Tuesday, April 2, 2013

সাত দিনের রিমান্ডে তিন ব্লগার


ইন্টারনেটে বিভিন্ন ব্লগে ইসলাম ধর্ম নিয়ে উসকানিমূলক মন্তব্য ও কটূক্তি করার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া তিন ব্লগারকে সাত দিন করে রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
আজ মঙ্গলবার দুপুুরে ঢাকার মহানগর হাকিম তারেক মইনুল ইসলাম এ আদেশ দেন।
গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন: মশিউর রহমান বিপ্লব, রাসেল পারভেজ ও সুব্রত শুভ। গতকাল রাতে রাজধানীর ইন্দিরা রোড, মনিপুরিপাড়া ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন পলাশী এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
ডিবি পুলিশ আজ দুপুরে ওই তিনজনকে আদালতে হাজির করে ১০ দিন করে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে। আদালত প্রত্যেকের জন্য সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এদিকে, তাঁদের জামিনের আবেদন করা হলে আদালত তা নাকচ করে দেন।
আজ দুপুর ১২টায় মিন্টো রোডে ডিবির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, ওই তিনজনের কাছ থেকে একটি ডেস্কটপ কম্পিউটার, একটি ল্যাপটপ, দুটি ইন্টারনেট সংযোগের মডেম ও একটি এক্সটারনাল হার্ডডিস্ক উদ্ধার করা হয়েছে।
মিডিয়া সেন্টার থেকে জানানো হয়, মশিউর রহমান বিপ্লব ফেসবুকে ‘আল্লামা শয়তান’ নামে, সামহয়্যারইন ও নাগরিক ব্লগে ‘শয়তান’ এবং আমার ব্লগে ‘নেমেসিস’ ছদ্মনামে লেখালেখি করেন। রাসেল পারভেজ আমার ব্লগে ‘রাসেল পারভেজ’, সামহয়্যারইন ব্লগে ‘রাসেল’ ও ‘অপবাক’ ছদ্মনামে লেখালেখি করেন। আর সুব্রত শুভ সামহয়্যারইন ব্লগে ‘সাদা মুখোশ’, আমার ব্লগে ‘সুব্রত শুভ’, নাগরিক ব্লগে ‘আজাদ’, ইস্টেশন ব্লগে ‘লালু কসাই’ ছদ্মনামে লিখতেন। প্রকৃতিবাদে বিশ্বাসী এই ব্লগাররা ইন্টারনেটে বিভিন্ন ব্লগে তাঁদের লেখালেখির মাধ্যমে ইসলামসহ বিভিন্ন ধর্মের প্রবর্তকদের বিতর্কিতভাবে উপস্থাপন করে ধর্মপ্রাণ মানুষের অনুভূতিতে আঘাত করে আসছিলেন।
সংবাদ ব্রিফিংয়ে ডিবির পশ্চিম ও উত্তর বিভাগের উপকমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম জানান, গোপন খবরের ভিত্তিতে ডিবির অতিরিক্ত উপকমিশনার মশিউর রহমান, মো. শহীদুল্লাহ, মানস কুমার পোদ্দারের নেতৃত্বে একটি দল গতকাল সোমবার রাত পৌনে ১০টায় ফার্মগেটের ইন্দিরা রোড ও মনিপুরিপাড়া এলাকা থেকে মশিউর রহমান ও রাসেল পারভেজকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাঁদের তথ্যের ভিত্তিতে দিবাগত রাত পৌনে তিনটার দিকে পলাশী মোড় থেকে সুব্রত শুভকে গ্রেপ্তার করা হয়।
উপকমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলামের ভাষ্য, ডিবির সাইবার ক্রাইম ইউনিট দীর্ঘ দিন ধরে কাজ করে আসছিল। এরই ধারাবাহিকতায় এই তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার হওয়া তিনজন ইন্টারনেট ব্যবহার করে ধর্ম নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য লিখতেন। তাঁদের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া কম্পিউটার, ল্যাপটপ ও হার্ডডিস্ক থেকে এর প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাঁদের আইনের আওতায় নেওয়া হয়েছে।
কথিত ‘নাস্তিক’ ব্লগারদের গ্রেপ্তার ও শাস্তিসহ ১৩ দফা দাবিতে হেফাজতে ইসলামের ঢাকা অভিমুখে লংমার্চ কর্মসূচির সঙ্গে এই গ্রেপ্তারের কোনো সংশ্লিষ্টতা আছে কি না, জানতে চাইলে মোল্যা নজরুল ইসলাম জানান, হেফাজতে ইসলামের আন্দোলনের সঙ্গে এর কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। আইনের পরিপন্থী কাজ করায় ও অন্যের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ায় তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।