১৯ ফেব্রুয়ারি ছিল প্রখ্যাত জ্যোতির্বিদ নিকোলাস কোপারনিকাসের জন্মদিন।
অনুসন্ধান সেবাদাতা গুগল হোমপেজে তাঁর জন্মদিন উপলক্ষে বিশেষ একটি ডুডল
তৈরি করেছিল। এ ডুডলে সূর্যকে কেন্দ্র করে গ্রহের আবর্তন দেখানো হয়। খবর
‘গার্ডিয়ান’-এর।
জ্যোতির্বিজ্ঞানের এ প্রবাদপুরুষের জন্ম হয়েছিল ১৪৭৩ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি,
পোল্যান্ডে—এমন ধারণাই প্রচলিত। পোল্যান্ডের তুরিন শহরে ধনী এক ব্যবসায়ী
পরিবারে তাঁর জন্ম।
১৭ বছর বয়সে কোপারনিকাস ক্রাকাউ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। এরপর তিনি
ইতালির বলোনিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ধর্ম আইন পড়া শেষ করার পাশাপাশি বিখ্যাত
গণিতবিদ ও পণ্ডিতদের কাছ থেকে গণিত ও জ্যোতির্বিদ্যা বিষয়েও পারদর্শিতা
অর্জন করেন। পরে তিনি পদুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শন ও চিকিত্সাবিজ্ঞানে
পড়াশোনা করেন।
১৬ শতকেই জ্যোতির্বিদ নিকোলাস কোপারনিকাস জানিয়েছিলেন, পৃথিবী সূর্যের
চারদিকে আবর্তিত হয়। ওই সময় ধারণা করা হতো, বিশ্বের কেন্দ্রেই আছে আমাদের
পৃথিবী।
কোপারনিকাসের এ বৈপ্লবিক ধারণা সেসময়ের যাজকেরা মানতে পারেননি। ১৫৪৩ সালের
মে মাসে গবেষণারত অবস্থায় তাঁকে হত্যা করা হয়। মারা যাওয়ার সময় তাঁর
বৈপ্লবিক এ গবেষণাপত্র তাঁর হাতে ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
পোল্যান্ডের বাল্টিক কোস্টের ফ্রমব্রোক ক্যাথেড্রালের মেঝের নিচে তাঁকে
সমাহিত করা হয়। সেসময়ের ধর্মযাজকেরা কোপারনিকাসের নতুন তত্ত্ব ধর্মবিরোধী
বলে মানতে না পারলেও পরে তাঁর সে গবেষণা সত্য প্রমাণিত করেছেন গবেষকেরা।
গবেষকেরা প্রমাণ করেছেন, সৌরজগতের প্রাণকেন্দ্র সূর্য। আর সূর্যকে কেন্দ্র
করেই ঘুরছে পৃথিবীসহ অন্যান্য গ্রহ। কোপারনিকাসের গবেষণায় কোনো ভুল ছিল না।
৫০০ বছর আগে জ্যোতির্বিদ নিকোলাস কোপারনিকাসের যে আবিষ্কারকে বাতিল করে
দিয়েছিলেন রোমান ক্যাথলিক চার্চের যাজকেরা, ২০১০ সালে এসে সেই সময়ের একজন
নায়ক হিসেবে তাঁকে আবার সম্মানের সঙ্গে পুনরায় সমাধিস্থ করেছেন পোলিশ
যাজকেরা।
২০০৫ সালে খুঁজে পাওয়া তাঁর মাথার খুলি ও হাড়; যেখান থেকে উদ্ধার করা
হয়েছিল, সেখানেই আবার ধর্মীয় রীতি মেনে তাঁকে সমাধিস্থ করেন যাজকেরা।
প্রচলিত আছে, কোপারনিকাস ওই গির্জাতেই চিকিত্সক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।