ঢাকা চিড়িয়াখানায় বিলুপ্তপ্রায় সবুজ ঘুঘুর পরিবারে এসেছে নতুন অতিথি। দুটি ডিমের মধ্যে একটি থেকে ফুটেছে ফুটফুটে বাচ্চা। এ ঘটনাকে বিরল হিসেবেই দেখছে বিশ্ব জু অ্যাসোসিয়েশন। কারণ চিড়িয়াখানায় সবুজ ঘুঘুর ডিম পাড়া ও বাচ্চা ফোটার দ্বিতীয় ঘটনা এটি। ২০০৯ সালে তাইওয়ানের তাইপে চিড়িয়াখানায় এ জাতের ঘুঘু প্রথমবারের মতো ডিম পাড়ে। গত ২ এপ্রিল ঢাকা চিড়িয়াখানায় দুটি ডিম দেয় সবুজ ঘুঘু। ২০ দিন তা দেওয়ার পর শুক্রবার একটি বাচ্চা ফুটে। পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়ান ইমু পাখিও ডিম পেড়েছে। প্রকৃতির নিয়ম অনুযায়ী, ডিমে তা দিচ্ছে পুরুষ ইমু। চিড়িয়াখানার ভারপ্রাপ্ত কিউরেটর ডা. এ কে এম শহিদুল্লাহ গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, সবুজ ঘুঘুর ডিম থেকে বাচ্চা ফুটেছে। কয়েকদিনের মধ্যে ইমুর ডিম ফুটেও বাচ্চা হবে। এর ফলে ঢাকা চিড়িয়াখানা ওয়ার্ল্ড জু অ্যাসোসিয়েশনের কাছে সম্মানজনক স্থান পেয়েছে। সচরাচর এসব পাখি আবদ্ধ অবস্থায় ডিম পাড়ে না। তিনি জানান, স্ত্রী ইমু শুধু ডিম পাড়ে। এরপর পুরুষ ইমু তা দিয়ে বাচ্চা ফোটায়, লালন-পালন করে। চিড়িয়াখানার কর্মকর্তা বেগম মনসুরা হাছিন জানান, এক সময় সবুজ ঘুঘু বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কায় পাওয়া যেত। এখন প্রায় বিলুপ্ত। তিনি বলেন, আমরা যত্মসহকারে লালন-পালন করে বাচ্চা ফুটিয়েছি। এখন দুধে তুলো ভিজিয়ে ছানাকে খাওয়ানো হচ্ছে। ১৭ প্রজাতির ঘুঘুর মধ্যে সবুজ ঘুঘু সবচেয়ে সুন্দর। এ পাখির ডানা এবং পিঠ সবুজ। দুধ ছাড়াও শস্যদানা ও সরিষা খায়। এরা এপ্রিল-মে মাসে বনাঞ্চল ও বাঁশ ঝাড়ে বাসা বাঁধে। বাঁচে ছয় থেকে সাত বছর। একটি সবুজ ঘুঘু একসঙ্গে দুটিই ডিম দেয়। চিড়িয়াখানার বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাকিফ-উল-আজম জানান, বৈশিষ্ট্য ও স্বভাব অনুযায়ী ইমু বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পাখি। দাঁড়ানো অবস্থায় আড়াই ফুট উচ্চতার হয়। পূর্ণ বয়স্ক একটি পাখির ওজন ৫০ কেজি। শরীর অমসৃণ কেশরাজিতে আবৃত থাকে। মাথা ও ঘাড়ে কালো চুলের মতো পালক। এরা জঙ্গলে দলবদ্ধ হয়ে বাস করে। খাদ্য ঘাস ও পোকা-মাকড়। একটি স্ত্রী পাখি একসঙ্গে ৯ থেকে ১২টি ডিম দেয়। বাচ্চা ফুটতে সময় লাগে ৫৬ দিন।
No comments:
Post a Comment