জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৪ অক্টোবর পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হতে
পারে। এবার যাঁরা হজে যেতে চান, তাঁদের এখনই প্রস্তুতি শুরু করা দরকার।
অন্তত মানসিক প্রস্তুতি।
বাংলাদেশ থেকে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যাওয়া যায়। হজে যেতে
চাইলে ৩০ মে তারিখের মধ্যে নির্ধারিত ব্যাংকে টাকা জমা দিতে হবে।
এ বছর সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১০ হাজার ও ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় অনুমোদিত হজ
এজেন্সির মাধ্যমে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় এক লাখ ১৭ হাজার ১৯৮ জন হজ পালনের
জন্য সৌদি আরব যেতে পারবেন।
ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও হজ পরিচালক মো. বজলুল হক বিশ্বাস
জানান, এবার হজে যেতে চাইলে নিজ উদ্যোগে আন্তর্জাতিক পাসপোর্ট তৈরি করতে
হবে। সরকারি বা বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় যেভাবেই যান না কেন কোথায় এবং কীভাবে
থাকবেন, তা আগেই জেনে নেওয়া জরুরি। হজ প্যাকেজে সৌদি আরবে যাওয়া-আসা,
মক্কা-মদিনায় থাকা-খাওয়াসহ প্যাকেজ সুবিধাগুলো চুক্তিপত্রে বুঝে নিতে হবে।
প্রয়োজনে পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে আলাপ করুন। পড়ে, বুঝে, যাচাই করে
চুক্তিপত্রে সই করুন। হজের প্রয়োজনীয় তথ্য www.hajj.gov.bd এ ওয়েবসাইটে
পাওয়া যাবে।
হজ পরিচালক আরও জানান, গত পাঁচ বছরের মধ্যে হজ পালন করলে সৌদি সরকার এবার
তাঁদের হজ ভিসা দেবে না। আর হজ প্যাকেজে ফিতরা (ফিতরা মানে স্থানান্তর)
পদ্ধতিও নিষিদ্ধ করেছে সৌদি আরব কর্তৃপক্ষ।
এবার কত টাকা লাগবে
সরকারি ব্যবস্থাপনায় দুটি হজ প্যাকেজ রয়েছে। একটি প্যাকেজে হজযাত্রীর খরচ
হবে তিন লাখ ৪৭ হাজার ২৭ টাকা। অন্যটিতে খরচ হবে দুই লাখ ৭৮ হাজার ৭৪২
টাকা। এ ছাড়া কোরবানির জন্য প্রতিটি প্যাকেজে আরও খরচ হবে (৪৫০ রিয়াল)
প্রায় ১০ হাজার টাকা।
বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় একাধিক প্যাকেজ রয়েছে। ন্যূনতম প্যাকেজ হলো দুই লাখ
৭৮ হাজার ৭৪২ টাকা। এ ছাড়া তিন লাখ ৪৫ হাজার টাকা থেকে আরও বেশি টাকার
প্যাকেজ রয়েছে।
পরামর্শ
• ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদিত হজ এজেন্সির তালিকা www.haab-bd.com ঠিকানায়ও পাওয়া যাবে।
• কোন কোন এজেন্সির বিরুদ্ধে সৌদি হজ মন্ত্রণালয়ের অভিযোগ রয়েছে তা যাচাই করুন।
• হজ প্রশিক্ষণসহ অন্যান্য তথ্য ঢাকার আশকোনা হজ অফিসে দেওয়া হয়।
• মক্কায় বাসার দূরত্ব নির্ধারিত হয় কাবা শরিফ থেকে। আর মদিনায় মসজিদে নববী
থেকে। বাসস্থান কত দূর, তার ওপর নির্ভর করে হজের ব্যয়ের টাকা। অর্থাৎ কাবা
শরিফ থেকে বাসার দূরত্ব কম হলে খরচ বেড়ে যাবে। যত বেশি দূরত্ব হবে, খরচও
তত কম হবে। এসব বিষয় বিবেচনায় রেখে হজের প্যাকেজ ঠিক করুন।
ভাষার ভিন্নতা, নতুন দেশ, নতুন পরিস্থিতির কারণে কিছুসংখ্যক হজযাত্রী
সমস্যায় পড়ে থাকেন। কয়েকবার হজ পালন করেছেন—এমন কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে
জানা গেল, কিছুটা ধারণা থাকলে, সচেতন হলে অনেক সমস্যা দূর করা যায়। পাঠকের
সুবিধার্থে তাঁদের কিছু পরামর্শ:
• আপনার নাম-ঠিকানা পাসপোর্টে ঠিক আছে কি না, যাচাই করে নিন। ২০ কপি ছবি সংগ্রহে রাখুন।
• কোনোভাবেই মধ্যস্বত্বভোগী, দালাল বা তথাকথিত মোয়াল্লেমের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হবেন না।
• সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় যেভাবেই হজে যান না কেন, হজ প্যাকেজের
সুবিধা কী কী, ভালোভাবে বুঝে যাচাই করুন। কিছু খরচ নির্দিষ্ট আছে, যেমন
বিমানভাড়া ও মোয়াল্লেম ফি। বাকি টাকা মক্কা-মদিনায় বাসস্থানের জন্য।
হাজিদের আবাসন কোথায় হবে তার স্বচ্ছ ধারণা দেশ থেকেই জেনে রাখা প্রয়োজন।
• কিছু হজযাত্রী হেঁটে হজের আমলগুলো করে থাকেন। যেমন মক্কা থেকে মিনার
দূরত্ব প্রায় আট কিলোমিটার। আরাফাত থেকে মুজদালিফার দূরত্ব প্রায় নয়
কিলোমিটার। মুজদালিফা থেকে মিনার দূরত্ব প্রায় সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার। এসব
স্থানবিশেষে হেঁটে যেতে আপনার এক থেকে দুই ঘণ্টা সময় লাগতে পারে।
• মাহরাম (যেসব পুরুষের সঙ্গে দেখা করা জায়েজ। যেমন স্বামী, বাবা, আপন ভাই,
আপন চাচা-মামা, ছেলে ইত্যাদি) ছাড়া নারী হজযাত্রী এককভাবে হজে গমনের যোগ্য
বিবেচিত হবেন না; নারী হজযাত্রীকে মাহরামের সঙ্গে একত্রে টাকা জমা দিতে
হবে।
• প্রয়োজনীয় বইপুস্তক, হজ গাইড সংগ্রহ করে পড়ুন। কয়েক বছর ধরে প্রথম আলো
হজযাত্রীদের সহায়ক হজ গাইড প্রকাশ করে বিনা মূল্যে তা বিতরণ করে। এটি প্রথম
আলোর কার্যালয় থেকে সংগ্রহ করতে পারেন। অথবা, হজের আগে হজক্যাম্পে
হজযাত্রীদের হাতে পৌঁছেও দেওয়া হয়।
হজ প্যাকেজে খরচের ভিন্নতা কেন?
প্যাকেজে সৌদি আরবে হজের জন্য অবস্থানের মেয়াদ, বিমানের ধরন (সরাসরি না
অন্য বিমানবন্দর হয়ে সৌদি আরবে পৌঁছাবে), মক্কায় বাসার ধরন এবং তা কাবা
শরিফ থেকে কত দূর, বাসায় লিফট আছে কি নেই, বাসা না হোটেল, খাবারের ব্যবস্থা
আছে বা নেই, ঐতিহাসিক স্থানে বেড়ানোর ব্যবস্থা আছে বা নেই, কোরবানি আছে বা
নেই ইত্যাদির ওপর নির্ভর করে। একইভাবে মদিনার ক্ষেত্রেও বিষয়টি প্রযোজ্য।
আবার মিনায় তাঁবুতে বা আজিজিয়ায় থাকা কিংবা না থাকা ইত্যাদির ওপর নির্ভর
করে হজের খরচের টাকার অঙ্ক।
সরকারি ব্যবস্থাপনা
প্যাকেজ ১: সৌদি আরবের ভিসা, বিমানে যাওয়া-আসা, মক্কায় কাবা শরিফ থেকে
সর্বোচ্চ এক হাজার ২০০ মিটার ও মদিনায় মসজিদে নববী থেকে সর্বোচ্চ ৬০০
মিটারের মধ্যে তাসরিয়াযুক্ত (সৌদি হজ মন্ত্রণালয়ের যাচাই করা বাসস্থান)
বাসায় থাকার ব্যবস্থা।
প্যাকেজ ২: সৌদি আরবের ভিসা, বিমানে যাওয়া-আসা, মক্কায় কাবা শরিফ থেকে
সর্বোচ্চ দুই হাজার মিটার ও মদিনায় মসজিদে নববী থেকে সর্বোচ্চ এক হাজার
মিটারের মধ্যে তাসরিয়াযুক্ত বাড়িতে আবাসন।
এ ছাড়া উভয় প্যাকেজে মক্কায় ও মদিনায় সৌদি নিয়ম অনুযায়ী একটি খাট, একটি
বেড, একটি বালিশ ও একটি কম্বল (কক্ষ শীতাতপনিয়ন্ত্রিত হবে, কোনো কোনো কক্ষে
অতিরিক্ত পাখা থাকতে পারে), পাঁচ থেকে আটজনের জন্য একটি সংযুক্ত সাধারণ
গোসলখানা-শৌচাগার, মিনায় তাঁবুতে প্রত্যেক হাজির জন্য জায়গা,
জেদ্দা-মক্কা-মদিনা-মিনা-আরাফাতের ময়দানে যাওয়া-আসার জন্য পরিবহন, মক্কা ও
মদিনায় সাধারণ চিকিৎসা, ফ্লাইটের আগে ঢাকার আশকোনা হজ ক্যাম্পে থাকার
ব্যবস্থা, হজের আহকাম-আরকান সম্পর্কে নিবিড় প্রশিক্ষণ, বইপুস্তক সরবরাহ
প্রভৃতি সুবিধা পাবেন হাজিরা। প্রতি ৪৫ জন হাজির জন্য একজন গাইড নিয়োগ করা
হবে।
সরকারি ব্যবস্থাপনায় খরচের খাত
দুই ধরনের প্যাকেজেই প্রতি হজযাত্রীর জন্য বিমানভাড়া এক লাখ ২২ হাজার ৮২৭
টাকা, জেদ্দা-মক্কা-মদিনা-মিনা-আরাফাতের যাতায়াত ব্যয়, মিনায় তাঁবু ভাড়া ও
মোয়াল্লেম ফি ২৪ হাজার ৩৩৯ টাকা, খাওয়ার খরচ ১৮ হাজার ৩৭৫ টাকা,
মিনা-আরাফাতে মোয়াল্লেমের অতিরিক্ত খরচ ১৬ হাজার ৮০০ টাকা, হজ গাইড সাত
হাজার ৫৪৪ টাকা, মিনা আরাফাতে ট্রেন ভাড়া পাঁচ হাজার ২৫০ টাকা, স্থানীয়
সেবামূল্য ৮০০ টাকা, হজ প্রশিক্ষণ ফি ৩০০ টাকা ও আপৎকালীন তহবিল ২০০ টাকা। এ
ছাড়া প্রতি হজযাত্রীর জন্য মক্কা-মদিনায় বাড়িভাড়া একটি প্যাকেজে এক লাখ ৫০
হাজার ৫৯১ টাকা, অন্য প্যাকেজে ৮৩ হাজার ৭৯০ টাকা।
বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় খরচের খাত
হজ এজেন্সির মাধ্যমে প্রত্যেক হজযাত্রীর জন্য বিমানভাড়া এক লাখ ২২ হাজার
৮২৭ টাকা, জেদ্দা-মক্কা-মদিনা-মিনা-আরাফাতের যাতায়াত ব্যয়, মিনায় তাঁবু
ভাড়া ও মোয়াল্লেম ফি ২৪ হাজার ৩৩৯ টাকা, স্থানীয় সেবামূল্য ৮০০ টাকা,
প্রশিক্ষণ ফি ৩০০ টাকা ও আপৎকালীন তহবিল ২০০ টাকা খরচ হবে। এ ছাড়া
মক্কা-মদিনায় বাড়িভাড়া, মিনা-আরাফাতে মোয়াল্লেমের অতিরিক্ত খরচ,
মিনা-আরাফাতে ট্রেন ভাড়া, হজ গাইড, খাওয়া ও কোরবানির খরচ এজেন্সি প্যাকেজ
অনুযায়ী ঠিক করে থাকে।
হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ
বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় এজেন্সিগুলোর সংগঠন হলো হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব
বাংলাদেশ (হাব)। হাবের মূল কাজ হলো সৌদি ও বাংলাদেশ সরকারের হজ ও ওমরাহ
নীতিমালা বাস্তবায়নে সহযোগিতা করা। হাবের ওয়েবসাইট www.haab-bd.com.
ঠিকানা: সাত্তার সেন্টার (১৬ তম তলা), হোটেল ভিক্টোরি, ৩০/এ নয়াপল্টন,
ভিআইপি রোড, ঢাকা।
হজের টাকা কোন ব্যাংকে জমা দেবেন
হজের ব্যয় বাবদ টাকা নিম্নলিখিত ব্যাংকের যেকোনো শাখায় জমা দেওয়া যাবেঃ ১.
সোনালী ব্যাংক লিমিটেড ২. অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড ৩. জনতা ব্যাংক লিমিটেড ৪.
রূপালী ব্যাংক লিমিটেড ৫. পূবালী ব্যাংক লিমিটেড ৬. বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক
লিমিটেড ৭. রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, রাজশাহী ৮. আল-আরাফাহ ইসলামী
ব্যাংক লিমিটেড ৯. ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড ১০. দি সিটি ব্যাংক
লিমিটেড ১১. প্রিমিয়ার ব্যাংক লিমিটেড ১২. প্রাইম ব্যাংক লিমিটেড ১৩.
মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেড ১৪. স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক লিমিটেড ১৫.
ব্যাংক এশিয়া লিমিটেড ১৬. ঢাকা ব্যাংক লিমিটেড ১৭. ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড
১৮. সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড ১৯. শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড
২০. ওয়ান ব্যাংক লিমিটেড ২১. ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি) লিমিটেড
২২. এক্সিম ব্যাংক লিমিটেড ২৩. স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক লিমিটেড।
পাসপোর্ট বানাবেন যেখানে
ঢাকায় আগারগাঁওয়ে পাসপোর্ট অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয় অবস্থিত। এটিসহ
দেশের বিভিন্ন জেলায় মোট ৩৩টি আঞ্চলিক কার্যালয় রয়েছে। হজযাত্রীরা নিজ নিজ
জেলা অনুযায়ী পাসপোর্ট অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়সহ আঞ্চলিক কার্যালয় থেকে
পাসপোর্ট বানাতে পারবেন। এ ছাড়া প্রতিটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে
পাসপোর্টের আলাদা শাখা রয়েছে, সেখান থেকেও ওই জেলায় বসবাসকারীরা পাসপোর্ট
বানাতে পারবেন। আবেদনপত্রসহ আরও তথ্য www.passport.gov.bd ঠিকানায় পাওয়া
যাবে।
হজের আবেদনপত্র
হজের আবেদনপত্র জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের জেলা ও
বিভাগীয় কার্যালয়, জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দ্বীনি দাওয়াত বিভাগের
কার্যালয়, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়, তালিকাভুক্ত ২৩টি ব্যাংকের
শাখা (যেখানে টাকা জমা দিতে হবে) এবং বাংলাদেশ সচিবালয়, ভবন নম্বর ৮, হজ
শাখা, কক্ষ নম্বর ১০৩, ঢাকায় হজ অফিস, আশকোনা থেকে আবেদনপত্র সংগ্রহ এবং
জমা করা যাবে। এ ছাড়া www.hajj.gov.bd ওয়েবসাইট থেকে অনলাইনে ফরম পূরণ করে
ডাউনলোড ও প্রিন্ট আউট নিয়ে স্বাক্ষরসহ ওই সব কার্যালয়ের যেকোনোটিতে জমা
দেওয়া যাবে। আবেদনপত্র আগামী ৪ জুনের মধ্যে জমা দিতে হবে। বেসরকারি
ব্যবস্থাপনায় গেলে নিজ নিজ এজেন্সি থেকে আবেদন সংগ্রহ ও জমা দেওয়া যাবে ৩০
মে তারিখের মধ্যে।
স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও প্রতিষেধক
হজে যাওয়ার আগে প্রত্যেক হজযাত্রীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, স্যার
সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালসহ
বিভিন্ন জেলায় সরকারি মেডিকেল কলেজের হাসপাতাল, সিভিল সার্জনের কার্যালয়,
ঢাকায় সরকারি কর্মচারী হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল থেকে
স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও প্রতিষেধক নিতে হবে। এ ছাড়া হজের আগে উত্তরা আশকোনা,
হজ অফিসেও এ কাজটি সম্পন্ন করা হয়।
প্রত্যেক হজযাত্রীর জন্য স্বাস্থ্য পরীক্ষা, মেনিনজাইটিস ও ইনফ্লুয়েঞ্জা
প্রতিষেধক টিকা এবং স্বাস্থ্যসনদ গ্রহণ বাধ্যতামূলক। হজে যাওয়ার আগে এই
স্বাস্থ্যসনদ নিতে হবে। আর ৭৫ বছর বা ততোধিক বয়স্ক হজযাত্রীদের জন্য
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে গঠিত বোর্ডের বিশেষ স্বাস্থ্যসনদ গ্রহণ
বাধ্যতামূলক।
সৌদি আরবে বিমানবন্দরে পৌঁছে প্রত্যেক হজযাত্রীকে স্বাস্থ্য সনদ, পরিচয়পত্র
এবং কবজি বেল্ট বহন করতে হয়। এটি বাধ্যতামূলক। তাই হজের আবেদনপত্রে
স্বাস্থ্যসম্পর্কিত তথ্য যথাযথভাবে পূরণ করা জরুরি।
পাসপোর্ট
পাঁচ বছরের মধ্যে হজ পালন করলে সৌদি সরকার এবার তাঁদের হজ ভিসা দেবে না।
নিজ উদ্যোগে আন্তর্জাতিক পাসপোর্ট তৈরি করুন। পাসপোর্টের মেয়াদ উত্তীর্ণ
হলে নবায়ন করুন। টাকা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ৩০ মে। এই তারিখের আগেই
পাসপোর্টের বিষয়টি নিশ্চিত করুন
মাধ্যম
সরকারি ও বেসরকারি মাধ্যমে হজে যাওয়া যায়। উভয় ব্যবস্থাপনায় একাধিক প্যাকেজ
রয়েছে। এর মধ্যে ন্যূনতম খরচ দুই লাখ ৭৮ হাজার ৭৪২ টাকা। মক্কার কাবা শরিফ
এবং মদিনার মসজিদে নববী থেকে বাসস্থান কত দূর, তার ওপর নির্ভর করে টাকার
অঙ্ক
টাকা জমা
টাকা জমা দেওয়ার আগে বেসরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রীরা এজেন্সিগুলো যাচাই
করে নিন। কোনো কোনো এজেন্সির বিরুদ্ধে সৌদি হজ মন্ত্রণালয়ের অভিযোগ রয়েছে।
সরকারি বা বেসরকারি ব্যবস্থাপনা অনুযায়ী নির্ধারিত ২৩ ব্যাংকের শাখায় টাকা
জমা দিন। রসিদ ছাড়া কাউকে টাকা দেবেন না
নিয়মকানুন
প্রয়োজনীয় বইপুস্তক, হজ গাইড সংগ্রহ করে পড়ুন। যাঁরা হজে গেছেন, তাঁদের
সঙ্গে আলোচনা করুন। হজ ক্যাম্প, আশকোনা, ঢাকা এবং জেলা প্রশাসক, উপজেলা
নির্বাহী কর্মকর্তা এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কার্যালয় ও www.hajj.gov.bd
ঠিকানায় হজ বিষয়ে যাবতীয় তথ্য পাবেন
এক নজরে হজের কার্যক্রম
হজ শব্দের আভিধানিক অর্থ ইচ্ছা করা। এর পারিভাষিক অর্থ আল্লাহ তাআলাকে
সন্তুষ্ট করার উদ্দেশ্যে শরিয়তের নিয়মানুসারে নির্দিষ্ট সময়ে পবিত্র কাবা
শরিফ ও সংশ্লিষ্ট স্থানসমূহ জিয়ারত করা। ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের অন্যতম
স্তম্ভ হজ
১. ইহরাম বাঁধা ২. ৭-৮ জিলহজ মিনায় অবস্থান ৩. ৯ জিলহজ সূর্যোদয়ের পরে
মিনা থেকে আরাফাতে অবস্থান, সূর্যাস্তের পরে মুজদালিফায় যাওয়া ৪. ৯ জিলহজ
মুজদালিফায় রাত যাপন ৫. ১০ জিলহজ মিনায় বড় জামারাকে (শয়তান) কঙ্কর মারা,
কোরবানি করা, মাথার চুল ফেলে দেওয়া ৬. ১২ জিলহজের মধ্যে তাওয়াফ জিয়ারত, সাঈ
করা ৭. ১১, ১২ জিলহজ মিনায় জামারাকে (শয়তান) কঙ্কর মারা ৮. বিদায়ী তাওয়াফ
সূত্র: হজ মন্ত্রণালয়, সৌদি আরব
হজবিষয়ক যেকোনো তথ্য
পরিচালক, হজ অফিস, আশকোনা, উত্তরা, ঢাকা (ফোন: ৮৯৫৮৪৬২ ও ৭৯১২৩৯১) এবং
ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার সঙ্গে (ফোন: ৭১৬৩৬৭৮,
৯৫১২২৩৯, ৯৫১২২৩৮, ৭১৬০৩৯৭) যোগাযোগ করে যেকোনো তথ্য নিতে পারেন। এ ছাড়া
প্রতিটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়,
জেলার উপপরিচালক এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ে বিস্তারিত তথ্য জানা
যাবে