বিদায় শব্দটির অন্তরালে সব সময়ই লুকিয়ে থাকে কষ্ট, বেদনা আর যন্ত্রণা। যেকোনো বিদায়ই কাঁদায়। বিদায় মানেই হৃদয়ে রক্তক্ষরণ। তবে কাল বিদায়ী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রকাশ্যে কাঁদেননি কোচ জেমি সিডন্স। কিন্তু তার চোখ ছলছল করছিল, আর তা দেখে বোঝার বাকি থাকে না। বাংলাদেশ দলের সঙ্গে সাড়ে তিন বছরের স্মৃতি কী সহজেই ভোলা যায়। তাই তো বিদায় বেলায় সিডন্স বললেন, 'আমি এই দেশ এবং এখানকার সাধারণ মানুষকে ভালবেসে ফেলেছি।' গতকাল এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সিডন্সের হাতে একটি ক্রেস্ট তুলে দেন বিসিবি প্রেসিডেন্ট আ হ ম মুস্তফা কামাল। এ সময় তিনি বলেন, 'সিডন্স অনেক ভালো কোচ। তার দ্বারা দলের অনেক উন্নতি হয়েছে। তাকে পেয়ে আমরা গর্বিত। চুক্তি শেষ। আমি অনেক ভাগ্যবান। দলের এমন পর্যায়ে বিসিবি প্রধানের পদে আছি। এখন নতুন কোচ আসবে। তবে সিডন্সের অবদান ভোলার মতো নয়।' অনুষ্ঠানে ছিলেন বিসিবির মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশন চেয়ারম্যান জালার ইউনুস এবং বিসিবির সিইও মঞ্জুর আহমেদ ছাড়াও অন্যান্য বোর্ড কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। তবে ছিলেন না কোনো ক্রিকেটার। এ সময় গাজী আশরাফ হোসেন লিপু বলেন, 'সিডন্স দলকে একটি নির্দিষ্ট মজবুত অবস্থানে নিয়ে গেছে। ক্রিকেটাররা এখন মানসিক দিক দিয়ে অনেক শক্ত হয়েছে।' ভাগ্যই বটে সিডন্সের! কেননা এই প্রথম বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের কোচ আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায়ী সংবর্ধনা পেলেন তিনি। এর আগে মুদাচ্ছের নজর, মহিন্দর অমরনাথ, গর্ডন গ্রিনিজ, এডি বার্লো, ট্রেভার চ্যাপেল, মহসিন কামাল ও ডেভ হোয়াটমোর বিদায়ী সংবর্ধনার পরিবর্তে তিক্ত অভিজ্ঞতা নিয়েই দেশে ফিরেছেন। তাই বিদায়বেলায় বিসিবির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলেন তিনি। সিডন্স বলেন, 'বাংলাদেশে আমি অসাধারণ সময় কাটিয়েছি। আন্তর্জাতিক দলের কোচ হওয়ার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য বিসিবির কাছে আমি কৃতজ্ঞ।' তবে সিডন্স চুম্বক কথাটি বলেছেন কয়েকদিন আগে। তিনি বাংলাদেশ দল সম্পর্কে বলেছেন, 'বর্তমানে এই দলের ক্রিকেটারদের গড় বয়স ২২-২৩। আগামী চার বছরে এই দল আরও পরিণত হবে। আমার বিশ্বাস সঠিক পথে পরিচালিত করলে এ দলই বিশ্বকাপ জিততে পারে।' হোয়াটমোরের বিদায়ের পর ২০০৭ সালের অক্টোবরে দায়িত্ব নেন সিডন্স। তার তত্ত্বাবধানে ৮৪ ওয়ানডে খেলেছে বাংলাদেশ। ৩১টি ম্যাচে জয়, আর হার ৫৩। ১৯ টেস্টে জয় ২টি। বাংলাদেশের মতো তরুণ দলের জন্য এই সাফল্য ছোট করে দেখার উপায় নেই। আগামী শুক্রবার অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দিবেন সিডন্স। এখনো নতুন চাকরি ঠিক হয়নি। তবে বিদায়বেলায় জানালেন নিউজিল্যান্ড নতুন ঠিকানা হয়ে যেতে পারে।
No comments:
Post a Comment