Sunday, March 17, 2013

ওবামা মিথ্যাবাদী: পেলিন

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাকে মিথ্যাবাদী বলে অভিহিত করেছেন রিপাবলিকান দলের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী সারাহ পেলিন।
আজ রোববার বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, গতকাল শনিবার ওয়াশিংটনের কাছে কনজারভেটিভ পলিটিকেল অ্যাকশন কনফারেন্সে পেলিন এ কথা বলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কা অঙ্গরাজ্যের সাবেক এই নেতা বলেন, ‘বারাক ওবামা সর্বকালের মধ্যে সবচেয়ে স্বচ্ছ প্রশাসনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। বারাক ওবামা, আপনি মিথ্যে বলেছেন।’
এ বক্তব্যের পর সেখানে অবস্থিত রিপাবলিকান আইনপ্রণেতা ও রক্ষণশীল কর্মীরা হাততালি দেন।
পেলিন তাঁর ভাষণে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের এক রিপাবলিকান সদস্যের বক্তব্যের পুনরাবৃত্তি করেন। ২০০৯ সালে কংগ্রেসে অবৈধ অভিবাসীদের স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে ভাষণ দেওয়ার সময় ওবামার বিরুদ্ধে ওই রিপাবলিকান সদস্য মিথ্যা বলার অভিযোগ তোলেন।
পেলিন তাঁর বক্তৃতায় রিপাবলিকান দলকে রক্ষণশীল মূল্যবোধ ধারণ করারও আহ্বান জানান।

অন্য মুশফিক

মুশফিকুর রহিমের এই সাহসটার কথা জানা ছিল না। নেটে ব্যাটিং করছিলেন। সেখান থেকে ব্যাট হাতে দৌড়ে গেলেন সাপ মারতে!
মুশফিক ভালো ব্যাটসম্যান। ভালো ছাত্র। জীবনের লক্ষ্য ভালো মানুষ হওয়া। এর বাইরে আবেগপ্রবণ আর অভিমানী তরুণ হিসেবেই তাঁর পরিচিতি। সেই মুশফিক কলম্বোর অনুশীলন মাঠের পাশে এঁকেবেঁকে চলে আসা সাপের মুখোমুখি হলেন ব্যাট হাতে। কী বিস্ময়! কী বিস্ময়!
আসলে বিস্ময়ের কিছু নেই। ব্যাট নিয়ে হয়তো এর আগে কাউকে মারতে যাননি, তবে কথার চাবুক মেরে সাহসের প্রমাণ অনেকই দিয়েছেন। সর্বশেষ ঘটনা তো অতিসাম্প্রতিক। গল টেস্টের সাফল্যের পর ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীর পুরস্কারের ঘোষণা শুনে মুশফিক সবিনয়ে মনে করিয়ে দিলেন, এ রকম ঘোষণা প্রায়ই আসে। কিন্তু প্রতিশ্রুত পুরস্কার আসে না। এবার সেটা এলেই তিনি খুশি হবেন।
গল টেস্টটাকে বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসেই ঢুকিয়ে দিয়েছেন অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। দেশের পক্ষে টেস্টে প্রথম ডাবল সেঞ্চুরির ইতিহাস লেখা হলো তাঁর ব্যাটে। অথচ পাঁচ ফুট চার ইঞ্চি উচ্চতার এই তরুণকে দেখে ভেতরের সাহস অনুমানের সাধ্য কার! বিনয়ী, মুখে অমায়িক হাসি—বাইরে থেকে এমন মুশফিককে দেখে অভ্যস্ত সবাই। সেই মুশফিকই যখন বিপিএল নিয়ে ঠোঁটকাটা হয়ে ওঠেন, প্রতিশ্রুতি পারিশ্রমিক না পেয়ে ধুয়ে দেন ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিককে, অবিশ্বাস্য তো লাগেই।
গত এশিয়া কাপের আগের ঘটনা। মাত্রই শেষ হওয়া বিপিএলের প্রথম আসর নিয়ে বিসিবির পিত্তি জ্বালিয়ে দেওয়া এক মন্তব্য করে বসলেন মুশফিক। বিপিএলের মতো অগোছালো টুর্নামেন্ট নাকি আর হয় না। বিতর্ক আর সমালোচনায় বিপিএল নিয়ে তখন এমনিতেই জর্জরিত বিসিবি। এ অবস্থায় জাতীয় দলের অধিনায়কের মুখ থেকে ছুটে আসা তির সহ্য করা কঠিন। ঠোঁটকাটা মুশফিককে ‘শাসন’ করতে তাই এশিয়া কাপে অধিনায়কত্ব কেড়ে নেওয়ারও চেষ্টা হয়েছিল তাঁর কাছ থেকে। শেষ পর্যন্ত সফল হয়নি সে চেষ্টা।
বিকেএসপিতে পড়তেন, স্বনির্ভর হয়ে ওঠার প্রথম পাঠ সেখানেই নেওয়া। তবে নিজের কথা স্পষ্ট করে বলার সাহস মুশফিকের চরিত্রে ঢুকে পড়েছিল আরও আগে। চার ভাই এক বোনের মধ্যে চার নম্বর হলেও পরিবারের অনেক কিছুতেই বড় ভাই-বোনদের কাছে গুরুত্ব ছিল তাঁর কথার। আর বগুড়ায় শৈশব-কৈশোরের বন্ধু মহলে তো এক রকম নেতাই ছিলেন। মুশফিক কিছু বললে ফেলতে পারতেন না সমবয়সীরা।
জাতীয় দলে আসার আগে অনূর্ধ্ব-১৯ দলের অধিনায়ক ছিলেন বলে নেতৃত্ব চর্চার ধারাবাহিকতাটা বজায় ছিল। এখন তো জাতীয় দলেরই অধিনায়ক! ২৪ বছর বয়সী কাঁধে ১৬ কোটি মানুষের প্রত্যাশার ভার। মুশফিককে হয়তো এই দায়িত্বই সাহসী করে তুলেছে আরও। সে সাহসের প্রতিধ্বনি শোনা যায় ব্যাটে, কথায়।
অথচ, মুশফিকুর রহিম যেদিন অধিনায়ক হলেন, সেই রাতের সংবাদ সম্মেলনে একটা প্রশ্ন বিব্রত করল তাঁকে—
* দল হারলে বা নিজে খারাপ খেললে তো আপনি নিজেই ভেঙে পড়েন। ড্রেসিংরুমে নাকি কান্নাকাটিও করেন। অধিনায়ক হওয়ার পরও এ রকম চললে তো নেতৃত্ব দেওয়া কঠিন হয়ে পড়বে...।
খুবই যৌক্তিক প্রশ্ন। বাজে আউট হলে বা উইকেট কিপিংয়ে ক্যাচ-ট্যাচ ফেললে ড্রেসিংরুমে ফিরে নিজের ওপর প্রচণ্ড অভিমানী হয়ে উঠতেন মুশফিক। কখনো হাত দিয়ে মুখ চেপে বসে থাকতেন চুপচাপ। কখনো আটকাতে পারতেন না কান্না। দল খারাপ খেললে সবারই মন খারাপ হয়। কিন্তু মুশফিকের আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ার মাত্রাটা এতই বেশি হতো যে সব ফেলে তাকে সান্ত্বনা দিতেই ব্যস্ত হয়ে পড়ত অনেকে। অধিনায়ক হওয়ার পরও যদি মুশফিক এমনই থাকতেন, বাংলাদেশ দলের ড্রেসিংরুমের অবস্থাটা কী হতো ভাবুন। খারাপ খেললে অধিনায়কের নেতৃত্বে হয়তো নিয়মিত শোক সভাই চলত সেখানে।
অধিনায়কত্ব পাওয়ার রাতে চরিত্রের এই দুর্বলতা আড়াল করেননি মুশফিক। প্রশ্নটা শুনে বিব্রত হলেও একগাল হাসিতে ঢাকা পড়ে গিয়েছিল সেটা। স্বীকার করেছিলেন সত্যিটা, ‘হ্যাঁ, ও রকম সময়ে আমি একটু আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ি।’ সঙ্গে প্রতিশ্রুতি ছিল, অধিনায়কত্বের বর্ম আর বাষ্পায়িত হতে দেবে না ডুকরে ওঠা আবেগকে। ভেতরে যত ঝড়ই বয়ে যাক বাইরের ছবিটা থাকবে সাহসী সেনাপতির। আবেগের চেয়ে দায়িত্ব বড়। সে দায়িত্ব কাঁধে নিজের তো ভেঙে পড়ার প্রশ্নই ওঠে না, অন্যকেও ভেঙে পড়তে দেবেন না।
সাহস মুশফিককে সে রকমই এক অধিনায়ক করে তুলছে আস্তে আস্তে। এই অধিনায়ক ব্যাট দিয়ে শুধু ডাবল সেঞ্চুরিই করে না, সাপও মারতে যায়। কথার চাবুকে পেটায় কথার ফানুস ওড়ানোদের।

Friday, March 15, 2013

মা হলেন তিনি

কাতারের ২৬ বছর বয়সী নারী ফাতেমা আল আনসারি। যুক্তরাষ্ট্রের মায়ামির জ্যাকসন মেমোরিয়াল হাসপাতালে তাঁর যকৃৎ, অগ্ন্যাশয়, পাকস্থলী, ক্ষুদ্রান্ত্র ও বৃহদান্ত্র প্রতিস্থাপন করা হয়। তিনি একই হাসপাতালে পাঁচ বছর পর সম্প্রতি সুস্থ একটি কন্যাসন্তানের জন্ম দিয়েছেন।
শরীরে পাঁচটি অঙ্গ প্রতিস্থাপন করা হয়েছে, এমন কোনো নারীর সন্তান প্রসবের ঘটনা এটিই প্রথম বলে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ট্রান্সপ্ল্যান্টেশন প্রেগনেন্সি রেজিস্ট্রি জানিয়েছে। চার পাউন্ড সাত আউন্স ওজনের নবজাতকের নাম রাখা হয়েছে আলকাদি আলহায়াল। কম্বলে মোড়ানো শিশুটিকে নিয়ে মা ফাতেমার আনন্দের শেষ নেই। তিনি গত বুধবার নিজের ‘শ্রেষ্ঠতম অনুভূতি’ বর্ণনা করেন চিকিৎসক ও সাংবাদিকদের কাছে।
ফাতেমার চিকিৎসক শালিহ্ ওয়াই ইয়াসিন বলেন, শরীরে একাধিক অঙ্গ প্রতিস্থাপন করা হয়েছে, এমন মায়েদের সন্তান প্রসবের নজির ইউরোপে আছে, তবে তাঁদের কারও শরীরেই ‘পাঁচটি’ অঙ্গ প্রতিস্থাপন করা হয়নি। বিশ্বের চিকিৎসাবিদ্যাসংক্রান্ত প্রায় সব বইপত্র ও সাময়িকী ঘেঁটেও এ রকম দৃষ্টান্ত দ্বিতীয়টি পাওয়া যায়নি। ফাতেমা আগে একবার অন্তঃসত্ত্বা হলেও চিকিৎসকের পরামর্শে গর্ভপাত করিয়েছিলেন। তিনি কখনো মা হতে পারবেন না বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছিলেন।

Wednesday, March 13, 2013

ওয়াটসনদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত সঠিক

দলটি পাকিস্তান হলে কেউ অবাক হতেন না। সেখানে অন্তঃকোন্দল প্রায় প্রাত্যহিক ঘটনা, শৃঙ্খলাজনিত কারণে গৃহদাহের আগুনের আঁচ দলীয় ক্যাম্প পেরিয়ে যায় প্রায়ই। কিন্তু অস্ট্রেলিয়া? মাঠে তাদের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের নিয়ামক যে মাঠের বাইরের শৃঙ্খলা, সেটি কে না জানে! অথচ সেই অস্ট্রেলিয়া দলের চার ক্রিকেটারকে কিনা এ কারণে বহিষ্কার করা হয়েছে ভারতের বিপক্ষে তৃতীয় টেস্টের দল থেকে। কপালে চোখ তুলে দেওয়ার মতোই ব্যাপার!
সময়টা যে তাই অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটের জন্য টালমাটাল, সেটি না বললেও চলছে। শেন ওয়াটসন, মিচেল জনসন, জেমস প্যাটিনসন ও উসমান খাজাকে অমন শাস্তি দেওয়ার পর ঝড় বইছে ক্রিকেট-বিশ্বে। সাবেক ক্রিকেটার অ্যালান বোর্ডার, মার্ক ওয়াহরা তো এর সমালোচনাও করতে ছাড়েননি। অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্ক অবশ্য সিদ্ধান্তটিকে বলছেন যথার্থ, 'যা খুশি হোক, এমন ভাবনায় দায়িত্ব ছেড়ে চলে যাওয়া খুব সহজ। তবে সবাই জানে, অস্ট্রেলিয়ার হয়ে খেলা আমি কত উপভোগ করি। আমি নিশ্চিত যে, ওই চারজনও তা করে। ওরা জানে, এই দলটির সাফল্য দেখার জন্য আমি কতটা মুখিয়ে আছি। ওরাও তাই। একটা উপায়েই আমরা অস্ট্রেলিয়াকে কাঙ্ক্ষিত জায়গায় নিয়ে যেতে পারি। সবাই একসঙ্গে মিলে চেষ্টা করলেই কেবল তা সম্ভব।' ভারতের কাছে দ্বিতীয় টেস্টে ইনিংস ব্যবধানে হারের পর অস্ট্রেলিয়ার প্রত্যেকের কাছে এ অবস্থা থেকে উত্তরণের উপায় জানতে চেয়েছিলেন কোচ। ওই চতুষ্টয় বাদে প্রত্যেকেই তাতে সাড়া দিয়েছেন। এটি যে গ্রহণযোগ্য নয়, তা মনে করিয়ে দিয়েছেন অধিনায়ক, 'আমাদের কাছে যে উপায়গুলো জানতে চাওয়া হয়েছিল, সেটি অমন কঠিন কিছু না। সেটি না করে ওরা দলকে ডুবিয়েছে, কোচের মাথা হেঁট করে দিয়েছে। এটি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।' তবে শাস্তি যে এই এক ঘটনার কারণে নয়, তাও বলেছেন ক্লার্ক, 'খুব কঠিন সময় পার করছি আমরা। সমর্থক ও গণমাধ্যমকে আমি অনুরোধ করব এটি বুঝতে যে, শুধু একটি ঘটনার প্রতিফলনে এই শাস্তি নয়। সফরে এখন পর্যন্ত আমরা যেভাবে খেলছি, সেটি অগ্রহণযোগ্য। এর পেছনে মাঠের বাইরের নানান ঘটনার প্রভাবও রয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটের মানদণ্ড যথার্থ জায়গায় থাকবে না।'
সতীর্থদের শাস্তি দেওয়ার পরও ব্যক্তিগত সম্পর্কে ফাটল ধরবে না বলে ক্লার্কের বিশ্বাস, 'এ ঘটনার জন্য ওই চারজনের সঙ্গে আমার বন্ধুত্বে ফাটল ধরবে না। কারণ জানি, ওরা আমাকে কতটা সম্মান করে। আর আমিও যে ওদের সম্মান করি, তাও ওদের অজানা নয়। এমন ঘটনার মুখোমুখি হতে তাই আমার ভেতর অস্বস্তির খচখচানি নেই।' অভিমানে দেশে ফিরে যাওয়া সহ-অধিনায়ক শেন ওয়াটসন অবসর নিয়ে ফেলতে পারেন বলে যে গুঞ্জন, সেটিও হালে পানি পায়নি অধিনায়কের কাছে, 'ওয়াটো ও তার সহ-অধিনায়কত্ব নিয়ে অনেকে অনেক প্রশ্ন এখন তুলবে। তবে আমার পূর্ণ বিশ্বাস আছে ওর ওপর। আমি নিশ্চিত যে এই অবস্থা থেকে ও ফিরে আসতে পারবে। আবার হতে পারবে অস্ট্রেলিয়ার সহ-অধিনায়ক। ফর্মে থাকা ওয়াটো বিশ্বের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার। তবে এ সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় আমরা ব্যক্তিগত কিছু বিবেচনায় আনিনি। দলের স্বার্থের কথা ভেবে নিয়েছি সিদ্ধান্ত।'
টেস্ট সিরিজের মাঝে এ সিদ্ধান্ত নেওয়ায় প্রশ্ন উঠেছে। কিন্তু ক্লার্ক যে দূর-ভবিষ্যতের কথাই ভাবছেন, 'এসব সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে সঠিক সময় বলে কিছু নেই। সঠিক শাস্তির নির্দিষ্ট কিছুও নেই। আমরা প্রয়োজন অনুযায়ী পদক্ষেপ নিয়েছি। আশা করি, এ ঘটনার পর আমরা দল হিসেবে আরো শক্তিশালী হয়ে উঠব।' তৃতীয় টেস্টে সুযোগ কাজে লাগানোর আহ্বানও তিনি জানিয়েছেন সতীর্থদের প্রতি, 'পুরো দলের সামনে এখন কঠিন চ্যালেঞ্জ। এখন স্কোয়াডের অন্যদের সামনে সুযোগ এসেছে নিজেদের সামর্থ্য প্রমাণের। তৃতীয় টেস্টে সেটি যদি তারা কাজে লাগাতে না পারে, কে জানে, হয়তো আর কোনো সুযোগ তারা পাবে না।'
এদিকে 'অপরাধী' চতুষ্টয়ের একজন প্যাটিনসন মাথা পেতে দোষ মেনে নিচ্ছেন। দলের কাছে ক্ষমা চাওয়ার কথাও জানিয়েছেন তিনি, 'এখন বুঝতে পারছি যে, এটি কোচ-অধিনায়ক এবং বাকি দলের প্রতি একধরনের অসম্মান প্রদর্শন। ওদের জায়গায় থাকলে আমিও এমন স্বার্থপর আচরণের জন্য হতাশ হতাম। সফল এক দল হতে হলে এমন আচরণ করা যাবে না। কাল অনুশীলনে পুরো দলের কাছে তাই ক্ষমা চেয়েছি।' সফরে অস্ট্রেলিয়ার এই সফলতম ফাস্ট বোলারের কাছে শাস্তিটা মনে হচ্ছে যথার্থ, 'আমার জন্য এই অজুহাত দেওয়াই সবচেয়ে সহজ যে, শাস্তিটা বেশি কঠোর হয়ে গেছে। তবে বাস্তবতা হচ্ছে, ব্যাপারটা তা নয়। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ক্রিকেট খেলতে হলে আপনাকে এসব মেনে নিতেই হবে। সব ঠিকঠাক মতো করতে হবে। হ্যাঁ, বাদ পড়ার কারণে আমি ব্যক্তিগতভাবে হতাশ। তবে দীর্ঘমেয়াদে এতে দলের উপকারই হবে।

মুক্তি না দিলে ২১ মার্চ ঢাকায় হরতাল

ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আমানউল্লাহ আমান, সাবেক সাংসদ দেওয়ান সালাউদ্দিনসহ গ্রেপ্তার করা বিএনপির নেতা-কর্মীদের মুক্তির জন্য ২০ মার্চ পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে জেলা বিএনপি। দাবি পূরণ না হলে ২১ মার্চ ঢাকা জেলায় সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালন করার ঘোষণা দিয়েছে ঢাকা জেলা বিএনপি।
আজ বুধবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল মান্নান এ ঘোষণা দেন।
এ ছাড়া নেতাদের মুক্তির দাবিতে আগামীকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা জেলার সব উপজেলা, থানা ও পৌরসভা পর্যায়ে বিক্ষোভ সমাবেশ এবং ১৬ মার্চ জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করবে জেলা বিএনপি।
গত সোমবার বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ককটেলের বিস্ফোরণকে কেন্দ্র করে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এরপর পুলিশ বিএনপির কার্যালয়ে হানা দেয়। কয়েক ঘণ্টা ধরে পুলিশ ওই ভবনের বিভিন্ন তলায় অভিযান চালিয়ে ও মহাসচিবের কক্ষের দরজা ভেঙে মির্জা ফখরুলসহ কার্যালয়ে থাকা নেতা-কর্মীদের আটক করে।
তবে প্রায় ১৯ ঘণ্টা পর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, সহসভাপতি সাদেক হোসেন খোকা ও আলতাফ হোসেন চৌধুরীকে ছেড়ে দেয় পুলিশ।
এরপর বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে ধরে নেওয়া নেতা-কর্মীদের মধ্যে ১৫৪ জনের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে তাঁদের আদালতে হাজির করে দুই মামলায় ১৭ দিন রিমান্ডের আবেদন করে পুলিশ। কিন্তু পর্যাপ্ত কাগজপত্র না থাকায় এ বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়নি। আদালত ২০ মার্চ শুনানির দিন ধার্য করেছেন।

ভিটামিন ‘এ’ নিয়ে গুজব ছড়িয়ে আতঙ্ক তৈরি

শিশুদের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার দিনভর দেশের বিভিন্ন স্থানে গুজবের মাধ্যমে আতঙ্ক ছড়ানো হয়েছে। এ নিয়ে শিশুদের বাবা-মা ও অভিভাবকেরা ছিলেন উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায়।
অনেক স্থানে গুজবে আতঙ্কিত বাবা-মা দিনে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো শিশুকে নিয়ে সন্ধ্যা বা রাতে ছুটে গেছেন হাসপাতালে। সন্ধ্যার পর থেকে বিভিন্ন হাসপাতালে ভিড় বাড়তে থাকে। তবে কোথাও থেকে কোনো মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গুজবে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছে, মানসম্পন্ন, জীবাণুমুক্ত ও সম্পূর্ণ নিরাপদ ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল গতকাল শিশুদের খাওয়ানো হয়েছে।
সন্ধ্যার পর তিন শতাধিক শিশুকে নিয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসেন শহর ও এর আশপাশের এলাকার মানুষ। রাত ১১টার দিকে হাসপাতালে শিশু ও অভিভাবকদের ছিল প্রচণ্ড ভিড়। রংপুরের সিভিল সার্জন রিয়াজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, গুজবের কারণে মানুষ আতঙ্কিত হয়ে শিশুদের নিয়ে আসছে।
রাত সাড়ে নয়টার দিকে প্রায় এক হাজার বাবা-মা সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে আসেন। এঁদের প্রায় প্রত্যেকের কোলে ছিল ভিটামিন ‘এ’ খাওয়ানো পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু। শিশুদের পরীক্ষা করে চিকিৎসকেরা কিছু হয়নি বলে জানান। পরে তাঁরা ফিরে যান। আরও বেশ কয়েকটি জেলা ও উপজেলা হাসপাতালেও ছিল একই অবস্থা।
রাত সাড়ে ১০টায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খন্দকার মো. সিয়ায়েত উল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খেয়ে দেশের কোথাও কোনো শিশু মারা যায়নি। এমনকি গুরুতর অসুস্থ হওয়ারও কোনো খবর তাঁরা পাননি। তবে ভিটামিনের সঙ্গে কিছু শিশুকে কৃমিনাশক বড়ি দেওয়া হয়েছে। ওই বড়ির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় কারও কারও বমি বা মাথা ঘোরা ভাব হতে পারে। পাতলা পায়খানাও হতে পারে। তবে ভয়ের কিছু নেই।
রাত সাড়ে নয়টায় ঢাকায় প্রথম আলোর কার্যালয়ে ফোন করে এক ব্যক্তি বলেন, ভিটামিন ‘এ’ খেয়ে গাইবান্ধায় ৩৫টি শিশু মারা গেছে। খুলনা প্রতিনিধিকে ফোন করে বলা হয়, সাতক্ষীরায় সাতটি শিশু মারা গেছে। তবে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এসবই গুজব। এভাবে গুজব ছড়ানো হয় মুঠোফোনে, ফেসবুকে ও ব্লগের মাধ্যমে।
সিফায়েত উল্লাহ বলেন, একটি বিশেষ মহল পরিকল্পিতভাবে এ গুজব ছড়িয়েছে। স্থানীয় স্বাস্থ্য প্রশাসনের উল্লেখ করে তিনি বলেন, কক্সবাজার-টেকনাফ এলাকার রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরের কাছের একটি এলাকা থেকে এই গুজবের শুরু বলে তাঁরা শুনেছেন। এ ছাড়া চট্টগ্রাম এলাকায় একাধিক মাইক ব্যবহার করে এ ধরনের প্রচার চালানো হয় বলে তাঁকে জেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
এদিকে এ গুজবে বিভ্রান্ত না হতে স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকেও মাইকিং করা হয়।
গতকাল সারা দেশে শিশুদের ভিটামিন ‘এ’ খাওয়ানো হয়। এক লাখ ২০ হাজার স্থায়ী স্বাস্থ্যকেন্দ্র ছাড়াও ২০ হাজার ভ্রাম্যমাণ কেন্দ্রের মাধ্যমে শিশুদের ভিটামিন খাওয়ানোর কথা ছিল। ছয় মাস থেকে পাঁচ বছর বয়সী শিশুদের ভিটামিন ক্যাপসুল ও দুই থেকে পাঁচ বছর বয়সী শিশুদের ভিটামিনের সঙ্গে একটি কৃমিনাশক বড়ি খাওয়ানো হয়।
তবে হরতাল ও গুজবের কারণে কর্মসূচি বেশ খানিকটা ব্যাহত হয়েছে। অনেক কেন্দ্রে ভিড় কম ছিল। অনেকে কেন্দ্রে এসেও গুজব শুনে আতঙ্কে ভিটামিন না খাইয়েও শিশুকে নিয়ে ফিরে গেছেন।
এ কর্মসূচি তত্ত্বাবধান করা জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠানের পরিচালক এখলাসুর রহমান সন্ধ্যায় বলেন, সারা দেশে নির্বিঘ্নে শিশুদের বড়ি ও ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমি সাতজন বিভাগীয় পরিচালক ও একাধিক সিভিল সার্জনের সঙ্গে কথা বলেছি। কেউ শিশুদের অসুস্থতার নজির পাননি।’
এই গুজব ছড়ায় খুলনা, সাতক্ষীরা, বগুড়া, রংপুর, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী, ফেনী, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান, হবিগঞ্জ, ভোলা, গাজীপুর, বাগেরহাট, কুমিল্লা, মৌলভীবাজার, শেরপুরসহ বিভিন্ন জেলায়।
বেলা একটা থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মা ও শিশু হাসপাতাল, জেনারেল হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে অভিভাবকেরা শিশুদের নিয়ে ভিড় করেন। বন্দর এলাকার নিমতলা খালেরপাড় থেকে রেহানা বেগম ছেলে মোবিন ও মেয়ে মীমকে নিয়ে মা ও শিশু হাসপাতালে এসেছিলেন। বহির্বিভাগ থেকে বের হওয়ার সময় তিনি বলেন, ‘টিকা খেয়ে বাচ্চা মারা যাওয়ার কথা শুনে এসেছি। ডাক্তার দেখিয়েছি। কোনো সমস্যা নেই।’
মা ও শিশু হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মোহাম্মদ নুরুল হক বলেন, দুপুর থেকে বহির্বিভাগে বেপারিপাড়া, নালাপাড়া, বন্দরটিলা, নিমতলা, ছোট পোল থেকে প্রায় ৭০০ শিশুকে এখানে নিয়ে আসেন আতঙ্কিত বাবা-মায়েরা। পরীক্ষা করে দেখা গেছে, শিশুরা সবাই সুস্থ। এটা গুজব ছাড়া কিছুই নয়।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগ ও জরুরি বিভাগেও শিশুদের নিয়ে অনেকে আসেন। চিকিৎসকেরা জানান, ওই শিশুদেরও কোনো সমস্যা নেই।
চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলায় কিছু মানুষ স্বাস্থ্যকর্মীদের ওপর মারমুখী হয়ে ওঠেন। অনেক জায়গায় টিকাদান কেন্দ্র লোকজন বন্ধ করে দেয়। একই গুজবে পটিয়ার শিকলবাহায় স্বাস্থ্য সহকারী জয়রাধা নাথকে বেলা তিনটা পর্যন্ত আটকে রাখে এলাকাবাসী। হাইদগাঁও আহমদ রহমান মেম্বারের বাড়িতে এক নারী স্বাস্থ্য সহকারীকে নাজেহাল করে লোকজন।
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন মো. আবু তৈয়ব প্রথম আলোকে বলেন, পরিকল্পিতভাবে এই গুজব ছড়ানো হয়েছে। মারা যাওয়া দূরের কথা, কোনো শিশু অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি নেই।
সংবাদ সম্মেলন: বিকেলে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে সিভিল সার্জনের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলন হয়। এতে সিভিল সার্জন বলেন, ‘আমরা চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সব টিকাকেন্দ্র এবং ১৪ উপজেলায় খোঁজ নিয়ে দেখেছি ভিটামিন ‘এ’ এবং কৃমিনাশক ওষুধ সেবনের কারণে কোথাও কোনো স্বাস্থ্য সমস্যা হয়নি।’


বোমাটি ফাটলে ব্যাপক ক্ষতি হতো

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আদালত এলাকা থেকে গতকাল মঙ্গলবার একটি শক্তিশালী বোমা উদ্ধার করেছেন র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) সদস্যরা। বিচারকদের প্রবেশপথের প্রধান ফটকের সামনে থেকে বোমাটি উদ্ধার করা হয়। র্যাবের ভাষ্য, এটি বিস্ফোরিত হলে ব্যাপক ক্ষতি হতো।
র্যাব-৯-এর ভৈরব ক্যাম্পের অধিনায়ক মাহফুজুল আমিন নূর প্রথম আলো ডটকমকে জানান, গতকাল রাত আটটার দিকে তাঁরা জানতে পারেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে নাশকতা সৃষ্টির জন্য বোমা হামলার ঘটনা ঘটতে পারে। এর ভিত্তিতে শহরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে রাত ১১টার দিকে শহরের কাউতলার আদালত এলাকায় শক্তিশালী একটি বোমা পাওয়া যায়। বোমাটি আদালতে বিচারকদের প্রবেশপথের প্রধান ফটকের কাছে একটি বৈদ্যুতিক খুঁটির পাশে রাখা ছিল। এটি একটি ব্যাগে মুড়িয়ে চার-পাঁচটি বালুর বস্তার নিচে চাপা দেওয়া ছিল। বোমাটি উদ্ধারের পর পুরো এলাকা ঘিরে রাখেন র্যাব-৯এর সদস্যরা। পরে ঢাকা থেকে র্যাবের ছয় সদস্যের বোমা নিষ্ক্রিয়কারী একটি দল গিয়ে রাত দুইটা ৫০ মিনিটে এটিকে নিষ্ক্রিয় করে।
বোমা নিষ্ক্রিয় দলের উপপরিচালক মেজর আবদুর রহমান জানান, বোমাটির ওজন আনুমানিক চার থেকে পাঁচ কেজি। এর ভেতরে বোমায় ব্যবহূত শক্তিশালী ডেটোনেটর, সকেট ও ব্যাটারি ছিল। বোমাটি বিস্ফোরিত হলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতো।

Tuesday, March 12, 2013

ব্যবসায় নীতি ও প্রয়োগ

অধ্যায়-৯
প্রিয় শিক্ষার্থীরা, আজ তোমাদের জন্য দেওয়া হলো ব্যবসায় নীতি ও প্রয়োগ-২য় পত্রথেকে একটি সৃজনশীল নমুনা প্রশ্নোত্তর।

# সাবের, বাসেত ও আইয়ুব তিনজন বন্ধু বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত। এর মধ্যে আইয়ুব স্বনামধন্য ব্যবসায়ী ও ব্যাংকের সঙ্গে তার সুসম্পর্ক আছে। বাসেত আইয়ুবকে জামিনদার হিসেবে পরিচয় দিয়ে ব্যাংক থেকে ২০ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে ব্যবসা শুরু করে সফল হন। এখন বাসেত সাবের ও আইয়ুবের নামে দুটি আলাদা জীবন বীমা চুক্তি করতে চাইলে X জীবন বীমা কোম্পানি লি. শুধু আইয়ুবের নামে বীমাচুক্তি সম্পাদন করে। উক্ত বীমার ধরন অনুযায়ী বাসেত প্রিমিয়াম একবারেই প্রদান করে এবং বীমার মেয়াদ ছিল তিন বছর। এই তিন বছরের মেয়াদে আইয়ুবের মৃত্যু না হওয়ায় কোনো বীমা দাবি পাওয়া যায়নি।
প্রশ্ন: ক. সমর্পণ মূল্য কী?
প্রশ্ন: খ. মৃত্যুহার পঞ্জি বলতে কী বোঝ?
প্রশ্ন: গ. বাসেত আইয়ুবের নামে X জীবনবীমা কোম্পানির সঙ্গে কোন ধরনের জীবনবীমা চুক্তি সম্পাদন করেছে? বর্ণনা করো।
প্রশ্ন: ঘ. X জীবনবীমা কোম্পানি লি. শুধু আইয়ুবের নামে বীমাচুক্তি সম্পাদন করার নৈতিকতা বীমানীতির আলোকে মূল্যায়ন করো।
উত্তর: ক. সমর্পণ মূল্য: সমর্পণ মূল্য হলো বীমাগ্রহীতা কর্তৃক পরিশোধিত প্রিমিয়ামের সেই অংশ, যা বীমাপত্র ফেরতদানের সময় তাকে পরিশোধ করা হয়।
উত্তর: খ. মৃত্যুহার পঞ্জি: অতীত পরিসংখ্যান ও অভিজ্ঞতার আলোকে নির্দিষ্ট বয়সসীমায় প্রতি হাজারে সম্ভাব্য মৃত ব্যক্তির সংখ্যাসংবলিত সারণিকে মৃত্যুহার পঞ্জি বলে।
এটি মৃত্যুঝুঁকি ও প্রিমিয়ামের পরিমাণ নির্ধারণে সহায়তা করে। এটি নির্ণয়ের সূত্র নিম্নরূপ:
উত্তর: গ. বাসেত আইয়ুবের নামে X জীবনবীমা কোম্পানির সঙ্গে সাময়িক জীবন বীমা চুক্তি সম্পাদন করেছে।
স্বল্পমেয়াদে অর্থাৎ ২ মাস থেকে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের জন্য যে জীবন বীমাপত্র খোলা হয় তাকে সাময়িক বীমাপত্র বলে। উক্ত মেয়াদের মধ্যে যদি বীমাকৃত ব্যক্তি মারা যায় তাহলে মনোনীত ব্যক্তি অর্থ পায়। আর বেঁচে থাকলে কোনো অর্থ পায় না। এতে প্রিমিয়াম একবারই দিতে হয়।
উদ্দীপকে বাসেত আইয়ুবের নামে যে জীবনবীমা চুক্তি X বীমা কোম্পানির সাথে সম্পাদন করেছে তাতে প্রিমিয়াম একবারই দিতে হয় এবং এর মেয়াদ ছিল ৩ বছর যা ৫ বছরের চেয়ে কম ও ২ মাসের চেয়ে বেশি। এই মেয়াদে আইয়ুবের মৃত্যু না হওয়ায় সে কোনো বীমা দাবি পেশ করতে পারেনি। এসব বীমাচুক্তির বৈশিষ্ট্য সাময়িক বীমার মধ্যেই পরিলক্ষিত হয়। সুতরাং উদ্দীপক অনুসারে বাসেত আইয়ুবের নামে X জীবনবীমা কোম্পানির নিকট সাময়িক বীমা চুক্তি সম্পাদন করেছে।
উত্তর: ঘ. X জীবন বীমা কোম্পানি লি. শুধু আইয়ুবের নামে বীমাচুক্তি করার কারণ হলো বীমাযোগ্য স্বার্থের নীতির উপস্থিতি। বীমাযোগ্য স্বার্থ হলো বীমাকৃতের জীবনে বীমাগ্রহীতার আর্থিক স্বার্থ থাকা। এরূপ স্বার্থ না থাকলে জীবনবীমা চুক্তি করা যায় না। এই স্বার্থ নিজের জীবন, স্বামীর জীবনে স্ত্রীর ও স্ত্রীর জীবনে স্বামীর, দেনাদারের জীবনে পাওনাদারের ও দেনাদারের জীবনে জামিনদারের বীমাযোগ্য স্বার্থ বিদ্যমান।
উদ্দীপকে সাবের, বাসেত ও আইয়ুম তিন বন্ধু। এর মধ্যে বাসেত আইয়ুবের জীবনে বীমা করতে পারবেন। কারণ তিনি ব্যাংক থেকে যে ঋণ নিয়েছেন তাতে আইয়ুব জামিনদার। সুতরাং জামিনদারের জীবনের বীমাগ্রহীতার নিকট আর্থিক স্বার্থ বিদ্যমান থাকায় তা বীমাযোগ্য।
সুতরাং X জীবনবীমা কোম্পানি লি. বীমাযোগ্য স্বার্থের নীতি মেনে দেনাদারের জীবনে জামিনদারের স্বার্থ থাকার শর্তে শুধু আইয়ুবের নামে বীমাচুক্তি সম্পাদন কমরছে, যা সম্পূর্ণ যুক্তিযুক্ত।

এক গুলিতেই পরিবারের স্বপ্ন শেষ

বড় বোনকে বিয়ে দেওয়া হলেও যৌতুকের ৪০ হাজার টাকা এখনো পরিশোধ করা হয়নি। অসুস্থ প্রতিবন্ধী আরেক বোনকে নিয়মিত চিকিৎসা করাতে হয়। ছোট দুই ভাই স্কুলে পড়ে। আর বৃদ্ধ মা-বাবা তো আছেনই। পরিবারের সবার ভরসা ছিল মোহাম্মদ সেলিম। ১৬ বছরের এই কিশোর পরিবারের সবার ভরণ-পোষণের দায়িত্ব নিয়েছিল। কিন্তু একটি গুলি শেষ করে দিয়েছে পরিবারটির স্বপ্ন।
সেলিম বগুড়া নিউমার্কেটের ফপস টেইলারের কারিগর ছিল। পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, তার কাজের সুনাম ছিল সবার কাছে। তাই আয়-রোজগারও ভালো ছিল। সম্প্রতি টানা তিন দিনের হরতালে দোকান বন্ধ থাকবে বলে ২ মার্চ, শনিবার সারা রাত কাজ করেছিল সেলিম। কাজ শেষে ভোরে বাড়ির উদ্দেশে রওনা হয়েছিল। কিন্তু নিউমার্কেট থেকে বড়গোলা হয়ে চারমাথার দিকে আসতেই জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে চলা পুলিশের সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে সেলিম। এরপর হঠাৎ একটি গুলি এসে লাগে তার পেটে। মুমূর্ষু অবস্থায় লোকজন তাকে নিয়ে যায় বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। পরদিন ভোরে মারা যায় সে। সেলিমের বাড়ি বগুড়া শহর থেকে আট কিলোমিটার দূরে বানদীঘি গ্রামে। সেখানেই পরিবারের সবার সঙ্গে ছোট একটি মাটির ঘরে থাকত সে।
৯ মার্চ বেলা ১১টার দিকে গিয়ে দেখা গেল, বাড়ির ফটকের সামনেই বসে আছেন বৃদ্ধ বাবা দুদু মিয়া। শোকে স্তব্ধ। প্রতিবেশীরা জানালেন, গত কয়েক দিন ধরে এভাবে বাড়ির সামনে ছেলের অপেক্ষায় বসে থাকেন তিনি। কারও সঙ্গে কোনো কথা বলেন না।
সেলিমের মা রেহানা বেগম বলেন, ‘ছলডার টেকাত হামাগেরে সগলিরই মুখোত ভাত জুটিচ্চিল। বাড়িত আসপার ধরে এক গুলিত হামাগেরে সব শেষ হয়্যা গেলো। এখন হামাকেরে কী হবি?’
সেলিম কোনো রাজনীতি করত কি না, জানতে চাইলে রেহানা বেগম বলেন, ‘বাবা, সক্কলিক জিজ্ঞেস করেন। হামার ছলডা খালি কাজ করিচ্চিল। সপ্তায় আড়াই হাজার টেকা হামাক আন্যে দিত। কাজ ছাড়া কিচুই বুজিচ্চিল না।’
সেলিমের চাচা রিকশাচালক টুকু প্রামাণিক জানান, অসুস্থ বোনটার একটা ব্যবস্থা করার কথা সব সময় বলত সেলিম। বাড়ির ঘর ঠিকঠাক করারও ইচ্ছা ছিল। কিন্তু কিছুই করতে পারল না।
প্রতিবেশী সিদ্দিকুর রহমান জানান, সেলিম কোনো রাজনীতি করত না। ও সারাক্ষণ কাজ নিয়েই পড়ে থাকত। খুব ভালো টেইলার ছিল সে।
জামায়াত-শিবির দাবি করেছে, পুলিশের গুলিতেই সেলিম মারা গেছে। তবে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ শহিদুল আলম জানান, শিবিরের সন্ত্রাসীদের গুলিতেই সেলিম মারা গেছে বলে ধারণা করছেন তাঁরা।

বখাটের অত্যাচারে অতিষ্ঠ ছাত্রীর আত্মহত্যা

বরগুনার আমতলী উপজেলায় বখাটের অত্যাচারে অতিষ্ঠ এক কলেজছাত্রী আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
উপজেলার চাওড়া কৃষি ও কারিগরি কলেজের একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী শারমিন আক্তার (১৮) রোববার সন্ধ্যায় বিষপান করলে তাঁকে আমতলী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই রাতে তিনি মারা যান।
শারমিনের বাবা জমির মাতুব্বর অভিযোগ করেন, বেশ কিছুদিন ধরে তাঁর মেয়েকে কলেজে যাওয়া-আসার পথে চন্দ্রা গ্রামের হাবিব (২০) উত্ত্যক্ত করতেন। রোববার কলেজ থেকে বাড়ি ফেরার পথে কালভার্ট এলাকায় শারমিনকে একা পেয়ে হাবিব তাঁর শ্লীলতাহানি করে এবং মুঠোফোনে সে ছবি ধারণ করে ও এসব ছবি ইন্টারনেটে ছাড়বে বলে তাঁকে জানান। এ ঘটনায় মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে তিনি রাতে বিষপান করে। অভিযুক্ত হাবিব পলাতক। এ ব্যাপারে তাঁর পরিবারের কোনো সদস্যও মন্তব্য করতে রাজি হননি।