গত এক বছরে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন স্কুলে শিক্ষার্থী বা দুর্বৃত্তদের
গুলিতে স্কুলের শিক্ষার্থী ছাড়াও অনেক মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। ভয়ংকর এ
প্রবণতা থামাতে করণীয় বিষয়ে আলোচনা ও বিতর্কের অন্ত নেই। একদল বলছে অস্ত্র
আইন কড়াকড়ি করতে, আরেক দল বলছে পাঠ্যসূচি বদলাতে। কিন্তু নতুন একটি আইন
নতুন বিতর্কের অবতারণা করেছে।
এখন থেকে শিক্ষক ও অন্যান্য কর্মচারীদের হাতে অস্ত্র তুলে দিতে পারবে স্কুল
কর্তৃপক্ষ। বিবিসি বলছে, এ জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সাউথ ডাকোটা অঙ্গরাজ্যের
সরকার এক নতুন আইন জারি করেছে। আইনটির সমর্থকেরা বলছেন, শিক্ষকদের হাতে
অস্ত্র থাকলে গত ডিসেম্বর মাসে কানেকটিকাট শহরের স্কুলে যে হত্যাকাণ্ড
হয়েছে, তার পুনরাবৃত্তি হবে না। ওই হত্যাকাণ্ডে শিক্ষার্থীসহ ২৬ জন প্রাণ
হারায়।
কেন্দ্রীয় সরকার যখন বন্দুক ব্যবহার সীমিত করার জন্য আইন প্রণয়নের চেষ্টা
করছে, তখন সাউথ ডাকোটা সরকার নতুন বিধি জারি করল। এতে দেশটিতে অস্ত্র
নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিভক্তি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
তবে নতুন বিধি মোতাবেক শিক্ষক-কর্মকর্তাদের অস্ত্র দিতে স্কুলগুলো বাধ্য
থাকবে না। শিক্ষকরাও অস্ত্র ব্যবহার করতে বাধ্য হবেন না। তবে চাইলে কোনো
স্কুল কর্তৃপক্ষ শিক্ষকদের সশস্ত্র করতে পারবে।
সাউথ ডাকোটার রিপাবলিকান পার্টির সরকার বিধিটি পাস করেছে। এতে
শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্য থেকে ‘স্কুল রক্ষীদের’ তৈরি করার সুযোগ
থাকছে।
বিভিন্ন স্কুলের পরিচালনা পরিষদের কয়েকজন সদস্য, শিক্ষক ও অন্যান্য
কর্মকর্তারা বলছেন, শ্রেণিকক্ষে বন্দুক নিয়ে প্রবেশের অনুমতি দিলে ফল ভালো
হবে না।
রিপাবলিকান পার্টির নেতা স্কট ক্রেইগ বিবিসিকে বলেন, বিভিন্ন স্কুলের বেশ
কিছু কর্মকর্তা নতুন বিধি চাইছেন। তিনি আরও বলেন, ছোট শহরের স্কুলগুলোর এমন
সামর্থ্য নেই যে তারা সারাক্ষণ পুলিশ পুষবে।
ভারতে
প্রথমবারের মতো শুধু নারীদের জন্য একটি ডাকঘর খোলা হয়েছে। রাজধানী
নয়াদিল্লির এ ডাকঘরে সব পদেই নারী কর্মী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক
নারী দিবস উপলক্ষে গতকাল শুক্রবার টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক
মন্ত্রী কপিল সিবাল ডাকঘরটি উদ্বোধন করেন।
উদ্বোধনের পর মন্ত্রী বলেন, নতুন ডাকঘরটির সব কিছু নারী কর্মীরা পরিচালনা
করবেন। আর দশটা ডাকঘরে গ্রাহকরা যেসব সেবা পান তার সবই এখানেও থাকবে।
নারীদের সুবিধার্থে আগামী দিনে দেশজুড়ে কেবল নারীদের জন্যই আরো অনেক ডাকঘর
খোলা হবে।
কপিল সিবাল বলেন, 'পুরো ভারতে এটাই প্রথম ডাকঘর, যেখানে সব কর্মীই নারী।
নারীরা প্রতিনিয়ত যেসব সমস্যার মুখোমখি হন, সেগুলো নিরসনের উপায় খুঁজছে
সরকার। সে পথে নতুন ডাকঘর একটি প্রতীকী পদক্ষেপ মাত্র।' ভারতের ডাক সচিব পি
গোপীনাথ জানান, সব মহানগরীতে এ ধরনের ডাকঘর খোলার পরিকল্পনা আছে সরকারের।
শুরুতেই খোলা হবে মুম্বাই, চেন্নাই, চণ্ডিগড়, লক্ষ্নৌ, হায়দরাবাদ ও
ব্যাঙ্গালুরুতে। এ ছাড়া অসংখ্য নারী কর্মী আছেন_এমন বড় শহরগুলোতেও এরকম
ডাকঘর থাকবে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যেই পুরনো দিল্লির বিভিন্ন এলাকায় নারীদের
জন্য আরো কয়েকটি ডাকঘর খোলা হবে। নারীদের সুবিধার্থে ইতিমধ্যে সরকার শুধু
নারীদের জন্য একটি ব্যাংক প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিয়েছে। আগামী অক্টোবরের শেষ
নাগাদ এ ব্যাংক চালুর পরিকল্পনা রয়েছে।
রাজধানীর শেরে বাংলা নগর থানা এলাকায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ড্যাফোডিল
ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ভবন থেকে নিচে পড়ে শাহিমা আক্তার ওরফে শারমিন
(২০) নামের একই বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী মারা গেছেন। আজ শুক্রবার এ ঘটনা
ঘটে।
শাহিমা ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএর ছাত্রী। পুলিশ বলছে, ওই ছাত্রী আত্মহত্যা
করেছেন। এতে প্ররোচনার অভিযোগে সাদেকুর রহমান নামে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের এক
ছাত্রকে আটক করা হয়েছে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, শেরে বাংলা নগর
থানার সোবহানবাগে নয় তলার প্রিন্স প্লাজা ভবনের দুই তলা থেকে আট তলা
পর্যন্ত ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাস। আজ বেলা সোয়া দুইটার দিকে ওই ভবন থেকে
নিচে পড়ে গুরুতর আহত হন শাহিমা। শিক্ষার্থীরা তাঁকে উদ্ধার করে ঢাকা
মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে তিনি
মারা যান।
হরতালের কারণে স্থগিত হওয়া একটি পরীক্ষা দিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিলেন
শাহিমা। তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া সাদেকুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, তিনিও
বিবিএর ছাত্র। শাহিমার সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল। পরীক্ষা শেষে শাহিমাসহ
তাঁরা কয়েকজন বন্ধু নিচে আড্ডা দেন। পরে শাহিমা উপরে চলে যান। এর কিছুক্ষণ
পরই শাহিমা উপর থেকে তাঁদের সামনে নিচে পড়ে যান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানান, শাহিমা পাঁচ তলায় থাকা একটি ফাঁকা
জায়গা দিয়ে নিচে লাফ দিয়েছেন। তবে শেরে বাংলা নগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত)
মারুফ আহমেদ বলেন, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, বন্ধু সাদেকুরের সঙ্গে কথা
কাটকাটির এক পর্যায়ে শাহিমা ওই ভবনের ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যা
করেছেন। এ ঘটনায় সাদেকুরকে আটক করা হয়েছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে।
যুক্তরাজ্যের
গবেষকেরা সতর্ক করে বলেছেন, প্রক্রিয়াজাত করা মাংস খেলে কম বয়সে
মৃত্যুঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে। সসেজ, হ্যাম, বেকনের মতো খাবারের সঙ্গে যে
প্রক্রিয়াজাত করা মাংস ব্যবহার করা হয়, তা খাওয়ার সঙ্গে অল্প বয়সে মৃত্যুর
সম্পর্ক খুঁজে পেয়েছেন তাঁরা। বিবিসি অনলাইনের খবরে এ তথ্য জানানো হয়।
‘বিএমসি মেডিসিন’ সাময়িকীতে প্রকাশিত এক নিবন্ধে গবেষকেরা জানান, মাংস
প্রক্রিয়াজাত করতে যে লবণ ও রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়, তা স্বাস্থ্যের জন্য
ক্ষতিকর।
গবেষকেরা ইউরোপের ১০টি দেশের পাঁচ লাখেরও বেশি মানুষের ওপর ১৩ বছর ধরে গবেষণা করে এ ফল পেয়েছেন।
গবেষকেরা সতর্ক করে জানিয়েছেন, খাবার হিসেবে অতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত মাংস
গ্রহণ করলে হূদরোগ, ক্যানসারসহ কম বয়সে মৃত্যুঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে।
গবেষকেরা জানান, যাঁরা প্রক্রিয়াজাত মাংস বেশি খান, তারা ধূমপানে আসক্ত হন, শরীরে মেদসহ নানা শারীরিক সমস্যার মধ্যে পড়েন।
প্রক্রিয়াজাত মাংস খাওয়া কমিয়ে সুষম খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন
গবেষকেরা। তাঁদের পরামর্শ, স্বাস্থ্য সচেতন মানুষের প্রক্রিয়াজাত মাংস
এড়িয়ে চলা প্রয়োজন।
দুপুরের প্রখর রোদে রাজধানীর সড়কে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশ সদস্যদের সামনে এগিয়ে
গেলেন কয়েকজন তরুণ। তাঁদের হাতে থাকা গোলাপ ফুল দিয়ে পুলিশ সদস্যদের
শুভেচ্ছা জানালেন তাঁরা। ফুল হাতে পেয়ে পুলিশ সদস্যরা রীতিমতো অবাক। আজ
শুক্রবার এ দৃশ্য দেখা গেল মত্স্য ভবনের সামনের সড়কে। উত্সুক পথচারীরা এ
দৃশ্য দেখে চমকিত হলেন।
এই উদ্যোগের শুরু হয় সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকের ‘স্যালুট’ গ্রুপের
মাধ্যমে। এর অন্যতম উদ্যোক্তা একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী
জিনাত জোয়ার্দার। তিনি বলেন, ‘সাধারণ মানুষের সঙ্গে পুলিশের সবচেয়ে বেশি
সম্পৃক্ততা। আমাদের বিপদে তারাই সবার আগে এগিয়ে আসে। সাম্প্রতিক সময়ে দেশের
বিভিন্ন সহিংস ঘটনায় নিজের জীবন বিপন্ন করে পুলিশই সবার আগে এগিয়ে এসেছে।
কিন্তু আমরা তাদের শ্রদ্ধা দেখাই না। এ ছাড়া তাদের সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই
নেতিবাচক ধারণা। এই ধারণা বদলে দিতে এবং পুলিশ সদস্যদের প্রতি কৃতজ্ঞতা
জানাতে আমাদের এই উদ্যোগ।’
উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, আজ বেলা সাড়ে ১১টায় শাহবাগ থেকে তাঁরা দেড় হাজার
গোলাপ ফুল কিনে আনেন। প্রথমে মত্স্য ভবন থেকে ফুল দেওয়া আরম্ভ হয়। পরে
বেইলি রোডে রমনা থানা, পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের
ফুল দেন তাঁরা। সেখান থেকে তাঁরা রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে আহত
পুলিশ সদস্য শরীফাকে দেখতে যান। তাঁর খোঁজখবর নিয়ে তাঁরা রাজারবাগ পুলিশ
লাইনে দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।
এর পর উদ্যোক্তারা রাজারবাগ পুলিশ লাইনের ভেতরে একাত্তরের শহীদ পুলিশদের
স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। তাঁরা বলেন, রাজধানীতে পুলিশদের ফুল
দিয়ে শুভেচ্ছা জানানোর এই উদ্যোগ শুরু হয়েছে গত সোমবার থেকে। ওই দিনে
তাঁরা শাহবাগ থানা, নিউমার্কেট থানা, নীলক্ষেত, কাঁটাবন, কারওয়ান বাজার এবং
ফার্মগেট এলাকায় দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের ফুল দেন।
জিনাত জোয়ার্দার জানান, এই উদ্যোগে স্বেচ্ছাসেবকেরা নিজেরাই চাঁদা তুলে ফুল
কেনেন। ফুল পেয়ে অনেক পুলিশ সদস্য আনন্দে কেঁদেও ফেলেছেন। তিনি বলেন, এই
ফুল দেওয়ার উদ্যোগ এখানেই শেষ নয়। এখন থেকে সপ্তাহে অন্তত এক দিন করে
প্রতিটি থানায় ও ওই এলাকায় দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যদের শুভেচ্ছা জানানো
হবে। মানুষের জীবন বাঁচাতে পুলিশদের সম্মান প্রাপ্য। তাই তাঁদের শ্রদ্ধা
জানাতে এবং মানুষের সঙ্গে তাঁদের বন্ধুত্ব বৃদ্ধি করতে এই উদ্যোগ।
ব্যতিক্রমধর্মী উদ্যোগের সঙ্গে আরও আছেন, স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের
শিক্ষার্থী মাহামুদুল ইসলাম, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল বিশ্বাবদ্যালয়ের
শিক্ষার্থী ফারাবি বিন জহির, ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী
তুষার।
উদ্যোক্তা সূত্রে জানা গেছে, উদ্যোগে শামিল হতে প্রতিদিনই স্বেচ্ছাসেবকদের
সংখ্যা বাড়ছে। তরুণদের পাশাপাশি নানা বয়সের মানুষ এতে যুক্ত হচ্ছেন।
ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির প্রতি ১০ জন নারীর মধ্যে নয়জনই মনে করেন
দিল্লিতে তাঁরা নিরাপদ নন। এর মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ নারীরই রয়েছে শহরের
রাস্তাঘাটে চলাফেরার সময় অসদাচরণের শিকার হওয়ার অভিজ্ঞতা।
দিল্লিতে নারীদের কর্মজীবন ও ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে টাইমস অব ইন্ডিয়ার
পরিচালিত একটি জরিপের ফলাফলে এসব তথ্য উঠে এসেছে। আজ শুক্রবার পত্রিকাটির
অনলাইন সংস্করণে এ-বিষয়ক একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, একসময় নিরাপত্তার কথা ভেবে বলা হতো, ‘দিল্লি ফর ওমেন’।
আর সেই দিল্লিই আজ ভারতে নারীদের জন্য সবচেয়ে অনিরাপদ রাজ্যগুলোর মধ্যে
একটি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, দিল্লিতে নারীদের দুই-তৃতীয়াংশই বিভিন্ন দপ্তরে কাজ করে
থাকেন। কিন্তু সেখানে যৌন হয়রানি মোকাবিলার জন্য কোনো নিয়মকানুন নেই। আর
নারীদের প্রায় অর্ধেকই মনে করেন, বাবার সম্পত্তি ভাগের সময় তাঁদের সঙ্গে
বৈষম্য করা হয়।
জরিপের ফলাফলে দেখা গেছে, বাড়িতে বা কর্মস্থলে কিছু কিছু জিনিস পরিবর্তন
করা হলেও দিল্লি শহরে চলাফেরা ও জীবনধারণকে এখনো চ্যালেঞ্জ হিসেবেই দেখছেন
নারীরা। জরিপটি দিল্লির প্রধান প্রধান শহর ও উপশহরে বিভিন্ন বয়সী নারীদের
ওপর চালানো হয়।
জরিপের একটি গ্রাফচিত্রে দেখানো হয়েছে, দিল্লির ৯৪ শতাংশ নারী দিল্লিকে
অনিরাপদ বা মারাত্মক অনিরাপদ মনে করেন। ৯৬ শতাংশ নারী সূর্যাস্তের পর
নিজেদের নিরাপদ মনে করেন না। ৬৩ শতাংশ নারীই জানান, তাঁদের কর্মস্থলে যৌন
হয়রানি মোকাবিলায় নিজস্ব কোনো নিয়মনীতি নেই।
জরিপে দিল্লিতে নারীর চলাফেরা, কর্মস্থল, বাড়ি অথবা অবসর সময়ে কীভাবে
বিভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি হন, তা পর্যালোচনা করা হয়। পত্রিকাটি আশা করে এসব
সমস্যার সমাধানের উপায় খুঁজতে প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে এই জরিপটি কাজ করবে।
সম্প্রতি নয়াদিল্লিতে বাসে গণধর্ষণের শিকার হয়ে মেডিকেলের এক ছাত্রীর
মৃত্যু হয়েছে। এর প্রতিবাদে দিল্লিসহ পুরো ভারতে নারী-পুরুষ সবাই বিক্ষোভে
ফেটে পড়ে। এরপর সরকার নারী নির্যাতন প্রতিরোধে নতুন আইন প্রণয়ন করতে বাধ্য
হয়।
রাজশাহীর পুঠিয়ায় গতকাল শুক্রবার সকালে ভুট্টাখেত থেকে আট বছরের এক শিশুর
লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় শিশুটির গায়ে কাদামাটি মাখানো ছিল। শরীরে কোনো
কাপড় ছিল না।
পরিবারের অভিযোগ, তাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। শিশুটির নাম রাজিয়া
খাতুন। বাবার নাম আবদুর রাজ্জাক। বাড়ি উপজেলার সাধনপুর গ্রামে। রাজিয়া
সাধনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়ত। তার বাবা দরিদ্র
কৃষক।
রাজিয়ার মামা তায়েজ উদ্দিন বলেন, স্কুল থেকে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে বাড়ি
ফিরে খাওয়াদাওয়া করে রাজিয়া বাড়ির পাশে খেলতে যায়। এ সময় তার খালি গা ও
পরনে হাফপ্যান্ট ছিল। বিকেলের দিকে সে বাড়ি ফিরে না আসায় খোঁজাখুঁজি শুরু
হয়। তাকে কোথাও না পেয়ে মাইকিং করা হয়। সকালে তিনি খুঁজতে খুঁজতে বাড়ি থেকে
প্রায় ৫০০ গজ দূরে ভুট্টাখেতে গিয়ে রাজিয়ার লাশ দেখতে পান।
তিনি আরও বলেন, কারও সঙ্গে তাঁদের শত্রুতা নেই। কেউ শত্রুতা করে হত্যা করতে
পারে—এটা তাঁরা ভাবতে পারছেন না। ধর্ষণের পর ঘটনা জানাজানি হাওয়ার ভয়ে
তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করছেন তাঁরা। খবর পেয়ে পুঠিয়া থানার
পরিদর্শক (তদন্ত) রেজাউল করিম ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধারের পর সুরতহাল
করেন।
তিনি বলেন, শিশুটির মুখে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। মুখ দিয়ে রক্ত বের হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ভুট্টাখেতের পাশেই একটি পুকুর রয়েছে। তাকে হত্যার আগে বা
পরে পুকুরের পানিতে ডুবিয়ে কাদামাটিসহ লাশ এনে খেতে ফেলে রাখা হয়েছে।
রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমানের ৮৫তম জন্মদিন আজ ৯ মার্চ।
মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক জিল্লুর রহমান ১৯২৯ সালের এই দিনে কিশোরগঞ্জের
ভৈরব থানার একটি সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৫২
সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৬২ সালের সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ছয়
দফা আন্দোলন, ১৯৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থানসহ প্রতিটি গণ-আন্দোলনে সক্রিয় অংশ
নিয়েছেন। তিনি ১৯৭০ সালে তৎকালীন পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সদস্য এবং ২০০৮
সালে ষষ্ঠবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০৯ সালে তিনি বাংলাদেশের
১৯তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেন।
জিল্লুর রহমান পারিবারিক জীবনে এক ছেলে ও দুই মেয়ের জনক। ২০০৪ সালের ২১
আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে গ্রেনেড হামলায় নিহত আওয়ামী লীগের নেত্রী আইভী
রহমান তাঁর স্ত্রী।
বিবাদে জড়িয়েছেন মিসবাহ-উল-হক ও মোহাম্মদ হাফিজ! গণমাধ্যমে এমন গুঞ্জনই
চলছে। তবে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) দাবি, গুঞ্জনটা সত্যি নয়।
গণমাধ্যমের খবর, ওয়ানডে সিরিজ সামনে রেখে অনুশীলন করার সময় সম্প্রতি দল
নির্বাচন নিয়ে কথা-কাটাকাটি হয় মিসবাহ ও হাফিজের মধ্যে। তবে ব্যাপারটা বেশি
দূর এগোনোর আগেই দলের খেলোয়াড়েরা তাঁদের থামিয়ে দেন।
বার্তা সংস্থা পিটিআইয়ের খবর, ওয়ানডে অধিনায়ক মিসবাহ নাকি স্পষ্ট জানিয়ে
দেন, ব্যাটিং অর্ডারে তিন নম্বরে খেলতে হবে হাফিজকে। তবে তাতে রাজি না হয়ে
উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতে চান হাফিজ। এ ছাড়া দলের দুই সিনিয়র
অলরাউন্ডার শোয়েব মালিক ও শহীদ আফ্রিদিকে একসঙ্গে খেলাতে চেয়েছিলেন মিসবাহ।
কিন্তু তাতে অসম্মতি জানিয়ে তিন থেকে চারজন ফাস্ট বোলার খেলানোর পক্ষে
যুক্তি দেন হাফিজ।
গণমাধ্যমের খবর ‘মিথ্যা’ দাবি করে এক বিবৃতিতে পিসিবি জানিয়েছে, গণমাধ্যমের
খবরকে গুরুত্ব সহকারে নিয়ে ব্যাপারটা অনুসন্ধান করেছে পিসিবি। কিন্তু এর
কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। দলের ম্যানেজমেন্ট দক্ষিণ আফ্রিকায় যোগাযোগ করে
জেনেছে, দল নির্বাচন নিয়ে মিসবাহ ও হাফিজের মধ্যে কোনো ধরনের বিবাদ হয়নি।
‘ওর কোনো শত্রু ছিল না। শত্রু সব আমার। আমার কাজে যারা ক্ষুব্ধ, তারাই আমার
ছেলেকে খুন করেছে।’ সন্তানের মৃতদেহের সামনে দাঁড়িয়ে এসব কথা বলতে বলতে
অঝোরে কাঁদছিলেন নারায়ণগঞ্জের গণজাগরণ মঞ্চের উদ্যোক্তা, সাংস্কৃতিক
ব্যক্তিত্ব রফিউর রাব্বি। যে প্রতিবাদী মানুষটিকে কেউ কখনো কাঁদতে দেখেনি,
আজ তাঁর চোখে পানি দেখে চোখ ভিজে আসে সবার।
রফিউর রাব্বির বড় ছেলে তানভীর মুহাম্মদ ত্বকিকে খুন করা হয়েছে। দুই দিন
নিখোঁজ থাকার পর গতকাল শুক্রবার সকালে ১৭ বছরের এই কিশোরের মৃতদেহ পাওয়া
যায় নারায়ণগঞ্জের চারারগোপে শীতলক্ষ্যার নদীর নৌযান নোঙর করার খালের
(হারবার) কাঁদা পানিতে। তানভীর এ বছর ‘এ’ লেভেল পরীক্ষায় কৃতিত্বের সঙ্গে
উত্তীর্ণ হয়েছে। ফল বেরিয়েছে নিখোঁজ হওয়ার এক দিন পর গতকাল। ফল আর জেনে
যেতে পারেনি সে।
নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ছেলেটিকে
পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে। তার মুখে, ডান চোখে ও গলায় আঘাতের চিহ্ন আছে।
তবে খুনের কারণ এবং খুনিদের শনাক্ত করা যায় এমন কোনো সূত্র এখনো মেলেনি।
নিরপরাধ কিশোরের এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে
নারায়ণগঞ্জের মানুষ। গতকাল দুপুরে জুমার নামাজের পর সর্বস্তরের মানুষ কালো
পতাকা নিয়ে শহরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে। সন্ধ্যার পর মশাল মিছিল করেছে জেলা
সাংস্কৃতিক জোট। আজ সেখানে সকাল-সন্ধ্যা হরতালও ডেকেছে জোট। হরতালে সমর্থন
দিয়েছে সিপিবি, বাসদ, ন্যাপ, ওয়ার্কার্স পার্টি, সাম্যবাদী দল ও গণসংহতি
আন্দোলন।
রফিউর রাব্বি দুই ছেলে আর স্ত্রীকে নিয়ে থাকেন শায়েস্তা খান সড়কের পুরাতন
কোর্ট রোডের বাসায়। দুই ভাইয়ের মধ্যে তানভীর বড়। ইংরেজি মাধ্যমের
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবিসি ইন্টারন্যাশনাল স্কুল থেকে সে এবার ‘এ’ লেভেলে পাস
করল। তার বন্ধুরা জানাল, সে খুব চুপচাপ স্বভাবের, পড়াশোনার বাইরে আর কিছুই
করত না। বন্ধুও তেমন ছিল না। মা ছিল তার সবচেয়ে কাছের বন্ধু।
এবিসি ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের প্রশাসনিক কর্মকর্তা প্রদীপ কুমার সাহা প্রথম
আলোকে বলেন, নিখোঁজ হওয়ার পরদিন বৃহস্পতিবার তার পরীক্ষার ফল বের হয়।
পদার্থবিজ্ঞানে ৩০০ নম্বরের মধ্যে ২৯৭ পেয়েছে সে। এটা দেশের সর্বোচ্চ
নম্বর। ‘ও’ লেভেল পরীক্ষায়ও সে পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়নে সর্বোচ্চ নম্বর
পেয়েছিল।
বাবা রফিউর রাব্বি প্রথম আলোকে বলেন, গত বুধবার বিকেলে বাসা থেকে বের হওয়ার
পর আর ফেরেনি তাঁর ছেলে। তিনি বিষয়টি লিখিতভাবে র্যাব ও পুলিশকে জানান।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আশরাফউদ্দৌলা বলেন, গতকাল বেলা পৌনে ১১টার দিকে শহরের
চারারগোপ শীতলক্ষ্যা নদীতে মৃতদেহ ভাসতে দেখে স্থানীয় লোকজন পুলিশকে খবর
দেয়। পরে ওর বাবা মৃতদেহ শনাক্ত করেন। তার ব্যবহূত মুঠোফোনটি প্যান্টের
পকেটেই ছিল।
মৃতদেহ নারায়ণগঞ্জ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। ময়নাতদন্ত শেষে দুপুরের পর
মৃতদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ সময় মর্গে ছুটে আসেন
নারায়ণগঞ্জের রাজনৈতিক-সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ব্যবসায়ী মহলের লোকজন।
হাসপাতালে তানভীরের চাচা কবি ওয়াহিদ রেজা বলেন, ওর কোনো শত্রু ছিল না। এ রকম একটি ছেলেকে কারা খুন করল?
খুনের কারণ নিয়ে ভাবনা: নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি প্রদীপ ঘোষ
বলেন, গণজাগরণ মঞ্চের উদ্যোক্তা ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রফিউর রাব্বি
নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন নাগরিক আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত। নারায়ণগঞ্জে
বাসভাড়া বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন অন্যায়-অত্যাচারের বিরুদ্ধে সব সময় তিনি সোচ্চার।
মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেন, ‘বাসভাড়া কমানোর দাবিতে আন্দোলনের নেতৃত্ব
দেওয়ায় একটি মহল রাব্বির প্রতি ক্ষুব্ধ। রাব্বি সিটি করপোরেশন নির্বাচনের
সময় আমার পাশে থেকে আমাকে সাহস জুগিয়েছেন। তা ছাড়া সব ধরনের অন্যায়ের
বিরুদ্ধে আন্দোলনে তিনি নেতৃত্ব দেন। এ কারণে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল
তাঁর ওপর ক্ষুব্ধ। এই মহলটিই এ হত্যাকাণ্ড ঘটাতে পারে।’ মেয়র বলেন, এর আগে
আশিক ও চঞ্চল নামের দুই যুবককেও একই কায়দায় খুন করা হয়। তিনজনের লাশই
শীতলক্ষ্যা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
খুনের কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে স্থানীয় লোকজন বলেন, রফিউর রাব্বির
সামাজিক কর্মকাণ্ড নিয়ে জামায়াত-শিবির যেমন ক্ষুব্ধ, তেমনি ক্ষুব্ধ
নারায়ণগঞ্জের একটি প্রভাবশালী মহলও। এ খুনের পেছনে এ দুই গোষ্ঠীর যেকোনো
একটির হাত থাকতে পারে।
হরতালে সমর্থন: নারায়ণগঞ্জ-৫ (শহর-বন্দর) আসনের জাপাদলীয় সাংসদ নাসিম ওসমান
গতকাল এক বিবৃতিতে তানভীর হত্যাকারীদের বিচারের দাবি করেন। তাঁর মেজো ভাই
নারায়ণগঞ্জ চেম্বার ও বিকেএমইএর সভাপতি সেলিম ওসমান বিকেলে শহীদ মিনার
প্রাঙ্গণে লাশ দেখতে গিয়ে আজকের হরতালের প্রতি সমর্থন জানিয়ে দোকানপাট বন্ধ
রাখার আহ্বান জানান। চেম্বারের ব্যানারে আজ চাষাঢ়া এলাকায় প্রতিবাদ সমাবেশ
ডেকেছেন সেলিম ওসমান।
পুলিশ যা বলছে: জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন,
তানভীরের বাবা রাব্বির প্রতি ক্ষুব্ধ কোনো গোষ্ঠী এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে কি
না, পুলিশ তা খতিয়ে দেখছে। তিনি জানান, নিহত কিশোর নিখোঁজ হওয়ার আগ পর্যন্ত
তার মোবাইল ব্যবহার করে চলতি মাসে মাত্র তিনটি কল করেছে। দুবার কথা বলেছে
মায়ের সঙ্গে। তবে তার ফেসবুক, ই-মেইল ও মোবাইলের খুদে বার্তা পরীক্ষা করে
দেখা হচ্ছে, নিখোঁজ হওয়ার আগে বাসা থেকে কেউ তাকে ডেকে নিয়েছিল কি না।
মিছিল: ময়নাতদন্ত শেষে দুপুরে লাশ ও কালো পতাকা নিয়ে মিছিল করে সাংস্কৃতিক
জোট। মিছিলে অংশ নেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি নাসির উদ্দীন
ইউসুফসহ অন্য নেতারা। মিছিলে স্লোগান ছিল, ‘আমার ভাই মরল কেন, প্রশাসন জবাব
চাই’, ‘খুন হয়েছে আমার ভাই, খুনি তোদের রক্ষা নাই’। মরদেহ বাসায় নেওয়া হলে
সমাজের বিভিন্ন স্তরের শত শত মানুষ ভিড় জমায়। বিকেলে শহরের চাষাঢ়া
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। বাদ মাগরিব শহরের
আমলাপাড়া জামে মসজিদে জানাজা শেষে বন্দরে সিরাজ শাহ্র আস্তানায় পারিবারিক
কবরস্থানে তার মৃতদেহ দাফন করা হয়।