Saturday, March 30, 2013

উড়াল সেতুতে উড়ন্ত উল্লাস

ফাগুনের পড়ন্ত বিকেলে গতকাল শুক্রবার উত্সবের দোলায় দুলেছে সদ্য উদ্বোধন হওয়া ‘জিল্লুর রহমান উড়াল সেতু’ এলাকা। উড়াল সেতুকে ঘিরে এর ওপর তো বটেই, আশপাশেও ছিল আনন্দ আর উল্লাসের আমেজ।
গত ২৭ মার্চ উদ্বোধনের দিন বিকেলেই উত্সুক মানুষের ঢেউ আছড়ে পড়ে এই উড়ালসেতুতে। তবে হরতাল থাকায় এই কয়েকদিন রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে বিনোদন পিপাসুদের ভিড় তুলনামূলকভাবে কম ছিল। গত বৃহস্পতিবার ছিল সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস। তাই আনন্দের মাত্রা ছিল খানিকটা কম । কিন্তু সপ্তাহের ছুটির দিন হওয়ায় গতকাল বিকেলে ছিল উপচে পড়া ভিড়। কেউ এসেছেন মিরপুর থেকে, কেউ খিলক্ষেত, কেউ বনানী, আর কেউবা ক্যান্টনমেন্ট এলাকা থেকে। রাজপথ ফাঁকা থাকায় সবাই চোখের পলকে চলে এসেছেন উড়াল সেতুতে।
উড়াল সেতুর আশপাশের চিরসবুজ বৃক্ষরাজি, কিছুটা দূরে বিমানবন্দর থেকে উড়াল দেওয়া বিমানগুলোর নীলাকাশ ভেদ করে ওঠানামার দৃশ্য ঝিমিয়ে পড়া ঢাকাবাসীকে যেন জাগিয়ে তুলেছে। পিচঢালা পথে পাশে রেলগাড়িগুলোর যাওয়া-আসা তো আছেই। এজন্য ঘরের কোণে অলস বসে না থেকে, যে যার মতো করে চলে এসেছেন উড়ালসেতুর প্রান্তরে। স্ত্রী, সন্তান নিয়ে এসেছেন অনেকে। অনেকে আবার মা-বাবার সঙ্গে। আর প্রিয় মানুষকে সঙ্গে নিয়ে হেঁটে চলেছেন অবিরত উড়াল সেতুর এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে। এ ছাড়া ব্যক্তিগত গাড়ি বা মোটরসাইকেল নিয়ে ছোটাছুটি তো আছেই।
গতকাল মিরপুর ১১ নম্বর সেকশন থেকে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান এসেছিলেন স্ত্রী ও দুই বছরের মেয়ে নওশীনকে সঙ্গে নিয়ে। তিনি প্রথম আলো ডটকমকে জানান, গাড়ি নিয়ে বাসা থেকে বের হয়েছি বিকেল চারটায়। প্রশস্ত রাস্তা থাকায় মাত্র ১৫ মিনিটে আসতে পেরেছেন উড়াল সেতুর একেবারে মাঝামাঝি।
বিকেলের দিকে ভিড় বেশি না থাকলেও সন্ধ্যার পর থেকে লোক সমাগম বাড়তে থাকে উড়াল সেতুতে। তবে হাঁটার সুনির্দিষ্ট পথ না থাকায় সুবিশাল উড়াল সেতুর একেবারে মাঝখানে চলাচল করতে দেখা গেছে অনেককেই। মনের আনন্দে ছবি তুলছেন যে যাঁর মতো করে। চালকেরা সুযোগ পেলেই দ্রুত গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছেন। অনেকে আবার সব উপেক্ষা করে উড়াল সেতুর ডিভাইডারে বসে পড়েছেন।
এ ছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতি না থাকায় মোটরসাইকেলে কোনো কোনো তরুণ বিভিন্ন ধরনের কসরত প্রদর্শন করেছেন উড়াল সেতুর ওপর। তাই বিনোদনপ্রেমীদের শঙ্কা, এতে ঘটে যেতে পারে বড় কোনো দুর্ঘটনা। চোখের পলকে আনন্দ হতে পারে বেদনার রঙে নীল।