এই তো কিছুদিন আগেও বাংলাদেশের ক্রিকেটে সুবাতাস বইছিল। জয়ের পর জয় পেয়ে উল্লাসে ভাসছিল সারাদেশ। হঠাৎ করে ক্রিকেটে ভয়ঙ্করী কালোমেঘ দেখা দিয়েছে। সাজানো-গুছানো সাকিবদের ঘর লণ্ডভণ্ড না হয়ে যায় এ আতঙ্কে সবাই অস্থির। বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজে কাছে ৫৮ ও দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ৭৮ রানে অলআউট হয়ে বড় ধাক্কা খেয়েছে টাইগাররা। ধাক্কা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে না দাঁড়াতে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হোয়াইটওয়াশ। আসলে বিশ্বকাপে শিরোপা ধরে রাখতে না পারলেও অসিদের শক্তির সঙ্গে টাইগারদের তুলনা চলে না। সে কারণে তাদের কাছে টানা তিন ম্যাচ হারাটা বাংলাদেশের মতো দলের বড় বিপর্যয় হতে পারে না। কিন্তু সিরিজের তিন ম্যাচে সাকিব-তামিমদের পারফরম্যান্স ছিল বড্ড হতাশাজনক। শেষ ম্যাচে ব্যাটিং ঝলক বাদ দিলে অস্ট্রেলিয়া এবার বাংলাদেশকে নিয়ে ছেলেখেলা করছে বললেও ভুল হবে না। তুলনামূলক শক্তিশালী মানে এই নয় যে, ক্লার্কদের সামনে সাকিবরা দাঁড়াতেই পারবে না। ২০০৫ সালে যে সময় অস্ট্রেলিয়ার দুর্দান্ত ফর্ম, তখন আশরাফুলের সেঞ্চুরিসহ অস্ট্রেলিয়াকে ঠিকই বাংলাদেশ পরাজিত করেছিল। এটা ঠিক, সিরিজে এবার বাংলাদেশ কোনো ম্যাচ জিতবে তা কেউ আশা করেনি। কিন্তু লড়াই করে ক্লার্ক-পন্টিংদের ঘাম ঝরাবে এ প্রত্যাশাটুকু ঠিকই করা হয়েছিল। শেষ ম্যাচে ওয়াটসনদের ৩৬১ রানের জবাবে ইমরুলরা ২৯৫ করে ব্যাটিংয়ে ঝলক দেখান। তারপরও এ নিয়ে নানা গুঞ্জন রয়েছে। কেননা কেউ কেউ বলেন, আকাশ ছোঁয়ার মতো স্কোর গড়ার পর অসিরা রিলাক্স মুডে ফিল্ডিং করেছিল বলেই বাংলাদেশ হাত খুলে খেলার সুযোগ পেয়েছে।
বাংলাদেশ যে ভালো খেলতে পারে এটা কেন জানি কেউ এখন বিশ্বাস করতে পারছে না। অথচ ক্রিকেটে সাকিবদের কৃতিত্ব তো একেবারে কম নয়। টেস্ট খেলুড়ে প্রতিটি দলকেই তারা হারিয়েছে। স্ট্যাটাস পাওয়ার পর চার বছরের মাথায় টেস্টে সিরিজ জেতার রেকর্ডও রয়েছে, যা পৃথিবীর অনেক শক্তিশালী দেশের নেই। এই তো সেদিন নিউজিল্যান্ডের মতো শক্তিশালী দলকে হোয়াইটওয়াশ করে বিশ্বকে চমকে দিয়েছিল সাকিবরা। প্রত্যাশা ছিল বিশ্বকাপে কম করে হলেও কোয়ার্টার ফাইনালে খেলবে সাকিবরা। তা আর হয়নি, গ্রুপ ম্যাচ খেলেই আসরকে গুডবাই জানিয়েছে তারা। এ নিয়ে আফসোস থাকলেও তেমনভাবে ক্ষোভ নেই কারও মাঝে। কেননা এমন ফল হতেই পারে। ২০০৭ বিশ্বকাপে ভারতের মতো বিখ্যাত দল তো গ্রুপ ম্যাচ খেলেই বিদায় নিয়েছিল। আসলে ব্যর্থতা থাকবেই কিন্তু তার কারণ তো খতিয়ে দেখতে হবে। ভারত ব্যর্থতার পোস্টমর্টেম করেছিল বলেই তো আটাশ বছর পর তারা বিশ্বকাপে শিরোপা ফিরে পেয়েছে। প্রতিটি দেশে ব্যর্থতার পর ঢালাওভাবে আলোচনা হয়। কোথায় কোনো শূন্যতা বা রহস্য খুঁজে পেলে কর্মকর্তারা তদন্ত করে তা উদ্ধার করেন। বাংলাদেশে আজ পর্যন্ত ক্রিকেটে কোনো তদন্তই হয়নি। সাফল্য পেলে মিষ্টি বিতরণের ধুম পড়ে যায়। ব্যর্থতা হলে সবাই বোবা হয়ে যায়। এবার অবশ্য যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী আহাদ আলী সরকার আশার আলো জ্বালিয়েছিলেন। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের মিশন শেষ হওয়ার পর সংবাদ সম্মেলনে তিনি দৃঢ়ভাবে বলেছিলেন, মাঠের ব্যর্থতা ও আয়োজনের ত্রুটি সবকিছুরই তদন্ত হবে। যদি কেউ দোষী হন কাউকে ছাড় দেওয়া যাবে না। কই ক্রীড়া অভিভাবক তো মুখে বলেই খালাস, বাস্তবে তিনি যে কিছু করবেন তার লক্ষণ কিন্তু দেখা যাচ্ছে না। সবচেয়ে অবাক করেছেন বিসিবির কর্মকর্তারা। বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে এত বড় লজ্জা পেল, এ নিয়ে এখন পর্যন্ত তারা কোনো আলোচনা করল না। এর মধ্যে বোর্ডের নির্বাহী কমিটির এক সভা হয়ে গেছে। সেখানে বিশ্বকাপ বা অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম দুই ম্যাচে ভরাডুবি নিয়ে কোনো আলোচনাই হয়নি। আলোচনা হয়েছে কোচ ও সিলেকটর বদল নিয়ে। দুটো বিষয়ই খুব গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু ক্রিকেটাররা কেন লাগাতার খারাপ খেলেই যাচ্ছে, এ নিয়ে আলোচনা করাটা কি জরুরি ছিল না। শ্রীলঙ্কার দিকে বোর্ড কর্মকর্তারা কি নজর দেন না। বিশ্বকাপে রানার্স আপ হয়েছে তারা, অথচ এ নিয়ে সেখানে তোলপাড় শুরু হয়ে গেছে। এতটা কঠিন অবস্থা যে আইপিএল খেলতে থাকা ক্রিকেটারদেরও দেশে ফেরত আনা হয়েছে।
এক সময় না হয় বাংলাদেশের ক্রিকেটে কোনো অবস্থান ছিল না। এখন তো ক্রিকেট মানচিত্রে সাকিবরা একটা জায়গা করতে পেরেছে। ক্রিকেটে সাফল্য ও ব্যর্থতার সঙ্গে যেখানে দেশের মান-ইজ্জত জড়িয়ে গেছে সেখানে সব কিছুতেই জবাবদিহিতা বাধ্যতামূলক। আ হ ম মুস্তফা কামাল সভাপতি হওয়ার পর দৃঢ়ভাবে বলেছিলেন, যে কোনো কাজে ক্রিকেটার এবং কর্মকর্তাদের জবাবদিহিতা থাকতে হবে। কই তার নেতৃত্বে তো বোর্ডে আরও বেশি বিশৃক্সখলা চলছে। তিনি অবশ্য অস্বীকার করেন, কিন্তু স্বচ্ছতা দেখাতে ক্রিকেটে ব্যর্থতা নিয়ে বোর্ড মিটিংয়ে আলোচনা হয় না কেন। গুঞ্জন রয়েছে, এর পেছনে কর্মকর্তাদের বড় ধরনের ভূমিকা রয়েছে। তাদের ইন্ধনে দলের ভেতরে এমনি গ্রুপিং তৈরি হয়েছে যে ক্রিকেটাররা মাঠে তাদের স্বাভাবিক নৈপুণ্য প্রদর্শন করতে ভুলেই গেছেন। বোর্ড মিটিংয়ে আলোচনা হলে তাদের ফেঁসে যাওয়ার আশঙ্কা আছে বলেই কি আলোচনা করতে ভয় হয়। তাহলে আর ক্রিকেট স্বচ্ছ পথে চলবে কিভাবে? জেমি সিডন্সের বদলে নতুন কোচ নিয়োগ ও সিলেকটর রদবদলের চিন্তা করা হচ্ছে। যতই পরিবর্তন আসুক না কেন আসল জায়গায় যদি ঘষামাজা না করা হয় ক্রিকেটের গতি এক জায়গাতেই থেমে থাকবে। আইসিসি কিন্তু সব দলেরই পারফরম্যান্স গভীরভাবে পর্যালোচনা করে। খারাপ খেলার বদৌলতে জিম্বাবুয়ের কপালে যে কি জুটেছে বাংলাদেশের কর্মকর্তারা কি ভুলে গেছেন। ক্রিকেটকে আসলে এভাবে হাঁটতে দেওয়া যায় না। কর্মকর্তারা যদি নীরব থাকেন, এ ব্যাপারে সরকারের এগিয়ে আসাটা জরুরি হয়ে পড়েছে। তা না হলে এমনও সময় আসতে পারে যেদিন আইসিসি বাংলাদেশের টেস্ট স্ট্যাটাসও বাতিলের চিন্তা-ভাবনা করতে পারে।
বাংলাদেশ যে ভালো খেলতে পারে এটা কেন জানি কেউ এখন বিশ্বাস করতে পারছে না। অথচ ক্রিকেটে সাকিবদের কৃতিত্ব তো একেবারে কম নয়। টেস্ট খেলুড়ে প্রতিটি দলকেই তারা হারিয়েছে। স্ট্যাটাস পাওয়ার পর চার বছরের মাথায় টেস্টে সিরিজ জেতার রেকর্ডও রয়েছে, যা পৃথিবীর অনেক শক্তিশালী দেশের নেই। এই তো সেদিন নিউজিল্যান্ডের মতো শক্তিশালী দলকে হোয়াইটওয়াশ করে বিশ্বকে চমকে দিয়েছিল সাকিবরা। প্রত্যাশা ছিল বিশ্বকাপে কম করে হলেও কোয়ার্টার ফাইনালে খেলবে সাকিবরা। তা আর হয়নি, গ্রুপ ম্যাচ খেলেই আসরকে গুডবাই জানিয়েছে তারা। এ নিয়ে আফসোস থাকলেও তেমনভাবে ক্ষোভ নেই কারও মাঝে। কেননা এমন ফল হতেই পারে। ২০০৭ বিশ্বকাপে ভারতের মতো বিখ্যাত দল তো গ্রুপ ম্যাচ খেলেই বিদায় নিয়েছিল। আসলে ব্যর্থতা থাকবেই কিন্তু তার কারণ তো খতিয়ে দেখতে হবে। ভারত ব্যর্থতার পোস্টমর্টেম করেছিল বলেই তো আটাশ বছর পর তারা বিশ্বকাপে শিরোপা ফিরে পেয়েছে। প্রতিটি দেশে ব্যর্থতার পর ঢালাওভাবে আলোচনা হয়। কোথায় কোনো শূন্যতা বা রহস্য খুঁজে পেলে কর্মকর্তারা তদন্ত করে তা উদ্ধার করেন। বাংলাদেশে আজ পর্যন্ত ক্রিকেটে কোনো তদন্তই হয়নি। সাফল্য পেলে মিষ্টি বিতরণের ধুম পড়ে যায়। ব্যর্থতা হলে সবাই বোবা হয়ে যায়। এবার অবশ্য যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী আহাদ আলী সরকার আশার আলো জ্বালিয়েছিলেন। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের মিশন শেষ হওয়ার পর সংবাদ সম্মেলনে তিনি দৃঢ়ভাবে বলেছিলেন, মাঠের ব্যর্থতা ও আয়োজনের ত্রুটি সবকিছুরই তদন্ত হবে। যদি কেউ দোষী হন কাউকে ছাড় দেওয়া যাবে না। কই ক্রীড়া অভিভাবক তো মুখে বলেই খালাস, বাস্তবে তিনি যে কিছু করবেন তার লক্ষণ কিন্তু দেখা যাচ্ছে না। সবচেয়ে অবাক করেছেন বিসিবির কর্মকর্তারা। বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে এত বড় লজ্জা পেল, এ নিয়ে এখন পর্যন্ত তারা কোনো আলোচনা করল না। এর মধ্যে বোর্ডের নির্বাহী কমিটির এক সভা হয়ে গেছে। সেখানে বিশ্বকাপ বা অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম দুই ম্যাচে ভরাডুবি নিয়ে কোনো আলোচনাই হয়নি। আলোচনা হয়েছে কোচ ও সিলেকটর বদল নিয়ে। দুটো বিষয়ই খুব গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু ক্রিকেটাররা কেন লাগাতার খারাপ খেলেই যাচ্ছে, এ নিয়ে আলোচনা করাটা কি জরুরি ছিল না। শ্রীলঙ্কার দিকে বোর্ড কর্মকর্তারা কি নজর দেন না। বিশ্বকাপে রানার্স আপ হয়েছে তারা, অথচ এ নিয়ে সেখানে তোলপাড় শুরু হয়ে গেছে। এতটা কঠিন অবস্থা যে আইপিএল খেলতে থাকা ক্রিকেটারদেরও দেশে ফেরত আনা হয়েছে।
এক সময় না হয় বাংলাদেশের ক্রিকেটে কোনো অবস্থান ছিল না। এখন তো ক্রিকেট মানচিত্রে সাকিবরা একটা জায়গা করতে পেরেছে। ক্রিকেটে সাফল্য ও ব্যর্থতার সঙ্গে যেখানে দেশের মান-ইজ্জত জড়িয়ে গেছে সেখানে সব কিছুতেই জবাবদিহিতা বাধ্যতামূলক। আ হ ম মুস্তফা কামাল সভাপতি হওয়ার পর দৃঢ়ভাবে বলেছিলেন, যে কোনো কাজে ক্রিকেটার এবং কর্মকর্তাদের জবাবদিহিতা থাকতে হবে। কই তার নেতৃত্বে তো বোর্ডে আরও বেশি বিশৃক্সখলা চলছে। তিনি অবশ্য অস্বীকার করেন, কিন্তু স্বচ্ছতা দেখাতে ক্রিকেটে ব্যর্থতা নিয়ে বোর্ড মিটিংয়ে আলোচনা হয় না কেন। গুঞ্জন রয়েছে, এর পেছনে কর্মকর্তাদের বড় ধরনের ভূমিকা রয়েছে। তাদের ইন্ধনে দলের ভেতরে এমনি গ্রুপিং তৈরি হয়েছে যে ক্রিকেটাররা মাঠে তাদের স্বাভাবিক নৈপুণ্য প্রদর্শন করতে ভুলেই গেছেন। বোর্ড মিটিংয়ে আলোচনা হলে তাদের ফেঁসে যাওয়ার আশঙ্কা আছে বলেই কি আলোচনা করতে ভয় হয়। তাহলে আর ক্রিকেট স্বচ্ছ পথে চলবে কিভাবে? জেমি সিডন্সের বদলে নতুন কোচ নিয়োগ ও সিলেকটর রদবদলের চিন্তা করা হচ্ছে। যতই পরিবর্তন আসুক না কেন আসল জায়গায় যদি ঘষামাজা না করা হয় ক্রিকেটের গতি এক জায়গাতেই থেমে থাকবে। আইসিসি কিন্তু সব দলেরই পারফরম্যান্স গভীরভাবে পর্যালোচনা করে। খারাপ খেলার বদৌলতে জিম্বাবুয়ের কপালে যে কি জুটেছে বাংলাদেশের কর্মকর্তারা কি ভুলে গেছেন। ক্রিকেটকে আসলে এভাবে হাঁটতে দেওয়া যায় না। কর্মকর্তারা যদি নীরব থাকেন, এ ব্যাপারে সরকারের এগিয়ে আসাটা জরুরি হয়ে পড়েছে। তা না হলে এমনও সময় আসতে পারে যেদিন আইসিসি বাংলাদেশের টেস্ট স্ট্যাটাসও বাতিলের চিন্তা-ভাবনা করতে পারে।
No comments:
Post a Comment