হতদরিদ্র দিনমজুর মোকছেদ মলি্লকের শখ পশু পালন। কিন্তু নিজের সমর্থ নেই। তাই প্রতিবেশী অত্মীয়র কাছ থেকে একটি স্ত্রী ছাগল বর্গা এনে লালন পালন শুরু করেন। ছাগিটি প্রথম দুই বছর ৩টি করে ছানা দিলেও গতকাল সকালে এক সঙ্গে সাতটি ছানা প্রসব করেছে। আনন্দে আত্মহারা মোকছেদের পরিবারে এখন ঈদের আনন্দ। পাড়া প্রতিবেশীসহ দূরের গ্রামগুলোয় এ খবর ছড়িয়ে পড়লে বাড়িতে শত মানুষের ভিড় পড়ে যায়। দেখতে আসা লোকজন বলছে একেই বলে কপাল। ছাগিটি ব্লাক বেঙ্গল জাতের বলে জানা গেছে। গতকাল দুপুরে সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, সকাল ১০টার দিকে একে একে সাতটি ছাগল ছানা প্রসব করার এক ঘণ্টার মধ্যে একটি মরে যায়। বাকি ছয়টি ছানা সুস্থ ও সবল আছে। মায়ের দুধও পান করছে। কিন্তু এতগুলো বাচ্চার পেট ভরবে না তাই দরিদ্র দিন মজুর মোকছেদ টাকা ধার করে কৌটার দুধ কিনে ফিডার দিয়ে পান করাচ্ছেন। আলাপকালে মোকছেদ মলি্লক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, 'গরিবির দিকে আল্লাহ মুখ তুইলে চাইছে। তাই এক সঙ্গে সাতটা বাচ্চা দিছেন। এইডে আল্লার রহমত। কিন্তু ওগে দুধ কিনে খাওয়াবো কি এইরে সেই চিন্তা এরতিছি।' স্থানীয় পল্লী পশু চিকিৎসক আসলাম শেখ বলেন, ছাগিটি গাভিন হওয়ার পর থেকে চিকিৎসা দিয়ে আসছি। পেটটা অস্বাভাবিক মোটা দেখে ধারণা হয় ৩ থেকে ৪টি ছানা হতে পারে। তবে সাতটি ছানা অকল্পনীয় অবিশ্বাস্য। খুলনা মেট্রোপলিটন প্রানিসম্পদ কর্মকর্তা অরুণ কান্তি মণ্ডল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, এক সঙ্গে চারটি ছাগল ছানা হতে দেখেছি। কিন্তু এক সঙ্গে সাতটি ছাগল ছানা হয়েছে এই প্রথম শুনলাম। এটা প্রকৃতির কৃপা, বিরল ঘটনা। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়ো টেকনোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান ও এনিম্যাল বায়োটেকনোলজি (পশুর প্রজনন ও কৌলিতত্ব) বিষয়ের গবেষক অধ্যাপক ড. খন্দকার মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ব্লাক বেঙ্গল (কালো ছাগল) জাতের ছাগল থেকে তিন থেকে চারটি পর্যন্ত বাচ্চা হওয়ার রেকর্ড আছে। কিন্তু এক সঙ্গে সাতটি বাচ্চা হওয়ার ঘটনাটি বিরল। এ ধরনের ছাগল সংরক্ষণে নিয়ে গবেষণা হওয়া দরকার। তিনি বলেন, ৬টি বাচ্চা সুস্থ ও সবল রাখতে হলে গরুর দুধের সঙ্গে ৬০ ভাগ পানি মিশিয়ে ফিডারে করে খাওয়াতে হবে।
No comments:
Post a Comment