২০১১
সালে দুঃস্বপ্নের জিম্বাবুয়ে সফর শেষে দেশে ফিরে নেতৃত্ব হারিয়েছিলেন
সাকিব আল হাসান। এবার মুশফিকুর রহিমের জন্যও তেমন কোনো পরিণতি অপেক্ষা করে
আছে কি না, তা নিয়ে জল্পনা-কল্পনা শুরুর আগেই সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়ে
বসলেন তিনি। কাল ৭ উইকেটের হারে সিরিজ খোয়ানোর পরপরই ব্যর্থতার দায় মাথায়
নিয়ে দেওয়া মুশফিকের ঘোষণাটা ছিল আচমকাই।
ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে হাজির হলেন সহ-অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। সবাই ধরে নিলেন, মুশফিক হয়তো আসবেনই না। কারণ ক্রিকেট-সংশ্লিষ্ট সবারই কম-বেশি জানা যে, ব্যর্থতায় বড় বেশি মুষড়ে পড়েন তিনি। ২০১১ সালের সেই সফরেও এমন একবার হয়েছিল। হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে প্রথম দুটি ম্যাচ হারা বাংলাদেশ সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডে খেলতে নেমেছিল। তাতে প্রথম ওয়ানডে সেঞ্চুরি করে দলকে জয়ের ধারে নিয়ে গিয়েও হারের হতাশায় মুশফিক এমনই ভেঙে পড়েছিলেন যে, সংবাদ সম্মেলনেই আর আসেননি। হারারেতে পাঁচ ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের তৃতীয় ম্যাচেও হারের পর ড্রেসিংরুমে কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন তিনি। তবে সেবার বুলাওয়েতে এসে ভাগ্য ফিরেছিল বাংলাদেশের। শেষ দুটো ওয়ানডেতে জয়ের সান্ত্বনা মিলেছিল এখানেই। কিন্তু এবার সেই বুলাওয়েতেই আরেকটি ব্যর্থতার পর সংবাদ সম্মেলনে না আসায় হতাশ মুশফিকের কল্পিত ছবিটাই যেন দেখছিলেন উপস্থিত সবাই। কিন্তু মাহমুদউল্লাহর সংবাদ সম্মেলনের মাঝামাঝি হুট করেই হাজির মুশফিক। বিলম্বের জন্য দুঃখ প্রকাশ যেমন করলেন, তেমনি সিরিজ হারের ময়নাতদন্ত করতে করতে এক পর্যায়ে দিয়ে দিলেন সরে দাঁড়ানোর আকস্মিক ঘোষণাটাও। জানিয়েছেন, দুই ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের পর আর অধিনায়ক পদে থাকছেন না তিনি। ব্যর্থতার দায় নিয়ে বলেছেন, 'দলও খারাপ খেলেছে। আমিও বাজে খেলেছি।'
এমন বিনা মেঘে বজ পাতের আধঘণ্টা পরও অন্ধকারে বাংলাদেশ দলের সঙ্গে জিম্বাবুয়েতে অবস্থানরত বিসিবির অ্যাডহক কমিটির সদস্য আহমেদ সাজ্জাদুল আলম। ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণীর আনুষ্ঠানিকতা শেষে হোটেলে ফিরে যাওয়া সাজ্জাদুলকে টেলিফোনে খবরটা দেওয়ার পর চমকে ওঠেন তিনি, 'তাই নাকি! কই, আমাকে তো কেউ কিছু বলেনি!' বোর্ড মনোনীত অধিনায়ক হিসেবে পদত্যাগের বিষয়টি যথাযথ স্থানে জানানো মুশফিকুর রহিমের দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে। কিন্তু সেটি তিনি না করায় আরো বিস্মিত সাজ্জাদুলের প্রশ্ন, 'এটা কি সে বোর্ডকে জানিয়েছে?'
বোর্ডকে জানাননি, তবে মাঠ থেকে হোটেলে ফেরার পরপরই অধিনায়কের মত বদলাতে উদ্যোগী হয়েছেন এ বোর্ড সদস্যসহ নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন এবং জাতীয় দলের হেড কোচ শেন জার্গেনসেন। মুশফিকের সঙ্গে সে আলোচনায় ঢাকা থেকে টেলিফোনে যুক্ত হয়েছিলেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসানও। চতুর্মুখী আলোচনার ফল কখনও ইতিবাচক তো আবার পরক্ষণেই নেতিবাচক। সাজ্জাদুল একবার এসে বলে গেলেন, 'ওর সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। আশা করি মত বদলাবে।' সেই সাজ্জাদুলই আবার কিছুক্ষণ পর মুশফিকের সিদ্ধান্ত পাল্টানো নিয়ে সন্দিহান, 'ভেরি আর্লি টু কমেন্ট।' গতকাল রাতে এ প্রতিবেদন লেখার সময় হোটেলের লবিতে পায়চারি করতে থাকা মুশফিকের শরীরি ভাষায়ও নিজের অবস্থান থেকে সরে আসার কোনো লক্ষণ দেখা গেল না। অর্থাৎ নিজের সিদ্ধান্তেই অনড় তিনি।
মাঠ থেকে ড্রেসিংরুমে ফিরেই সতীর্থদের নিজের সে সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন মুশফিকুর রহিম। ম্যানেজার তানজীব আহসান জানাচ্ছিলেন, 'ম্যাচের পর দেখি ড্রেসিংরুমে সবাই ওকে কী যেন বোঝাচ্ছে। কাছে গিয়ে জানতে পারি ওই সিদ্ধান্তের কথা।' দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের জন্য সতীর্থদের সবাই অনুরোধ করেছেন মুশফিককে। বরাবরের আবেগপ্রবণ অধিনায়ক যেন এ সিদ্ধান্ত মিডিয়াকে না জানিয়ে দেন, সে লক্ষ্যেই নাকি তাঁর পরিবর্তে কাল সংবাদ সম্মেলনে পাঠানো হয় মাহমুদউল্লাহকে। সে কারণেই সম্ভবত মুশফিককে পাশের চেয়ারে বসতে দেখে বিব্রত হয়ে পড়েছিলেন সহ-অধিনায়ক। বুঝে ফেলেছিলেন, আবেগী মুশফিক চমকে দেওয়া ঘোষণা দিতেই হাজির হয়েছেন সংবাদমাধ্যমের সামনে। সে ঘোষণা দেওয়ার পর যেমন মিলিয়ে নেওয়া গেল পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে নিজের অংশ শেষ হতেই তাঁর হুড়মুড়িয়ে ড্রেসিংরুমে ঢুকে পড়ার কারণও। পূর্বপ্রস্তুতি একরকম নেওয়াই ছিল। দলীয় একটি সূত্রের সন্দেহ, 'শুধু হারার কারণেই পদত্যাগ করেছেন মুশফিক- এটা বিশ্বাস হয় না। নিশ্চয়ই অন্য কোনো কারণ আছে।' কিন্তু সেটা কী, তা জানতে মুশফিকের অন্তর্যামী হওয়া ছাড়া উপায় নেই। আপাতত সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার আগ্রহ অধিনায়কের নেই বলে কাল রাতে জানিয়ে দিয়েছেন ম্যানেজার তানজীব।
বিসিবির 'স্বীকৃতি' এখনো পায়নি মুশফিকুর রহিমের সিদ্ধান্ত। তবে তাঁর ঘোষণায় জিম্বাবুয়ে সফর এবং জিম্বাবুয়ের সঙ্গে খেলা কেমন যেন অভিশপ্ত হয়ে রইল বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য! বিশেষ করে বাংলাদেশি অধিনায়কদের জন্য। ২০০১ সালের এপ্রিলে প্রথম জিম্বাবুয়ে সফরের অধিনায়ক নাঈমুর রহমান একই দলের বিপক্ষে একই বছরের নভেম্বরে দেশের মাটিতে দুই টেস্টের সিরিজের পর অধিনায়কত্ব হারান। ২০১১ সালে দেশে ফিরে নেতৃত্ব হারান সাকিব আল হাসানও। আর এবার নিজে থেকেই অধিনায়কত্ব ছাড়ার ঘোষণা দিলেন মুশফিকুর রহিম।
ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে হাজির হলেন সহ-অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। সবাই ধরে নিলেন, মুশফিক হয়তো আসবেনই না। কারণ ক্রিকেট-সংশ্লিষ্ট সবারই কম-বেশি জানা যে, ব্যর্থতায় বড় বেশি মুষড়ে পড়েন তিনি। ২০১১ সালের সেই সফরেও এমন একবার হয়েছিল। হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে প্রথম দুটি ম্যাচ হারা বাংলাদেশ সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডে খেলতে নেমেছিল। তাতে প্রথম ওয়ানডে সেঞ্চুরি করে দলকে জয়ের ধারে নিয়ে গিয়েও হারের হতাশায় মুশফিক এমনই ভেঙে পড়েছিলেন যে, সংবাদ সম্মেলনেই আর আসেননি। হারারেতে পাঁচ ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের তৃতীয় ম্যাচেও হারের পর ড্রেসিংরুমে কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন তিনি। তবে সেবার বুলাওয়েতে এসে ভাগ্য ফিরেছিল বাংলাদেশের। শেষ দুটো ওয়ানডেতে জয়ের সান্ত্বনা মিলেছিল এখানেই। কিন্তু এবার সেই বুলাওয়েতেই আরেকটি ব্যর্থতার পর সংবাদ সম্মেলনে না আসায় হতাশ মুশফিকের কল্পিত ছবিটাই যেন দেখছিলেন উপস্থিত সবাই। কিন্তু মাহমুদউল্লাহর সংবাদ সম্মেলনের মাঝামাঝি হুট করেই হাজির মুশফিক। বিলম্বের জন্য দুঃখ প্রকাশ যেমন করলেন, তেমনি সিরিজ হারের ময়নাতদন্ত করতে করতে এক পর্যায়ে দিয়ে দিলেন সরে দাঁড়ানোর আকস্মিক ঘোষণাটাও। জানিয়েছেন, দুই ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের পর আর অধিনায়ক পদে থাকছেন না তিনি। ব্যর্থতার দায় নিয়ে বলেছেন, 'দলও খারাপ খেলেছে। আমিও বাজে খেলেছি।'
এমন বিনা মেঘে বজ পাতের আধঘণ্টা পরও অন্ধকারে বাংলাদেশ দলের সঙ্গে জিম্বাবুয়েতে অবস্থানরত বিসিবির অ্যাডহক কমিটির সদস্য আহমেদ সাজ্জাদুল আলম। ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণীর আনুষ্ঠানিকতা শেষে হোটেলে ফিরে যাওয়া সাজ্জাদুলকে টেলিফোনে খবরটা দেওয়ার পর চমকে ওঠেন তিনি, 'তাই নাকি! কই, আমাকে তো কেউ কিছু বলেনি!' বোর্ড মনোনীত অধিনায়ক হিসেবে পদত্যাগের বিষয়টি যথাযথ স্থানে জানানো মুশফিকুর রহিমের দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে। কিন্তু সেটি তিনি না করায় আরো বিস্মিত সাজ্জাদুলের প্রশ্ন, 'এটা কি সে বোর্ডকে জানিয়েছে?'
বোর্ডকে জানাননি, তবে মাঠ থেকে হোটেলে ফেরার পরপরই অধিনায়কের মত বদলাতে উদ্যোগী হয়েছেন এ বোর্ড সদস্যসহ নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন এবং জাতীয় দলের হেড কোচ শেন জার্গেনসেন। মুশফিকের সঙ্গে সে আলোচনায় ঢাকা থেকে টেলিফোনে যুক্ত হয়েছিলেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসানও। চতুর্মুখী আলোচনার ফল কখনও ইতিবাচক তো আবার পরক্ষণেই নেতিবাচক। সাজ্জাদুল একবার এসে বলে গেলেন, 'ওর সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। আশা করি মত বদলাবে।' সেই সাজ্জাদুলই আবার কিছুক্ষণ পর মুশফিকের সিদ্ধান্ত পাল্টানো নিয়ে সন্দিহান, 'ভেরি আর্লি টু কমেন্ট।' গতকাল রাতে এ প্রতিবেদন লেখার সময় হোটেলের লবিতে পায়চারি করতে থাকা মুশফিকের শরীরি ভাষায়ও নিজের অবস্থান থেকে সরে আসার কোনো লক্ষণ দেখা গেল না। অর্থাৎ নিজের সিদ্ধান্তেই অনড় তিনি।
মাঠ থেকে ড্রেসিংরুমে ফিরেই সতীর্থদের নিজের সে সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন মুশফিকুর রহিম। ম্যানেজার তানজীব আহসান জানাচ্ছিলেন, 'ম্যাচের পর দেখি ড্রেসিংরুমে সবাই ওকে কী যেন বোঝাচ্ছে। কাছে গিয়ে জানতে পারি ওই সিদ্ধান্তের কথা।' দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের জন্য সতীর্থদের সবাই অনুরোধ করেছেন মুশফিককে। বরাবরের আবেগপ্রবণ অধিনায়ক যেন এ সিদ্ধান্ত মিডিয়াকে না জানিয়ে দেন, সে লক্ষ্যেই নাকি তাঁর পরিবর্তে কাল সংবাদ সম্মেলনে পাঠানো হয় মাহমুদউল্লাহকে। সে কারণেই সম্ভবত মুশফিককে পাশের চেয়ারে বসতে দেখে বিব্রত হয়ে পড়েছিলেন সহ-অধিনায়ক। বুঝে ফেলেছিলেন, আবেগী মুশফিক চমকে দেওয়া ঘোষণা দিতেই হাজির হয়েছেন সংবাদমাধ্যমের সামনে। সে ঘোষণা দেওয়ার পর যেমন মিলিয়ে নেওয়া গেল পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে নিজের অংশ শেষ হতেই তাঁর হুড়মুড়িয়ে ড্রেসিংরুমে ঢুকে পড়ার কারণও। পূর্বপ্রস্তুতি একরকম নেওয়াই ছিল। দলীয় একটি সূত্রের সন্দেহ, 'শুধু হারার কারণেই পদত্যাগ করেছেন মুশফিক- এটা বিশ্বাস হয় না। নিশ্চয়ই অন্য কোনো কারণ আছে।' কিন্তু সেটা কী, তা জানতে মুশফিকের অন্তর্যামী হওয়া ছাড়া উপায় নেই। আপাতত সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার আগ্রহ অধিনায়কের নেই বলে কাল রাতে জানিয়ে দিয়েছেন ম্যানেজার তানজীব।
বিসিবির 'স্বীকৃতি' এখনো পায়নি মুশফিকুর রহিমের সিদ্ধান্ত। তবে তাঁর ঘোষণায় জিম্বাবুয়ে সফর এবং জিম্বাবুয়ের সঙ্গে খেলা কেমন যেন অভিশপ্ত হয়ে রইল বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য! বিশেষ করে বাংলাদেশি অধিনায়কদের জন্য। ২০০১ সালের এপ্রিলে প্রথম জিম্বাবুয়ে সফরের অধিনায়ক নাঈমুর রহমান একই দলের বিপক্ষে একই বছরের নভেম্বরে দেশের মাটিতে দুই টেস্টের সিরিজের পর অধিনায়কত্ব হারান। ২০১১ সালে দেশে ফিরে নেতৃত্ব হারান সাকিব আল হাসানও। আর এবার নিজে থেকেই অধিনায়কত্ব ছাড়ার ঘোষণা দিলেন মুশফিকুর রহিম।
No comments:
Post a Comment