মাত্র ৬০ ডলারের লটারি কিনে জিতেছিলেন ৪ লাখ ২৫ হাজার ডলার (প্রায় তিন
কোটি ৩৮ লাখ ৭৬ হাজার টাকা)। কিন্তু টাকার চেকটি ইস্যু হওয়ার পরদিনই জগত্
ছেড়ে চলে যান তিনি। প্রথমদিকে সবার কাছে মৃত্যুটি একটি স্বাভাবিক ঘটনা
বলেই মনে হয়েছিল।
কিন্তু লটারি জেতা, মৃত্যু এবং একটি ফোন পুরো ঘটনাটিকে নাটকীয় রূপ
দিয়েছে। পুলিশ বলছে, মৃত্যু স্বাভাবিক নয়। তবে উরুজ খান নামের ভারতীয়
বংশোদ্ভূত এ আমেরিকান ব্যবসায়ী ঠিক কীভাবে মারা যান সে বিষয়ে এখনও
নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে, বিষপ্রয়োগে হত্যা করা হয় তাঁকে।
এনডিটিভি জানায়, ৪৬ বছরের ওই ব্যবসায়ী শিকাগোর বাসায় মাঝরাতে হঠাত্
চিত্কার করে ওঠেন। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। কর্তব্যরত
চিকিত্সকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। উরুজের স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে বলে
জানান চিকিত্সকরা।
এর কয়েকদিন পর পুলিশের কাছে একটি ফোন আসে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক
ব্যক্তি পুলিশকে জানান, উরুজের ওপর প্রাণঘাতী সায়ানাইড ব্যবহার করা
হয়েছিল। এ সূত্র ধরে তদন্তে নামে পুলিশের একটি দল।
উরুজের স্ত্রী শাবানা আনসারি বলেন, ‘আমি মনে করি না, তাঁর প্রতি কারো
আক্রোশ ছিল বা তাঁর সাথে কারো শত্রুতা ছিল।’ উরুজ লটারিতে জেতা টাকা ঋণ
পরিশোধে, ব্যবসা বাড়াতে ও সেন্ট জুড চিলড্রেন’স রিসার্চ হাসপাতালের জন্য
অনুদানে খরচ করতে চেয়েছিলেন।
উরুজ ১৯৮৯ সালে ভারতের হায়দরাবাদ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে যান। শিকাগো শহরে
লন্ড্রির দোকান ছিল তাঁর। গত বছরের জুনে ওই দোকানের আসা-যাওয়ার পথের সেভেন
ইলেভেন নামের দোকান থেকে দুটি লটারি কেনেন তিনি। এর মধ্যে একটি টিকেটেই
ভাগ্য পরিবর্তন হয়ে যায় তাঁর। ট্যাক্স বাদ দিয়ে ওই লটারিতে জেতেন সোয়া
চার লাখ ডলার। গত বছরের ১৯ জুলাই তাঁর নামে চেকটি ইস্যু করা হয়। এর পরদিন
মারা যান তিনি।
কর্তৃপক্ষ এখন তদন্ত করে দেখছে, উরুজকে হত্যা করা হয়েছে কিনা। তবে পুলিশ
এখনও সন্দেহজনক কোনো উপাদান কিংবা জড়িত কোন ব্যক্তিকে শনাক্ত করতে পারেনি।
এ কারণে নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না, উরুজকে সত্যি হত্যা করা হয়েছে কিনা।
কর্তৃপক্ষ আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে উরুজের মরদেহ কবর থেকে তুলে অতিরিক্ত
কয়েকটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরিকল্পনা করছে। কুক এলাকার গবেষণাগার পরীক্ষক
স্টিফেন চিনা জানান, ‘মামলা শুরুর আগে এ সম্পর্কে যত বেশি তথ্য পাওয়া যাবে
ততই ভালো।’ তবে, উরুজকে যে হত্যা করা হয়েছে এমন ধারণার ব্যতিক্রম কোন ফল
পরীক্ষা থেকে পাওয়া যাবে না।
কিছুদিন আগে উরুজ মক্কা থেকে হজ পালন করে দেশে ফিরেছিলেন। তাঁর পরিবার
জানিয়েছে, হজ থেকে ফিরে তিনি প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, তিনি কখনো কোন অবস্থায়
বাজি ধরবেন না।
No comments:
Post a Comment