ঢাকার অদূরে ধামরাইয়ে আজ রোববার শুরু হচ্ছে ঐতিহ্যবাহী শ্রীশ্রীযশোমাধবের রথযাত্রা উৎসব। বিকেল পাঁচটায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন আনুষ্ঠানিকভাবে এ উৎসবের উদ্বোধন করবেন।
উৎসবের আয়োজক ও যশোমাধব মন্দির পরিচালনা কমিটি সূত্রে জানা গেছে, যশোমাধব মন্দির থেকে রথ টেনে প্রায় ২০০ গজ দূরের অপর একটি মন্দিরে নিয়ে যাওয়া হবে। ১১ জুলাই উল্টো রথযাত্রার মধ্য দিয়ে এ উৎসবের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি হবে। তবে লোকজ মেলা চলবে এক মাস ধরে।
যশোমাধবের এ রথযাত্রা মূলত সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উৎসব। এ কারণে ধামরাইয়ের ঘরে ঘরে এখন উৎসবের আমেজ। এ উৎসব ঘিরে ধামরাই শহরের প্রধান সড়কের দুই পাশে বসেছে লোকজ মেলা। এতে কুটির শিল্পের পসরা সাজিয়ে বসেছেন দুই শর বেশি দোকানি। আয়োজন করা হয়েছে পুতুলনাচ ও সার্কাসের। এ লোকজ মেলায় সব ধর্মের মানুষ অংশ নেয়।
যশোমাধব মন্দির পরিচালনা কমিটির সদস্য সুকান্ত বণিক বলেন, ১০৭৯ সাল থেকে যশোমাধব রথযাত্রা উৎসব শুরু হয়। পালবংশের শেষ রাজা যশোবন্ত পালের সময় মাটির ঢিবি খুঁড়ে মাধব মূর্তির সন্ধান মেলে। রাজা তখনকার পণ্ডিত গৌর রায়কে এ মূর্তিপূজার দায়িত্ব দেন। একপর্যায়ে মাধবের নামের আগে রাজা যশোবন্ত পালের নামের অর্ধেক অংশ জুড়ে দিয়ে বিগ্রহটির নাম রাখা হয় ‘যশোমাধব’। পরে পণ্ডিত গৌর রায় এ ‘যশোমাধব’ মূর্তির পূজার দায়িত্ব তাঁর জামাতা রামজয় মৌলিককে দেন। এরপর এলাকাবাসী রামজয় মৌলিককে নিয়ে আসেন ধামরাইয়ে। তখন ‘যশোমাধবকে’ ঘিরে ধামরাইয়ে গড়ে ওঠে মন্দির। এরপর ওই মন্দির থেকে শুরু হয় রথাযাত্রার।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী: রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী পৃথক বাণী দিয়ে শ্রীশ্রীযশোমাধবের রথযাত্রা উৎসবের সাফল্য কামনা করেছেন। এ উপলক্ষে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তাঁরা।
রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান তাঁর বাণীতে বলেন, ‘বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। এ দেশে বিভিন্ন ধর্মের মানুষ যুগ যুগ ধরে শান্তিপূর্ণভাবে সহাবস্থান করে নিজ নিজ ধর্ম ও অনুষ্ঠানাদি স্বাধীনভাবে পালন করছে। আমি আশা করি, এ রথযাত্রা সবার মধ্যে আরও সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতি গড়ে তুলতে ভূমিকা রাখবে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ রথযাত্রার সার্বিক সাফল্য কামনা করে বলেন, ‘জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সব সম্প্রদায়ের মধ্যে পারস্পরিক আস্থা ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধন গড়ে তুলতে এ রথযাত্রা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে বলে আমি আশা করি।’
No comments:
Post a Comment