বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে প্রথম ছত্রীসেনা (প্যারাট্রুপার) দম্পতি আজ
বৃহস্পতিবার সফলভাবে প্যারাস্যুট জাম্প শেষ করেছেন। দুপুরে সিলেটের
জালালাবাদ সেনানিবাসের পানিছড়া প্রশিক্ষণ মাঠে প্রায় তিন হাজার ফুট ওপর
থেকে তাঁরা জাম্প দেন।
গত ৪ এপ্রিল দুটি জাম্পের মাধ্যমে শুরু হয়েছিল বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর
দ্বিতীয় নারী প্যারাট্রুপারের যাত্রা। গত সোমবার তিনটি ও আজ আরও তিনটি
জাম্প দেন সেনাবাহিনীর ইতিহাসে দ্বিতীয় নারী ছত্রীসেনা মেজর নুসরাত। তাঁর
স্বামী মেজর মঞ্জুরুলও সেনাবাহিনীর একজন কমান্ডো ও ছত্রীসেনা।
আন্তবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বাংলাদেশ
সেনাবাহিনীর একমাত্র স্পেশাল ফোর্সেস ইউনিট-১ প্যারা কমান্ডো ব্যাটালিয়নের
তত্ত্বাবধানে আজ ট্রেনিং জাম্প কোর্সের আয়োজন করা হয়।
প্রায় তিন হাজার ফুট ওপর থেকে মাটিতে অবতরণ করে নারীদের ইচ্ছাশক্তি ও
প্রতিবন্ধকতাকে জয় করার কথা জানান মেজর নুসরাত আল চৌধুরী। তিনি
সাংবাদিকদের বলেন, ‘কোর্স শেষ করতে পেরে আমি আনন্দিত। আকাশে ওড়ার
অনুভূতিটাই আলাদা। এ অনুভূতির কথা বলে বুঝানো যাবে না।’ একজন নারী এবং
দম্পতির প্রথম এ অর্জন প্রসঙ্গে মেজর নুসরাত বলেন, ‘দম্পতি হিসেবে এ অর্জনে
দুজনের ইচ্ছাশক্তির জয় হয়েছে। নারীর ইচ্ছাশক্তি ও সামাজিক সীমাবদ্ধতার
কারণে অনেক ক্ষেত্রে নারীরা চ্যালেঞ্জ নিতে চায় না। তবে পরিবার থেকে
সাপোর্ট পেলে নারীরা আরও ভালো কাজ করবে।’
দম্পতির এ অর্জন ‘নতুন এক অধ্যায়’ বলে অভিহিত করে মেজর মোহাম্মদ মঞ্জুরুল
বলেন, ‘পরিবারই যেকোনো উন্নয়নের মূল ভিত্তি তৈরি করে দেয়। নারীদের মধ্যে
অসীম সম্ভাবনা, সংকল্প ও কঠিনকে জয় করার ক্ষমতা রয়েছে। তাঁদের উজ্জীবিত
করতে পরিবারের সহায়তার প্রয়োজন।’ প্যারা কমান্ডো ব্যাটালিয়নের
ভারপ্রাপ্ত কমান্ডিং অফিসার মেজর এম এম তৌহিদুল ইসলাম জানান, সেনাবাহিনীতে এ
রকম চ্যালেঞ্জিং কোর্সে নারীদের এগিয়ে আসার মতো পরিবেশ রয়েছে। দম্পতি
হিসেবে প্রথম এমন কৃতিত্ব পরিবার ও নারীদের উত্সাহিত করবে। এর আগে গত ১২
ফেব্রুয়ারি দেশের প্রথম নারী ছত্রীসেনা হিসেবে ক্যাপ্টেন জান্নাতুল ফেরদৌস
সফলভাবে এ কোর্স সম্পন্ন করেছেন।
মেজর নুসরাত ২০০৩ সালের ২ জুলাই এবং মেজর মোহাম্মদ মঞ্জুরুল ২০০২ সালের ২৬ জুন সেনাবাহিনীতে যোগ দেন।