পাকিস্তানের
বেলুচিস্তানে বিস্ফোরণে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৪ জনে। শিয়া
মতাবলম্বী হাজারা সম্প্রদায়ের মানুষকে লক্ষ্য করে গত শনিবার চালানো ওই
হামলায় শিশু ও নারীসহ আহত হয়েছে ২০০ জন। এ ঘটনায় গতকাল রবিবার একদিনের শোক
পালন করেছে প্রাদেশিক সরকার। প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি ও
প্র্রধানমন্ত্রী রাজা পারভেজ আশরাফ হামলার নিন্দা জানিয়েছেন।
মজলিস ওয়াহদাতুল মুসলিমিন (এমডাব্লিউএম) এবং মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্টও
(এমকিউএম) আদালাভাবে ঘোষণা দিয়ে গতকাল শোক দিবস পালন করেছে। তবে তেহরিক
নজফ-ই-ফিক-ই-জাফরিয়া (টিএনএফজে) তিন দিনের শোক পালনের ঘোষণা দিয়েছে।
শিয়াপন্থী সংগঠনটি সরকারের বিরুদ্ধে শিয়া সম্প্রদায়ের মানুষের নিরাপত্তা
দিতে ব্যর্থতার অভিযোগ তুলেছে। তোলা হয়েছে গোয়েন্দা ব্যর্থতারও অভিযোগ।
নিষিদ্ধ জঙ্গি গোষ্ঠী লস্কর-ই-জাংভি (এলইজি) ঘটনার দায় স্বীকার করেছে।
গত শনিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টায় প্রাদেশিক রাজধানী কোয়েটার কাছে হাজারা
শহরের একটি জনবহুল বাজারে ওই হামলা চালানো হয়। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, একটি
পানির ট্যাংকের ভেতর প্রায় ৮০০ কিলোগ্রাম বিস্ফোরক রাখা ছিল। বিস্ফোরণে
পাশের একটি দোতলা ভবন সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে।
কোয়েটা পুলিশ প্রধান জুবাইর মেহমুদ গতকাল জানান, মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৮৪
হয়েছে। আহতদের মধ্যে ২৫ থেকে ৩০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। উন্নত চিকিৎসার
জন্য তাদের গতকাল করাচি নেওয়ার কথা ছিল। প্রাদেশিক স্বরাষ্ট্রসচিব আকবর
হোসেন দুররানি আশঙ্কা প্রকাশ করেন, ধ্বংসস্তূপের নিচে আরো কেউ চাপা পড়ে
থাকতে পারে। মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।
হাজারা ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (এইচডিপি) চেয়ারম্যান আজিজুল্লাহ হাজারা
গতকাল এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের পাকড়াও করার লক্ষ্যে অভিযান শুরু করতে
প্রাদেশিক সরকারকে ৪৮ ঘণ্টার সময় বেঁধে দিয়েছেন। অন্যথায় প্রতিবাদ-বিক্ষোভ
শুরুর হুমকি দেন তিনি।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ঘটনার পরপরই স্থানীয় বিক্ষুব্ধ শিয়ারা ঘটনাস্থলের
চারদিক ঘিরে ফেলে। তারা সেখানে পুলিশ ও উদ্ধারকর্মীদের প্রবেশে বাধা দেয়।
এক পর্যায়ে পুলিশ সদস্যদের লক্ষ্য করে ঢিলও ছোড়ে তারা। তবে এরপর থেকে
ঘটনাস্থলে সাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। নিরাপত্তার জন্য সেনাবাহিনী
নামানো হয়েছে।
এর আগে গত ১০ জানুয়ারি কোয়েটার শিয়া অধ্যুষিত এলাকার একটি স্নুকার ক্লাবে দুটি আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণে কমপক্ষে ৯৩ জন মারা যায়।
আহত হয় ১২১ জন। ওই ঘটনার জেরে শিয়াদের বিক্ষোভের মুখে তখন প্রাদেশিক
সরকারকে বিলুপ্ত করে গভর্নরের শাসন জারি করে। ১ ফেব্রুয়ারি একটি শিয়া
মসজিদে চালানো হামলায় ২৪ শিয়া মারা যায়।