মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষাসহ দেশের সব পাবলিক পরীক্ষায় প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীদের জন্য অতিরিক্ত ১৫ মিনিট সময় বরাদ্দ দেওয়া হবে। এ বছর প্রথম অনুষ্ঠেয় জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষা (জেএসসি) এবং জুনিয়র স্কুল দাখিল পরীক্ষা (জেডিসি) থেকে এই সুযোগ পাবে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরা। এ পরীক্ষায় দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের পাশাপাশি সেরিব্রাল পালসিজনিত (অপরিণত মস্তিষ্কে আঘাতজনিত কারণে শারীরিক প্রতিবন্ধিতা) এবং শারীরিক প্রতিবন্ধীরাও প্রথমবারের মতো শ্রুতিলেখক নিয়োগের সুযোগ পাবে।
গত বুধবার আন্তশিক্ষা বোর্ডের সভায় এ বিষয়টি চূড়ান্তভাবে অনুমোদন পেয়েছে।
ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ফাহিমা খাতুন প্রথম আলোকে বলেন, গত মে মাসে উপকমিটির সভায় প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য অতিরিক্ত সময় হিসেবে ১৫ মিনিট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। গতকাল শ্রুতিলেখক নিয়োগ এবং অতিরিক্ত ১৫ মিনিট সময় বরাদ্দের বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছে।
জেএসসি পরীক্ষাসংক্রান্ত নীতিমালাতেও এ বিষয় দুটির উল্লেখ আছে। পাবলিক পরীক্ষায় প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য সময় বাড়াতে প্রতিবন্ধীদের সংগঠনগুলো দীর্ঘদিন ধরে আবেদন জানিয়ে আসছিল। অন্যদিকে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের সঙ্গে অন্য প্রতিবন্ধীদের জন্য স্ক্রাইবার বা শ্রুতিলেখক নিয়োগের বিষয়টিও বিভিন্নভাবে সরকারের দৃষ্টিতে আনা হয়। ৮ সেপ্টেম্বর মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের এক চিঠিতে জানানো হয়, সেরিব্রাল পালসিজনিত প্রতিবন্ধী এবং শারীরিক প্রতিবন্ধীদের (হাত নেই বা হাতের গঠন এমন যে সেই হাত দিয়ে লেখা সম্ভব নয়) তাদের জন্য শ্রুতিলেখক নিয়োগের ব্যাপারে আন্তশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটিতে বিষয়টি আলোচনা হয় এবং সবাই এ বিষয়ে একমত প্রকাশ করেন। সভা সূত্র জানায়, এখন থেকে সব পাবলিক পরীক্ষায় সেরিব্রাল পালসিজনিত প্রতিবন্ধী এবং শারীরিক প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরাও শ্রুতিলেখক নিয়োগের সুযোগ পাবে। তবে এ জন্য তাদের যথাযথ প্রমাণ উপস্থাপন করতে হবে। প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার প্রবেশপত্র হাতে পাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবর আবেদন করতে হবে। আবেদন করার এক বা দুই কর্মদিবসের মধ্যে এ-সংক্রান্ত অনুমতিপত্র দেওয়া হবে।
তবে প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষার জন্য অতিরিক্ত ১৫ মিনিট সময় বরাদ্দ দেওয়াকে পর্যাপ্ত মনে করছেন না জাতীয় প্রতিবন্ধী ফোরামের সভাপতি খন্দকার জহুরুল আলম। তিনি বলেন, ‘আমরা সব সময় প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য অতিরিক্ত এক ঘণ্টা সময় দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছি। কেননা, শ্রুতিলেখকের সাহায্যে পরীক্ষা দিতে অনেক সময় বেশি লাগে। তার পরও সরকারের এ উদ্যোগ প্রশংসনীয়।’
ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান বলেন, প্রথম উদ্যোগ হিসেবে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য পরীক্ষায় ১৫ মিনিট সময় বাড়ানো হয়েছে। ভবিষ্যতে বিষয়টি আরও পর্যালোচনা করা হবে।
No comments:
Post a Comment