Friday, August 27, 2010

রাসায়নিক মেশানো মুড়ি নদীতে

ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করায় তিন হাজার ৭০০ কেজি মুড়ি গতকাল বৃহস্পতিবার বুড়িগঙ্গা নদীতে ফেলেছেন ভেজালবিরোধী ভ্রাম্যমাণ আদালত। ঢাকার কেরানীগঞ্জের জিঞ্জিরায় কয়েকটি মুড়ির কারখানা থেকে এসব মুড়ি জব্দ করা হয়। আদালত এসব কারখানার চারজনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ডও দেন।
দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ভ্রাম্যমাণ আদালত জিঞ্জিরা ফেরিঘাট এলাকায় এম হোসেন মুড়ির কারখানায় অভিযান চালান। সেখানে মুড়ি ভাজার আগে চাল লবণ-পানি দিয়ে এক দিন ভিজিয়ে রাখা হয়। পরে চাল চুলায় গরম করার সময় ৫০ কেজি চালে ১০০ গ্রাম সোডিয়াম হাইড্রোসালফাইট বা হাইড্রোজ (রাসায়নিক পদার্থ) ব্যবহার করা হয়। এ অপরাধে আদালত ওই কারখানার মালিক আবু তাহেরকে দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন। ওই কারখানার এক হাজার ২০০ কেজি মুড়ি নদীতে ফেলা হয়।
পরে আদালত পাশের বিছমিল্লাহ মুড়ির কারখানায় অভিযান চালিয়ে ৭৩ কেজি হাইড্রোজ উদ্ধার করেন। কারখানাটির এক হাজার কেজি মুড়ি বুড়িগঙ্গায় ফেলা হয়। হাইড্রোজ ব্যবহার করার অপরাধে ওই কারখানার কর্মচারী জিল্লুর রহমানকে ছয় মাস ও রিপন দাসকে দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন আদালত। একই এলাকার হাবি বাল্লু মিয়ার মুড়ির কারখানায় অভিযান চালিয়ে আদালত হাইড্রোজ ব্যবহার করা দেড় হাজার কেজি মুড়ি বুড়িগঙ্গায় ফেলেন। কারখানাটি থেকে প্রায় সাড়ে তিন কেজি হাইড্রোজ উদ্ধার করা হয়। ওই কারখানার মালিক মীর জাহান সাংবাদিকদের বলেন, মুড়ি সাদা করতে হাইড্রোজ ব্যবহার করা হয়। আদালত মীর জাহানকে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন।
আদালত পরিচালনাকারী ঢাকা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আল-আমীন বলেন, খাবারে নিষিদ্ধ রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করার অপরাধে বিশুদ্ধ খাদ্য অধ্যাদেশ, ১৯৫৯-এর ৬-এ ধারা অনুযায়ী চারজনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
অভিযানে অংশ নেওয়া বিএসটিআইয়ের কর্মকর্তা এস এম আবু সাঈদ প্রথম আলোকে বলেন, হাইড্রোজ একটি শক্তিশালী ক্ষার। এটা পেটে গেলে তা মানবদেহের রক্তের শ্বেতকণিকা, হিমোগ্লোবিনসহ গুণাগুণ নষ্ট করে ফেলে।
এদিকে ঢাকা সিটি করপোরেশন পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত গতকাল রাজধানীর উত্তর শাহজাহানপুরের হোসেন আল রহমানিয়া বিরিয়ানি ও কাবাব ঘরে অভিযান চালান। সেখানে কাবাবের সঙ্গে নিষিদ্ধ রং মেশানোর বিষয়টি হাতেনাতে ধরা হয়। এ অপরাধে আদালত হোটেলের মালিক শরিফুর রহমানকে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন। পরে আদালত পাশের বিছমিল্লাহ এন্টারপ্রাইজের ফ্রিজে পুরোনো ইফতারি দেখে প্রতিষ্ঠানটিকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। নিষিদ্ধ লাল রং ব্যবহার করায় মতিঝিলের শাহী জাফরান হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন আদালত।
এরপর আদালত খিলগাঁওয়ের রূপম অটো মুড়ি কারখানায় অভিযান চালান। মুড়ি ভাজতে হাইড্রোজ ব্যবহারের কারণে কারখানাটিকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন আদালত।

No comments: