশফিক তার পরও সিদ্ধান্তে অনড় থাকলে তামিম বলেন, এখনই কোনো সিদ্ধান্ত জানানোর দরকার নেই। যা বলার মুশফিক যেন সিরিজ শেষে বলেন।
বিষয়টা তখন পর্যন্ত টিম ম্যানেজমেন্টের কানে না পৌঁছালেও মুশফিক আইস বাথ নেওয়ার সময় যখন তামিম ও শামসুর তাঁকে বোঝাচ্ছিলেন, তাঁদের কথোপকথন কানে যায় কোচ শেন জার্গেনসেনের। টিম ম্যানেজার তানজীব আহসানকে তিনি বিষয়টা দেখতে বলেন। ম্যানেজার তখনই খেলোয়াড়দের কাছ থেকে প্রথম শোনেন মুশফিকের পদত্যাগের সিদ্ধান্তের কথা। এ সময় মুশফিক সংবাদ সম্মেলনে আসার জন্য প্রস্তুতি নিলে অন্যরা বাধা দেন। সবাই বুঝতে পারছিলেন সংবাদ সম্মেলনে গিয়েই পদত্যাগের ঘোষণা দেবেন অধিনায়ক। সহ-অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ তখন মুশফিককে সংবাদ সম্মেলনে না আসতে বলে চলে আসেন নিজেই। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সতীর্থদের চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে সংবাদ সম্মেলনে চলে আসেন মুশফিকও, ঘোষণা দেন পদত্যাগের।
সিরিজ এখনো চলছে। মুশফিকের পদত্যাগ যাতে টি-টোয়েন্টি ম্যাচে কোনো ছায়া না ফেলে, সে ব্যাপারে যথেষ্টই সচেতন টিম ম্যানেজমেন্ট। খেলোয়াড়দের প্রতিও অলিখিত নির্দেশ এ নিয়ে কথা না বলার। তবে সূত্র জানিয়েছে, পরশু হোটেলে ফেরার পরও দলের একাধিক খেলোয়াড় মুশফিককে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার অনুরোধ করেন। মোহাম্মদ আশরাফুল রুমে গিয়ে অধিনায়কের সঙ্গে কথা বলেছেন। কাল সকালে কথা বলেছেন তামিমও। নাম প্রকাশ না করার শর্তে দলের এক খেলোয়াড় বললেন, ‘মুশফিক সম্পূর্ণ আবেগতাড়িত হয়ে এটা করেছে। পদত্যাগ করার মতো কিছুই হয়নি। দলের কারও সঙ্গেই তাঁর কোনো সমস্যা নেই। আমরা সবাই ওর সঙ্গে আছি।’ আরেকজন তো নিশ্চিত করেই বললেন, ‘মুশফিককে অনেক দিন থেকে চিনি। আমি গ্যারান্টি দিচ্ছি, ও সিদ্ধান্ত বদলাবে। সিরিজটা শেষ হোক। দেশে ফিরলেই সব ঠিক হয়ে যাবে। এটা এমন সিরিয়াস কিছু না।’
জাতীয় দলের সতীর্থ থেকে শুরু করে দেশের সাধারণ ক্রিকেটপ্রেমী—মুশফিকুর রহিমকেই অধিনায়ক হিসেবে দেখতে চায় সবাই। মুশফিকও নিশ্চয়ই বুঝবেন, ক্রিকেটে আবেগের চেয়ে দায়িত্ব অনেক বড়। আর সেটা তাঁর মতো ভালো নিকট অতীতে কেউ পালন করেনি।

Thursday, May 9, 2013

আবারও সেই দুঃস্বপ্নই

ব্রেন্ডন টেলর-হ্যামিল্টন মাসাকাদজাদের কথাই তাহলে ঠিক। বুলাওয়ে-জুজু বলে কিছু নেই, ‘ইটস অল অ্যাবাউট ক্রিকেট’। বল-ব্যাটের লড়াইয়ে যে ভালো, সে-ই জেতে ম্যাচ। খেলাটা বুলাওয়েতেই হোক কিংবা হারারে অথবা বাংলাদেশের পাড়ার কোনো মাঠে।
এবার বুলাওয়েতে আসার আগে কুইন্স স্পোর্টস ক্লাব মাঠে ৮টি ওয়ানডেতে বাংলাদেশের জয় ছিল ৬টি। ২০১১ সালের সফরে হারারেতে সর্বস্ব হারানোর পর বুলাওয়েতেই পাওয়া গিয়েছিল সান্ত্বনার দুটি জয়। হারারে থেকে ৪৪২ কিলোমিটার দূরের এই শহরে এত দিন তাই ‘নিজ ভূমে পরবাসী’ ছিল জিম্বাবুয়ে। ‘স্বাগতিক’ যেন বাংলাদেশ! জয়ের সংখ্যায় বাংলাদেশ এখনো এগিয়ে থাকলেও দাবিটা বোধ হয় এখন আর করা যাবে না। ২-১ এ সিরিজ জিতে এবার বুলাওয়েতেও নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করে নিয়েছে জিম্বাবুয়ে দল।
প্রথম ওয়ানডেতে ২৬৯ রান করে জিতেছিল বাংলাদেশ। পরের দুই ম্যাচে ওটাকেই (২৭০) নিরাপদ স্কোর মনে করলেও কোনো ম্যাচেই সে পর্যন্ত যাওয়া হয়নি। দ্বিতীয় ম্যাচে ২৫২, কাল শেষটাতে ২৪৭। যা ৩ উইকেট হারিয়ে ১৭ বল বাকি থাকতেই টপকে গেল জিম্বাবুয়ে। বাংলাদেশ অবশ্য এখন বলতে পারে, বুলাওয়ের উইকেট আর আগের মতো নেই, এখানে আগে ব্যাট করলে জেতা কঠিন ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু বিদেশে এসেও যদি ‘স্বাগতিক’-এর সুবিধা পেতে হয়, তাহলে তো শুধু হোম সিরিজ খেলাই ভালো! আর টসই যদি প্রতি ম্যাচে জয়-পরাজয় নির্ধারণ করে দেবে, তাহলে ক্রিকেটটা সবাই-ই খেলতে পারে। প্রশ্নগুলোর উত্তর সম্ভবত অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমের কাছেও নেই। ম্যাচ শেষের সংবাদ সম্মেলনে সে কারণেই দুম করে ঘোষণা দিলেন, ‘টি-টোয়েন্টি সিরিজের পর আমি আর অধিনায়কত্ব করব না।’
পুরো সিরিজের ধারাবাহিকতা ধরে রেখে কালও দায়িত্বজ্ঞানহীন ব্যাটিং করেছে বাংলাদেশের টপ অর্ডার। সব ছাপিয়ে পরাজয়ের সবচেয়ে বড় কারণ ওটাই। ম্যাচের শেষ ভাগে এই উইকেট পুরোই ব্যাটিংবান্ধব হয়ে যায় বলে বাংলাদেশের বোলিং নিয়ে একটা লাইনই যথেষ্ট—প্রতিকূলতাকে জয় করার মতো বোলিং করতে পারেননি কোনো বোলারই। হ্যামিল্টন মাসাকাদজার সঙ্গে ৭৯ রানের উদ্বোধনী জুটি দিয়ে শুরু, এর পরও জিম্বাবুয়েকে বলতে গেলে একাই জয়ের দিকে টেনে নিয়ে গেছেন ভুসিমুজি সিবান্দা। ২০১১ সালে হারারেতে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৪ রানের জন্য সেঞ্চুরি মিস করেছিলেন। কাল ওয়ানডেতে নিজের দ্বিতীয় সেঞ্চুরিটা করার পর সে দুঃখ কিছুটা হলেও ভুললেন। কে জানে, কাল রাতে শন উইলিয়ামসের বাড়িতে এ সাফল্যে একটা পার্টিও দিয়ে দিয়েছেন কি না!
ব্যক্তিগত জীবনে খুবই ভালো বন্ধু শন উইলিয়ামস আর সিবান্দা। বুলাওয়েতে বেড়াতে এলে নাকি উইলিয়ামসের বাড়িতেই ওঠেন সিবান্দা। কাল মাঠেও দেখা গেল প্রগাঢ় সেই বন্ধুত্ব। ইনিংসের ৪৭তম ওভারের প্রথম বলে শফিউলকে বাউন্ডারি মেরে ফিফটি পূর্ণ করলেন উইলিয়ামস। কিন্তু তাতে যে দলের রানটাও হয়ে গেল ২৪৭! আর ১ রান করলেই জিতে যাবে জিম্বাবুয়ে। পরের পাঁচ বলে ১ রান হবে না, এটা যেমন অস্বাভাবিক, তেমনি অন্য প্রান্তে ৯৯ রানে অপরাজিত সিবান্দা সেই ১ রান চেয়ে চেয়ে দেখবেন, সেটাও কি মানা যায়! দর্শক, প্রেসবক্সের জিম্বাবুইয়ান সাংবাদিকেরা, এমনকি দুই আম্পায়ারও যেন দাঁড়িয়ে গেলেন সিবান্দার পাশে। শফিউলের বলগুলো শুধু ঠেকিয়েই গেলেন উইলিয়ামস, রান নিলেন না। রান না নিয়ে এত হাততালি মনে হয় না এর আগে কোনো ব্যাটসম্যান পেয়েছেন। বাউন্সারের মতো ওঠা পঞ্চম বলে চাইলেই ‘নো’ ডাকতে পারতেন আম্পায়ার। কিন্তু ডাকলেন না। হাততালি পেলেন তিনিও।
পরের ওভারের প্রথম বলটা অফ স্টাম্পের বাইরে করেছিলেন রবিউল। ব্যাটের কানায় লাগিয়ে থার্ডম্যান দিয়ে চার। সিবান্দার উল্লাসটাকে যেভাবে কাছে এসে বাহুডোরে নিয়ে নিলেন উইলিয়ামস, মনে হচ্ছিল সেঞ্চুরিটা বোধ হয় তিনিই করেছেন। ব্যক্তিগত সাফল্য ছাপিয়ে এই সাফল্য যে পুরো জিম্বাবুয়েরই। ম্যাচ শেষে ট্রফি হাতে উল্লাসরত জিম্বাবুয়ে দলের সঙ্গে দর্শকদেরও উল্লাস জানিয়ে দিচ্ছিল সেটাই।

হেরে অধিনায়কত্ব ছাড়ছেন মুশফিক

২০১১ সালে দুঃস্বপ্নের জিম্বাবুয়ে সফর শেষে দেশে ফিরে নেতৃত্ব হারিয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। এবার মুশফিকুর রহিমের জন্যও তেমন কোনো পরিণতি অপেক্ষা করে আছে কি না, তা নিয়ে জল্পনা-কল্পনা শুরুর আগেই সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়ে বসলেন তিনি। কাল ৭ উইকেটের হারে সিরিজ খোয়ানোর পরপরই ব্যর্থতার দায় মাথায় নিয়ে দেওয়া মুশফিকের ঘোষণাটা ছিল আচমকাই।
ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে হাজির হলেন সহ-অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। সবাই ধরে নিলেন, মুশফিক হয়তো আসবেনই না। কারণ ক্রিকেট-সংশ্লিষ্ট সবারই কম-বেশি জানা যে, ব্যর্থতায় বড় বেশি মুষড়ে পড়েন তিনি। ২০১১ সালের সেই সফরেও এমন একবার হয়েছিল। হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে প্রথম দুটি ম্যাচ হারা বাংলাদেশ সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডে খেলতে নেমেছিল। তাতে প্রথম ওয়ানডে সেঞ্চুরি করে দলকে জয়ের ধারে নিয়ে গিয়েও হারের হতাশায় মুশফিক এমনই ভেঙে পড়েছিলেন যে, সংবাদ সম্মেলনেই আর আসেননি। হারারেতে পাঁচ ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের তৃতীয় ম্যাচেও হারের পর ড্রেসিংরুমে কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন তিনি। তবে সেবার বুলাওয়েতে এসে ভাগ্য ফিরেছিল বাংলাদেশের। শেষ দুটো ওয়ানডেতে জয়ের সান্ত্বনা মিলেছিল এখানেই। কিন্তু এবার সেই বুলাওয়েতেই আরেকটি ব্যর্থতার পর সংবাদ সম্মেলনে না আসায় হতাশ মুশফিকের কল্পিত ছবিটাই যেন দেখছিলেন উপস্থিত সবাই। কিন্তু মাহমুদউল্লাহর সংবাদ সম্মেলনের মাঝামাঝি হুট করেই হাজির মুশফিক। বিলম্বের জন্য দুঃখ প্রকাশ যেমন করলেন, তেমনি সিরিজ হারের ময়নাতদন্ত করতে করতে এক পর্যায়ে দিয়ে দিলেন সরে দাঁড়ানোর আকস্মিক ঘোষণাটাও। জানিয়েছেন, দুই ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের পর আর অধিনায়ক পদে থাকছেন না তিনি। ব্যর্থতার দায় নিয়ে বলেছেন, 'দলও খারাপ খেলেছে। আমিও বাজে খেলেছি।'
এমন বিনা মেঘে বজ পাতের আধঘণ্টা পরও অন্ধকারে বাংলাদেশ দলের সঙ্গে জিম্বাবুয়েতে অবস্থানরত বিসিবির অ্যাডহক কমিটির সদস্য আহমেদ সাজ্জাদুল আলম। ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণীর আনুষ্ঠানিকতা শেষে হোটেলে ফিরে যাওয়া সাজ্জাদুলকে টেলিফোনে খবরটা দেওয়ার পর চমকে ওঠেন তিনি, 'তাই নাকি! কই, আমাকে তো কেউ কিছু বলেনি!' বোর্ড মনোনীত অধিনায়ক হিসেবে পদত্যাগের বিষয়টি যথাযথ স্থানে জানানো মুশফিকুর রহিমের দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে। কিন্তু সেটি তিনি না করায় আরো বিস্মিত সাজ্জাদুলের প্রশ্ন, 'এটা কি সে বোর্ডকে জানিয়েছে?'
বোর্ডকে জানাননি, তবে মাঠ থেকে হোটেলে ফেরার পরপরই অধিনায়কের মত বদলাতে উদ্যোগী হয়েছেন এ বোর্ড সদস্যসহ নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন এবং জাতীয় দলের হেড কোচ শেন জার্গেনসেন। মুশফিকের সঙ্গে সে আলোচনায় ঢাকা থেকে টেলিফোনে যুক্ত হয়েছিলেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসানও। চতুর্মুখী আলোচনার ফল কখনও ইতিবাচক তো আবার পরক্ষণেই নেতিবাচক। সাজ্জাদুল একবার এসে বলে গেলেন, 'ওর সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। আশা করি মত বদলাবে।' সেই সাজ্জাদুলই আবার কিছুক্ষণ পর মুশফিকের সিদ্ধান্ত পাল্টানো নিয়ে সন্দিহান, 'ভেরি আর্লি টু কমেন্ট।' গতকাল রাতে এ প্রতিবেদন লেখার সময় হোটেলের লবিতে পায়চারি করতে থাকা মুশফিকের শরীরি ভাষায়ও নিজের অবস্থান থেকে সরে আসার কোনো লক্ষণ দেখা গেল না। অর্থাৎ নিজের সিদ্ধান্তেই অনড় তিনি।
মাঠ থেকে ড্রেসিংরুমে ফিরেই সতীর্থদের নিজের সে সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন মুশফিকুর রহিম। ম্যানেজার তানজীব আহসান জানাচ্ছিলেন, 'ম্যাচের পর দেখি ড্রেসিংরুমে সবাই ওকে কী যেন বোঝাচ্ছে। কাছে গিয়ে জানতে পারি ওই সিদ্ধান্তের কথা।' দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের জন্য সতীর্থদের সবাই অনুরোধ করেছেন মুশফিককে। বরাবরের আবেগপ্রবণ অধিনায়ক যেন এ সিদ্ধান্ত মিডিয়াকে না জানিয়ে দেন, সে লক্ষ্যেই নাকি তাঁর পরিবর্তে কাল সংবাদ সম্মেলনে পাঠানো হয় মাহমুদউল্লাহকে। সে কারণেই সম্ভবত মুশফিককে পাশের চেয়ারে বসতে দেখে বিব্রত হয়ে পড়েছিলেন সহ-অধিনায়ক। বুঝে ফেলেছিলেন, আবেগী মুশফিক চমকে দেওয়া ঘোষণা দিতেই হাজির হয়েছেন সংবাদমাধ্যমের সামনে। সে ঘোষণা দেওয়ার পর যেমন মিলিয়ে নেওয়া গেল পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে নিজের অংশ শেষ হতেই তাঁর হুড়মুড়িয়ে ড্রেসিংরুমে ঢুকে পড়ার কারণও। পূর্বপ্রস্তুতি একরকম নেওয়াই ছিল। দলীয় একটি সূত্রের সন্দেহ, 'শুধু হারার কারণেই পদত্যাগ করেছেন মুশফিক- এটা বিশ্বাস হয় না। নিশ্চয়ই অন্য কোনো কারণ আছে।' কিন্তু সেটা কী, তা জানতে মুশফিকের অন্তর্যামী হওয়া ছাড়া উপায় নেই। আপাতত সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার আগ্রহ অধিনায়কের নেই বলে কাল রাতে জানিয়ে দিয়েছেন ম্যানেজার তানজীব।
বিসিবির 'স্বীকৃতি' এখনো পায়নি মুশফিকুর রহিমের সিদ্ধান্ত। তবে তাঁর ঘোষণায় জিম্বাবুয়ে সফর এবং জিম্বাবুয়ের সঙ্গে খেলা কেমন যেন অভিশপ্ত হয়ে রইল বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য! বিশেষ করে বাংলাদেশি অধিনায়কদের জন্য। ২০০১ সালের এপ্রিলে প্রথম জিম্বাবুয়ে সফরের অধিনায়ক নাঈমুর রহমান একই দলের বিপক্ষে একই বছরের নভেম্বরে দেশের মাটিতে দুই টেস্টের সিরিজের পর অধিনায়কত্ব হারান। ২০১১ সালে দেশে ফিরে নেতৃত্ব হারান সাকিব আল হাসানও। আর এবার নিজে থেকেই অধিনায়কত্ব ছাড়ার ঘোষণা দিলেন মুশফিকুর রহিম।

Saturday, May 4, 2013

‘ব্যাটসম্যান’ থেকে বোলার জিয়া

কুইন্স স্পোর্টস ক্লাবের উইকেট বলেই একটু বেশি হাসতে পারেন জিয়াউর রহমান। এই উইকেট বেশির ভাগ সময় ব্যাটসম্যানদের, কখনো কখনো স্পিনারদেরও। কিন্তু পেসারদের দিকে তাকিয়ে হেসেছে খুব কমই। অথচ জিয়া তাঁর ক্যারিয়ারের প্রথম ৫ উইকেট তুলে নিলেন এখানেই! পেলেন প্রথম ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কারও।
খেলা শেষে কৃতিত্বের কিছুটা অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমকেও দিলেন বাংলাদেশ দলের এই পেসার, ‘আমি উইকেট টু উইকেটই বোলিং করেছি। অধিনায়ক আমাকে বলেছেন, “তুমি স্টাম্প সোজা বোলিং করো। আর কিছু করা লাগবে না। যা করার ব্যাটসম্যানরাই করবে।” বলেছেন, ওভারে দুটি ডট বল দেওয়ার চেষ্টা করতে। আমিও একই চিন্তা নিয়ে বোলিং করেছি।’ শুনতে যতটা সহজ, এক জায়গায় বল ফেলে যাওয়া ততটাই কঠিন। জিয়া সে কঠিন কাজটাই করে দেখালেন কাল, ‘আমি বুলাওয়েতে এই প্রথম খেললাম। এখানে বল একটু আস্তে আসে। ভালো জায়গায় ফেললে বল ছোট ছোট কাট করে। এটা করে যেতে পারলে ব্যাটসম্যানদের পক্ষে খেলা কঠিন।’
কাল আরেকটা পরিকল্পনাও ছিল জিয়ার। উইকেট পান আর না পান, রান দেবেন কম, ‘রান করতে না পারলে ব্যাটসম্যান এমনিতেই চাপে পড়ে যায়। উইকেট টু উইকেট বল করায় এখানেও তা-ই হয়েছে।’ পরের দুই ম্যাচেও একই পরিকল্পনা তাঁর, ‘১০ ওভারে ৩০ বা ৩৫ রান দেব, এই টার্গেট নিয়ে বল করলে সাফল্য আসবেই। এটা করতে পারলে ব্যাটসম্যানরাই আপনাকে উইকেট দিয়ে যাবে।’
জিয়া মূলত বোলারই। কিন্তু মাঝে বোলারের চেয়ে ব্যাটসম্যান জিয়ার সাফল্যই দেখেছে সবাই। ঘরোয়া ক্রিকেটে হয়েছে ব্যাট হাতে ইনিংস শুরু করার অভিজ্ঞতাও। তবে জিয়া বলছেন, বোলিংটা কখনোই ছেড়ে দেননি তিনি, ‘আমি কিন্তু বোলিং ছেড়ে দিইনি। মাঝে ইনজুরির কারণেই মূলত ঠিকভাবে বোলিং করতে পারিনি। ওই সময়ে ব্যাটিং নিয়ে কাজ করে ব্যাটিংটা ভালো করেছি। একই সঙ্গে বোলিংও চালিয়ে গেছি। এখন দুটো নিয়েই কাজ করছি।’
জিয়া যেটাকে সাফল্যের চাবিকাঠি বললেন, জিম্বাবুয়ে অধিনায়কের চোখেও সেটাই ডুবিয়েছে তাঁদের, ‘বাংলাদেশের বোলাররা ভালো জায়গায় বল ফেলে গেছে, উইকেট টু উইকেট বল করে গেছে। এ রকম বলে যে রকম ধৈর্য নিয়ে ব্যাট করা উচিত ছিল, আমরা সেটা করিনি। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ থেকে ব্যাটসম্যানরা যে রকম ক্রস ব্যাটে খেলে আসছিল, এখনো তা থেকে বের হতে পারিনি আমরা।’
সমালোচনা করেছেন নিজ দলের বোলিংয়েরও। সবুজাভ উইকেট লোভ দেখিয়েছিল বোলারদের। কিন্তু সেই লোভের ফাঁদে পা দিয়েই বোলিংটা হয়েছে এলোমেলো। ‘বোলাররা একটু বেশি উত্তেজিত হয়ে গিয়েছিল কি না, বলতে পারব না। তবে তারা ঠিক জায়গায় বল ফেলেনি। বোলিংয়ে ধারাবাহিকতাও ছিল না।’—বলেছেন টেলর।
সিরিজে এখনো দুটি ম্যাচ বাকি। তবে জিম্বাবুয়ে অধিনায়কের আশা, তাঁরা সিরিজে ফিরবেন কালকের দ্বিতীয় ওয়ানডেতেই, ‘সিরিজ এখনো শেষ নয়। আমার বিশ্বাস, দ্বিতীয় ওয়ানডেতেই আমরা সিরিজে ফিরব। সে জন্য আজকের (গতকাল) ভুলগুলো শোধরাতে হবে। মাঝের এক দিনে আমরা সেটাই করব।’

Monday, April 15, 2013

কলকাতার জয়



ভারতীয় প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) খেলায় আজ রোববার সানরাইজারস হায়দরাবাদকে ৪৮ রানে হারিয়েছে কলকাতা নাইট রাইডার্স।
এ ম্যাচে টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করে ৪ উইকেটে ১৮০ রান তোলে কলকাতা। জবাবে শেষ পর্যন্ত লড়ে ৭ উইকেটে ১৩২ রান তুলতে সক্ষম হয় হায়দরাবাদ।
হায়দরাবাদের বিপক্ষে জয়ের সুবাদে চার ম্যাচে কলকাতার অর্জন ৪ পয়েন্ট। অন্যদিকে ৫ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট হায়দরাবাদের। ৪ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে এখন পর্যন্ত সবার ওপরে আছে রিকি পন্টিংয়ের দল মুম্বাই ইন্ডিয়ানস।
আজ কলকাতার শুরুটাই হয় দুর্দান্ত। মানবিন্দর বিসলা ও গৌতম গম্ভীরের উদ্বোধনী জুটিতে আসে ৫৯ রান। বিসলা আউট হন ব্যক্তিগত ২৮ রানে। অধিনায়ক গম্ভীর ফেরেন ৫৩ রান করে। কলকাতার বড় সংগ্রহটা নিশ্চিত করেন জ্যাক ক্যালিস ও এউইন মরগান। ২৭ বলে ৪১ রান করে রানআউট হন ক্যালিস। মরগান ছিলেন আরও বেশি আক্রমণাত্মক। মাত্র ২১ বলে ৪৭ রান করেন এই ইংলিশ ব্যাটসম্যান। মরগানের ইনিংসটি সাজানো ছিল পাঁচটি চার ও তিনটি ছয় দিয়ে। হায়দরাবাদের হয়ে একটি করে উইকেট শিকার করেন করণ শর্মা ও আশীষ র্যাডি।
১৮১ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরুটা ভালোই করেছিল হায়দরাবাদ। পার্থিব প্যাটেল ও ক্যামেরন হোয়াইটের উদ্বোধনী জুটিতে আসে ৫৭ রান। প্যাটেল করেন ২৭ রান। হোয়াইট ফেরেন ব্যক্তিগত ৩৪ রানে। তবে এরপর থিসারা পেরেরা ছাড়া হায়দরাবাদের কোনো ব্যাটসম্যানই নিজেদের মেলে ধরতে পারেননি। ২৫ বলে ৩৪ রান করেন শ্রীলঙ্কান এই ব্যাটসম্যান। কলকাতার হয়ে জ্যাক ক্যালিস তিনটি ও রজত ভাটিয়া দুটি উইকেট শিকার করেন। এ ছাড়া একটি করে উইকেট নেন সাচিত্র সেনানায়েকে ও সুনীল নারাইন।

Friday, April 12, 2013

আইপিএলে কোহলি-গম্ভীর দ্বন্দ্ব

ভারতের জাতীয় দলের হয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করতে দেখা যায় গৌতম গম্ভীর ও বিরাট কোহলিকে। তবে আইপিএলে তাঁরা চরম প্রতিদ্বন্দ্বী। উত্তেজনাপূর্ণ এই টি-টোয়েন্টি লিগে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় করতে দেখা গেছে ভারতের এই দুই তারকা ব্যাটসম্যানকে। গতকাল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু ও কলকাতা নাইট রাইডার্সের ম্যাচ চলাকালে এ ঘটনা ঘটে।
গতকাল কলকাতা নাইট রাইডার্সের ছুড়ে দেওয়া ১৫৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করছিলেন বেঙ্গালুরুর ওপেনার ক্রিস গেইল ও অধিনায়ক বিরাট কোহলি। দ্বিতীয় উইকেটে ৬৩ রানের জুটি গড়ে দলকে জয়ের পথে নিয়ে যাচ্ছিলেন এই দুই ব্যাটসম্যান। দশম ওভারের প্রথম বলে কোহলিকে আউট করে কলকাতা শিবিরে স্বস্তি ফেরান বালাজি। সেসময় উল্লাসে মেতে উঠেছিলেন কলকাতার ক্রিকেটাররা। কিন্তু তাঁদের এই উদযাপনের ভঙ্গিটা ঠিক মেনে নিতে পারেননি সাজঘরের দিকে হাঁটতে থাকা বিরাট কোহলি। মাঝপথে থেমে গিয়ে প্রতিপক্ষের ক্রিকেটারদের উদ্দেশ্যে কিছু একটা বলেছিলেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। এর পরপরই কলকাতার অধিনায়ক গৌতম গম্ভীরের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ে জড়িয়ে পড়েন কোহলি। ঘটনাটা হয়তো আরও কুিসত দিকে মোড় নিতে পারত। কিন্তু কলকাতার অলরাউন্ডার রজত ভাটিয়া ও আম্পায়ারদের হস্তক্ষেপে শান্ত হয় দুই পক্ষ। তবে কোহলি ও গম্ভীরের দ্বন্দ্বটার অবসান যে এখনো হয়নি, তা বোঝা গেছে ম্যাচ-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে। সেখানে গৌতম গম্ভীরকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি সরাসরি কোনো উত্তর দেননি। বলেছেন, ‘কোহলি যখন সংবাদ সম্মেলনে আসবে, তখন তাকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করেন।’
আইপিএলে এ ধরনের ঘটনা অবশ্য এবারই প্রথম নয়। পাঁচ বছর আগে আইপিএলের প্রথম আসরেই এ ধরনের ঘটনার সূত্রপাত ঘটিয়েছিলেন হরভজন সিং। সেবার কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের পেসার শ্রীশান্তকে থাপড়ই মেরে বসেছিলেন মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের হরভজন সিং।
CLICK THIS ADD 

Thursday, April 11, 2013

গেইল ঝড়ে বড় জয় বেঙ্গালুরুর

ক্রিস গেইলের দুর্দান্ত ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে ৮ উইকেটের সহজ জয় পেয়েছে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিপক্ষে জয়ের জন্য ১৫৫ রানের লক্ষ্য নিয়ে ব্যাট করতে নেমে ১৫ বল হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বেঙ্গালুরু। চার ম্যাচে তিনটি জয় দিয়ে আইপিএলের পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে উঠে এসেছে বিরাট কোহলির দল।
ইনিংসের তৃতীয় ওভারে ওপেনার মায়নাক আগারওয়ালের উইকেট হারিয়ে শুরুটা ভালোভাবে করতে পারেনি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। তবে দ্বিতীয় উইকেটে ৬৩ রানের জুটি গড়ে বেশ ভালোভাবেই ঘুরে দাঁড়ান ক্রিস গেইল ও বিরাট কোহলি। দশম ওভারে ৩৫ রান করে সাজঘরে ফেরেন কোহলি। এরপর আর কোনো সফলতার দেখা পাননি কলকাতার বোলাররা। তৃতীয় উইকেটে ৮৩ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে দলকে দারুণ এক জয় এনে দিয়েছেন গেইল ও এবি ডি ভিলিয়ার্স। ৫০ বলে ৮৫ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন গেইল। ডি ভিলিয়ার্সের ব্যাট থেকে এসেছে ২২ রান।
এর আগে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালোভাবে করতে পারেনি কলকাতা নাইট রাইডার্সও। প্রথম ওভারেই সাজঘরে ফেরেন ওপেনার মানবিন্দর বিসলা। অবশ্য দ্বিতীয় উইকেটে ৫১ রানের জুটি গড়ে প্রাথমিক ধাক্কাটা ভালোভাবেই সামলে নেন অধিনায়ক গৌতম গম্ভীর ও জ্যাক ক্যালিস। নবম ওভারে বিনয় কুমারের শিকারে পরিণত হয়ে ফিরে যান ক্যালিস। এর আগে তিনি করেছিলেন ১৬ রান। তৃতীয় উইকেটে ইউসুফ পাঠানকে সঙ্গে নিয়ে আবার ৪১ রানের জুটি গড়েন গম্ভীর। ১৩তম ওভারে ক্রমশ বিপজ্জনক হয়ে ওঠা এই জুটি ভেঙে বেঙ্গালুরু শিবিরে স্বস্তি ফেরান হেনরিকে। ১৭ বলে ২৭ রান করে ফিরে যান ইউসুফ পাঠান। ১৭তম ওভারে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫৯ রানের লড়াকু ইনিংস খেলে আউট হন গম্ভীর। শেষ পর্যায়ে মনোজ তিওয়ারির ২৩ ও রজত ভাটিয়ার ১৩ রানের ইনিংসটির সুবাদে স্কোরবোর্ডে ১৫৪ রান জমা করে কলকাতা নাইট রাইডার্স।

Saturday, March 23, 2013

দিলশানের সেঞ্চুরিতে শ্রীলঙ্কার সহজ জয়

দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি করে শ্রীলঙ্কাকে সহজ জয় এনে দিয়েছেন তিলকারত্নে দিলশান। জয়ের জন্য ৪১ ওভারে ২৩৮ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে মাত্র ২ উইকেট হারিয়ে ৫ ওভার বাকি থাকতেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় শ্রীলঙ্কা। ১০৮ বলে ১১৩ রানের ম্যাচজেতানো ইনিংস খেলে শেষপর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন দিলশান। আর ৮ উইকেটের এই জয় দিয়ে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল শ্রীলঙ্কা।
শুরু থেকেই ঝড়োগতির ব্যাটিং করে বাংলাদেশী বোলারদের নাজেহাল করে দিয়েছেন দুই লঙ্কান ওপেনার তিলকারত্নে দিলশান ও জানিথ পেরেরা। উদ্বোধনী জুটিতেই ১০৬ রান সংগ্রহ করে দলকে জয়ের ভিত্তি গড়ে দেন এই দুই ব্যাটসম্যান। ১৩তম ওভারে বল হাতে প্রথম সফলতার দেখা পায় বাংলাদেশ। সোহাগ গাজীর শিকারে পরিণত হয়ে ফিরে যান পেরেরা। তার আগে তিনি করেছিলেন ৪২ রান। তবে এরপরও তাণ্ডব চালিয়ে যাচ্ছেন আরেক ওপেনার দিলশান। দ্বিতীয় উইকেটে কুমার সাঙ্গাকারাকে নিয়ে তিনি গড়েন ১২৮ রানের জুটি। ৩৫তম ওভারে রুবেল হোসেনকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে আউট হন সাঙ্গাকারা। তখন শ্রীলঙ্কা জয় থেকে মাত্র ৪ রান দূরে ছিল। পরের ওভারেই জয় পেয়ে যায় লঙ্কানরা।
এর আগে দিবা-রাত্রির এই ম্যাচে টস জিতে বাংলাদেশকে ব্যাট করতে পাঠায় শ্রীলঙ্কা। সেই আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে ৮ উইকেটে ২৫৯ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়ে বাংলাদেশ। ১১২ রানের অসাধারণ এক ইনিংস খেলেন তামিম ইকবাল। ৫৯ বলে ৭৩ রানে অপরাজিত থাকেন নাসির হোসেন।
হাম্বানটোটায় বাংলাদেশের ইনিংস চলার সময় ফ্লাডলাইট সমস্যার কারণে খেলা কিছুক্ষণ বন্ধ থাকে। তখন সেটা ঠিক হয়ে গেলেও বাংলাদেশের ইনিংস শেষ হওয়ার পর আবারও দেখা দেয় বিপত্তি। তবে শেষপর্যন্ত ফ্লাডলাইট সমস্যা কাটিয়ে খেলা পুনরায় শুরু হতে পারলেও ম্যাচের দৈর্ঘ্য কমিয়ে ফেলতে হয় নয় ওভার। ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতিতে শ্রীলঙ্কার সামনে নতুন লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয় ৪১ ওভারে ২৩৮ রান।

Monday, March 11, 2013

পারলেন না আশরাফুল

পারলেন না আশরাফুল। বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরির হাতছানিকে বাস্তবে রূপান্তরিত করতে পারলেন না। ব্যক্তিগত ১৯০ রানে রঙ্গনা হেরাথের বলে ফিরে গেলেন প্যাভিলিয়নে। মাত্র ১০টি রানের ব্যবধান ইতিহাসের সাক্ষী হতে দিল না এ দেশের ক্রিকেটপ্রেমী মানুষকে।
দিনের প্রথম বলেই আশরাফুলের বিরুদ্ধে তারস্বরে আবেদন করেছিলেন তিলকরত্নে দিলশান। কিন্তু আম্পায়ার দিলশানের ওই আবেদনে সাড়া দেওয়ার কোনো কারণ খুঁজে পাননি। কিন্তু ওই আবেদনটি আশরাফুলের আত্মবিশ্বাসকে কী একটু চিড় ধরিয়ে দিয়ে যায়নি! হেরাথের বলটি মিডল স্টাম্পে পিচ করে বেরিয়ে যাচ্ছিল। সেই বল ডাউন দ্য উইকেটে এসে খেলতে গিয়েই নিজের বিপর্যয় ডেকে আনেন আশরাফুল।