১৯৮৬ সালের পর থেকে শ্রীলঙ্কার মাটিতে ১৫টি ওয়ানডে খেলেছে বাংলাদেশ।
প্রতিটিতেই দেখেছে হারের মুখ। অবশেষে আজ ১৬তম ম্যাচে এসে সফল হলো টাইগাররা।
জয় পেল শ্রীলঙ্কার মাটিতেও। আর পাল্লেকেলের বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে ৩
উইকেটের দুর্দান্ত এই জয় দিয়ে ওয়ানডে সিরিজেও সমতা ফিরিয়েছে সফরকারী
বাংলাদেশ।
২৭ ওভারে ১৮৩ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিং করে এক ওভার হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে
পৌঁছে যায় মুশফিক বাহিনী। ৩৩ রানের ম্যাচ জেতানো ইনিংস খেলে শেষ পর্যন্ত
অপরাজিত ছিলেন নাসির হোসেন। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪০ রান এসেছে এনামুল হকের
ব্যাট থেকে।
শ্রীলঙ্কা সফরের ওয়ানডে সিরিজের প্রতিটি ম্যাচেই ছিল বৃষ্টির বাধা। প্রথম
ম্যাচে শ্রীলঙ্কা বাংলাদেশকে হারিয়েছিল ৮ উইকেটের ব্যবধানে। দ্বিতীয়
ম্যাচটি পরিত্যক্তই ঘোষণা করতে হয়েছিল বৃষ্টির কারণে। আজ তৃতীয় ম্যাচও
ছিল বৃষ্টিবিঘ্ন। বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের সময় বৃষ্টির কারণে দীর্ঘসময়
খেলা বন্ধ থাকে। অবশেষে খেলা পুণরায় শুরু হলেও ম্যাচের দৈর্ঘ্য কমিয়ে
ফেলা হয় ২৩ ওভার। ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতিতে বাংলাদেশের সামনে নতুন লক্ষ্য
নির্ধারণ করা হয় ২৭ ওভারে ১৮৩ রান। বৃষ্টি শুরু আগ পর্যন্ত ১৩.৪ ওভার শেষে
বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিল ১ উইকেটে ৭৮ রান। সেই হিসেবে জয়ের জন্য ৮০ বলে ১০৫
রানের লক্ষ্য নিয়ে দ্বিতীয় দফা ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ।
খেলা শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যেই সাজঘরের পথ ধরেন এনামুল হক। ৪০ রান করে আউট
হন এই ডানহাতি ওপেনার। উইকেটে নেমেই ঝড়ো ব্যাটিং করে ২৬ রানের একটা ইনিংস
খেলেন জহুরুল ইসলাম। তিনি আউট হন দলীয় ১১৯ রানের মাথায়। এরপর খুব অল্প
সময়ের মধ্যেই ফিরে যান অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদুল্লাহ।
স্কোরবোর্ডের চেহারা দাঁড়ায় ৫ উইকেটে ১৪৪ রান। ষষ্ঠ উইকেটে ২২ রানের
সময়োপযোগী জুটি গড়ে ভালোভাবেই জয়ের পথে এগিয়ে যাচ্ছিলেন নাসির হোসেন ও
মমিনুল হক। কিন্তু নিজের শেষ ওভারে বাংলাদেশকে বড় একটা ধাক্কা দেন লাসিথ
মালিঙ্গা। ঐ ওভারেই তিনি তুলে নেন মমিনুল ও জিয়াউর রহমানের উইকেট। ১১ রান
করে ফিরে যান মমিনুল। জয়ের জন্য তখন প্রয়োজন ছিল ১২ বলে ১৭ রান। এই
পর্যায়ে হয়তো জয়ের আশাই ভর করেছিল শ্রীলঙ্কান সমর্থকদের মনে। কিন্তু
তাদেরকে চরমভাবে হতাশ করেন নাসির হোসেন। থিসারা পেরেরার করা পরবর্তী ওভারের
তিনটি চার মেরে দলের জয় নিশ্চিত করেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। জয়টা
বিলম্বিত করতে চাননি বলেই বোধহয় শেষ বলটাতেও চার মেরে বসলেন সোহাগ গাজী।
সিরিজে সমতা আনল টাইগাররা।
বৃষ্টি শুরুর আগে শুরুটাও ভালোভাবেই করেছিল বাংলাদেশ। উদ্বোধনী জুটিতেই ৭৭
রান যোগ করেছিলেন দুই ওপেনার মোহাম্মদ আশরাফুল ও এনামুল হক। ১৩তম ওভারে
বাংলাদেশ শিবিরে প্রথম আঘাত হানেন সেনানায়েকে। ২৯ রান করে সাজঘরে ফেরেন
আশরাফুল। পরের ওভারেই খেলা বন্ধ করতে হয় বৃষ্টির বাধায়।
এর আগে টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে তিলকারত্নে দিলশানের ১২৫ রানের ইনিংসটির
সুবাদে ৩০২ রান সংগ্রহ করে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা। এছাড়া জানিথ পেরেরা ৫৬ ও
কুমার সাঙ্গাকারা ৪৮ রান করেন। বাংলাদেশের পক্ষে পাঁচটি উইকেট শিকার করেছেন
আব্দুর রাজ্জাক।

Social Plugin