Sunday, April 17, 2011

সুন্দরীতমা

পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দরী নারী কে? একটু ভাবুন। উত্তর পেয়েছেন! যারা পাননি তাদের জন্য উত্তর_ জেনিফার লোপেজ। মার্কিন মুল্লুকের একটি জনপ্রিয় ম্যাগাজিনের জরিপে তিনি সেরা সুন্দরী নির্বাচিত হয়েছেন। তার বয়স ৪১। কিন্তু এই বয়সে লোপেজ সৌন্দর্য দিয়ে অনেক তরুণীকে পেছনে ফেললেন। ম্যাগাজিনটি পৃথিবীর সুন্দরীদের নিয়ে একটি তালিকা প্রকাশ করে। সেই তালিকায় শীর্ষ নামটি লোপেজের। আর তাই ওই ম্যাগাজিনে এবারের প্রচ্ছদ কন্যাও হলেন এই গায়িকা-অভিনেত্রী।

বলিউডে মিস বলিউড

এবারের মিস ইন্ডিয়া প্রতিযোগিতার মিস বলিউড মুকুটটি জয় করেন অঙ্কিতা মহাপাত্র। মুকুট পরার কিছুক্ষণের মধ্যেই বলিউড জগতে নাম লিখিয়েছেন তিনি। সুযোগটি করে দিয়েছেন প্রতিযোগিতায় উপস্থিত প্রখ্যাত প্রযোজক সাজিদ নাদিওয়ালা। আগামী মাসে অঙ্কিতাকে নিয়ে ছবির কাজ শুরু করবেন বলে তিনি জানিয়েছেন। নাদিওয়ালার মতে, এ সুন্দরীর মধ্যে অভিনয়শৈলীর সব বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান যা তাকে দ্রুত খ্যাতির শীর্ষে নিয়ে যাবে।

কারিনার নতুন খান

সম্প্রতি একটি ছবিতে আমির খানের বিপরীতে অভিনয় করতে গিয়ে প্রেমিক সাইফ আলী খানকে যথেষ্ট সময় দিতে পারছেন না কারিনা কাপুর। কাজের ফাঁকেও দেখা করার সুযোগ হচ্ছে না বলিউডের এই আলোচিত প্রেমিকযুগলের। এমনকি শুটিং স্পটেও সাইফকে এড়িয়ে চলছেন কারিনা। সাইফ নয় বর্তমানে আমিরের প্রতি অতিরিক্ত আগ্রহ দেখাচ্ছেন তিনি। অনেকের মতে, কারিনার প্রেমের দ্বিতীয় ইনিংসে এই নতুন খানকে দেখা যেতে পারে।

সেঞ্চুরিয়ান শচীনের জরিমানা

৬৬ বলে ঠিক ১০০ রানই করলেন শচীন টেন্ডুলকার। ইনিংসের শেষ বলে সেঞ্চুরি করার পরও তার দল পরাজিত হয়েছে। এর চেয়ে দুখের আর কি হতে পারে? তবে শচীনের পিছু ছাড়ছে না দুঃখ। পরাজয়ের দুখের সঙ্গে যোগ হলো এবার জরিমানাও। কোচি তুসকার কেরালার বিপক্ষে স্লো ওভার রেটের কারণে শচীনকে জরিমানা করা হয়েছে। গত পরশু রাতে কোচির বিপক্ষে প্রথমে ব্যাট করে ৬৬ বলে ৩ ছয় এবং ১২টি চারের সাহায্যে এক অসাধারণ সেঞ্চুরি করেন শচীন টেন্ডুলকার। দলকে নিয়ে যান ১৮২ রানের নিরাপদ স্থানে। কিন্তু কোচি আরও একটু বেশিই জ্বলে উঠেছিল। ম্যাককুলাম (৮১) এবং জয়াবর্ধনের (৫৬) রান দিয়ে বিজয় অর্জন করে নেয় কোচি। কোচির বিজয় রথ থামাতে গিয়ে শচীন টেন্ডুলকার বারবার বোলিং পরিবর্তন কিংবা সতীর্থদের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়েছেন। এই করতে গিয়ে স্লো ওভার রেটের কবলে পড়তে হলো তাকে। শচীন টেন্ডুলকারকে ২০ হাজার ইউএস ডলার জরিমানা করা হয়েছে।
একদিকে সেঞ্চুরি করার পরও পরাজয়ের দুঃখ অপরদিকে জরিমানা। তবে শচীন বৃদ্ধ বয়সে এসেও দেখিয়ে যাচ্ছেন তার ব্যাটিং কারিশমা। আইপিএলের গত আসরে শচীন টেন্ডুলকার ছিলেন সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। এবারেও কি ক্রিকেটের মহারাজ হতে যাচ্ছেন সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক? এখনো পর্যন্ত ২০১ রান করে তিনিই তো সবার ওপরে আছেন। দ্বিতীয় স্থানে থাকা জ্যাক ক্যালিসের রান ১৮৭।

বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে ক্রিকেট!

ফুটবলের জন্য খবরটি অবশ্যই দুঃসংবাদই বলা চলে। কেননা সরকারের একটি প্রভাবশালী মহল চিন্তা-ভাবনা করছেন বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে ক্রিকেট ফিরিয়ে আনার। বিশ্বকাপ চলাবস্থায় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বঙ্গবন্ধুতে ক্রিকেট ফিরিয়ে আনার কথা বলেছিলেন। অনেকে তার এ বক্তব্যকে মোটেই গুরুত্ব দেননি। ভেবেছিলেন মন্ত্রী কথায় কথায় এ কথা বলেছেন। তাছাড়া এত টাকা খরচের পর ক্রিকেট বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে ফিরিয়ে আনলে সরকারই বিতর্কের মধ্যে পড়ে যাবে। যতই বিতর্ক হোক না কেন, বাস্তবতা চিন্তা করে সরকারের এক বিশেষ মহল জোরালো তৎপরতা শুরু করে দিয়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের এক কর্মকর্তা এ ব্যাপারে বলেন, ফুটবল উন্নয়নের কথা চিন্তা করে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম থেকে ক্রিকেট সরিয়ে নেওয়া হয়। বাস্তবে দেখা যাচ্ছে ফুটবলে উন্নতির কোনো লক্ষণ নেই। এত বড় স্টেডিয়ামে ফুটবল অনুষ্ঠিত হচ্ছে একেবারে দর্শকশূন্য অবস্থায়। সুতরাং সরকারের বিশেষ এক মহল কোনো অবস্থাতেই এককভাবে এখানে ফুটবল আয়োজনের আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। তারা চাচ্ছেন অতীতের মতো ফুটবলের পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুতে ক্রিকেট অনুষ্ঠিত হোক। ক্রিকেট নামাতে হলে বঙ্গবন্ধুর অ্যাথলেটিক্স-ট্র্যাক সরাতেই হবে। এতে অপচয় হবে কোটি কোটি টাকা। সরকারের নীতি নির্ধারকরা মনে করছেন কোনো ভালো কাজের জন্য অর্থ অপচয় হলে তাতে বিতর্কের কিছু হবে না। মিরপুরে ক্রিকেট থাকাতে সেখানে আবার ট্র্যাক বসানো সম্ভব নয়। এমনও হতে পারে ঢাকার বাইরে কোনো বিভাগীয় স্টেডিয়ামে অ্যাথলেট-ট্র্যাক বসানো হবে। সূত্র জানিয়েছে, এ ধরনের প্রস্তাব আপাতত মৌখিকভাবেই হচ্ছে। আগামী বাজেট অধিবেশনের আগে লিখিত প্রস্তাব আকারে তা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে তুলে দেওয়া হতে পারে।

বোর্ডের সমালোচনা করলেন মুরালি

শ্রীলঙ্কান ক্রিকেট বোর্ডের সমালোচনা করেছেন দলের সাবেক স্পিন জাদুকর মুত্তিয়া মুরালিধরন। আগামী মাসে ইংল্যান্ড সফরে যাবে শ্রীলঙ্কা। যে কারণে আইপিএলে অংশগ্রহণকারী ক্রিকেটারদের দেশে ফেরার জন্য প্রস্তুত হতে বলেছে লঙ্কান ক্রিকেট বোর্ড (এসএলসি)। আর বোর্ডের এ সিদ্ধান্তের জন্যই সমালোচনামুখর হন মুরালি। আইপিএলের খেলা শেষ হবে আগামী ২৮ মে। ভারতের জনপ্রিয় এ আসরে শ্রীলঙ্কার ১১ জন ক্রিকেটার বিভিন্ন দলে খেলছেন। বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ৫ মের মধ্যে লঙ্কান ক্রিকেটারদের দেশে ফিরে আসতে হবে। কারণ পাঁচ টেস্ট, পাঁচ ওয়ানডে ও একটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলতে ১০ মে দেশ ছাড়বেন লঙ্কান ক্রিকেটাররা।
একটি বেসরকারি টেলিভিশনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মুরালি বলেন, আমার মনে হয় আগমী ২০ মে পর্যন্ত খেলোয়াড়দের সময় দেওয়া উচিত বোর্ডের। আমি জানি না, হঠাৎ করে কি এমন ঘটল। আগামী ৫ মের মধ্যে ক্রিকেটারদের দেশে ফেরার কথা বলছে বোর্ড। অথচ তারাই এনওসিতে (নো অবজেকশন সার্টিফিকেট) ২০ মে পর্যন্ত স্বাক্ষর করেছেন। যদি এটার পরিবর্তন করে ৫ মে করা হয় তবে এসএলসির ভুল হবে। আইপিএলে কোচির হয়ে খেলা মুরালি বলেন, ৫ মের মধ্যে ক্রিকেটাররা ফিরে গেলে অর্ধেক খেলেই তাদের আইপিএল শেষ করতে হবে। এতে তারা অনেক কিছু মিস করবে এমনকি হারাবে আত্মবিশ্বাসও।

বাংলাদেশ অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন

ডেভিস কাপ টেনিস
ডেভিস কাপ টেনিসের গ্রুপ-৪ এর খেলায় বাংলাদেশ অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। এর সুবাদে তারা গ্রুপ-৩ এর খেলায় অংশগ্রহণের সুযোগ লাভ করল। গতকাল চূড়ান্ত পর্বের খেলায় বাংলাদেশ ২-১ ম্যাচে জর্ডানকে হারিয়ে এ যোগ্যতা অর্জন করে। অপর খেলায় কিরগিজস্তান ২-১ ম্যাচে ইরাককে হারিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গী হয়েছে। আগামী বছর এ দুটি দল ডেভিস কাপ এশিয়া/ওশানিয়া অঞ্চল গ্রুপ-৩ এর খেলায় অংশগ্রহণ করবে।

আইপিএলে সৌরভ

কোচি তাস্কার্সের তারকা ক্রিকেটার স্টিভ স্মিথ ইনজুরির কারণে আইপিএল থেকে ছিটকে পড়েছেন। আর এ কারণেই কোচির কর্তারা চাইছেন স্মিথের পরিবর্তে সৌরভ গাঙ্গুলিকে দলে নিতে। কিন্তু এবার বাঁধা হয়ে দাঁড়াল সৌরভের বেস প্রাইস। আইপিএলের নিয়মানুযায়ী, যদি কোনো ক্রিকেটারের পরিবর্তে কাউকে নিতে হয়, তাহলে উভয় ক্রিকেটারের বেস প্রাইস সমান হতে হবে। নিলামে দাদার বেস প্রাইস ছিল ১ কোটি ৮১ লাখ টাকা। আর স্মিথের ৯৩ লাখ। তাই বেস প্রাইসের পার্থক্যের কারণেই এ আসরে হয়তো বা আর খেলা হচ্ছে না গাঙ্গুলির। তবে কোচির কর্মকর্তারা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কোচির আবেদন অনুযায়ী সৌরভ খেলতে পারবেন কি না তা নিয়ে বোর্ডেও আলোচনা চলছে।
তাদের বিশ্বাস, শেষ পর্যন্ত হয়তো বা কোনো একটা পথ বেরোবে। চতুর্থ আইপিএলে হয়তো বা দেখাও যেতে পারে দাদাকে।

লঙ্কান ক্রিকেটারদের নিয়ে নানা সন্দেহ

পরপর দুইবার ক্রিকেট বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেও খালি হাতে ফিরতে হলো শ্রীলঙ্কাকে। এবার ভারতের কাছে হেরে শিরোপার দ্বারপ্রান্তে পেঁৗছেও চ্যাম্পিয়ন হতে পারল না তারা। বিশ্বকাপ ফাইনাল পর্যন্ত সব ঠিক ছিল। কিন্তু ফাইনালে হারের পরই হঠাৎ করে সবকিছু কেমন যেন এলোমেলো হয়ে গেল শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটে। বিশ্বকাপের পর থেকে শ্রীলঙ্কান খেলোয়াড়দের সঙ্গে ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দূরত্ব যে ক্রমেই বেড়ে চলেছে।
প্রথমে অধিনায়ক সাঙ্গাকারা দায়িত্ব ছেড়ে দিলেন, কারণ হিসেবে উল্লেখ করলেন দেশের ক্রিকেটের স্বার্থের কথা। তার পথ ধরেই হাঁটলেন সহঅধিনায়ক জয়াবর্ধনে। প্রথমে ভাবা হচ্ছিল দেশকে বিশ্বকাপ এনে দিতে ব্যর্থ হয়ে ভদ্রতার খাতিরেই হয়তো দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছেন তারা। তখন অনেকেই তাদের 'দায়স্বীকার' গুণের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছে। তবে পরে যখন সাবেক ক্রিকেটার অরবিন্দ ডি সিলভার নেতৃত্বাধীন নির্বাচক কমিটিও মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই মন্ত্রীর কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিল তখন অনেকের মনেই সন্দেহ দানা বাঁধতে শুরু করল শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটে এমন ধারাবাহিক পদত্যাগকে ঘিরে। সন্দেহের তীর তাক করা হলো ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দিকে।
সম্প্রতি শ্রীলঙ্কার ক্রীড়া মন্ত্রণালয় থেকে এক বিবৃতিতে যখন জানানো হলো যে, আইপিএলে অংশগ্রহণকারী ক্রিকেটারদের দেশে ফিরে আসতে হবে তখন সবাই মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে গেছে যে শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটে রাজনীতির প্রভাবেই এমন ধারাবাহিক পদত্যাগ। কারণ আইপিএলে অংশ নেওয়ার আগে শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটাররা বোর্ডের সঙ্গে 'নক' (নো অবজেকশন সার্টিফিকেট) স্বাক্ষর করেছে যেখানে স্পষ্ট করে উল্লেখ আছে ক্রিকেটারদের ২০ মে এর আগ পর্যন্ত ডেকে পাঠাবে না বোর্ড। অথচ এখন সবাইকে ৫ মে এর মধ্যেই দেখা করতে বলা হয়েছে। কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছে যে, আগামী ১০ মে ইংল্যান্ডের উদ্দেশে রওনা দেবে শ্রীলঙ্কা দল।
শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটের এমন সব কাণ্ডে অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগতে শুরু করেছে কেন হঠাৎ করেই খেলোয়াড়দের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ল ক্রীড়া মন্ত্রণালয়? স্পষ্ট করে কেউই বলছেন না, তবে ধারণা করা হচ্ছে যে দেশটি মনে করছে ভারতের সঙ্গে বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচটিতে জুয়াড়িদের কাছ থেকে টাকা খেয়ে স্পট ফিক্সিংয়ের আশ্রয় নিয়েছিল শ্রীলঙ্কার কিছু কিছু ক্রিকেটার। এ বিষয়ে নাকি ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বোর্ডের আলোচনাও হয়েছে। তাদের সন্দেহের তীর অধিনায়ক সাঙ্গাকারা, ব্যাটসম্যান থারাঙ্গা, বোলার পেরেইরা, কুলাসেকারাদের দিকে।
বিশ্বকাপের ভারত-শ্রীলঙ্কা ফাইনাল ম্যাচটি ভালোভাবে বিশ্লেষণ করলে শ্রীলঙ্কার সন্দেহবাদীরা অবশ্য তর্কের রশদ পেতেও পারেন। সে ম্যাচে টসে জিতে ব্যাট করতে নামা শ্রীলঙ্কা প্রথম ১০ ওভারে তুলে মাত্র ৩১ রান এক উইকেট হারিয়ে। ওপেনার থারাঙ্গা ২০ বল খেলে করেন মাত্র ২ রান। আক্রমণাত্মক ব্যাটসম্যান দিলশান ৪৯ বলে করেন ৩৩ রান।
অবশেষে জয়াবর্ধনের কল্যাণে ভারতকে ২৭৫ রানের জয়ের লক্ষ্য ছুড়ে দেয় শ্রীলঙ্কা। তবে লাসিথ মালিঙ্গা বাদে অন্যসব বোলার ঝলসে উঠতে ব্যর্থ হলে ৬ উইকেটের পরাজয়বরণ করতে হয় লঙ্কানদের। প্যারেরা ও কুলাসেকারা খুবই বাজে বল করেন। এদিন মাঠে শ্রীলঙ্কার ফিল্ডিং দেখেও যদি দাবি করা হয় লঙ্কান খেলোয়াড়রা স্পট ফিক্সিংয়ের কবলে পড়েছিল, তাহলেও প্রতিবাদ করার মতো খুব বেশি কিছু থাকবে না। শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটাররা সত্যিই জুয়াড়িদের কবলে পড়েছিল কি না তা এখনো নিশ্চিত নয়। তবে আইপিএল থেকে লঙ্কান ক্রিকেটারদের এমন তলবে মনে করা হচ্ছে দেশটির ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সেই রকম কিছুর ইঙ্গিত পেয়েই কঠোরতা দেখাচ্ছেন খেলোয়াড়দের প্রতি।

ক্রিকেটে ব্যর্থতার শেষ কোথায়?

এই তো কিছুদিন আগেও বাংলাদেশের ক্রিকেটে সুবাতাস বইছিল। জয়ের পর জয় পেয়ে উল্লাসে ভাসছিল সারাদেশ। হঠাৎ করে ক্রিকেটে ভয়ঙ্করী কালোমেঘ দেখা দিয়েছে। সাজানো-গুছানো সাকিবদের ঘর লণ্ডভণ্ড না হয়ে যায় এ আতঙ্কে সবাই অস্থির। বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজে কাছে ৫৮ ও দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ৭৮ রানে অলআউট হয়ে বড় ধাক্কা খেয়েছে টাইগাররা। ধাক্কা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে না দাঁড়াতে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হোয়াইটওয়াশ। আসলে বিশ্বকাপে শিরোপা ধরে রাখতে না পারলেও অসিদের শক্তির সঙ্গে টাইগারদের তুলনা চলে না। সে কারণে তাদের কাছে টানা তিন ম্যাচ হারাটা বাংলাদেশের মতো দলের বড় বিপর্যয় হতে পারে না। কিন্তু সিরিজের তিন ম্যাচে সাকিব-তামিমদের পারফরম্যান্স ছিল বড্ড হতাশাজনক। শেষ ম্যাচে ব্যাটিং ঝলক বাদ দিলে অস্ট্রেলিয়া এবার বাংলাদেশকে নিয়ে ছেলেখেলা করছে বললেও ভুল হবে না। তুলনামূলক শক্তিশালী মানে এই নয় যে, ক্লার্কদের সামনে সাকিবরা দাঁড়াতেই পারবে না। ২০০৫ সালে যে সময় অস্ট্রেলিয়ার দুর্দান্ত ফর্ম, তখন আশরাফুলের সেঞ্চুরিসহ অস্ট্রেলিয়াকে ঠিকই বাংলাদেশ পরাজিত করেছিল। এটা ঠিক, সিরিজে এবার বাংলাদেশ কোনো ম্যাচ জিতবে তা কেউ আশা করেনি। কিন্তু লড়াই করে ক্লার্ক-পন্টিংদের ঘাম ঝরাবে এ প্রত্যাশাটুকু ঠিকই করা হয়েছিল। শেষ ম্যাচে ওয়াটসনদের ৩৬১ রানের জবাবে ইমরুলরা ২৯৫ করে ব্যাটিংয়ে ঝলক দেখান। তারপরও এ নিয়ে নানা গুঞ্জন রয়েছে। কেননা কেউ কেউ বলেন, আকাশ ছোঁয়ার মতো স্কোর গড়ার পর অসিরা রিলাক্স মুডে ফিল্ডিং করেছিল বলেই বাংলাদেশ হাত খুলে খেলার সুযোগ পেয়েছে।
বাংলাদেশ যে ভালো খেলতে পারে এটা কেন জানি কেউ এখন বিশ্বাস করতে পারছে না। অথচ ক্রিকেটে সাকিবদের কৃতিত্ব তো একেবারে কম নয়। টেস্ট খেলুড়ে প্রতিটি দলকেই তারা হারিয়েছে। স্ট্যাটাস পাওয়ার পর চার বছরের মাথায় টেস্টে সিরিজ জেতার রেকর্ডও রয়েছে, যা পৃথিবীর অনেক শক্তিশালী দেশের নেই। এই তো সেদিন নিউজিল্যান্ডের মতো শক্তিশালী দলকে হোয়াইটওয়াশ করে বিশ্বকে চমকে দিয়েছিল সাকিবরা। প্রত্যাশা ছিল বিশ্বকাপে কম করে হলেও কোয়ার্টার ফাইনালে খেলবে সাকিবরা। তা আর হয়নি, গ্রুপ ম্যাচ খেলেই আসরকে গুডবাই জানিয়েছে তারা। এ নিয়ে আফসোস থাকলেও তেমনভাবে ক্ষোভ নেই কারও মাঝে। কেননা এমন ফল হতেই পারে। ২০০৭ বিশ্বকাপে ভারতের মতো বিখ্যাত দল তো গ্রুপ ম্যাচ খেলেই বিদায় নিয়েছিল। আসলে ব্যর্থতা থাকবেই কিন্তু তার কারণ তো খতিয়ে দেখতে হবে। ভারত ব্যর্থতার পোস্টমর্টেম করেছিল বলেই তো আটাশ বছর পর তারা বিশ্বকাপে শিরোপা ফিরে পেয়েছে। প্রতিটি দেশে ব্যর্থতার পর ঢালাওভাবে আলোচনা হয়। কোথায় কোনো শূন্যতা বা রহস্য খুঁজে পেলে কর্মকর্তারা তদন্ত করে তা উদ্ধার করেন। বাংলাদেশে আজ পর্যন্ত ক্রিকেটে কোনো তদন্তই হয়নি। সাফল্য পেলে মিষ্টি বিতরণের ধুম পড়ে যায়। ব্যর্থতা হলে সবাই বোবা হয়ে যায়। এবার অবশ্য যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী আহাদ আলী সরকার আশার আলো জ্বালিয়েছিলেন। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের মিশন শেষ হওয়ার পর সংবাদ সম্মেলনে তিনি দৃঢ়ভাবে বলেছিলেন, মাঠের ব্যর্থতা ও আয়োজনের ত্রুটি সবকিছুরই তদন্ত হবে। যদি কেউ দোষী হন কাউকে ছাড় দেওয়া যাবে না। কই ক্রীড়া অভিভাবক তো মুখে বলেই খালাস, বাস্তবে তিনি যে কিছু করবেন তার লক্ষণ কিন্তু দেখা যাচ্ছে না। সবচেয়ে অবাক করেছেন বিসিবির কর্মকর্তারা। বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে এত বড় লজ্জা পেল, এ নিয়ে এখন পর্যন্ত তারা কোনো আলোচনা করল না। এর মধ্যে বোর্ডের নির্বাহী কমিটির এক সভা হয়ে গেছে। সেখানে বিশ্বকাপ বা অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম দুই ম্যাচে ভরাডুবি নিয়ে কোনো আলোচনাই হয়নি। আলোচনা হয়েছে কোচ ও সিলেকটর বদল নিয়ে। দুটো বিষয়ই খুব গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু ক্রিকেটাররা কেন লাগাতার খারাপ খেলেই যাচ্ছে, এ নিয়ে আলোচনা করাটা কি জরুরি ছিল না। শ্রীলঙ্কার দিকে বোর্ড কর্মকর্তারা কি নজর দেন না। বিশ্বকাপে রানার্স আপ হয়েছে তারা, অথচ এ নিয়ে সেখানে তোলপাড় শুরু হয়ে গেছে। এতটা কঠিন অবস্থা যে আইপিএল খেলতে থাকা ক্রিকেটারদেরও দেশে ফেরত আনা হয়েছে।

এক সময় না হয় বাংলাদেশের ক্রিকেটে কোনো অবস্থান ছিল না। এখন তো ক্রিকেট মানচিত্রে সাকিবরা একটা জায়গা করতে পেরেছে। ক্রিকেটে সাফল্য ও ব্যর্থতার সঙ্গে যেখানে দেশের মান-ইজ্জত জড়িয়ে গেছে সেখানে সব কিছুতেই জবাবদিহিতা বাধ্যতামূলক। আ হ ম মুস্তফা কামাল সভাপতি হওয়ার পর দৃঢ়ভাবে বলেছিলেন, যে কোনো কাজে ক্রিকেটার এবং কর্মকর্তাদের জবাবদিহিতা থাকতে হবে। কই তার নেতৃত্বে তো বোর্ডে আরও বেশি বিশৃক্সখলা চলছে। তিনি অবশ্য অস্বীকার করেন, কিন্তু স্বচ্ছতা দেখাতে ক্রিকেটে ব্যর্থতা নিয়ে বোর্ড মিটিংয়ে আলোচনা হয় না কেন। গুঞ্জন রয়েছে, এর পেছনে কর্মকর্তাদের বড় ধরনের ভূমিকা রয়েছে। তাদের ইন্ধনে দলের ভেতরে এমনি গ্রুপিং তৈরি হয়েছে যে ক্রিকেটাররা মাঠে তাদের স্বাভাবিক নৈপুণ্য প্রদর্শন করতে ভুলেই গেছেন। বোর্ড মিটিংয়ে আলোচনা হলে তাদের ফেঁসে যাওয়ার আশঙ্কা আছে বলেই কি আলোচনা করতে ভয় হয়। তাহলে আর ক্রিকেট স্বচ্ছ পথে চলবে কিভাবে? জেমি সিডন্সের বদলে নতুন কোচ নিয়োগ ও সিলেকটর রদবদলের চিন্তা করা হচ্ছে। যতই পরিবর্তন আসুক না কেন আসল জায়গায় যদি ঘষামাজা না করা হয় ক্রিকেটের গতি এক জায়গাতেই থেমে থাকবে। আইসিসি কিন্তু সব দলেরই পারফরম্যান্স গভীরভাবে পর্যালোচনা করে। খারাপ খেলার বদৌলতে জিম্বাবুয়ের কপালে যে কি জুটেছে বাংলাদেশের কর্মকর্তারা কি ভুলে গেছেন। ক্রিকেটকে আসলে এভাবে হাঁটতে দেওয়া যায় না। কর্মকর্তারা যদি নীরব থাকেন, এ ব্যাপারে সরকারের এগিয়ে আসাটা জরুরি হয়ে পড়েছে। তা না হলে এমনও সময় আসতে পারে যেদিন আইসিসি বাংলাদেশের টেস্ট স্ট্যাটাসও বাতিলের চিন্তা-ভাবনা করতে পারে।