Monday, January 14, 2013
১৫ মিনিট সুনিধি
সুনিধি চৌহান ঢাকায় এসেছিলেন একটি কনসার্টে গান গাইতে। সেদিনই দুপুরে সময় দিলেন। শর্ত ছিল, ১৫ মিনিট কথা বলা যাবে। মেকআপ নেননি বলে ছবিও তোলা যাবে না। ১৫ মিনিট শেষে অবশ্য ওঠার তাড়া দেননি, ছবি তুলতেও আপত্তি করেননি। এই সময়ে তাঁর নানা কাজ নিয়ে বললেন অনেক কিছুই
‘আমিই এ সময়ের সবচেয়ে বৈচিত্র্যময় সংগীতশিল্পী’—ছয় বছর আগে হিন্দুস্তান টাইমস-এ ছাপা হয়েছিল সুনিধির এই বক্তব্য। এখনো কি তা-ই মনে করেন তিনি?
‘এমন কথা তো আমি বলিনি।’
কিন্তু ওটা তো তাঁর উদ্ধৃতি হিসেবেই ছাপা হয়েছিল!
‘ওটা তাদেরই বক্তব্য। আমার মুখে বসিয়ে দিয়েছে তারা। আমি নিজে এমন কিছু বলিনি।’
সুনিধি বলুন বা না-ই বলুন, এই সময়ে জনপ্রিয় গানের হিসাবে তিনিই সবার চেয়ে এগিয়ে তা তো অনেকেই মানবেন।
সুনিধির আইটেম গানের সংখ্যাই বেশি। এই সময়ের ‘শিলা কি জওয়ানি’. ‘হালকাট জওয়ানি’ ‘আ জারা’ সবই তো তাঁর গাওয়া। তবে এই গানগুলোকে ‘আইটেম সং’ বলতে কিছুটা আপত্তি তাঁর। ‘আইটেম সং নয়, বরং স্পেশাল সং বলুন।’ বলেছেন তিনি। ‘একটি সিনেমার প্রথম পরিচয় হিসেবে কিন্তু এই গানগুলোই আসে।’
সুনিধিকে বৈচিত্র্যময় কেন বলা হচ্ছে? ‘শিলা কি জওয়ানি’র মতো গানে যেমন, তেমনি ‘ইশক সুফিয়ানা’র মতো রোমান্টিক গানেও তাঁর সমান দখল। আর একজন শিল্পীর জন্য এই বৈচিত্র্য থাকাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ বলেই মানেন তিনি।
তবে কি কোনো সংগীতশিল্পীকে গানের সব শাখাতেই সমান দক্ষ হতে হবে? কেউ বিশেষ কোনো শাখায় খুব ভালো, আর বাদবাকিতে মোটামুটি, তাঁর বেলায়? ‘দেখুন, আজকের প্লেব্যাক গানের যুগে সব ধরনের গান গাইতে পারাটা খুব জরুরি। তবে তা না হলে চলবেই না তা তো নয়।’ বললেন তিনি।
‘ইন্ডিয়ান আইডল’-এর বিচারক হিসেবে কাজ করছেন তিনি। নতুন শিল্পীদের কি বৈচিত্র্য ধরে রাখার পরামর্শই দেবেন? ‘আমি কাউকেই কোনো নির্দেশ দিতে চাই না। নতুনদের আমি সাহায্য করতে পারি। নানা তথ্য দিতে পারি। কিন্তু সে কী করবে, কোন ধরনের গান গাইবে, সেটা সম্পূর্ণ তারই সিদ্ধান্ত।’ বললেন সুনিধি।
‘ইন্ডিয়ান আইডল’-এরই প্রসঙ্গে আসে, এই সময়ের রিয়েলিটি শোগুলোর বাস্তবতার কথা। প্রায়ই দেখা যাচ্ছে, বিচারকদের মধ্যে তর্কাতর্কি থেকে ঝগড়া হচ্ছে, প্রতিযোগীর সঙ্গে কান্নায় ভেঙে পড়ছেন বিচারকও, মঞ্চ ছেড়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন। এগুলো কি আসলেই ঘটে, নাকি টিআরপি বাড়ানোর কৌশল?
‘প্রতিটি শোরই কোড অব কন্ডাক্ট থাকে। সেই অনুযায়ীই শো চলতে থাকে। আমাকে কেউ বলে দেয়নি যে কোনো বিশেষ আচরণ করতে হবে বা চিত্রনাট্য তৈরি করেও এ ধরনের কিছু করা হচ্ছে না। আমি যেমন, তেমনই থাকছি রিয়েলিটি শোতে। বিচারক হিসেবে আমার কাজের প্রতি আমি খুবই সচেতন। সেটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। অন্য কিছু নিয়ে আমি ভাবি না।’
এক বছরে একটাই একক গানের অ্যালবাম বেরিয়েছে সুনিধির। তবে খুব তাড়াতাড়ি আবার একটি একক অ্যালবাম করার ইচ্ছা আছে বলে জানালেন।
মাইকেল জ্যাকসন আর হুইটনি হিউসটনকে আদর্শ মানেন তিনি। আর লতা মঙ্গেশকর, আশা ভোঁসলে তাঁর অনুপ্রেরণা।
১৯৯৯ সালে মাস্ত ছবির গান দিয়ে প্রথম আলোচনায় আসা সুনিধির। এত বছরে নতুন অনেক শিল্পী এসেছেন। অনেকেই ভালো করছেন। এটা কি সুনিধিকে প্রতিযোগিতার মুখে ফেলে? ‘আমাদের চলচ্চিত্রশিল্প অনেক বড়। অনেকেই ভালো গাইছেন। প্রচুর কাজের সুযোগ আছে এখানে। এখানে প্রতিযোগিতার তেমন কোনো ব্যাপার নেই। যাঁর যাঁর যোগ্যতা অনুয়ায়ীই সবাই কাজ করছেন।’ বলেন তিনি।