‘আগে বউ ও বোনকে মনের অজান্তে অনেক অত্যাচার করেছি, এখন বুঝতে পারি, তা ভুল ছিল। আগে মেয়েদের ইভ টিজিংয়ের শিকার হতে দেখলে হাসিঠাট্টা করতাম। আর এখন তা প্রতিরোধে এগিয়ে যাই।’
দিনাজপুরের আবুল বাসেত এভাবেই জানালেন তাঁর উপলব্ধির কথা। গতকাল বুধবার রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে কেয়ার বাংলাদেশের নারী নির্যাতন প্রতিরোধবিষয়ক প্রকল্প ‘প্রতিরোধ’-এর সফলতা প্রসঙ্গে তিনি এ কথা বলেন।
‘প্রতিরোধ’ প্রকল্পটি সম্পর্কে জানানোর জন্য ব্র্যাক সেন্টারে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
২০০৭ সাল থেকে শুরু হওয়া প্রকল্পটি খুলনা, দিনাজপুর, ঢাকা ও টাঙ্গাইলের যৌনকর্মী এবং নির্যাতনের শিকার নারীদের জন্য পরিচালনা করা হয়। প্রকল্পের উপকারভোগীরা এর মেয়াদ বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দেন।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার এ কে এম শহীদুল হক বলেন, ‘দেশে নির্যাতনের শিকার নারীদের জন্য আইন আছে। কিন্তু পিতৃতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থায় নারীরা সহজে আইনের আশ্রয় নিতে চান না। এ জায়গায় এনজিওসহ বিভিন্ন সংস্থাকে মধ্যস্থতা করতে হবে।’
কমিশনার আরও বলেন, নারীরা নির্যাতনের শিকার হলেও সব নির্যাতনের ঘটনা রেকর্ড হচ্ছে না। যৌনকর্মীদের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দেশে এ পেশাটি থাকলেও আইনে তার স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। তবে পুলিশকর্মীরা যৌনকর্মীদের সহায়তা করতে বাধ্য।
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) চেয়ারপারসন হামিদা হোসেন নারী নির্যাতনের কারণ খুঁজে বের করা এবং পারিবারিক নির্যাতনের শিকার নারীদের জন্য করা আইনটি সংসদে দ্রুত পাসের ওপর গুরুত্ব দেন। প্রকল্প শেষ হলেই নারীদের আবার আগের অবস্থায় চলে যাওয়ার সমস্যা সমাধানের বিষয়টি জাতীয় পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে বলেও তিনি মত দেন।
ঢাকার যৌনকর্মীদের একটি সংগঠনের নেত্রী রাজিয়া বেগম বলেন, ‘ভাসমান যৌনকর্মীরা আগে থানা থেকে সাহায্য পেত না, বর্তমানে থানা সাহায্য করে। থানার বড় কর্মকর্তাসহ অন্যদের নিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে।’
প্রকল্পটির প্রয়োজনীয়তা প্রসঙ্গে দিনাজপুরের একটি মাধ্যমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক আজিজুল হক বলেন, ‘যে ইউনিয়নে এ প্রকল্প চলছে, সেখানে বাল্যবিবাহের সুযোগ নেই। বিয়ের তথ্য সবাই জেনে ফেলে।’
No comments:
Post a Comment