বিশ্বের বড় বড় ওয়েবসাইট হ্যাকিংয়ে চীনের সামরিক বাহিনীর জড়িত থাকার
জোরালো লক্ষণ খুঁজে পাওয়ার দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের একটি সাইবার
নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান। ম্যানডিয়্যান্ট নামের ওই প্রতিষ্ঠানের দাবি, ২০০৬
সাল থেকে চীনের সামরিক বাহিনীর গোপন শাখা ইউনিট ৬১৩৯৮ এই হ্যাকিং করে আসছে।
ম্যানডিয়্যান্ট জানায়, সারা বিশ্বের অন্তত ১৪১টি প্রতিষ্ঠানের শত শত
টেরাবাইট তথ্য কৌশলে হ্যাকিং করেছে ইউনিট ৬১৩৯৮-এর সেল এপিটি১। সাংহাইয়ের
একটি বেনামি ভবনে এই হ্যাকিংয়ের কাজ চলছে। এর আগেও একই ধরনের অভিযোগ
উঠেছে। তবে চীন বরাবরই বিদেশি প্রতিষ্ঠান ও বিদেশি সরকারের তথ্য
হ্যাকিংয়ের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
ওয়াশিংটনে অবস্থিত চীনা দূতাবাসের কর্মকর্তারা গত সোমবার নিউইয়র্ক
টাইমসকে বলেন, চীনা আইনে হ্যাকিং অবৈধ। তাই তাঁদের সরকারেরও এর সঙ্গে জড়িত
থাকার কথা নয়।
ম্যানডিয়্যান্ট জানায়, ২০০৪ সাল থেকে হ্যাকিং করা শত শত তথ্য তারা তদন্ত
করেছে। এতে দেখা গেছে, বেশির ভাগ তথ্যই অ্যাডভান্সড পারসিসটেন্ট থ্রেট
(অত্যাধুনিক অনড় হুমকি) পর্যায়ের। এ পর্যন্ত যেসব তথ্য-উপাত্ত পাওয়া
গেছে তাতে এটাই প্রমাণিত হয়, এই হ্যাকিংয়ের পেছনে চীনা প্রতিষ্ঠান জড়িত
এবং চীন সরকার বিষয়টি অবগত। প্রতিষ্ঠানটি আরও বলেছে, ‘আমরা মনে করি,
সরাসরি সরকারি সমর্থন পাওয়ায় এপিটি১-এর পক্ষে দীর্ঘ মেয়াদে ব্যাপক
পরিসরে বড় আকারে হ্যাকিং করা সম্ভব হয়েছে।’
ম্যানডিয়্যান্ট জানায়, সাংহাইয়ের পুডং এলাকায় ১২ তলাবিশিষ্ট একটি ভবনে
এপিটি১ তাদের কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সামরিক শাখা
পিপলস লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) ইউনিট ৬১৩৯৮-এর অবস্থানও ওই এলাকায়।
অতীতে বেশ কিছু দেশ, বিদেশি প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন অভিযোগ করেছে, ব্যাপক আকারে
সাইবার হ্যাকিংয়ের জন্য চীনই সন্দেহের তালিকায় প্রথম। গত মাসে নিউইয়র্ক
টাইমস জানায়, চার মাসেরও বেশি সময় ধরে তাদের তথ্য চুরি গেছে। চীনের
বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী ওয়েন জিয়াবাওয়ের অবৈধ সম্পদ নিয়ে একটি প্রতিবেদন
প্রকাশের পরই এমনটি ঘটে। বিষয়টি তদন্তে ম্যানডিয়্যান্টকে দায়িত্ব দেয়
পত্রিকাটি। পরে ম্যানডিয়্যান্ট অনুসন্ধান করে দেখে, এর পেছনে চীনের সামরিক
বাহিনীর হাত রয়েছে।ওয়াল স্ট্রিট জার্নালও চীনা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে
হ্যাকিংয়ের অভিযোগ এনেছে।