বাংলাদেশি হিসেবে আমাদের নির্দিষ্ট কিছু আবেগ আছে। তবে সবচেয়ে বড় আবেগের বিষয় মুক্তিযুদ্ধ_ আমাদের মুক্তির যুদ্ধ। অনেকে বলেন, আমাদের দেশপ্রেম কমে যাচ্ছে। কিন্তু কারো সামনে মুক্তিযুদ্ধ সঠিকভাবে উপস্থাপন করা হলে তার বুক হু হু করে কেঁপে উঠবেই। অজান্তেই চোখের কোণ
দিয়ে এক ফোঁটা হলেও জল গড়িয়ে পড়বে। 'দেশপ্রেম' শব্দটি তখন সার্থকতা নিয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে। 'গেরিলা' যারা দেখেছেন এ
বিশ্বাস তাদের।
দেশের বেশ কয়েকটি হলে এখন চলছে মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে নির্মিত চলচ্চিত্র 'গেরিলা'। মুক্তিযুদ্ধের কিছু ভয়াবহ দৃশ্য এখানে দেখানো হয়েছে। যা দেখে নতুন প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়েছে নতুন করে। তারা যেন স্বচক্ষে দেখেছেন যুদ্ধের সময়কার পাক হানাদের বর্বরতা। এই প্রতিবেদকের মতো যারা বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান তারা তাদের প্রিয় পিতার বর্ণনায় নিশ্চয় শুনেছেন হানাদারদের নৃসংশতার কথা। কিন্তু ওই বর্ণনা কখনো সখনো এক কান দিয়ে ঢুকে অন্য কান দিয়ে বেরিয়ে গেছে। হৃদয় কিছুটা স্পর্শ করলেও কাঁপন ধরেনি। কিন্তু 'গেরিলা' দেখে বারবার কেঁপে উঠছে দেহ; মনও। অজান্তেই দর্শক বলে উঠছে, উফ, কী ভয়ঙ্কর... কী নৃসংশ... কী নির্মম... কতটা পাশবিক... কতটা অমানবিক... আহ্ এভাবেই আমাদের দেশের মানুষ নির্যাতিত হয়েছিল একাত্তরে। কোনও কোনও দর্শকের দু'হাত মুঠো বন্দী হয়ে যাচ্ছিল। যেন এখনই ঝাঁপিয়ে পড়বে পর্দায়_ মুক্তিযুদ্ধে। 'গেরিলা' দেখে তারা বুঝেছে_ নিজেদের প্রিয় পিতা, অগ্রজ এবং স্বজনরা কেন মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে অতটা আবেগী হয়ে মানসপটের গল্প আওড়ান বারবার। মুক্তিযুদ্ধের ছবি এদেশের মানুষ আগেও দেখেছে। সেখানে মুক্তিযুদ্ধ অতটা স্পষ্ট হয়নি। তাই হয়তো অনেকেই হা-ই তুলেছেন চোখ কচলাতে-কচলাতে। কিন্তু 'গেরিলা'র ক্ষেত্রে উল্টো স্রোত বইল। চোখের পলক কি পড়েছিল কারো? উত্তর জানা নেই।
'গেরিলা' চলচ্চিত্রের রয়েছে অসাধারণ এক শক্তি। পর্দায় যখন মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তানি আর্মির বুকের রক্ত ঝরাত কিংবা উড়িয়ে দিত তাদের আস্তানা; দর্শকও তখন চিৎকার করে উঠেছে। 'আমরা পেরেছি, আমরাই জয়ী'_ তাদের চিৎকারের অন্তর্নিহিত অর্থ নিশ্চয় এটাই। আর এ কারণেই ছবির শেষে অনেক দর্শক স্লোগান তুলেছেন, 'জয় বাংলা... জয় বাংলা...'। আবার যেন মুক্তিযুদ্ধে ফিরে গেছি আমরা। শো শেষে অনেক প্রবীণ চোখ মুছতে মুছতে বেরিয়ে এসেছেন। 'গেরিলা' দেখে যুদ্ধের স্মৃতি কাঁদাচ্ছে তাদের।
'গেরিলা' বিভিন্ন দিক থেকেই ব্যতিক্রম এবং একটি পরিপূর্ণ শিল্পসম্মত চলচ্চিত্র। যেমন এর চিত্রায়ণ, তেমনি শিল্পনির্দেশনা। সংগীতও কোনো অংশে কম যায় না। আর অভিনয়! এক কথায় অসাধারণ। 'গেরিলা'য় অংশগ্রহণকারী প্রত্যেক অভিনয়শিল্পীই চমৎকার অভিনয় করেছেন। তাদের মধ্যে দু'জনের কথা না বললেই নয়। কেন্দ্রীয় চরিত্রের জয়া আহসান আর শতাব্দী ওয়াদুদ। জয়ার অভিনয় যতটা আবেগী করেছে, শতাব্দীর অভিনয় করেছে ঠিক ততটাই হিংস্র। শতাব্দী দুটো চরিত্রে অভিনয় করেছেন। দুটোই পাকিস্তানি আর্মি অফিসারের। সব পাকিস্তানি আর্মিই '৭১-এ একইরকম ছিল, সমান ছিল তাদের পৈশাচিকতা_ শতাব্দীর চরিত্র দুটো বোধহয় সেই ইঙ্গিতই দিল। হিটলাররূপী শতাব্দী ওয়াদুদের দ্বিতীয় চরিত্রটি আরও একটি ইঙ্গিত দিল। আর তা হচ্ছে হিটলরা যুগে যুগে ফিরে আসেন।
'গেরিলা' চলচ্চিত্রের পরিচালক দেশের বিশিষ্ট নাট্য নিদের্শক নাসির উদ্দীন ইউসুফ নিজেই একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি সৈয়দ শামসুল হকের উপন্যাস 'নিষিদ্ধ লোবান' এবং নিজের মুক্তিযুদ্ধের অভিজ্ঞতা নিয়ে নতুন প্রজন্মের জন্য নির্মাণ করেছেন চলচ্চিত্রটি। তার এই সৃষ্টি বাংলাদেশীদের কতটা ঋণী করেছে তা প্রকাশ করা কঠিন। আগামী প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের ধারনা দেবে 'গেরিলা'। তবে সবশেষে শেষ কথা_ অহংকার করার মতো মুক্তিযুদ্ধের একটি চলচ্চিত্র পেয়ে গেছি আমরা।
দিয়ে এক ফোঁটা হলেও জল গড়িয়ে পড়বে। 'দেশপ্রেম' শব্দটি তখন সার্থকতা নিয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে। 'গেরিলা' যারা দেখেছেন এ
বিশ্বাস তাদের।
দেশের বেশ কয়েকটি হলে এখন চলছে মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে নির্মিত চলচ্চিত্র 'গেরিলা'। মুক্তিযুদ্ধের কিছু ভয়াবহ দৃশ্য এখানে দেখানো হয়েছে। যা দেখে নতুন প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়েছে নতুন করে। তারা যেন স্বচক্ষে দেখেছেন যুদ্ধের সময়কার পাক হানাদের বর্বরতা। এই প্রতিবেদকের মতো যারা বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান তারা তাদের প্রিয় পিতার বর্ণনায় নিশ্চয় শুনেছেন হানাদারদের নৃসংশতার কথা। কিন্তু ওই বর্ণনা কখনো সখনো এক কান দিয়ে ঢুকে অন্য কান দিয়ে বেরিয়ে গেছে। হৃদয় কিছুটা স্পর্শ করলেও কাঁপন ধরেনি। কিন্তু 'গেরিলা' দেখে বারবার কেঁপে উঠছে দেহ; মনও। অজান্তেই দর্শক বলে উঠছে, উফ, কী ভয়ঙ্কর... কী নৃসংশ... কী নির্মম... কতটা পাশবিক... কতটা অমানবিক... আহ্ এভাবেই আমাদের দেশের মানুষ নির্যাতিত হয়েছিল একাত্তরে। কোনও কোনও দর্শকের দু'হাত মুঠো বন্দী হয়ে যাচ্ছিল। যেন এখনই ঝাঁপিয়ে পড়বে পর্দায়_ মুক্তিযুদ্ধে। 'গেরিলা' দেখে তারা বুঝেছে_ নিজেদের প্রিয় পিতা, অগ্রজ এবং স্বজনরা কেন মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে অতটা আবেগী হয়ে মানসপটের গল্প আওড়ান বারবার। মুক্তিযুদ্ধের ছবি এদেশের মানুষ আগেও দেখেছে। সেখানে মুক্তিযুদ্ধ অতটা স্পষ্ট হয়নি। তাই হয়তো অনেকেই হা-ই তুলেছেন চোখ কচলাতে-কচলাতে। কিন্তু 'গেরিলা'র ক্ষেত্রে উল্টো স্রোত বইল। চোখের পলক কি পড়েছিল কারো? উত্তর জানা নেই।
'গেরিলা' চলচ্চিত্রের রয়েছে অসাধারণ এক শক্তি। পর্দায় যখন মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তানি আর্মির বুকের রক্ত ঝরাত কিংবা উড়িয়ে দিত তাদের আস্তানা; দর্শকও তখন চিৎকার করে উঠেছে। 'আমরা পেরেছি, আমরাই জয়ী'_ তাদের চিৎকারের অন্তর্নিহিত অর্থ নিশ্চয় এটাই। আর এ কারণেই ছবির শেষে অনেক দর্শক স্লোগান তুলেছেন, 'জয় বাংলা... জয় বাংলা...'। আবার যেন মুক্তিযুদ্ধে ফিরে গেছি আমরা। শো শেষে অনেক প্রবীণ চোখ মুছতে মুছতে বেরিয়ে এসেছেন। 'গেরিলা' দেখে যুদ্ধের স্মৃতি কাঁদাচ্ছে তাদের।
'গেরিলা' বিভিন্ন দিক থেকেই ব্যতিক্রম এবং একটি পরিপূর্ণ শিল্পসম্মত চলচ্চিত্র। যেমন এর চিত্রায়ণ, তেমনি শিল্পনির্দেশনা। সংগীতও কোনো অংশে কম যায় না। আর অভিনয়! এক কথায় অসাধারণ। 'গেরিলা'য় অংশগ্রহণকারী প্রত্যেক অভিনয়শিল্পীই চমৎকার অভিনয় করেছেন। তাদের মধ্যে দু'জনের কথা না বললেই নয়। কেন্দ্রীয় চরিত্রের জয়া আহসান আর শতাব্দী ওয়াদুদ। জয়ার অভিনয় যতটা আবেগী করেছে, শতাব্দীর অভিনয় করেছে ঠিক ততটাই হিংস্র। শতাব্দী দুটো চরিত্রে অভিনয় করেছেন। দুটোই পাকিস্তানি আর্মি অফিসারের। সব পাকিস্তানি আর্মিই '৭১-এ একইরকম ছিল, সমান ছিল তাদের পৈশাচিকতা_ শতাব্দীর চরিত্র দুটো বোধহয় সেই ইঙ্গিতই দিল। হিটলাররূপী শতাব্দী ওয়াদুদের দ্বিতীয় চরিত্রটি আরও একটি ইঙ্গিত দিল। আর তা হচ্ছে হিটলরা যুগে যুগে ফিরে আসেন।
'গেরিলা' চলচ্চিত্রের পরিচালক দেশের বিশিষ্ট নাট্য নিদের্শক নাসির উদ্দীন ইউসুফ নিজেই একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি সৈয়দ শামসুল হকের উপন্যাস 'নিষিদ্ধ লোবান' এবং নিজের মুক্তিযুদ্ধের অভিজ্ঞতা নিয়ে নতুন প্রজন্মের জন্য নির্মাণ করেছেন চলচ্চিত্রটি। তার এই সৃষ্টি বাংলাদেশীদের কতটা ঋণী করেছে তা প্রকাশ করা কঠিন। আগামী প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের ধারনা দেবে 'গেরিলা'। তবে সবশেষে শেষ কথা_ অহংকার করার মতো মুক্তিযুদ্ধের একটি চলচ্চিত্র পেয়ে গেছি আমরা।
No comments:
Post a Comment