সুসময় পার করছেন মার্শাল আইয়ুব। ব্যাট হাতে নেমেই আলো ছড়াচ্ছেন এই তরুণ
ক্রিকেটার। বিশেষ করে বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগে (বিসিএল)। বিসিএল এখন
মার্শালময়। আগের দুই ম্যাচের মতো বিসিএলের তৃতীয় ম্যাচেও সেঞ্চুরি করেছেন
মার্শাল। এবার সেঞ্চুরিতে থেমে থাকেননি মার্শাল, প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে
ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন বিসিএলে। ২৫১ রানে ব্যাট করে এখন ধীর পায়ে এগোচ্ছেন
ট্রিপল সেঞ্চুরির দিকে। বগুড়া শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে ওয়ালটন সেন্ট্রাল
জোনের পক্ষে মার্শালই ডাবল সেঞ্চুরি করেননি, সাবেক টেস্ট ক্রিকেটার মেহরাব
হোসেন জুনিয়রও ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন। মেহরাব ব্যাট করছেন ২০৬ রানে। দুজন
কাল ম্যাচের দ্বিতীয় দিনের পুরোটা সময় ব্যাট করলে ইসলামী ব্যাংক ইস্ট জোনের
বিপক্ষে ৪ উইকেটে ৫২৮ রান তুলেছে সেন্ট্রাল জোন। রান পাহাড়ে চড়ে সেন্ট্রাল
জোনের বিসিএলের ফাইনাল খেলা অনেকটাই নিশ্চিত।
ওয়ালটন সেন্ট্রাল জোনের কথা লিখতে হলে লিখতে হবে শুধু মার্শাল আইয়ুবের কথা।
বিসিএলের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরিয়ান প্রথম দুই ম্যাচেও সেঞ্চুরি করেন। প্রথম
ম্যাচে প্রাইম ব্যাংক সাউথ জোনের বিপক্ষে করেছিলেন ১২৫ রান এবং দ্বিতীয়
ম্যাচে বিসিবি নর্থ জোনের বিপক্ষে ১৩১ রান করেন মার্শাল। গতকাল ২৫১ রানের
নান্দনিক ইনিংস খেলেন মার্শাল ৩২৩ বলে ২৭ বাউন্ডারি ও ৩ ওভার বাউন্ডারিতে।
ম্যাচের প্রথম দিন অপরাজিত ছিলেন ৯৫ রানে। দিনের শুরুতেই আসরের টানা তৃতীয়
সেঞ্চুরি তুলে নেন মার্শাল ১৪৩ বলে। এরপর ১৫০ রান করেন নতুন বল নেওয়ার পর
২৫৭ বলে। ডাবল সেঞ্চুরি করেন ২৬৮ বলে ১৯ বাউন্ডারি ও ২ ওভার বাউন্ডারিতে।
১৪তম ওয়ালটন জাতীয় ক্রিকেটেও মার্শাল একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে ডাবল
সেঞ্চুরি করেছিলেন। ২০৬ রানের ইনিংসটি খেলেছিলেন আসরের প্রথম ম্যাচে
চট্টগ্রামের বিপক্ষে। মেহরাব ২০৬ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন ৩৫১ বলে ২৬
বাউন্ডারি ও ২ ছক্কায়। ম্যাচের প্রথমদিন অপরাজিত ছিলেন ৭৫ রানে। সেঞ্চুরি
করেন লাঞ্চ বিরতির আগে ১৯৮ বলে। ১৫০ করেন ২৫৭ বলে ২১ বাউন্ডারি ও ওভার
বাউন্ডারিতে এবং ডাবল সেঞ্চুরি করেন ৩৪৪ বলে ২৫ বাউন্ডারি ও ২ ওভার
বাউন্ডারিতে।
এই দুই ব্যাটসম্যান জুটি বাঁধেন ৫৬ রানে ৪ উইকেটের পতনের পর। এরপর দুজনে
অবিচ্ছিন্ন থেকে ১১৮.৪ ওভার ব্যাটিং করেন। দুজনে জুটি বেঁধে রান করেন ৪৭২।
যা বাংলাদেশের সব ধরনের উইকেটে সর্বোচ্চ রানের জুটি। এ ছাড়া এটাই প্রথম
বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে চার শতাধিক রানের জুটি এবং প্রথম শ্রেণীর
ক্রিকেটে চতুর্থর্ সর্বোচ্চ রানের জুটি। চতুর্থ উইকেট জুটিতে সর্বোচ্চ
রানের জুটি ভারতের বিজয় হাজারে ও গুল মোহাম্মদের, ৫৭৭ রান। বারোদার পক্ষে
১৯৪৬-৪৭ সালে করেছিলেন দুজনে। চতুর্থ উইকেট জুটিতে ৫০০ রানের জুটি রয়েছে
তিনটি। সব ধরনের উইকেটে সর্বোচ্চ রানের জুটি কুমারা সাঙ্গাকারা ও মাহেলা
জয়াবর্ধনের, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তৃতীয় উইকেট জুটিতে ৬২৪, ২০০৬ সালে
কলম্বোয়। ডাবল সেঞ্চুরি ২০ হাজার টাকা করে বোনাস পেয়েছেন দুই ক্রিকেটার।
ডাবল সেঞ্চুরি উচ্ছসিত মার্শাল আইয়ুব বলেন, 'আমার লক্ষ্য জাতীয় দলে খেলা।
আমি সে লক্ষ্যেই ব্যাটিং করছি। ডাবল সেঞ্চুরি করতে পেরে আমার ভালো লাগছে।'
জুটি গড়ার ব্যাখ্যায় মেহরাব বলেন, 'মার্শাল অসাধারণ ফর্মে রয়েছেন। সে তিন
ম্যাচে সেঞ্চুরি করেছেন। কাল অসাধারণ ব্যাটিং করেছেন তিনি। ৫৬ রানে ৪ উইকেট
হারানোর পর আমাদের টার্গেট ছিল একটি জুটি গড়ে দলকে একটি শক্ত অবস্থানে
নিয়ে যাওয়া।'
No comments:
Post a Comment