Sunday, September 5, 2010
তাপে পাকে কাঁচা পেঁপে, খেজুরে পাখির বিষ্ঠা
বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করার পাশাপাশি তাপ দিয়েও কৃত্রিমভাবে পাকানো হচ্ছে অপরিপক্ব ফল। গতকাল শনিবার ভেজালবিরোধী ভ্রাম্যমাণ আদালত পুরান ঢাকার শ্যামবাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েকটি ফলের আড়তে এ কাজ করতে দেখেন।
আদালত কৃত্রিমভাবে পেঁপে পাকানো ও বিক্রি এবং খেজুরের মধ্যে পাখির বিষ্ঠা পাওয়া যাওয়ায় কয়েকজন ব্যবসায়ীকে জরিমানা করেন। এছাড়া একজনকে দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তাপ দিয়ে পাকানো পেঁপে ও পচা খেজুর আদালতের নির্দেশে নষ্ট করে ফেলা হয়।
গতকাল দুপুরে ভ্রাম্যমাণ আদালত পুরান ঢাকার শ্যামবাজার লালকুঠি এলাকার পাইকারি ফলের আড়তে অভিযান চালান। আদালত একে একে মেসার্স সিটি এন্টারপ্রাইজ, মেসার্স বাদশা এন্টারপ্রাইজ, মেসার্স ভাই ভাই এজেন্সি ও মামুন এন্টারপ্রাইজে অভিযান চালান। প্রতিটি আড়তে কৃত্রিমভাবে পেঁপে পাকাতে দেখেন আদালত।
আড়তগুলোতে প্রতিটি পেঁপে কাগজে মুড়িয়ে স্তূপাকারে রাখা হয়। পরে মাঝখানে মাটির পাত্রে কাঠের টুকরো জ্বালিয়ে তাপ দেওয়া হয়। এতে মাত্র ২৪ ঘণ্টায় কাঁচা ও অপরিপক্ব পেঁপে পাকা রং ধারণ করে।
সিটি এন্টারপ্রাইজের মালিক খোরশেদ আলম কোনো ধরনের রাসায়নিক দেওয়ার কথা অস্বীকার করে আদালতকে বলেন, তাঁদের আড়তে পেঁপেগুলোতে তাপ দেওয়া হয় মাত্র। তিনি বলেন, পেঁপে গাছ থেকে তোলার সময় চাষি বা পাইকারেরা রাসায়নিক পদার্থ দিয়ে থাকতে পারে। খোরশেদ আলম সাংবাদিকদের বলেন, পেঁপে পাকা রং করাতেই তাপ দেওয়া হয়। ভালো রং ছাড়া খুচরা বিক্রেতারা তাঁদের কাছ থেকে কিনতে চান না।
মামুন এন্টারপ্রাইজের মালিক নূর ইসলাম বলেন, রোজার সময় বেশি লাভের জন্য তাঁরা কৃত্রিম উপায়ে পেঁপে পাকান।
কৃত্রিম উপায়ে পেঁপে পাকানোর অভিযোগে আদালত সিটি এন্টারপ্রাইজ ও মামুন এন্টারপ্রাইজকে দুই লাখ টাকা করে এবং বাদশা এন্টারপ্রাইজ ও ভাই ভাই এজেন্সিকে এক লাখ টাকা করে জরিমানা করেন। তাপ দেওয়া কাঁচা পেঁপে জব্দ করেন আদালত। পরে তা ডেমরার ডাম্পিং স্টেশনে নষ্ট করা হয়।
আদালত ওয়াইজঘাট এলাকার ফলের আড়ত মেসার্স রাসেল এন্টারপ্রাইজে অভিযান চালান। সেখানে মজুদ বিপুল পরিমাণ খেজুরের অধিকাংশ দেখা যায় পচা। এই খেজুরের মধ্যে বেশ কিছু পাখির বিষ্ঠাও পাওয়া যায়। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপক জহিরুল ইসলামকে দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন আদালত। পাখির বিষ্ঠা থাকার কথা আদালতের কাছে স্বীকার করে জহিরুল ইসলাম বলেন, ওই খেজুর মধ্যপ্রাচ্য থেকে এসেছে। কীভাবে এর মধ্যে পাখির বিষ্ঠা এল তা তাঁদের জানা নেই। রাসেল এন্টারপ্রাইজ থেকে ৩০ কেজি ওজনের ৫০০ বস্তা খেজুর জব্দ করা হয় এবং তা ডাম্পিং স্টেশনে নষ্ট করা হয়।
ভ্রাম্যমাণ আদালত ফরমালিন ব্যবহার করা হচ্ছে কি না তা দেখতে বাদামতলীর একটি ফলের দোকানেও ঢুকেছিলেন। তবে পরিবেশ অধিদপ্তরের দুজন কর্মকর্তা সেখানকার কিছু আঙুর ও আপেল পরীক্ষা করে ফরমালিনের অস্তিত্ব পাননি।
ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকারী ঢাকা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মাদ আল-আমীন বলেন, বিশুদ্ধ খাদ্য অধ্যাদেশ অনুযায়ী এসব ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আদালতকে সহায়তা করেন বিএসটিআইয়ের তিনজন কর্মকর্তা ও র্যাব ১০-এর একটি দল।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment