সিলেট নগরীর হাজারীবাগে একটি টিলা ধসে গেছে। এতে অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছে
কয়েকটি পরিবার। ভূমিধসের আশঙ্কা প্রকাশ করে আবহাওয়া অধিদফতরের বিশেষ
বুলেটিন দেওয়ার দু’দিনের মাথায় শনিবার এ ঘটনা ঘটলো।
দু’দিন আগে আবহওয়া অধিদফতরের বিশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে, ভারী বর্ষণের ফলে সিলেটের পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে।
বুলেটিনে জানানো হয়, কালবৈশাখীর প্রভাবে ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। ভারী বৃষ্টির ফলে সিলেট বিভাগের পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে।
সিলেটের
নবনিযুক্ত জেলা প্রশাসক শহিদুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, হাজারীবাগে
ধসে পড়া টিলা পরিদর্শন করেছেন তিনি। এ ব্যাপারে ঝুঁকি এড়াতে ওই স্থানের
বসবাসরতদের সড়ে যেতে নির্দেশ দিয়েছেন।
ঘটনার পরই টিলা সংলগ্ন দু’টি পরিবার বসতভিটা ছেড়ে গেছে বলে স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে।
শুধু
হাজারীবাগই নয়, নগরীর সকল পাহাড় ও টিলার পাদদেশে ঝুঁকি নিয়ে বসবাস বেড়েছে।
ধসের আশঙ্কা সত্ত্বেও নগরী ও আশপাশের কয়েক হাজার মানুষ মৃত্যুঝুঁকি নিয়েই
বসবাস করছেন পাহাড়-টিলার পাদদেশে।
ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোর মধ্যে
রয়েছে- নগরীর উপকণ্ঠের বালুচর, হাজারীবাগ, বিমানবন্দর সড়ক, খাদিমপাড়া,
খাদিমনগর, মেজরটিলা, মংলিরপাড় ও ইসলামপুর। এসব এলাকার বিভিন্ন টিলার
পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছে কয়েকশ’ পরিবার।
গত বছরের
জানুয়ারিতে সেভ দ্য হেরিটেজের এক জরিপে দেখা গেছে, সিলেটে টিলার পাদদেশে
বাড়ি নির্মাণ করে বসবাস করায় ১০ হাজার লোক ঝুঁকিতে রয়েছেন।
এ ছাড়া
জৈন্তাপুর উপজেলার নয়াখেল, আঞ্জা গ্রাম ফেঞ্চুগঞ্জ, গোলাপগঞ্জ ও
বিয়ানীবাজার উপজেলায় বিভিন্ন টিলা ও পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকি নিয়ে বসবাস
করছেন আরও কয়েক সহস্রাধিক লোক।
তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও কোথাও পাহাড়- টিলার পাদদেশে বসতকারী ঘর-বাড়ির কোনো তালিকা নেই।
জানা
গেছে, প্রতি বর্ষা মৌসুম এলেই টানা বৃষ্টিতে দেখা দেয় টিলাধসের ঝুঁকি।
বিভিন্ন সময়ে টিলাধসে প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছে। ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের
উচ্ছেদে বিচ্ছিন্ন কিছু অভিযান চালানো হলেও তাদের পুনর্বাসনে নেওয়া হয়নি
কোনো উদ্যোগ। ফলে ফের টিলার পাদদেশে ঘর নির্মাণ করেছেন ভূমিহীনরা।
গত
কয়েক দিনের টানা বর্ষণে সিলেটে টিলাধসের যে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে এতে
দুর্ঘটনা ঘটলে উদ্ধার কার্যক্রম চালানোর মতো সরঞ্জামাদিও সিলেটে নেই বলে
জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক পরিমল
কুণ্ডু।
তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘‘দুর্ঘটনা ঘটার আগে বসতি সরিয়ে দিতে হবে। আর উদ্ধার তৎপরতা চালানো জন্য দরকার বড় কোনো সরঞ্জাম।”
তিনি বলেন, “মাটি কাটতে যে কঠিন সরঞ্জামগুলো দরকার, সিলেটে সেগুলোও নেই। সিলেটে রয়েছে শুধু কোদাল আর বেলচা।”
বেলা’র
সিলেটের আঞ্চলিক সমন্বয়কারী শাহ সাহেদা আখতার বাংলানিউজকে বলেন, টিলা
কাটার ফলে ধস হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের দায়িত্বহীনতা এর জন্য দায়ী বলে
উল্লেখ করেন তিনি।
সাহেদা বলেন, ‘‘সিলেটে নির্বিচারে টিলা কাটা হচ্ছে। এ অবস্থায় অনবরত বৃষ্টিপাতে টিলার ধস ঘটছে।’’
No comments:
Post a Comment