Wednesday, February 20, 2013

সোনার চেয়ে দামি উল্কার খোঁজে মানুষের ঢল!

এক খণ্ড উল্কাপিণ্ড সোনার চেয়েও দামি হতে পারে। আর তাই উল্কাপিণ্ডের খোঁজে রাশিয়ার উরাল পাহাড়ের দিকে ছুটছে মানুষ। এক খবরে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
রাশিয়ার মধ্যাঞ্চলীয় উরাল এলাকায় ১৫ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার সকালে প্রচণ্ড বিস্ফোরণের পর আকাশ থেকে জলন্ত একটি বস্তু এসে পড়েছে। বিস্ফোরণের ধাক্কায় জানালার কাঁচ ভেঙে এক হাজার ২০০ জন মানুষ আহত হয়েছে এবং তিন কোটি ডলারেরও বেশি ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন দেশটির কর্মকর্তারা। এ বস্তুটি উল্কাপিণ্ড বলে নিশ্চিত করেছেন গবেষকেরা।
মস্কো থেকে ১৫শ’ কিলোমিটার পূবের শিল্প শহর চেলিয়াবিনস্কে আকাশে উজ্জ্বল আলো ছড়িয়ে উল্কাপিণ্ডটি কাছাকাছি কোথাও মাটিতে এসে আঘাত হানে। পরে জানা যায়, চেলিয়াবিনস্কের শহর চেবারকুলের কাছে একটি লেকে এসে পড়েছে বৃহদাকারের এ উল্কা। উল্কাটি সাদা ধোঁয়ার একটি দীর্ঘ রেখা রেখে যায়, যা ২শ’ কিলোমিটার দূরের ইয়েকেটেরিনবার্গ শহর থেকেও দেখা গেছে। উল্কাপিণ্ডের ছোটো ছোটো টুকরার সন্ধানে এখন মানুষ ছুটছে ওই এলাকায়।
ধারণা করা হচ্ছে, প্রতিখণ্ড উল্কা অনেক দামে বিক্রি করা যাবে। তাই উল্কা সন্ধানী অনেক মানুষ বরফ, তুষারের মধ্যেও খুঁজে ফিরছেন দামি এক টুকরো উল্কাপিণ্ড।
দিমিত্রি কাচকেইন নামের এক শৌখিন উল্কাসন্ধানীর ভাষ্য, এক টুকরো বা স্রেফ এক গ্রাম উল্কা বা মহাজাগতিক পদার্থের একটি ক্ষুদ্র খন্ডের দাম হতে পারে ৬৬ হাজার রুবল বা প্রায় আড়াই হাজার মার্কিন ডলার যা সোনার চেয়ে ৪০ গুণ দামি। তবে শুধু বাজার মূল্য হিসেবেই উল্কাকে বিবেচনা করা যাবে না। যত বেশি খণ্ড সংগ্রহ করা যাবে দাম তত বেশি চড়া হবে।
সবার আগে উরাল ফেডারেল ইউনিভার্সিটির গবেষকেরা ৫৩ খণ্ড উল্কা খুঁজে পাওয়ার ঘোষণা দেন। গবেষকেরা পরীক্ষা করে নিশ্চিত হয়েছেন যে, ছোটো একটি উল্কাপিণ্ডের টুকরো এগুলো।
গবেষকেরা যে টুকরোগুলো পেয়েছেন সেগুলোর আকার খুবই ছোটো। তবে গবেষকেরা আশা করছেন, উল্কাখণ্ডটির আরও বড় টুকরা হয়ত তাঁরা খুঁজে পাবেন।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চেলিয়াবিনস্কের আশপাশের এলাকা থেকে ২০ হাজারের বেশি মানুষ উল্কাপিণ্ডের খোঁজে নেমেছে। উল্কাসন্ধানীরা অনেকেই এ বস্তুটিকে মহামূল্যবান মনে করছেন। তাই তাঁরা কোনো টুকরো পেলে বিক্রি করতে নারাজ। তাঁরা উল্কাপিণ্ডের টুকরা খুঁজে পেলে স্মারক হিসেবে নিজের কাছে রেখে দিতে চান।
এদিকে, উল্কা নিয়ে অনলাইনে কেনা-বেচা বেশ জমজমাট হওয়ার বিষয়টিও চোখে পড়ছে।