রাতে বাইরে কোথাও খেতে গিয়েছিলেন। সাজেদুল ইসলাম আর শামসুর রহমানকে নিয়ে
হোটেলে ফিরে রিসেপশনে কী নিয়ে যেন কথা বললেন। এরপর পা বাড়ালেন লিফটের দিকে।
পেছনে থেকে ‘ক্যাপ্টেন...’ বলে ডাক দিতেই কপাল কোঁচকানো বিরক্তি নিয়ে
তাকালেন মুশফিকুর রহিম, ‘আবার কী ভাই...?’
মুশফিকের বিরক্ত হওয়াটাই স্বাভাবিক। পরশু সিরিজ শেষের সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণার পর থেকে সময়টা কেমন যাচ্ছিল না বোঝার কথা নয়। একের পর এক কথা বলতে হয়েছে এটা নিয়েই। সন্ধ্যায় মাঠ থেকে হোটেলে ফিরেই মুশফিককে নিয়ে আলোচনায় বসেছিলেন দলের সঙ্গে থাকা বোর্ড কর্মকর্তা আহমেদ সাজ্জাদুল আলম, নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন ও কোচ শেন জার্গেনসেন। দু-একজন সতীর্থ রুমে গিয়ে বুঝিয়ে এসেছেন মাথা ঠান্ডা রাখতে। ঢাকা থেকে টেলিফোনে কথা বলেছেন বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান ও পরিবারের সদস্যরা। পদত্যাগের সিদ্ধান্তে বিস্ময় প্রকাশ করে সবাই সিদ্ধান্ত বদলানোর অনুরোধ করেছেন। মুশফিক সিদ্ধান্তে অনড়। এ ধরনের ‘যুদ্ধ’ আগে কখনো করেননি বলে ক্লান্তি আর বিরক্তি আসাটাই স্বাভাবিক।
কিন্তু কেন হঠাৎ পদত্যাগ করলেন মুশফিক? বোর্ড জানে না, টিম ম্যানেজমেন্ট জানে না, কোচ-সতীর্থ কেউ জানেন না, সংবাদ সম্মেলনে আকস্মিক এ ঘোষণার রহস্য কী?
পরশু রাতে হলিডে ইন হোটেলে দলের একাধিক খেলোয়াড় এবং টিম ম্যানেজমেন্ট সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে—সংবাদ সম্মেলনে মুশফিক যে ব্যাখ্যা দিয়েছেন, পদত্যাগের কারণ সেটাই। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ হারের হতাশা থেকেই এমন সিদ্ধান্ত। আহমেদ সাজ্জাদুল আলম বলেছেন, ‘সংবাদ সম্মেলনে যে কারণ দেখিয়েছে, আমাদেরও মুশফিক তাই বলেছে। এ ছাড়া আমি অন্যভাবেও খোঁজখবর নিয়েছি এখানে আর কোনো কারণ আছে কিনা। আমার মনে হয় এখানে অন্য কিছু নেই। সিরিজ হারায় আবেগপ্রবণ হয়ে সে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’ একই ধারণা মিনহাজুল আবেদীনেরও, ‘ও এটা ইমোশনালি করেছে। নইলে বোর্ড, পরিবার, টিমমেট কারও সঙ্গে কথা না বলে সে কী করে এত বড় সিদ্ধান্ত নেয়! আমরা ওকে বোঝানোর চেষ্টা করছি।’ দলের একাধিক খেলোয়াড়ের সঙ্গে কথা বলেও প্রায় একই বার্তা পাওয়া গেছে। মুশফিকের পদত্যাগের কারণ হিসেবে দলের সবার সহযোগিতা না পাওয়ার কথাও আসছে। তবে মুশফিকের খুব ঘনিষ্ঠরাও সমর্থন করছেন না এ ধারণাকে।
পদত্যাগ করলেও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে মুশফিকই অধিনায়কত্ব করবেন। আপাতত তাই বিষয়টা নিয়ে আর আলোচনা করতে আগ্রহী নয় টিম ম্যানেজমেন্ট। ‘টি-টোয়েন্টি ম্যাচে সে-ই অধিনায়কত্ব করবে। আর জিম্বাবুয়ে সফরের পর আপাতত খেলাও নেই। কাজেই এখানে আর নতুন করে কিছু হওয়ার সম্ভাবনা নেই। কথাবার্তা যা বলার দেশে ফিরে বলব’—জানিয়েছেন আহমেদ সাজ্জাদুল আলম।
দল সূত্রে জানা গেছে, সংবাদ সম্মেলনে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিলেও পরশু তৃতীয় ওয়ানডের শেষ দিকে মাঠেই তামিম ইকবালকে পদত্যাগের সিদ্ধান্তের কথা জানান মুশফিক। খেলা চলায় মাঠে তামিম এ নিয়ে আর কথা বাড়াননি। পরে খেলা শেষে নাকি মুশফিক নিজ থেকেই সংবাদ সম্মেলনে যাওয়ার আগ্রহ দেখান। তার আগে ড্রেসিংরুমে ‘একটা কথা আছে’ বলে সবার দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করলে এগিয়ে যান তামিম। অনুরোধ করেন মুশফিক যেন সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন। ততক্ষণে বিষয়টা আঁচ করতে পেরে মাহমুদউল্লাহ, রাজ্জাক, শামসুর রহমানসহ আরও কয়েকজনও তাঁকে বোঝানো শুরু করেন। মুশফিক তার পরও সিদ্ধান্তে অনড় থাকলে তামিম বলেন, এখনই কোনো সিদ্ধান্ত জানানোর দরকার নেই। যা বলার মুশফিক যেন সিরিজ শেষে বলেন।
বিষয়টা তখন পর্যন্ত টিম ম্যানেজমেন্টের কানে না পৌঁছালেও মুশফিক আইস বাথ নেওয়ার সময় যখন তামিম ও শামসুর তাঁকে বোঝাচ্ছিলেন, তাঁদের কথোপকথন কানে যায় কোচ শেন জার্গেনসেনের। টিম ম্যানেজার তানজীব আহসানকে তিনি বিষয়টা দেখতে বলেন। ম্যানেজার তখনই খেলোয়াড়দের কাছ থেকে প্রথম শোনেন মুশফিকের পদত্যাগের সিদ্ধান্তের কথা। এ সময় মুশফিক সংবাদ সম্মেলনে আসার জন্য প্রস্তুতি নিলে অন্যরা বাধা দেন। সবাই বুঝতে পারছিলেন সংবাদ সম্মেলনে গিয়েই পদত্যাগের ঘোষণা দেবেন অধিনায়ক। সহ-অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ তখন মুশফিককে সংবাদ সম্মেলনে না আসতে বলে চলে আসেন নিজেই। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সতীর্থদের চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে সংবাদ সম্মেলনে চলে আসেন মুশফিকও, ঘোষণা দেন পদত্যাগের।
সিরিজ এখনো চলছে। মুশফিকের পদত্যাগ যাতে টি-টোয়েন্টি ম্যাচে কোনো ছায়া না ফেলে, সে ব্যাপারে যথেষ্টই সচেতন টিম ম্যানেজমেন্ট। খেলোয়াড়দের প্রতিও অলিখিত নির্দেশ এ নিয়ে কথা না বলার। তবে সূত্র জানিয়েছে, পরশু হোটেলে ফেরার পরও দলের একাধিক খেলোয়াড় মুশফিককে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার অনুরোধ করেন। মোহাম্মদ আশরাফুল রুমে গিয়ে অধিনায়কের সঙ্গে কথা বলেছেন। কাল সকালে কথা বলেছেন তামিমও। নাম প্রকাশ না করার শর্তে দলের এক খেলোয়াড় বললেন, ‘মুশফিক সম্পূর্ণ আবেগতাড়িত হয়ে এটা করেছে। পদত্যাগ করার মতো কিছুই হয়নি। দলের কারও সঙ্গেই তাঁর কোনো সমস্যা নেই। আমরা সবাই ওর সঙ্গে আছি।’ আরেকজন তো নিশ্চিত করেই বললেন, ‘মুশফিককে অনেক দিন থেকে চিনি। আমি গ্যারান্টি দিচ্ছি, ও সিদ্ধান্ত বদলাবে। সিরিজটা শেষ হোক। দেশে ফিরলেই সব ঠিক হয়ে যাবে। এটা এমন সিরিয়াস কিছু না।’
জাতীয় দলের সতীর্থ থেকে শুরু করে দেশের সাধারণ ক্রিকেটপ্রেমী—মুশফিকুর রহিমকেই অধিনায়ক হিসেবে দেখতে চায় সবাই। মুশফিকও নিশ্চয়ই বুঝবেন, ক্রিকেটে আবেগের চেয়ে দায়িত্ব অনেক বড়। আর সেটা তাঁর মতো ভালো নিকট অতীতে কেউ পালন করেনি।
মুশফিকের বিরক্ত হওয়াটাই স্বাভাবিক। পরশু সিরিজ শেষের সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণার পর থেকে সময়টা কেমন যাচ্ছিল না বোঝার কথা নয়। একের পর এক কথা বলতে হয়েছে এটা নিয়েই। সন্ধ্যায় মাঠ থেকে হোটেলে ফিরেই মুশফিককে নিয়ে আলোচনায় বসেছিলেন দলের সঙ্গে থাকা বোর্ড কর্মকর্তা আহমেদ সাজ্জাদুল আলম, নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন ও কোচ শেন জার্গেনসেন। দু-একজন সতীর্থ রুমে গিয়ে বুঝিয়ে এসেছেন মাথা ঠান্ডা রাখতে। ঢাকা থেকে টেলিফোনে কথা বলেছেন বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান ও পরিবারের সদস্যরা। পদত্যাগের সিদ্ধান্তে বিস্ময় প্রকাশ করে সবাই সিদ্ধান্ত বদলানোর অনুরোধ করেছেন। মুশফিক সিদ্ধান্তে অনড়। এ ধরনের ‘যুদ্ধ’ আগে কখনো করেননি বলে ক্লান্তি আর বিরক্তি আসাটাই স্বাভাবিক।
কিন্তু কেন হঠাৎ পদত্যাগ করলেন মুশফিক? বোর্ড জানে না, টিম ম্যানেজমেন্ট জানে না, কোচ-সতীর্থ কেউ জানেন না, সংবাদ সম্মেলনে আকস্মিক এ ঘোষণার রহস্য কী?
পরশু রাতে হলিডে ইন হোটেলে দলের একাধিক খেলোয়াড় এবং টিম ম্যানেজমেন্ট সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে—সংবাদ সম্মেলনে মুশফিক যে ব্যাখ্যা দিয়েছেন, পদত্যাগের কারণ সেটাই। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ হারের হতাশা থেকেই এমন সিদ্ধান্ত। আহমেদ সাজ্জাদুল আলম বলেছেন, ‘সংবাদ সম্মেলনে যে কারণ দেখিয়েছে, আমাদেরও মুশফিক তাই বলেছে। এ ছাড়া আমি অন্যভাবেও খোঁজখবর নিয়েছি এখানে আর কোনো কারণ আছে কিনা। আমার মনে হয় এখানে অন্য কিছু নেই। সিরিজ হারায় আবেগপ্রবণ হয়ে সে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’ একই ধারণা মিনহাজুল আবেদীনেরও, ‘ও এটা ইমোশনালি করেছে। নইলে বোর্ড, পরিবার, টিমমেট কারও সঙ্গে কথা না বলে সে কী করে এত বড় সিদ্ধান্ত নেয়! আমরা ওকে বোঝানোর চেষ্টা করছি।’ দলের একাধিক খেলোয়াড়ের সঙ্গে কথা বলেও প্রায় একই বার্তা পাওয়া গেছে। মুশফিকের পদত্যাগের কারণ হিসেবে দলের সবার সহযোগিতা না পাওয়ার কথাও আসছে। তবে মুশফিকের খুব ঘনিষ্ঠরাও সমর্থন করছেন না এ ধারণাকে।
পদত্যাগ করলেও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে মুশফিকই অধিনায়কত্ব করবেন। আপাতত তাই বিষয়টা নিয়ে আর আলোচনা করতে আগ্রহী নয় টিম ম্যানেজমেন্ট। ‘টি-টোয়েন্টি ম্যাচে সে-ই অধিনায়কত্ব করবে। আর জিম্বাবুয়ে সফরের পর আপাতত খেলাও নেই। কাজেই এখানে আর নতুন করে কিছু হওয়ার সম্ভাবনা নেই। কথাবার্তা যা বলার দেশে ফিরে বলব’—জানিয়েছেন আহমেদ সাজ্জাদুল আলম।
দল সূত্রে জানা গেছে, সংবাদ সম্মেলনে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিলেও পরশু তৃতীয় ওয়ানডের শেষ দিকে মাঠেই তামিম ইকবালকে পদত্যাগের সিদ্ধান্তের কথা জানান মুশফিক। খেলা চলায় মাঠে তামিম এ নিয়ে আর কথা বাড়াননি। পরে খেলা শেষে নাকি মুশফিক নিজ থেকেই সংবাদ সম্মেলনে যাওয়ার আগ্রহ দেখান। তার আগে ড্রেসিংরুমে ‘একটা কথা আছে’ বলে সবার দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করলে এগিয়ে যান তামিম। অনুরোধ করেন মুশফিক যেন সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন। ততক্ষণে বিষয়টা আঁচ করতে পেরে মাহমুদউল্লাহ, রাজ্জাক, শামসুর রহমানসহ আরও কয়েকজনও তাঁকে বোঝানো শুরু করেন। মুশফিক তার পরও সিদ্ধান্তে অনড় থাকলে তামিম বলেন, এখনই কোনো সিদ্ধান্ত জানানোর দরকার নেই। যা বলার মুশফিক যেন সিরিজ শেষে বলেন।
বিষয়টা তখন পর্যন্ত টিম ম্যানেজমেন্টের কানে না পৌঁছালেও মুশফিক আইস বাথ নেওয়ার সময় যখন তামিম ও শামসুর তাঁকে বোঝাচ্ছিলেন, তাঁদের কথোপকথন কানে যায় কোচ শেন জার্গেনসেনের। টিম ম্যানেজার তানজীব আহসানকে তিনি বিষয়টা দেখতে বলেন। ম্যানেজার তখনই খেলোয়াড়দের কাছ থেকে প্রথম শোনেন মুশফিকের পদত্যাগের সিদ্ধান্তের কথা। এ সময় মুশফিক সংবাদ সম্মেলনে আসার জন্য প্রস্তুতি নিলে অন্যরা বাধা দেন। সবাই বুঝতে পারছিলেন সংবাদ সম্মেলনে গিয়েই পদত্যাগের ঘোষণা দেবেন অধিনায়ক। সহ-অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ তখন মুশফিককে সংবাদ সম্মেলনে না আসতে বলে চলে আসেন নিজেই। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সতীর্থদের চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে সংবাদ সম্মেলনে চলে আসেন মুশফিকও, ঘোষণা দেন পদত্যাগের।
সিরিজ এখনো চলছে। মুশফিকের পদত্যাগ যাতে টি-টোয়েন্টি ম্যাচে কোনো ছায়া না ফেলে, সে ব্যাপারে যথেষ্টই সচেতন টিম ম্যানেজমেন্ট। খেলোয়াড়দের প্রতিও অলিখিত নির্দেশ এ নিয়ে কথা না বলার। তবে সূত্র জানিয়েছে, পরশু হোটেলে ফেরার পরও দলের একাধিক খেলোয়াড় মুশফিককে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার অনুরোধ করেন। মোহাম্মদ আশরাফুল রুমে গিয়ে অধিনায়কের সঙ্গে কথা বলেছেন। কাল সকালে কথা বলেছেন তামিমও। নাম প্রকাশ না করার শর্তে দলের এক খেলোয়াড় বললেন, ‘মুশফিক সম্পূর্ণ আবেগতাড়িত হয়ে এটা করেছে। পদত্যাগ করার মতো কিছুই হয়নি। দলের কারও সঙ্গেই তাঁর কোনো সমস্যা নেই। আমরা সবাই ওর সঙ্গে আছি।’ আরেকজন তো নিশ্চিত করেই বললেন, ‘মুশফিককে অনেক দিন থেকে চিনি। আমি গ্যারান্টি দিচ্ছি, ও সিদ্ধান্ত বদলাবে। সিরিজটা শেষ হোক। দেশে ফিরলেই সব ঠিক হয়ে যাবে। এটা এমন সিরিয়াস কিছু না।’
জাতীয় দলের সতীর্থ থেকে শুরু করে দেশের সাধারণ ক্রিকেটপ্রেমী—মুশফিকুর রহিমকেই অধিনায়ক হিসেবে দেখতে চায় সবাই। মুশফিকও নিশ্চয়ই বুঝবেন, ক্রিকেটে আবেগের চেয়ে দায়িত্ব অনেক বড়। আর সেটা তাঁর মতো ভালো নিকট অতীতে কেউ পালন করেনি।
No comments:
Post a Comment