Saturday, September 25, 2010

৪০০ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া ভাষার সন্ধান




ভাবের আদান-প্রদানের স্বার্থেই ভাষার আবির্ভাব ঘটে মানবজীবনে। কালের বিবর্তনে পৃথিবীতে যেমন বহু ভাষার আগমন ঘটে, তেমনি নানা কারণে বহু ভাষা হারিয়েও যায়। তেমনি কয়েক শ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া একটা ভাষার সন্ধান পেয়েছেন প্রত্নতাত্তি্বকরা। ৪০০ বছরের পুরনো একটি চিঠির উল্টোদিকে ভাষাটির লিখিত রূপ পাওয়া গেছে। পেরুর ১৭ শতকের একটি খনন এলাকা থেকে প্রত্নতত্ত্ববিদরা চিঠিটি আবিষ্কার করেন। চিঠির উল্টোদিকের আঁকিবুকি দেখে তাঁরা ধারণা করছেন, পেরুর উত্তরাঞ্চলীয় আদিবাসীদের হারিয়ে যাওয়া ভাষা এটি।
পেরুর রাজধানী লিমার ৩৪৭ মাইল উত্তরে ত্রুজিল্লোর কাছে এল ব্রুজো প্রত্নতাত্তি্বক খনন এলাকায় ১৭ শতকের ম্যাগদালেনা ডি কাও ভিয়েজো গির্জার ধ্বংসাবশেষে অনুসন্ধান চালান আন্তর্জাতিক প্রত্নতত্ত্ববিদদের একটি দল। চিঠিটি পাওয়া যায় গির্জার ধ্বংসাবশেষের ইটের স্তূপের ভেতরে। গির্জাটিতে ২০০ বছর ডোমিনিকান খ্রিস্টান ভিক্ষুদের বসবাস ছিল। চিঠিটি ২০০৮ সালে পাওয়া গেলেও এত দিন বিষয়টি গোপন রাখা হয়। কারণ, প্রত্নতাত্তি্বকরা ভাষাটির ব্যাপারে সঠিক তথ্য-প্রমাণ জোগাড় করতে সময় নিতে চেয়েছেন। চলতি মাসে আমেরিকান নৃতত্ত্ববিদদের জার্নালে চিঠিটি প্রকাশ করা হয়েছে।
হার্ভার্ডস পিবডি মিউজিয়াম অব আর্কিওলজি অ্যান্ড এথনোলজির প্রত্নতাত্তি্বক জেফরি কুইল্টার বলেন, 'গবেষণা থেকে এটাই প্রতীয়মান যে চিঠিটিতে একটি ভাষার প্রমাণ মেলে, যা কয়েক শ বছর আগে পৃথিবী থেকে হারিয়ে গেছে। ভাষাটি সংখ্যাতাত্তি্বক।'
প্রত্নতাত্তি্বকরা চিঠিটির একটি কপি প্রকাশ করেছেন। তাতে দেখা যায়, স্প্যানিশ ভাষায় লিখিত কতগুলো সংখ্যার একটি কলাম এবং ওই সংখ্যাগুলোর সামনে তার অনুবাদ রয়েছে। তবে যে ভাষায় অনুবাদ হয়েছে সেই ভাষাটির অস্তিত্ব এখন আর নেই।
কুইল্টার বলেন, 'যে ভাষাটি আবিষ্কৃত হয়েছে, তা ১৬ কিংবা ১৭ শতকেও কেউ দেখেনি বা শোনেনি।' তবে তিনি জানান, ভাষাটিতে 'কোয়েচুয়া' নামের একটি প্রাচীন ভাষার প্রভাব রয়েছে।
কোয়েচুয়া ভাষায় এখনো আন্দেজ এলাকার কয়েক লাখ লোক কথা বলে। তিনি এও জানান, এটা স্প্যানিশ ঔপনিবেশিক যুগের একটা ভাষার লিখিত রূপও হতে পারে। পেরুর উত্তরাঞ্চলীয় উপকূলের জেলেরা (স্প্যানিশ ভাষায় যাদের পেসকাদোরা বলা হয়) ওই ভাষায় কথা বলত। তবে পেসকাদোরা ভাষার কোনো তথ্য সংরক্ষিত নেই।

No comments: