Friday, March 1, 2013

সারা দেশে জামায়াত-পুলিশ সংঘর্ষ চার পুলিশ সদস্যসহ নিহত ৩৯

ঢাকা: একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসির রায় ঘোষণার আগে ও পরে সারা দেশে জামায়াত-পুলিশ সংঘর্ষে নিহত হয়েছে ৩৯ জন। রায় ঘোষণার পর রংপুরে ছয়জন, ঠাকুরগাঁওয়ে পাঁচজন, চট্টগ্রামের লোহাগড়ায় পুলিশ সদস্যসহ দুইজন, গাইবান্ধায় তিন পুলিশ সদস্যসহ  ছয়জন, সাতক্ষীরায় নয়জন, কক্সবাজারে দুইজন, নোয়াখালীতে দুইজন এবং বগুড়া, মৌলভীবাজার, দিনাজপুরে ও নাটোরে চারজন নিহত হয়। আর রাজধানী ঢাকায় মারা গেছেন একজন।এছাড়া রায় ঘোষণার আগে সিরাজগঞ্জে নিহত হয় দুইজন।

বৃহস্পতিবার দুপুরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১’এর চেয়ারম্যান বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীর রায় ঘোষণা করেন। নতুন বার্তা ডটকমের ব্যুরো প্রধান ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:

রংপুর: রায় ঘোষণার আধাঘণ্টার মধ্যে রংপুরের মিঠাপুকুর ও পীরগাছায়  জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে মিঠাপুকুরে ছয়জন নিহত হয়েছে।  তারা হলেন- বালারহাট হুলাশু এলাকার  মাহমুদল হাসান (২৮), মির্জাপুরের মশিউর রহমান(২৫), লতিফপুরের সাদেকুল ইসলাম(২৫),  মাঠের হাটের আশিকুর রহমান এবং কাশিপুরের সাহেদ আলী(৪৩) মারা যায়। এছাড়া রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে একজন। তার পরিচয় পাওয়া যায়নি।

গাইবান্ধা: সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় জামায়াত-পুলিশের সংঘর্ষে তিন পুলিশ সদস্যসহ  ছয়জন নিহত হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে সুন্দরগঞ্জের বামনডাঙ্গা পুলিশ তদন্তকেন্দ্রে তিন পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।

অপরদিকে, সুন্দরগঞ্জ শহরে জামায়াত-পুলিশ সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়।

ঠাকুরগাঁও:  সাঈদীর ফাঁসির রায়ের প্রতিবাদে জেলার সদর উপজেলা গড়েয়াতে জামায়াত-পুলিশ সংঘর্ষে পাঁচজন মারা যায়। ঘটনাস্থলেই একজন মারা যান। স্থানীয় ক্লিনিকে মারা যান দুইজন। আর বাকি দুইজন মারা যায় জেলা সদর হাসপাতালে।

নিহতরা হলেন- ফিরোজ (২৮) পিতা- রবিউল হক, রুবেল (১৮) পিতা- রুহুল আমীন, নিরঞ্জন ওরফে মিথু (১৬) পিতা-শুক্র পাল, মনির (১৭) পিতা- মমিনুল ও সুমন (২২) পিতা- রফিকুল।

চট্টগ্রাম: রায় ঘোষণার পর লোহাগাড়া উপজেলার চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়কের রাজঘাটা এলাকায় পুলিশের সঙ্গে জামায়াত-শিবির কর্মীদের সংঘর্ষে পুলিশের এক সদস্য (তারেক) এবং মেজবাহ উদ্দিন নামে এক ব্যক্তি নিহত হন।

এছাড়া সাতকানিয়া উপজেলার কেরানীহাট এলাকায় সংঘর্ষে কমপক্ষে ২০ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।

নাটোর: সাঈদীর রায় ঘোষণার পর নাটোরের লালপুরের নাটোর-পাবনা মহাসড়কের কদিমচিলানে হরতাল সমর্থকরা পুলিশের গাড়ি ও একটি সিএনজি পিকআপ পুড়িয়ে দেয়। এছাড়া সংঘর্ষে খায়রুল ইসলাম নামে এক যুবলীগকর্মী নিহত হয়। নিহত খায়রুল কদিমচিলান গ্রামের দোলু ডাক্তারের ছেলে।

সাঈদীর মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণার পর উপজেলার কদিমচিলানের গোধরা গ্রামে পুলিশের সঙ্গে হরতাল সমর্থকদের সংঘর্ষ হয়। অতর্কিত হামলা করে তারা পুলিশের ব্যবহৃত একটি হিউম্যান হলারে (সিএনজি) আগুন ধরিয়ে দেয়।

এ সময় পুলিশের সঙ্গে আওয়ামী লীগকর্মীরা শিবিরকর্মীদের উদ্দেশ্যে গুলি করলে দুই শিবিরকর্মী গুলিবিদ্ধ হয়। এ সময় শিবির জামায়াতকর্মীরা পাল্টা হামলা করলে পুলিশসহ ১১জন আহত হয়। আহতদের মধ্যে যুবলীগ কর্মী খায়রুল ইসলামকে (৩৬) হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যায়। আহত ছয় পুলিশ সদস্যের মধ্যে আনিছুর রহমান ও সাইদুল ইসলামকে নাটোর সদর হাসপাতাল ও বাকি চারজনকে বনপাড়া পাটোয়ারী ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।

সাতক্ষীরা: সাঈদীর ফাঁসির রায় ঘোষণার প্রতিবাদে ও তার মুক্তির দাবিতে বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে জামায়াত- শিবির কর্মীদের সঙ্গে পুলিশ ও বিজিবি সদেস্যর সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় রাবার বুলেট ও টিয়ার শেলের আঘাতে নয়জন নিহত ও পুলিশ সাংবাদিকসহ অর্ধশত আহত হয়। 

নিহতরা হলেন- সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ঘোনা গ্রামের রবিউল ইসলাম (২৫), মোশারফ হোসেন, এমদাদ হোসেন ও নেবাখালী গ্রামের অজিয়ার রহমানের ছেলে শাহিন (২৫), সদরের  শিবিরকর্মী আলী মোস্তফা (২০), খানপুরের জামায়াতকর্মী সাইফুল্লাহ (২০), হরিশ পুরের শিবিরকর্মী তুহিন(২০), ঘোনার জামায়াত কর্মী আনারুল (৩০) ও ইকবাল।

বিকেল চারটায় সদর উপজেলার সাঈদী মুক্তি পরিষদ, জামায়াত ও শিবির নেতাকর্মীরা শহরের কদমতলা বাজার থেকে এক প্রতিবাদ মিছিল বের করে শহরের অভিমুখে আসার সময় সার্কিট হাউজ মোড়ে পৌঁছালে পুলিশ ও বিজিবি বাধা দেয়। এ সময় মিছিল কারীরা বাধা উপেক্ষা করে সামনে এগোতে চাইলে পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা  রাবার বুলেট ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়ার চেষ্টা করে।

এ সময় মাওলানা সাঈদী মুক্তি পরিষদ, জামায়াত ও শিবির নেতাকর্মীরা বাধা উপেক্ষা করে সামনে এগিয়ে যেতে চাইলে সংঘর্ষ বেধে যায়। এ সময় ছাত্রলীগ, পুলিশ ও বিজিবির গুলিতে তিনজন নিহত ও অর্ধাশতাধিক নেতা কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছে বলে জেলা জামায়াতে প্রচার সম্পাদক আজিজুর রহমান জানান। 

কক্সবাজার: দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসির রায় ঘোষণার পর কক্সবাজার সদরসহ উপজেলাগুলোতে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। দুপুরে জামায়াত-শিবির রাস্তায়  বিক্ষোভ করে। এ সময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে জেলার বিভিন্ন স্থানে শতাধিক রাউন্ড গুলি ছোড়ে। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে দুইজন নিহত হন। ২০ জন গুলিবিদ্ধসহ আহত হন শতাধিক।

নিহতরা হলেন সাজ্জাদ ও আব্দুর রশিদ। বিকাল সাড়ে চারটার দিকে পুলিশের গুলিতে তারা নিহত হন।

অপরদিকে, সাঈদীর ফাঁসির রায়কে স্বাগত জানিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও অংগ সংগঠনের নেতাকর্মীরা চকরিয়া, উখিয়া ও পেকুয়াতে আনন্দ মিছিল বের করে। এসময় তাদের সঙ্গে জামায়াত শিবির কর্মীদের সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়।

দুপুর থেকে কক্সবাজার জেলার পেকুয়া উপজেলা সদর ও রাজাখালী এলাকায় বিএনপি জামায়াত সমর্থকদের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এসময় আওয়ামী লীগ সমর্থিত বেশ কিছু বাড়ি-ঘর ও দোকানপাট ভাঙচুর করা হয়। বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসীকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ ফাঁকা ছোড়ে। এছাড়াও আহত হয় অর্ধশতাধিক।

চকরিয়া পৌর শহর এবং বিভিন্ন গ্রামে ব্যাপক বিক্ষোভ ও ভাঙচুর হয়। এসময় গুলিবিদ্ধসহ আহত হয় বেশ কয়েকজন। ব্যরিকেট দেয়া হয় চকরিয়া-মহেশখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের বেশ কয়েকটি পয়েন্টেও।

কক্সবাজার সদর উপজেলার ঈদগাঁওতে কয়েক সহস্রাধিক লোক রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করলে পুলিশের সঙ্গে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এসময় তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়। কক্সবাজার-টেকনাফ মহাসড়কে কোটবাজার ও উখিয়াসহ বিভিন্ন পয়েন্টে বিক্ষোভ করে।


নোয়াখালী: সাঈদীর ফাঁসির রায় ঘোষণার পরপরই নোয়াখালীর জেলা শহর মাইজদী ও বেগমগঞ্জসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে জামায়াত-শিবির কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংর্ঘষ হয়। এতে দুইজন নিহত হয়।

সাঈদীর মামলার রায় ঘোষনার পরই নোয়াখালী শহরের মফিজ প্লাজা ও গোদার মসজিদ এলাকা থেকে মিছিল বের করে জামায়াত ও শিবিরের কর্মীরা। তারা এসময় সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে জামায়াত-শিবিরের কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে।

শিবির কর্মীরা এসময় বেশকিছু ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ প্রায় শতাধিক রাউন্ড  গুলি ছোড়ে। একপর্যায়ে শিবির কর্মীরা দত্তেরহাটে আল-আমিন বাসের ডিপোতে বারটি বাস ভাঙচুর করে এবং চারটি বাসে আগুন দেয়। দত্তের হাটে একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান এবং এ সময় সংঘর্ষে আরো ১০ জন আহত হন ।

ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার (এসপি) মাহবুব রশীদ জানান, ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

অন্যদিকে, জেলার বেগমগঞ্জের রাজগঞ্জ ইউনিয়নের  রাজগঞ্জ বাজারে হিন্দু অধ্যুসিত গঙ্গা প্রসাদ ভূঁইয়া বাড়ি, সুতার বাড়িসহ কয়েক বাড়ি ভাঙচুর ও  আগুন দেয়া হয়।

হামলা ও ভাঙচুরের ওইসব বাড়ির নারী-পুরুষসহ পাঁচ-ছয়জন আহত হয়েছে বলে স্থানীয় সুত্র জানিয়েছে। খবর পেয়ে বেগমগঞ্জ সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মাহবুব আলম খানের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ও র্যা ব  রাজগঞ্জ ঘটনাস্থলে যায়।

এ সময় রাজগঞ্জ বাজারে পুলিশ পরিস্থি নিয়ন্ত্রণে আনতে এলোপাথারি গুলি চালালে লিটন(২৪) নামে এক মাছ বিক্রেতা মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায় এবং আরো ৫/৬জন গুলিবিদ্ধ হয়।

দিনাজপুর: রাণীরবন্দরে পুলিশ ও বিজিবির সঙ্গে জামায়াত র্মীদের সংঘর্ষ ঘটে। এ সময় গুলিতে জামায়াত কর্মী ফয়জার রহমান ঘটনাস্থলেই মারা যান।

এ সময় পুলিশের গুলিতে তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়। এছাড়া সংঘর্ষে একজন পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।

পরিস্থিতি নিয়স্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে বিপুল সংখ্যক পুলিশ, বিজিবি ও র্যাব মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে থেমে থেমে সংঘর্ষ চলছে। উত্তেজিত জনতা রাণীরবন্দরে দুইটি বাসে অগ্নিসংযোগ ও তিন থেকে চারটি বাস ভাঙচুর করে।

মৌলভীবাজার: মৌলভীবাজার জেলার সীমান্ত উপজেলা বড়লেখা দক্ষিণভাগ ও কাঁঠাতলি ইউনিয়নের জামায়াত-পুলিশ সংঘর্ষে লোকমান হোসেন (২৫) নামে এক যুবক নিহত এবং অন্তত  ১০ জন আহত হয়েছে।

এছাড়া জামাত-শিবিরের হামলায় দক্ষিণভাগসহ বড়লেখার বিভিন্ন স্থানে দোকান-পাঠ ভাঙচুর ও একটি স মিলে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।

এ সময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শতাধিক রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষণ করেছে।  বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে এলাকায় বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।

বড়লেখা থানা পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানান, দেলওয়ার হোসেন সাঈদীর ফাঁসির রায় ঘোষণার পর জামাত-শিবিরের নেতাকর্মীরা বৃহস্পতিবার দুপুরে মৌলভীবাজারের বড়লেখা দক্ষিণভাগ বাজারের প্রায় ১০টি দোকানে ভাঙচুর চালায়। এ সময় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি লতা মিয়ার স মিলে অগ্নিসংযোগ করা হয়।

অপরদিকে, কাঁঠালতলি সওদাঘর ব্রিকফিল্ডের সামনে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা বিখোভ করে। এক পর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পুলিশের সঙ্গে জামায়াত-শিবিরের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলতে থাকে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শতাধিক রাউন্ড গুলি ও টিয়ারশেল ছোড়ে । এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন প্রায় ১০ জন। এদের মধ্যে লুকমান হোসেন নামের এক যুবক মারা গেছে। তার বাড়ি দক্ষিণভাগ গ্রামে। পিতার নাম আব্দুল মন্নান। 

রড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মর্তা (ওসি/তদন্ত) ওয়াকিল উদ্দিন জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় পরিস্থিতি তাদের নিয়ন্ত্রণে। বড়লেখা উপজেলা ইউএনও সৈয়দ আমিরুল ইসলাম, এডিশনাল এসপি নুরুল ইসলাম এলাকা পরিদর্শন করেছেন।
বগুড়া: বগুড়ার সুজাদাবাদ এলাকার দহপাড়া গ্রামে জামায়াত-পুলিশের সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছে। নিহতের নাম সবেদ আলী (৫৫)। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে তিনি মারা যান।

সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জে হরতাল চলাকালে সংঘর্ষের সময় পুলিশের গুলিতে দু’জন মারা গেছেন। তারা হলেন সদর উপজেলার চণ্ডিদাসগাতি গ্রামের আব্দুল জলিলের ছেলে শিবিরকর্মী রুহুল আমিন (১৮) ও রাজাখাঁরচর গ্রামের আলমগীর হোসেনের ছেলে শিবিরকর্মী মুক্তার হোসেন। সদর উপজেলার চণ্ডিদাসগাতিতে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

সকাল আটটায় চণ্ডিদাসগাতিতে সড়ক অবরোধ করে পিকেটাররা। এরপর পুলিশ ও র্যা ব সেখানে অবস্থান নেয়। সকাল সাড়ে ১১টার পর সংঘর্ষ শুরু হয়। পুলিশের প্রতি ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে পিকেটাররা। পুলিশ ও র্যা বও পাল্টা গুলি চালায়। ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে আহত হয় অর্ধশতাধিক। গুলিবিদ্ধ হয় কমপক্ষে ২০ জন। গুরুতর অবস্থায় কয়েকজনকে সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতাল ও বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। এরপর সদর হাসপাতালে একজন এবং অন্য এক ক্লিনিকে নেয়ার পথে মারা যায় আরও একজন।

এর আগে সকাল থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম সংযোগ সড়কের নলকাতে মহাসড়ক অবরোধ করে পিকেটাররা। এ সময় তারা উত্তরবঙ্গগামী অন্তত পাঁচটি বাস-ট্রাক ভাঙচুর করে। সকাল ৮টার দিকে পুলিশ হরতালকারীদের বাধা দিলে পুলিশের সঙ্গে হরতাল সমর্থকদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশ পাঁচ রাউন্ড রাইফেলের গুলি, ৩০ রাউন্ড টিয়ারশেল ও অসংখ্য রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এ সময় তিন মহিলাসহ চারজনকে আটক করা হয়েছে।

বেলকুচিতে পুলিশ, আওয়ামী লীগ ও পিকেটারদের সংঘর্ষে কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছে। জিনিয়াস ল্যারেটরি স্কুলে আগুন দেয়া হয়েছে। বেলকুচি ইসলামী ব্যাংকে ভাঙচুর করা হয়। এ সময় তিনজনকে আটক করে পুলিশ। এদিকে বৃহস্পতিবার সকালে উল্লাপাড়ার শ্রীকোলা বাসস্ট্যা এলাকা থেকে পুলিশ উপজেলা জামায়াতের আমির শাহজাহান আলীসহ চারজনকে আটক করে।