Friday, March 29, 2013

মালালার মিলিয়ন ডলারের জীবনী

তালেবানের গুলি মালালা ইউসুফজাইকে আরও শাণিত করেছে। পাকিস্তানি এ কিশোরীকে যেন আরও তাতিয়ে দিয়েছে জঙ্গিদের হামলা। এবার সে স্মৃতিকথা প্রকাশের মাধ্যমে তার নারীশিক্ষা আন্দোলনকে আরও বেগবান করার পথ ধরেছে। আসছে শরতেই স্মৃতিকথা প্রকাশিত হতে যাচ্ছে তার। বইটির নাম আই অ্যাম মালালা।
জীবনী প্রকাশের জন্য মালালা ইতিমধ্যে প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান ওয়েইডেনফেল্ড অ্যান্ড নিকলসনের সঙ্গে একটি বড় অঙ্কের চুক্তি সই করেছে, যার মূল্যমান প্রায় ৩০ লাখ মার্কিন ডলার (২৩ কোটি ৪৫ লাখ টাকা)। এর মধ্য দিয়ে মাত্র ১৫ বছর বয়সেই ‘মিলিওনিয়ার’ বনে গেছে মালালা।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক পত্রিকা দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, এ বছরের শেষ নাগাদ মালালার স্মৃতিকথা প্রকাশিত হবে। যুক্তরাজ্য ও কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোয় বইটি প্রকাশ করবে ওয়েইডেনফেল্ড অ্যান্ড নিকলসন; বাকি বিশ্বে লিটল ব্রাউন।
স্মৃতিকথা প্রকাশের বিষয়ে মালালা বলেছে, ‘আমি আমার গল্প বলতে চাই। তবে এটা শুধু আমার একার গল্প নয়, এটা পৃথিবীর ছয় কোটি ১০ লাখ শিশুর গল্প, যারা শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত।’ সে আরও বলেছে, ‘আমি সেই প্রচারণার অংশ হতে চাই, যার মাধ্যমে পৃথিবীর সব শিশু স্কুলে যাওয়ার সুযোগ পাবে। এটি তাদের মৌলিক অধিকার।’
মালালার কথা, ‘আমি আশা করছি, বইটি বিশ্বের সব প্রান্তের মানুষের কাছে পৌঁছাবে। এর মধ্য দিয়ে তারা জানতে পারবে, কিছু শিশুর জন্য শিক্ষার সুযোগ পাওয়া কতটা কঠিন।’
২০১২ সালের ৯ অক্টোবর তালেবানের গুলিতে মারাত্মক আহত হয় মালালা। প্রথমে কিছুদিন পাকিস্তানে চিকিৎসা দেওয়ার পর যুক্তরাজ্যে নেওয়া হয় তাকে। লন্ডনের কুইন এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে গত মাসে সে বাসায় ফিরে যায়। বর্তমানে সপরিবারে যুক্তরাজ্যে বসবাস করছে সে। সেখানকার একটি স্কুলেও সে ভর্তি হয়েছে।
মালালার স্মৃতিকথা প্রকাশের বিষয়ে ওয়েইডেনফেল্ড অ্যান্ড নিকলসনের ডেপুটি প্রকাশনা পরিচালক আরজু তাহসিন বলেন, সাহস আর ভিশনের প্রতীক হয়ে থাকবে এই বই। মালালা অনেক ছোট বয়সেই বেশি অভিজ্ঞলব্ধ হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘আমার এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই যে তার জীবনের গল্প সব প্রজন্মের পাঠক, বিশেষ করে যারা শিক্ষার অধিকার ও স্বাধীনতায় বিশ্বাসী, তাদের মধ্যে অনুপ্রেরণা সৃষ্টি করবে।’
তালেবানের গুলিতে আহত হওয়ার পর সাহসিকতার জন্য মালালার ঝুলিতে এখন পর্যন্ত বেশ কিছু অর্জন যুক্ত হয়েছে। শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের মনোনয়ন তালিকায়ও তার নাম উঠেছে। এ ছাড়া ১২ জুলাইকে মালালা দিবস হিসেবে ঘোষণা করেছে জাতিসংঘ। টাইম সাময়িকীর বর্ষসেরা ব্যক্তিত্বের সংক্ষিপ্ত তালিকায়ও উঠে এসেছে তার নাম। এপি, ডন ও গার্ডিয়ান।