ক্লোজআপ ওয়ান তারকা আবিদের খুলনা মহানগরীর মিয়াপাড়ার ১৮/১ 'সুনীড়' বাড়িটিতে শুক্রবার সন্ধ্যা থেকেই অসংখ্য মানুষের ভীড়। সবার মুখ মলিন। বুকে জমাটবাধা দীর্ঘশ্বাসে গুমোট ভারি পরিবেশ। থেকে থেকে মুর্ছা যাচ্ছেন আবিদের মা রমা রহমান। তার আহাজারিতে আগতদের চোখে জল আসে। সুনীড় এখন পরিণত হয়েছে শোকের নীড়ে। মা আহাজারি ক'রে বলতে থাকেন, 'আমার বাপি অনেক স্বপ্ন দেখাতো। স্টুডিও করবে। নতুন এ্যালবাম বের হবে, আরো কতো কি। সব শেষ। এমন কেন হলো? আমিতো ওকে ঢাকায় রেখে ওর গন্ধ নিয়েই বেঁচে ছিলাম। এমন কেন হলো? এখন বাঁচবো কি নিয়ে?' উপস্থিত লোকজন এসব প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেন না। সবাই কেঁদে বুক ভাসান। আত্মিয়রা জানান, শুক্রবার বিকেলে আবিদ মা'কে মোবাইল ফোনে বলেছিলেন 'মা কক্সবাজারের বৌদ্ধ মন্দির দেখেছি। কিছুক্ষণ পরে সাগর সৈকতে যাবো। তুমি চিন্তা করো না। তখন মা বলেছিলেন, সাবধানে থাকিস বাবা। সেই সাবধান বানী আর কাজে এলো না। আবিদের পুরো নাম মীনা আবিদ শাহরিয়ার বাপি (২৫)। মা আদর করে বাপি বলেই ডাকতেন। দুই ভাইয়ের মধ্যে আবিদ বড়। ছোট ভাই মীনা বাঁধন শাহরিয়ার অষ্টম শ্রেনীর ছাত্র। বাবা মীনা মিজানুর রহমান খুলনার বিশিষ্ট আইনজীবী ও সাংস্কৃতিক সংগঠক। আবিদের ছোট বেলা থেকেই গানের প্রতি ছিলো প্রবল আসক্তি। শেষমেশ ২০০৫ সালের প্রথম ক্লোজআপ প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে দেশের মানুষের মন জয় করেন। তার অসাধারন ভরাট কণ্ঠে গাওয়া 'পাগলা হাওয়ার বাদল দিনে......., কিংবা 'এই খানে এক নদী ছিল....' হাজারও বাঙালীর মনে জায়গা করে নেয়। গতকাল শনিবার সকালে তার লাশ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বিভিন্ন শ্রেনী-পেশার লোকজন তাকে দেখতে আসেন ও তার মরদেহে পুস্পস্তবক অর্পন করেন। পরে বিকেলে বেসরকারি টেলিভিশন এনটিভি কার্যালয়ে তার জানাযা হয়, সন্ধ্যায় আবিদের লাশ খুলনায় পৌছায়। রাতেই জানাযা শেষে গ্রামের বাড়ি মহেশ্বরপাশার পারিবারিক কবর স্থানে তাকে দাফন করার কথা। ঢাকা থেকে আবিদের লাশের সঙ্গে ক্লোজআপ তারকা মুহিন, সাবি্বর, কিশোর, পুলক, মেহরাবও খুলনায় যান। আমাদের কক্সবাজার প্রতিনিধি জানান, অনেক খোঁজাখুজির পর আবিদের অপর বন্ধু নিখোঁজ আশিকের লাশ গতকাল সকালে উদ্ধার করা হয়েছে।
No comments:
Post a Comment