Sunday, April 3, 2011

আশরাফুলের এনার্জি প্রডিউসার ফ্যান

বাংলাদেশের বিদ্যুতের ঘাটতি পূরণের লক্ষ্যে মানিকগঞ্জ জেলার ঘিওর থানার সিংজুরী ইউনিয়নের মুকুন্দপুর গ্রামের দেওয়ান মো. শওকত ওসমানের ছেলে ডি এম আশরাফুল আলম তার ভগ্নীপতি দেওয়ান মো. ফরিদ উদ্দিনের সহায়তায় দীর্ঘদিন গবেষণার পর মো. আবুল হোসেন, মো. বাবুল হোসেন এবং আ. ছাত্তার নামের ৩ জনকে নিয়ে কাজ করে আবিষ্কার করলেন এনার্জি প্রডিউসার ফ্যান (ইপিএফ)। এই ফ্যান দেখতে সাধারণ ফ্যানের মতোই। এই ফ্যান তৈরিতে তিনি ব্যবহার করেছেন ইলেকট্রিক্যাল, ইলেকট্রনিক্স, কেমিক্যাল এবং নিজের তৈরি কয়েকটি মেকানিক্যাল সূত্র। এসব ফ্যান বাইরের কোনো বিদ্যুৎ ছাড়াই দুটি বাল্ব জ্বালাতে সক্ষম। তবে এর জন্য ফ্যানগুলো চালাতে কোনো অতিরিক্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে হয় না। অর্থাৎ বাল্ব দুটি জ্বালাতে যে বিদ্যুতের প্রয়োজন তা এই ফ্যান থেকেই উৎপন্ন হয়। শুধু তাই নয়, এই ফ্যানে রয়েছে বিদ্যুৎ সঞ্চয় রাখার ব্যবস্থা। অর্থাৎ যখন আমাদের বাল্ব জ্বালানোর কোনো প্রয়োজন হবে না তখন ওই বন্ধ থাকা বাল্বের বিদ্যুৎ সঞ্চয় হতে থাকবে এবং পরে যখন বিদ্যুৎ থাকবে না তখন এই সঞ্চিত বিদ্যুৎ থেকেই একঘণ্টা পর্যন্ত দুটি বাল্ব অথবা একটি বাল্ব জ্বলবে এবং একটি ফ্যান চলবে। তাই এখন যেসব ফ্যান ব্যবহার করা হচ্ছে এর পরিবর্তে যদি আমরা এই এনার্জি প্রডিউসার ফ্যান (ইপিএফ) ব্যবহার করি তবে শীতের সময়ের মতো গরমের সময়েও বিদ্যুতের ঘাটতি কম থাকবে বলে তিনি মনে করেন। এখানে উল্লেখ্য, তিনি দীর্ঘ ৫ বছর যাবৎ নিজের আবিষ্কৃত এনার্জি স্টেপ-আপ ডিভাইস (ইএসইউডি) নামের একটি যন্ত্র নিয়ে গবেষণা করছেন। আর এর সফলতার জন্য তিনি সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন। যন্ত্রটি তৈরি করতে তিনি বিজ্ঞানী আলফ্রেড নোবেল, বিজ্ঞানী ডেনিয়েল এবং নিজের আবিষ্কৃত কয়েকটি মেকানিক্যাল সূত্র ব্যবহার করেন। এই ডিভাইসটির কাজ হচ্ছে ইনপুট বিদ্যুৎ শক্তিকে বহুগুণে বৃদ্ধি করে আউটপুট করা। তিনি বলেন, এর কাজ সফলতার সঙ্গে শেষ হওয়ার পর যদি ডিভাইসটি ছোট বড় সব মিল-কারখানা, মার্কেট এবং অ্যাপার্টমেন্টে ব্যবহার করা হয়, তবে বিদ্যুৎ খরচ শতকরা ৮০ থেকে ৮৫ ভাগ কমে আসবে। অর্থাৎ এখন যেখানে ১০০ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে হচ্ছে সেখানে মাত্র ১৫ থেকে ২০ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করলেই চলবে। ফলে সাশ্রয় হবে ৮০ থেকে ৮৫ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ। যা দিয়ে আরও ছোটখাটো কারখানা চালানো সম্ভব। শুধু তাই নয়, এ ডিভাইসে থাকবে ব্যাকআপ ক্ষমতা। অর্থাৎ বিদ্যুৎ চলে গেলে এটি ৬০ থেকে ৯০ মিনিট পর্যন্ত ব্যাকআপ দেবে। ফলে লোডশেডিংয়েও কোনো ভোগান্তির শিকার হতে হবে না। ডিভাইসটি দেশের বিদ্যুৎ ঘাটতি পূরণ করতে এক যুগান্তকারী ভূমিকা রাখবে বলে তিনি আশা করেন।
বাংলাদেশের বিদ্যুতের সমস্যা দূর করতে তিনি যে প্রযুক্তির উদ্ভাবন করেছেন তার পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন করতে তিনি সরকারি-বেসরকারিভাবে সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেছেন।

No comments: