Thursday, March 21, 2013
রাষ্ট্রপতির মৃত্যুতে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক
রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান আর নেই। গতকাল ২০ মার্চ, বুধবার বাংলাদেশ সময় বিকেল চারটা ৪৭ মিনিটে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় বিশেষ বিমানযোগে রাষ্ট্রপতির মরদেহ শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছাবে। দেশের ১৯তম রাষ্ট্রপতির মৃত্যুতে আজ থেকে তিন দিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে। এই তিন দিন (বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবার) বাংলাদেশের সব সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং বিদেশে বাংলাদেশ মিশনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে।
গতকাল রাতে পাঠানো মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ রাষ্ট্রপতির মরদেহ গ্রহণ এবং যথাযথ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। রাষ্ট্রপতির আত্মার মাগফিরাত কামনায় আগামীকাল শুক্রবার দেশের সব মসজিদে দোয়া এবং মন্দির, গির্জা, প্যাগোডা ও অন্যান্য উপাসনালয়ে প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছে।
কাল শুক্রবার বেলা আড়াইটায় জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। বেলা সাড়ে তিনটায় জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় দ্বিতীয় জানাজা শেষে মরদেহ নেওয়া হবে মরহুমের গুলশানের বাসভবনে। বিকেল পাঁচটায় বনানী কবরস্থানে রাষ্ট্রপতিকে দাফন করা হবে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের পৃথক এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত সংবিধানের ৫৪ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, জাতীয় সংসদের স্পিকার মো. আবদুল হামিদ রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করবেন।
শুধু আওয়ামী লীগেই নয়, দেশের গোটা রাজনৈতিক অঙ্গনেই জিল্লুর রহমান ছিলেন অভিভাবকের মতো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলীয় বা রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ছুটে যেতেন তাঁর কাছে। দেশের দ্বিধাবিভক্ত রাজনৈতিক পরিবেশে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াও তাঁর আমন্ত্রণ উপেক্ষা করতে পারেননি। সর্বশেষ নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনে জিল্লুর রহমানের ডাকে বঙ্গভবনে যান খালেদা জিয়া।
জিল্লুর রহমান দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করার পর রাষ্ট্রপতি পদে অধিষ্ঠিত হন। এই পদে থেকেই ইন্তেকাল করলেন তিনি।
বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর ও স্নেহধন্য জিল্লুর রহমানকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর ছোট বোন শেখ রেহানা চাচা বলে ডাকতেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দুবার এবং শেখ হাসিনার সঙ্গে দুবার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৪ সালের ২১ আগস্টের ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় তিনি স্ত্রী আইভি রহমানকে হারিয়েছেন। এক-এগারোর সময় (২০০৭ সাল) দলের চরম দুঃসময়ে আওয়ামী লীগকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখেন প্রবীণ এই রাজনীতিক। ২০০৭ সালের জুলাইয়ে শেখ হাসিনা গ্রেপ্তার হওয়ার আগে জিল্লুর রহমানকে দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দিয়ে যান। এ সময় তিনি দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন। শেখ হাসিনাকে কারামুক্ত করতে আইনজীবীর গাউন পরে বৃদ্ধ বয়সেও ছুটে গেছেন সংসদ ভবনের বিশেষ আদালতে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকাকালে ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন ঢাকার রোজ গার্ডেনে আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠার দিন তিনি স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সেই দিন থেকে এক মুহূর্তের জন্যও তিনি আওয়ামী লীগের আদর্শ থেকে বিচ্যুত হননি।
জিল্লুর রহমান মহান স্বাধীনতাযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ছিলেন। তাঁর রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় চল্লিশের দশকের শুরুর দিকে স্কুলের ছাত্র থাকাকালেই। ১৯৪৬ সালে ঢাকা কলেজের ছাত্র থাকাকালে সিলেটে গণভোটের প্রচারকাজে অংশ নিতে গিয়ে তিনি সেখানে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে পরিচিত হন। এরপর ভাষা আন্দোলনসহ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় সব আন্দোলন-সংগ্রাম এবং পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের পর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন তথা দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় সংগ্রামের পুরোভাগে ছিলেন তিনি।
শোক প্রকাশ: রাষ্ট্রপতির মৃত্যুতে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া এবং জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদ শোক প্রকাশ করেছেন।
অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেন, ‘জিল্লুর রহমান ছিলেন আমাদের অভিভাবক। তাঁর মৃত্যুতে দেশ একজন দেশপ্রেমিক, নিবেদিতপ্রাণ ও প্রবীণ রাজনীতিবিদকে হারাল। ভাষা আন্দোলন, স্বাধিকার আন্দোলন, মহান মুক্তিযুদ্ধ, গণতান্ত্রিক আন্দোলন এবং ২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে দেশের রাজনৈতিক সংকট উত্তরণে তাঁর দৃঢ় ও প্রাজ্ঞ ভূমিকা জাতির ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লিপিবদ্ধ আছে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গভীর শোক প্রকাশ করে বলেন, ‘পঁচাত্তর-পরবর্তী দুঃসময়ে আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করতে জিল্লুর রহমানের ভূমিকা ছিল অবিস্মরণীয়। প্রিয়তমা স্ত্রী ও রাজনৈতিক সহকর্মী আইভি রহমানকে ২১ আগস্ট মর্মান্তিক গ্রেনেড হামলায় হারানোর পরও তিনি নতজানু হননি। এক-এগারোর পর দুঃসময়ে জিল্লুর রহমান দলের হাল ধরেছিলেন। তিনি আমাকে কারাগার থেকে মুক্ত করেছিলেন। মুক্তি দিয়েছিলেন গণতন্ত্রকে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও বাংলাদেশের মানুষ চিরদিন জিল্লুর রহমানকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে।’
জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া বলেন, দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে জিল্লুর রহমান গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ও সামাজিক দায়িত্ব পালন করেছেন। বিভিন্ন ক্রান্তিলগ্নে তাঁর ইতিবাচক ভূমিকা জাতীয় ইতিহাসের অংশ হয়ে থাকবে। জিল্লুর রহমান ছিলেন ভদ্র, নম্র ও ভালো মানুষ। রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের সম্পর্কে তিনি কখনো আক্রমণাত্মক ও অশালীন মন্তব্য করতেন না। তাঁর মৃত্যুতে জাতি একজন সুবিবেচক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে হারাল। রুচি ও প্রজ্ঞার প্রকট অভাবের এই সময়ে তাঁর মৃত্যুতে যে শূন্যতা সৃষ্টি হলো, তা পূরণ হওয়ার নয়।
সংক্ষিপ্ত জীবনী: জিল্লুর রহমানের জন্ম ১৯২৯ সালের ৯ মার্চ কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলায়। তাঁর বাবা আইনজীবী মেহের আলী মিয়া ময়মনসিংহ জেলার লোকাল বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন। জিল্লুর রহমান ১৯৭০ সালে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদে ভৈরব, কুলিয়ারচর ও বাজিতপুর থেকে নির্বাচিত হওয়ার পর সব সময় ওই আসন থেকে নির্বাচন করে আসছিলেন। ভৈরব-কুলিয়ারচর আসন থেকে তিনি ১৯৭৩, ১৯৮৬, ১৯৯৬, ২০০১ ও ২০০৮ সালে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর ওই আসনে এখন প্রতিনিধিত্ব করছেন তাঁর ছেলে নাজমুল হাসান।
ছাত্রজীবনেই জিল্লুর রহমান রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় ভাষা আন্দোলনেও সক্রিয় ছিলেন তিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে অনার্সসহ এমএ ও এলএলবি ডিগ্রি অর্জনের পর তিনি ১৯৫৪ সালে আইন পেশায় যোগ দেন। ১৯৫৬ সালে তিনি কিশোরগঞ্জ মহকুমা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি নির্বাচিত হন।
ষাটের দশকে ঢাকা জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হলেও রাজনীতিতে তিনি মনোনিবেশ করেন। ১৯৬২ সালের সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন, ছিষট্টির ছয় দফা আন্দোলন ও উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থানে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। এরপর একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্র পরিচালনা এবং জয় বাংলা পত্রিকার প্রকাশনায় যুক্ত ছিলেন।
স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে আওয়ামী লীগের প্রথম সম্মেলনে দলের সাধারণ সম্পাদক হন তিনি। এরপর ১৯৭৪, ১৯৯২ ও ১৯৯৭ সালেও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হন। দীর্ঘদিন তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ছিলেন। রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার আগে নবম জাতীয় সংসদে সংসদ উপনেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি।
জিল্লুর রহমানের এক ছেলে সাংসদ নাজমুল হাসান এবং দুই মেয়ে তানিয়া রহমান ও তনিমা রহমান।
Monday, March 18, 2013
জাবিতে ছাত্রলীগের সংঘর্ষের পর হল তল্লাশি
জাহাঙ্গীরনগর
বিশ্ববিদ্যালয়ে গতকাল রবিবার রাতে ছাত্রলীগের দুই হলের নেতা-কর্মীদের
মধ্যে সংঘর্ষের পর ছাত্রলীগের ৩ নেতা-কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। আজ সোমবার
সকালে হলে তল্লাশি চালিয়ে তাদের আটক করে পুলিশ। আটক ছাত্রলীগের তিন
নেতা-কর্মী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের কর্মী হওয়ার পরও শিবির বলে চালানোর
চেষ্টা করেছে ছাত্রলীগের একাংশ।
ছাত্রলীগের সভাপতি মাহমুদুর রহমান জনি দাবি করেছেন এরা পদপ্রাপ্ত কেও না। এদের সাথে ছাত্রলীগের কোন সম্পৃক্ততা নেই। উপচার্য ড. আনোয়ার হোসেনও দাবি করেছেন আটককৃতরা ছাত্রলীগের কেউ নয়, তারা ছাত্রলীগে অনুপ্রবেশকারী। পুলিশের অভিযানের পর উপাচার্য সাংবাদিকদের বলেন, ওরা উপরে উপরে ছাত্রলীগ কিন্তু ভেতরে শিবিরের কার্যক্রম চালাচ্ছে। এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
জানা গেছে, গত রবিবার রাতে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের মওলানা ভাসানী হল ও শহীদ রফিক জব্বার হলের ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ বাঁধে। এ সময় ৯ ছাত্রলীগকর্মী গ্ররুতর আহত হন। আজ সোমবার সকাল ৭টার দিকে আশুলিয়া থাকার ওসি বদরুল আলমের নেতৃত্বে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উভয় হলে তল্লাশি চালায় পুলিশ।
এ সময় মওলানা ভাসানী হলের ১০৮ নম্বর কক্ষ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল ও ৬ রাউন্ড গুলিসহ আটক করে বোরহান উদ্দিন সুলতান ইমনকে। ইমনের স্বীকারোক্তি অনুযায়ি মোরশেদুর রহমান নামের অপর ছাত্রলীগ কর্মীকে আটক করে পুলিশ। বোরহান উদ্দিন ইমন পুলিশকে বলেন, পিস্তলটি মোরশেদুর রহমানের। তবে মোরশেদ এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন তিনি রাজনীতির স্বীকার।
একই সময়ে রফিক জব্বার হল থেকে রামদা ও দেশীয় অস্ত্রসহ আটক করেছে আবদুল মাজেদ সীমান্ত নামে এক ছাত্রলীগকর্মীকে। সীমান্ত ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক মিঠুন কুণ্ডুর ঘনিষ্ঠ হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত। ছাত্রলীগের প্রস্তাবিত হল কমিটিতে সীমান্ত সাধারণ সম্পাদক পদে রয়েছে বলেও একটি সূত্রে জানা গেছে।
পুলিশের তল্লাশির নেতৃত্ব দেওয়া আশুলিয়া থানার ওসি বদরুল আলম কালের কণ্ঠকে বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ৩ জনকে আটক করা হয়েছে। অভিযানের সময় একটি বিদেশি পিস্তল, ৬ রাউন্ড গুলি, রামদা ও প্রচুর রড উদ্ধার করা হয়েছে। আটককৃতদের রিমান্ডের জন্য আদালোতে পাঠানো হবে বলেও জানান তিনি।
ছাত্রলীগের সভাপতি মাহমুদুর রহমান জনি দাবি করেছেন এরা পদপ্রাপ্ত কেও না। এদের সাথে ছাত্রলীগের কোন সম্পৃক্ততা নেই। উপচার্য ড. আনোয়ার হোসেনও দাবি করেছেন আটককৃতরা ছাত্রলীগের কেউ নয়, তারা ছাত্রলীগে অনুপ্রবেশকারী। পুলিশের অভিযানের পর উপাচার্য সাংবাদিকদের বলেন, ওরা উপরে উপরে ছাত্রলীগ কিন্তু ভেতরে শিবিরের কার্যক্রম চালাচ্ছে। এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
জানা গেছে, গত রবিবার রাতে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের মওলানা ভাসানী হল ও শহীদ রফিক জব্বার হলের ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ বাঁধে। এ সময় ৯ ছাত্রলীগকর্মী গ্ররুতর আহত হন। আজ সোমবার সকাল ৭টার দিকে আশুলিয়া থাকার ওসি বদরুল আলমের নেতৃত্বে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উভয় হলে তল্লাশি চালায় পুলিশ।
এ সময় মওলানা ভাসানী হলের ১০৮ নম্বর কক্ষ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল ও ৬ রাউন্ড গুলিসহ আটক করে বোরহান উদ্দিন সুলতান ইমনকে। ইমনের স্বীকারোক্তি অনুযায়ি মোরশেদুর রহমান নামের অপর ছাত্রলীগ কর্মীকে আটক করে পুলিশ। বোরহান উদ্দিন ইমন পুলিশকে বলেন, পিস্তলটি মোরশেদুর রহমানের। তবে মোরশেদ এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন তিনি রাজনীতির স্বীকার।
একই সময়ে রফিক জব্বার হল থেকে রামদা ও দেশীয় অস্ত্রসহ আটক করেছে আবদুল মাজেদ সীমান্ত নামে এক ছাত্রলীগকর্মীকে। সীমান্ত ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক মিঠুন কুণ্ডুর ঘনিষ্ঠ হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত। ছাত্রলীগের প্রস্তাবিত হল কমিটিতে সীমান্ত সাধারণ সম্পাদক পদে রয়েছে বলেও একটি সূত্রে জানা গেছে।
পুলিশের তল্লাশির নেতৃত্ব দেওয়া আশুলিয়া থানার ওসি বদরুল আলম কালের কণ্ঠকে বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ৩ জনকে আটক করা হয়েছে। অভিযানের সময় একটি বিদেশি পিস্তল, ৬ রাউন্ড গুলি, রামদা ও প্রচুর রড উদ্ধার করা হয়েছে। আটককৃতদের রিমান্ডের জন্য আদালোতে পাঠানো হবে বলেও জানান তিনি।
শেষ বিকালের হতাশা
প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের করা ২৪০ রানের জবাবে শ্রীলঙ্কার ৩৪৬। প্রথম
ইনিংসের ১০৬ রানের ব্যবধানটা ঘুচিয়ে এখন পর্যন্ত ৫২ রানে এগিয়ে বাংলাদেশ,
হাতে আছে ছয়টি উইকেট।
দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুটা ভালোই হয়েছিল বাংলাদেশের। তামিম ইকবাল ও জহুরুল হকের উদ্বোধনী জুটিতে আসে ৯১ রান। তবে শেষ বিকালে হঠাত্ জহুরুল ও মাহমুদউল্লাহর ফিরে যাওয়া হতাশা ছড়িয়েছে বেশ ভালোমতোই।
টেস্টের তৃতীয় দিনের খেলা শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ চার উইকেট হারিয়ে ১৫৮ রান। মমিনুল হক ৩৬ ও অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম ৭ রানে অপরাজিত আছেন। ৫৯ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলে সবার আগে সাজঘরে ফেরেন তামিম। দলীয় ৯৬ রানে বোল্ড হন ব্যক্তিগত ৪ রানে থাকা মোহাম্মদ আশরাফুল।
মাত্র পাঁচ রানের ব্যবধানে দুটি উইকেটের পতন ঘটায় অস্বস্তিতে পড়ে যায় বাংলাদেশ। মমিনুল হককে সঙ্গে নিয়ে কিছুটা আশা জাগিয়েছিলেন জহুরুল। কিন্তু ৪৮ রান করে জহুরুল ফিরে যাওয়ার পরই নেমে আসে বিপর্যয়; ঠিক পরের বলেই রঙ্গনা হেরাথের বলে বোল্ড হন মাহমুদউল্লাহ। জহুরুলের বিদায়ের ঠিক পরের বলেই বোল্ড হয়ে ফেরেন তাঁর জায়গায় খেলতে আসা মাহমুদউল্লাহ।
৬ উইকেটে ২৯৪ রান নিয়ে আজ টেস্টের তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করে শ্রীলঙ্কা। আগের দিন ১২৭ রানে অপরাজিত থাকা কুমার সাঙ্গাকারা আজ ফিরে যান ব্যক্তিগত ১৩৯ রানে। লঙ্কানদের ইনিংসটাও বেশিদূর এগোয়নি। মধ্যাহ্নবিরতির আগেই শ্রীলঙ্কার ইনিংসের ইতি টেনে দেন বাংলাদেশের বোলাররা।
উইকেটের বিচারে বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে সোহাগ গাজীই সবচেয়ে সফল। ১১১ রানের বিনিময়ে তিনটি উইকেট তুলে নেন তিনি। এ ছাড়া রবিউল ইসলাম, রুবেল হোসেন ও আবুল হাসান প্রত্যেকেই দুটি করে উইকেট নেন।
দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুটা ভালোই হয়েছিল বাংলাদেশের। তামিম ইকবাল ও জহুরুল হকের উদ্বোধনী জুটিতে আসে ৯১ রান। তবে শেষ বিকালে হঠাত্ জহুরুল ও মাহমুদউল্লাহর ফিরে যাওয়া হতাশা ছড়িয়েছে বেশ ভালোমতোই।
টেস্টের তৃতীয় দিনের খেলা শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ চার উইকেট হারিয়ে ১৫৮ রান। মমিনুল হক ৩৬ ও অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম ৭ রানে অপরাজিত আছেন। ৫৯ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলে সবার আগে সাজঘরে ফেরেন তামিম। দলীয় ৯৬ রানে বোল্ড হন ব্যক্তিগত ৪ রানে থাকা মোহাম্মদ আশরাফুল।
মাত্র পাঁচ রানের ব্যবধানে দুটি উইকেটের পতন ঘটায় অস্বস্তিতে পড়ে যায় বাংলাদেশ। মমিনুল হককে সঙ্গে নিয়ে কিছুটা আশা জাগিয়েছিলেন জহুরুল। কিন্তু ৪৮ রান করে জহুরুল ফিরে যাওয়ার পরই নেমে আসে বিপর্যয়; ঠিক পরের বলেই রঙ্গনা হেরাথের বলে বোল্ড হন মাহমুদউল্লাহ। জহুরুলের বিদায়ের ঠিক পরের বলেই বোল্ড হয়ে ফেরেন তাঁর জায়গায় খেলতে আসা মাহমুদউল্লাহ।
৬ উইকেটে ২৯৪ রান নিয়ে আজ টেস্টের তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করে শ্রীলঙ্কা। আগের দিন ১২৭ রানে অপরাজিত থাকা কুমার সাঙ্গাকারা আজ ফিরে যান ব্যক্তিগত ১৩৯ রানে। লঙ্কানদের ইনিংসটাও বেশিদূর এগোয়নি। মধ্যাহ্নবিরতির আগেই শ্রীলঙ্কার ইনিংসের ইতি টেনে দেন বাংলাদেশের বোলাররা।
উইকেটের বিচারে বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে সোহাগ গাজীই সবচেয়ে সফল। ১১১ রানের বিনিময়ে তিনটি উইকেট তুলে নেন তিনি। এ ছাড়া রবিউল ইসলাম, রুবেল হোসেন ও আবুল হাসান প্রত্যেকেই দুটি করে উইকেট নেন।
সিরিজ ৩-০ করল ভারত
চেন্নাই, হায়দরাবাদের পর মোহালি টেস্টেও বড় জয় পেল স্বাগতিক ভারত। চার
ম্যাচের টেস্ট সিরিজে মহেন্দ্র সিং ধোনিরা এগিয়ে ৩-০-তে। অস্ট্রেলিয়ার
বিপক্ষে সিরিজের শেষ টেস্টটি মাঠে গড়াবে আগামী ২২ মার্চ।
মোহালি টেস্টের শেষ দিনে আজ সোমবার ভারতের জয়টা এসেছে ৬ উইকেটে। জয়ের জন্য দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতীয়দের প্রয়োজন ছিল ১৩৩ রান। চারটি উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় স্বাগতিকেরা।
দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের কেউই খুব একটা জ্বলে উঠতে পারেননি। লক্ষটা অল্প ছিল বলেই রক্ষা। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৩৪ রান করেন বিরাট কোহলি। উদ্বোধনী দুই ব্যাটসম্যান মুরালি বিজয় ও চেতেশ্বর পূজারার সংগ্রহ যথাক্রমে ২৬ ও ২৮ রান। শচীন টেন্ডুলকার করেন ২১ রান। দলের জয় নিশ্চিত করে ধোনি ১৮ ও রবীন্দ্র জাদেজা ৮ রানে অপরাজিত থাকেন।
এ টেস্টে অস্ট্রেলিয়া হারের মূল কারণ, দ্বিতীয় ইনিংসে দলটির ব্যাটসম্যানদের সীমাহীন ব্যর্থতা। ৯১ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করার পর গতকাল চতুর্থ দিনে ভুবনেশ্বর কুমারের বোলিং তোপের মুখে পড়ে অস্ট্রেলিয়া। ৩ উইকেট হারিয়ে ৭৫ রান সংগ্রহ করে চতুর্থ দিন শেষ করে সফরকারীরা।
আজ পঞ্চম দিনে অস্ট্রেলিয়াকে রীতিমতো নাজেহাল করেন তিন ভারতীয় স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিন, প্রজ্ঞান ওঝা ও রবীন্দ্র জাদেজা। তাঁদের ঘূর্ণিজাদুতে বড় কোনো জুটিই গড়তে পারেননি অসি ব্যাটসম্যানরা। ৬৯ রানের ইনিংস খেলে একাই প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেছিলেন ফিলিপ হিউজ।
প্রথম ইনিংসে ৪০৮ রান করে অলআউট হয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। জবাবে নিজেদের প্রথম ইনিংসে শিখর ধাওয়ান ও মুরালি বিজয়ের দুটি দুর্দান্ত ইনিংসে ভারতের ইনিংস শেষ হয় ৪৯৯ রানে।
মোহালি টেস্টের শেষ দিনে আজ সোমবার ভারতের জয়টা এসেছে ৬ উইকেটে। জয়ের জন্য দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতীয়দের প্রয়োজন ছিল ১৩৩ রান। চারটি উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় স্বাগতিকেরা।
দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের কেউই খুব একটা জ্বলে উঠতে পারেননি। লক্ষটা অল্প ছিল বলেই রক্ষা। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৩৪ রান করেন বিরাট কোহলি। উদ্বোধনী দুই ব্যাটসম্যান মুরালি বিজয় ও চেতেশ্বর পূজারার সংগ্রহ যথাক্রমে ২৬ ও ২৮ রান। শচীন টেন্ডুলকার করেন ২১ রান। দলের জয় নিশ্চিত করে ধোনি ১৮ ও রবীন্দ্র জাদেজা ৮ রানে অপরাজিত থাকেন।
এ টেস্টে অস্ট্রেলিয়া হারের মূল কারণ, দ্বিতীয় ইনিংসে দলটির ব্যাটসম্যানদের সীমাহীন ব্যর্থতা। ৯১ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করার পর গতকাল চতুর্থ দিনে ভুবনেশ্বর কুমারের বোলিং তোপের মুখে পড়ে অস্ট্রেলিয়া। ৩ উইকেট হারিয়ে ৭৫ রান সংগ্রহ করে চতুর্থ দিন শেষ করে সফরকারীরা।
আজ পঞ্চম দিনে অস্ট্রেলিয়াকে রীতিমতো নাজেহাল করেন তিন ভারতীয় স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিন, প্রজ্ঞান ওঝা ও রবীন্দ্র জাদেজা। তাঁদের ঘূর্ণিজাদুতে বড় কোনো জুটিই গড়তে পারেননি অসি ব্যাটসম্যানরা। ৬৯ রানের ইনিংস খেলে একাই প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেছিলেন ফিলিপ হিউজ।
প্রথম ইনিংসে ৪০৮ রান করে অলআউট হয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। জবাবে নিজেদের প্রথম ইনিংসে শিখর ধাওয়ান ও মুরালি বিজয়ের দুটি দুর্দান্ত ইনিংসে ভারতের ইনিংস শেষ হয় ৪৯৯ রানে।
দ্রুত চিকিৎসায় ১০ শতাংশ এইডস রোগী সুস্থ হয়
আক্রান্তের পরপরই চিকিৎসা করা গেলে প্রতি ১০ জনের একজন এইচআইভি আক্রান্ত রোগীকে সুস্থ করা সম্ভব বলে দাবি করেছেন ফ্রান্সে একদল গবেষক। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে এক শিশু এইচআইভি সংক্রমণ থেকে সেরে ওঠার খবর প্রকাশিত হওয়ার পরই নতুন এ আশার কথা শোনালেন তাঁরা।
গবেষকরা জানান, হাসপাতালে অন্য কোনো পরীক্ষা করাতে এসে এইচআইভি পাওয়া গেছে_এমন ১৪ জনকে তাঁরা গবেষণার নমুনা হিসেবে নেন। আক্রান্ত হওয়ার ১০ সপ্তাহের মধ্যেই এদের চিকিৎসা শুরু হয়। গবেষকদের দাবি, এদের অধিকাংশের শরীরেই গত ১২ বছরে নতুন করে এইচআইভির সংক্রমণ দেখা যায়নি। বিজ্ঞানীরা জানান, এইচআইভি প্রতিরোধ সফলতার মূল রহস্যই হচ্ছে এটা কত দ্রুত শনাক্ত করা যায়, তার ওপর। অতি দ্রুততার সঙ্গে দেহে ভাইরাসটির উপস্থিতি শনাক্ত করে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা দেওয়া গেলে ১০ জন রোগীর মধ্যে অন্তত একজনের দেহের ভাইরাস সম্পূর্ণ নিষ্ক্রিয় করে দেওয়া সম্ভব। এর ফলে ইমিউন সিস্টেমের ভেতরে লুকনো জায়গা থেকে বেরিয়ে এসে দেহের অন্যান্য জায়গায় সংক্রমণ ঘটাতে পারে না ওই ভাইরাস। ফলে সংক্রমিত রোগীটি কোনো ধরনের চিকিৎসা ছাড়াই দীর্ঘদিন স্বাভাবিক জীবনযাপন করার সুযোগ পেতে পারেন। এইচআইভির চিকিৎসায় সাধারণত ওষুধের মাধ্যমে ভাইরাসকে দমিয়ে রাখা যায়, কিন্তু পুরোপুরি বিলুপ্ত করা যায় না। ওষুধ খাওয়া বন্ধ করলে ভাইরাস আবারও সক্রিয় হয়ে ওঠে। প্যারিসের পাস্তুর ইনস্টিটিউটের চিকিৎসক ড. এসিয়ের সায়েজ-সিরিয়ন বলেন, 'এ পদ্ধতিতে সবাই সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলেও অনেকের ক্ষেত্রে সম্ভব।' সবার ক্ষেত্রে কেন নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়, তা এখনো পরিষ্কার নয় বলে জানান গবেষকরা। সায়েজ-সিরিয়ন জানান, ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পরপরই চিকিৎসা নিলে ৫ থেকে ১৫ শতাংশ রোগী পুরোপুরি আরোগ্য হতে পারেন।
চীনে ৪০ বছরে ৩৩ কোটি গর্ভপাত
জনসংখ্যা
নিয়ন্ত্রণের কর্মসূচি গ্রহণের পর গত ৪০ বছরে চীনে প্রায় ৩৩ কোটি গর্ভপাত
হয়েছে। চীনা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট থেকে এ তথ্য জানা গেছে। সরকার
১৯৮০ সালে গৃহীত এক সন্তান নীতি অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ নীতি
দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে আরো এগিয়ে নেবে বলে মনে করছে তারা।
চলতি বছরের শুরুতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তাদের ওয়েবসাইটে জনসংখ্যার বিভিন্ন হিসাব-নিকাশ তুলে ধরে। এতে দেখা যায়, ১৯৭১ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত মোট ৩২ কোটি ৮৯ লাখ গর্ভপাত ঘটানো হয়েছে। এর কিছু দিন আগেই সরকার সন্তান কম নিতে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নেয়। এসব কর্মসূচির অংশ হিসেবে ১৯৮০ সালে কার্যকরি হয় এক সন্তান নীতি। তবে প্রত্যন্ত কিছু অঞ্চল, নৃ-তাত্তি্বক জনগোষ্ঠী এবং স্বামী-স্ত্রী উভয়ই মা-বাবার একমাত্র সন্তান হওয়ার ক্ষেত্রে এ নীতি শিথিল করা হয়। বিশেষ করে প্রথম সন্তান মেয়ে হলে প্রত্যন্ত অঞ্চলে দ্বিতীয় সন্তানের অনুমতি দেওয়া হয়।
২০১০ সালের সর্বশেষ আদমশুমারিতে বলা হয়, এক সন্তান নীতি না থাকলে দেশের বর্তমান জনসংখ্যা আরো ৪০ কোটি বেশি থাকত। দেশটির বর্তমান জনসংখ্যা ১৩৫ কোটিরও বেশি।
এদিকে গত রবিবার জাতীয় আইনপ্রণয়নকারী পরিষদের বার্ষিক সভায় পরিবার পরিকল্পনা নীতিমালার কিছু মৌলিক পরিবর্তন আনা হয়। তবে নীতিমালায় এক সন্তান নীতি অব্যাহত রাখা হয়। জাতীয় জনসংখ্যা ও পরিবার পরিকল্পনা কমিশন (এনপিএফপিসি) জানায়, এক সন্তান নীতি জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে ইতিবাচক ভূমিকা রাখায় এটি অব্যাহত থাকবে। মন্ত্রীসভার কেন্দ্রীয় পরিষদের মহাসচিব মা কাই নীতিমালা পরিবর্তন সম্পর্কে বলেন, 'এটি পরিবার পরিকল্পনা কর্মসূচিকে আরো এগিয়ে নেবে।' সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া।
চলতি বছরের শুরুতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তাদের ওয়েবসাইটে জনসংখ্যার বিভিন্ন হিসাব-নিকাশ তুলে ধরে। এতে দেখা যায়, ১৯৭১ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত মোট ৩২ কোটি ৮৯ লাখ গর্ভপাত ঘটানো হয়েছে। এর কিছু দিন আগেই সরকার সন্তান কম নিতে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নেয়। এসব কর্মসূচির অংশ হিসেবে ১৯৮০ সালে কার্যকরি হয় এক সন্তান নীতি। তবে প্রত্যন্ত কিছু অঞ্চল, নৃ-তাত্তি্বক জনগোষ্ঠী এবং স্বামী-স্ত্রী উভয়ই মা-বাবার একমাত্র সন্তান হওয়ার ক্ষেত্রে এ নীতি শিথিল করা হয়। বিশেষ করে প্রথম সন্তান মেয়ে হলে প্রত্যন্ত অঞ্চলে দ্বিতীয় সন্তানের অনুমতি দেওয়া হয়।
২০১০ সালের সর্বশেষ আদমশুমারিতে বলা হয়, এক সন্তান নীতি না থাকলে দেশের বর্তমান জনসংখ্যা আরো ৪০ কোটি বেশি থাকত। দেশটির বর্তমান জনসংখ্যা ১৩৫ কোটিরও বেশি।
এদিকে গত রবিবার জাতীয় আইনপ্রণয়নকারী পরিষদের বার্ষিক সভায় পরিবার পরিকল্পনা নীতিমালার কিছু মৌলিক পরিবর্তন আনা হয়। তবে নীতিমালায় এক সন্তান নীতি অব্যাহত রাখা হয়। জাতীয় জনসংখ্যা ও পরিবার পরিকল্পনা কমিশন (এনপিএফপিসি) জানায়, এক সন্তান নীতি জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে ইতিবাচক ভূমিকা রাখায় এটি অব্যাহত থাকবে। মন্ত্রীসভার কেন্দ্রীয় পরিষদের মহাসচিব মা কাই নীতিমালা পরিবর্তন সম্পর্কে বলেন, 'এটি পরিবার পরিকল্পনা কর্মসূচিকে আরো এগিয়ে নেবে।' সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া।
গাজীপুরে ব্যবসায়ীর ৩৫ লাখ টাকা ছিনতাই
গাজীপুরে
এক পাইকারি ব্যবসায়ীর ৩৫ লাখ টাকা ছিনতাই হয়েছে। বাসা থেকে টাকা নিয়ে
দোকানে প্রবেশের মুহূর্তে একদল ছিনতাইকারী বুকে অস্ত্র ঠেকিয়ে দুটি ব্যাগে
থাকা টাকা ছিনিয়ে নেয়। পরে গুলি ছুড়তে ছুড়তে মোটরসাইকেলে করে পুলিশের
সামনে দিয়েই টঙ্গীর দিকে চলে যায়। ফিল্মি স্টাইলে এ ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে
আজ সোমবার সকালে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ব্যস্ততম বোর্ডবাজারে। খবর পেয়ে
র্যাব ও পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলেও টাকা উদ্ধার বা জড়িত কাউকে গ্রেপ্তার করতে
পারেনি।
জানা গেছে, ব্যাংকে জমা দেওয়ার জন্যে বোর্ডবাজারের আরপি ট্রেডর্সের মালিক রতন মল্লিক (৪৮) দুটি ব্যাগে করে ৩৫ লাখ টাকা নিয়ে বাসা থেকে বের হন। এ সময় তিন কর্মচারি ছাড়াও স্ত্রীর তিন ভাই রোকন সরকার, রতন সরকার ও শোকান সরকার তার সঙ্গে ছিলো। সকাল সোয়া ৮টার দিকে তালা খুলে দোকানে প্রবেশের মুহূর্তে ৮ যুবক এসে শত শত মানুষের সামনেই তাদের বুকে অস্ত্র এবং ঘাড়ে চাপাতি ঠেকিয়ে টাকার ব্যাগ দুটি ছিনিয়ে নেয়। এ সময় চারটি মোটরসাইকেলে আরো চার যুবক এসে দাঁড়াতেই ছিনতাইকারীর গুলি ছুড়তে ছুড়তে টাকা নিয়ে টঙ্গীর দিকে চলে যায়।
রতন মল্লিকের শ্যালক রোকন সরকার (২৮) জানান, ওই আট যুবক স্বাভাবিকভাবে হেটে এসে কোমর থেকে পিস্তল ও চাপাতি বের করে আমাদের দিকে তাক করে। আমরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই তারা টাকা ছিনিয়ে নেয়। চলে যাওয়ার সময় আমরা চিৎকার করলে পাঁচ রাউন্ড গুলি ছুড়ে চলে যায়। ছিনতাই করতে তাদের সময় লেগেছে মাত্র দুই মিনিট।
ব্যবসায়ী রতন মল্লিক জানান, তিন দিন বন্ধ থাকার কারণে বিক্রির টাকা বাসায় নিয়ে রেখেছিলেন। দোকানের ওপরই অগ্রণী ব্যাংকের শাখা। ওই শাখায় জমা দেওয়ার জন্যেই বাসা থেকে টাকা নিয়ে বের হয়েছিলেন। তিনি অভিযোগ করেন, ছিনতাইকালে একশ গজ দূরেই পুলিশ রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিল। ছিনতাই শেষে টাকা নিয়ে পুলিশের সামনে দিয়েই গুলি করতে ছিনতাইকারীরা চলে গেছে।
জয়দেবপুর থানার এসআই মাহফুজুর রহমান জানান, পুলিশ ওই এলাকায় হরতাল ডিউটি করছিল। গুলির শব্দকে পিকেটারদের নিক্ষেপ করা ককটেল ভেবে ঘটনাস্থলে গিয়ে ছিনতাইয়ের কথা জানতে পেরে ছিনতাইকারীদের পিছু ধাওয়া করে। কিন্তু তাদের পাওয়া যায়নি। তিনি জানান, জড়িতদের গ্রেপ্তারে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চলছে।
জানা গেছে, ব্যাংকে জমা দেওয়ার জন্যে বোর্ডবাজারের আরপি ট্রেডর্সের মালিক রতন মল্লিক (৪৮) দুটি ব্যাগে করে ৩৫ লাখ টাকা নিয়ে বাসা থেকে বের হন। এ সময় তিন কর্মচারি ছাড়াও স্ত্রীর তিন ভাই রোকন সরকার, রতন সরকার ও শোকান সরকার তার সঙ্গে ছিলো। সকাল সোয়া ৮টার দিকে তালা খুলে দোকানে প্রবেশের মুহূর্তে ৮ যুবক এসে শত শত মানুষের সামনেই তাদের বুকে অস্ত্র এবং ঘাড়ে চাপাতি ঠেকিয়ে টাকার ব্যাগ দুটি ছিনিয়ে নেয়। এ সময় চারটি মোটরসাইকেলে আরো চার যুবক এসে দাঁড়াতেই ছিনতাইকারীর গুলি ছুড়তে ছুড়তে টাকা নিয়ে টঙ্গীর দিকে চলে যায়।
রতন মল্লিকের শ্যালক রোকন সরকার (২৮) জানান, ওই আট যুবক স্বাভাবিকভাবে হেটে এসে কোমর থেকে পিস্তল ও চাপাতি বের করে আমাদের দিকে তাক করে। আমরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই তারা টাকা ছিনিয়ে নেয়। চলে যাওয়ার সময় আমরা চিৎকার করলে পাঁচ রাউন্ড গুলি ছুড়ে চলে যায়। ছিনতাই করতে তাদের সময় লেগেছে মাত্র দুই মিনিট।
ব্যবসায়ী রতন মল্লিক জানান, তিন দিন বন্ধ থাকার কারণে বিক্রির টাকা বাসায় নিয়ে রেখেছিলেন। দোকানের ওপরই অগ্রণী ব্যাংকের শাখা। ওই শাখায় জমা দেওয়ার জন্যেই বাসা থেকে টাকা নিয়ে বের হয়েছিলেন। তিনি অভিযোগ করেন, ছিনতাইকালে একশ গজ দূরেই পুলিশ রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিল। ছিনতাই শেষে টাকা নিয়ে পুলিশের সামনে দিয়েই গুলি করতে ছিনতাইকারীরা চলে গেছে।
জয়দেবপুর থানার এসআই মাহফুজুর রহমান জানান, পুলিশ ওই এলাকায় হরতাল ডিউটি করছিল। গুলির শব্দকে পিকেটারদের নিক্ষেপ করা ককটেল ভেবে ঘটনাস্থলে গিয়ে ছিনতাইয়ের কথা জানতে পেরে ছিনতাইকারীদের পিছু ধাওয়া করে। কিন্তু তাদের পাওয়া যায়নি। তিনি জানান, জড়িতদের গ্রেপ্তারে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চলছে।
‘কে জানত, এটাই হবে শেষ চুমু?’
‘প্রতিদিন স্কুলে যাওয়ার আগে শোভা আমাকে চুমু দিত। শনিবারও দিয়েছিল। কিন্তু
কে জানত, এটাই হবে শেষ চুমু?’ গত শনিবারের দুর্ঘটনায় নিহত জান্নাতুল মাওয়া
শোভার শোকসন্তপ্ত বাবা জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘মাত্র দেড় মাস আগে সৌদি আরব
থেকে দেশে ফিরেছি। এর মধ্যেই বড় মেয়েকে হারালাম।’
কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার হাতিমারা গ্রামে গতকাল রোববার যেন নেমে এসেছিল রাজ্যের নীরবতা। দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গ্রামে ঢোকার পথে নিহত শিশুদের স্মরণে কালো ব্যানার ঝুলিয়ে দিয়েছেন পার্শ্ববর্তী পুজকরা গ্রামের একদল তরুণ। মহাসড়ক লাগোয়া চায়ের দোকানে অন্যান্য দিনের তুলনায় মানুষের উপস্থিতি একেবারেই কম। পুরো গ্রামটিই যেন শোকে পাথর হয়ে আছে। অবুঝ সন্তানদের হারিয়ে ঘরে ঘরে কান্নার রোল উঠেছে।
‘কেমনে ওই মানিককে (রাকিব হোসেন) ভুলি থাকব। ছেলে আমার নামীদামি লোক অইত, আমার সেই স্বপ্ন ভেঙে গেল। আমার মনে হয়, ছেলে আমার কোনো জায়গায় গেছে, এখনই ফিরি আইব।’ এভাবে বলছেন আর বুক চাপড়ে বিলাপ করতে করতে বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন নিহত নাথেরপেটুয়া মডেল স্কুলের প্লে শ্রেণীর শিক্ষার্থী রাকিব হোসেন শুভর মা লাকি আক্তার।
শনিবার কুমিল্লার মনোহরগঞ্জের নাথেরপেটুয়া এলাকায় ট্রাকচাপায় সাত শিক্ষার্থী নিহত হয়। তাদের মধ্যে ছয়জন হাতিমারা ও একজন কাউলিপাড়া গ্রামের। সাত খুদে শিক্ষার্থীকে হারিয়ে হাতিমারা গ্রামের ঘরে ঘরে চলছে মাতম।
শিক্ষার্থীদের স্মরণে তিন দিনের শোক ঘোষণা করেছে মনোহরগঞ্জ উপজেলা পরিষদ। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে কালো ব্যাজ ধারণ ও কালো পতাকা উত্তোলন। নিহত ফাহাদুল ইসলাম মিথনের ভাই নাসির উদ্দিন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ট্রাকচালকের বিরুদ্ধে গতকাল মনোহরগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
লাকসাম-নোয়াখালী রেললাইন পার হয়ে প্লে শ্রেণীর শিক্ষার্থী রাকিব হোসেন ও মোক্তাকিম হোসেন হূদয়, নার্সারি শ্রেণীর শিক্ষার্থী আল আমিনের বাড়ি। একই বাড়ির তিন শিক্ষার্থীকে হারিয়ে ঘরে ঘরে কান্নার শব্দ শোনা যাচ্ছে। দুই ছেলের মধ্যে বড় ছেলে আল আমিনকে হারিয়ে তার বাবা আবদুল মালেক ও আয়েশা বেগম পাগলপ্রায়। মোক্তাকিম হোসেনের বাড়ি পার্শ্ববর্তী কাউলিপাড়া গ্রামে। নানার বাড়ি হাতিমারা গ্রামে থেকে পড়াশোনা করত মোক্তাকিম। চতুর্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থী টিপু সুলতান ওরফে স্বাধীনের মা সুরমা বেগম বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন। একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে তিনি খাটের মধ্যে গড়াগড়ি করছিলেন। তৃতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থী ফাহাদুল ইসলামের মা নাছিমা আক্তার ও বাবা মাহবুব আলম ছেলের বই নিয়ে খাটের মধ্যে বসে আছেন।
ফাহাদুলের মা নাছিমা আক্তার বলেন, ‘প্রতিদিন স্কুলে যাওয়ার আগে বলতাম, আল্লাহর আমানত, আল্লাহর হাওলা করে দিলাম। এ কেমন বিচার হলো।’
প্লে শ্রেণীর শিক্ষার্থী হাসিবুল হাসান নিহাদ তিন বোনের একমাত্র ভাই। দুর্ঘটনায় হাসিবুল মারা যায়। ওই দুর্ঘটনায় তার ছোট বোন ফাহমিদা তাহের তমা আহত হয়।
সংশোধনী: মনোহরগঞ্জের নাথেরপেটুয়া এলাকায় শনিবারের সড়ক দুর্ঘটনায় আট শিক্ষার্থী নিহতের খবর গতকাল প্রথম আলোয় প্রকাশিত হয়েছে। তাদের মধ্যে নাসির উদ্দিন নামের তৃতীয় শ্রেণীর একটি শিশুর মৃত্যুর কথা উল্লেখ করা হয়। প্রকৃতপক্ষে ওই নামে কেউ ভ্যানে ছিল না বলে জানিয়েছেন নাথেরপেটুয়া মডেল স্কুলের অধ্যক্ষ আমিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, নিহত শিশুদের প্রকৃত সংখ্যাটি হবে সাত।
মনোহরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহিরুল আনোয়ারও এই সংখ্যাটির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার হাতিমারা গ্রামে গতকাল রোববার যেন নেমে এসেছিল রাজ্যের নীরবতা। দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গ্রামে ঢোকার পথে নিহত শিশুদের স্মরণে কালো ব্যানার ঝুলিয়ে দিয়েছেন পার্শ্ববর্তী পুজকরা গ্রামের একদল তরুণ। মহাসড়ক লাগোয়া চায়ের দোকানে অন্যান্য দিনের তুলনায় মানুষের উপস্থিতি একেবারেই কম। পুরো গ্রামটিই যেন শোকে পাথর হয়ে আছে। অবুঝ সন্তানদের হারিয়ে ঘরে ঘরে কান্নার রোল উঠেছে।
‘কেমনে ওই মানিককে (রাকিব হোসেন) ভুলি থাকব। ছেলে আমার নামীদামি লোক অইত, আমার সেই স্বপ্ন ভেঙে গেল। আমার মনে হয়, ছেলে আমার কোনো জায়গায় গেছে, এখনই ফিরি আইব।’ এভাবে বলছেন আর বুক চাপড়ে বিলাপ করতে করতে বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন নিহত নাথেরপেটুয়া মডেল স্কুলের প্লে শ্রেণীর শিক্ষার্থী রাকিব হোসেন শুভর মা লাকি আক্তার।
শনিবার কুমিল্লার মনোহরগঞ্জের নাথেরপেটুয়া এলাকায় ট্রাকচাপায় সাত শিক্ষার্থী নিহত হয়। তাদের মধ্যে ছয়জন হাতিমারা ও একজন কাউলিপাড়া গ্রামের। সাত খুদে শিক্ষার্থীকে হারিয়ে হাতিমারা গ্রামের ঘরে ঘরে চলছে মাতম।
শিক্ষার্থীদের স্মরণে তিন দিনের শোক ঘোষণা করেছে মনোহরগঞ্জ উপজেলা পরিষদ। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে কালো ব্যাজ ধারণ ও কালো পতাকা উত্তোলন। নিহত ফাহাদুল ইসলাম মিথনের ভাই নাসির উদ্দিন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ট্রাকচালকের বিরুদ্ধে গতকাল মনোহরগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
লাকসাম-নোয়াখালী রেললাইন পার হয়ে প্লে শ্রেণীর শিক্ষার্থী রাকিব হোসেন ও মোক্তাকিম হোসেন হূদয়, নার্সারি শ্রেণীর শিক্ষার্থী আল আমিনের বাড়ি। একই বাড়ির তিন শিক্ষার্থীকে হারিয়ে ঘরে ঘরে কান্নার শব্দ শোনা যাচ্ছে। দুই ছেলের মধ্যে বড় ছেলে আল আমিনকে হারিয়ে তার বাবা আবদুল মালেক ও আয়েশা বেগম পাগলপ্রায়। মোক্তাকিম হোসেনের বাড়ি পার্শ্ববর্তী কাউলিপাড়া গ্রামে। নানার বাড়ি হাতিমারা গ্রামে থেকে পড়াশোনা করত মোক্তাকিম। চতুর্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থী টিপু সুলতান ওরফে স্বাধীনের মা সুরমা বেগম বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন। একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে তিনি খাটের মধ্যে গড়াগড়ি করছিলেন। তৃতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থী ফাহাদুল ইসলামের মা নাছিমা আক্তার ও বাবা মাহবুব আলম ছেলের বই নিয়ে খাটের মধ্যে বসে আছেন।
ফাহাদুলের মা নাছিমা আক্তার বলেন, ‘প্রতিদিন স্কুলে যাওয়ার আগে বলতাম, আল্লাহর আমানত, আল্লাহর হাওলা করে দিলাম। এ কেমন বিচার হলো।’
প্লে শ্রেণীর শিক্ষার্থী হাসিবুল হাসান নিহাদ তিন বোনের একমাত্র ভাই। দুর্ঘটনায় হাসিবুল মারা যায়। ওই দুর্ঘটনায় তার ছোট বোন ফাহমিদা তাহের তমা আহত হয়।
সংশোধনী: মনোহরগঞ্জের নাথেরপেটুয়া এলাকায় শনিবারের সড়ক দুর্ঘটনায় আট শিক্ষার্থী নিহতের খবর গতকাল প্রথম আলোয় প্রকাশিত হয়েছে। তাদের মধ্যে নাসির উদ্দিন নামের তৃতীয় শ্রেণীর একটি শিশুর মৃত্যুর কথা উল্লেখ করা হয়। প্রকৃতপক্ষে ওই নামে কেউ ভ্যানে ছিল না বলে জানিয়েছেন নাথেরপেটুয়া মডেল স্কুলের অধ্যক্ষ আমিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, নিহত শিশুদের প্রকৃত সংখ্যাটি হবে সাত।
মনোহরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহিরুল আনোয়ারও এই সংখ্যাটির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
সাভারে রড কাটার যন্ত্র বিস্ফোরিত হয়ে নিহত ২
সাভারের হেমায়েতপুরে একটি কারখানায় রড কাটার যন্ত্র বিস্ফোরিত হয়ে দুই শ্রমিক নিহত ও দুজন আহত হয়েছেন।
আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে হেমায়েতপুরে নির্মাণাধীন জালালাবাদ গ্রুপের টিনের কারখানায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তিরা হলেন: দিনাজপুরের বীরগঞ্জের আনোয়ারুল ইসলাম (২২) ও ঠাকুরগাঁওয়ের কমল (১৮)। হতাহত ব্যক্তিরা ওই কারখানার শ্রমিক ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও কারখানার শ্রমিক আবদুল বাসেত জানান, আজ সকালে কারখানায় চারজন শ্রমিক ওই যন্ত্র দিয়ে রড কাটার কাজ করছিলেন। এ সময় বিকট শব্দে যন্ত্রটি বিস্ফোরিত হলে এর বিভিন্ন যন্ত্রাংশ ওই শ্রমিকদের শরীরে লেগে তাঁদের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলে আনোয়ারুল নিহত হন। আহত তিনজনকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে কমলের মৃত্যু হয়।
কারখানার প্রকৌশলী মো. মহসীন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। সাভার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান জানান, লাশ দুটি এখন পুলিশ হেফাজতে আছে।
আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে হেমায়েতপুরে নির্মাণাধীন জালালাবাদ গ্রুপের টিনের কারখানায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তিরা হলেন: দিনাজপুরের বীরগঞ্জের আনোয়ারুল ইসলাম (২২) ও ঠাকুরগাঁওয়ের কমল (১৮)। হতাহত ব্যক্তিরা ওই কারখানার শ্রমিক ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও কারখানার শ্রমিক আবদুল বাসেত জানান, আজ সকালে কারখানায় চারজন শ্রমিক ওই যন্ত্র দিয়ে রড কাটার কাজ করছিলেন। এ সময় বিকট শব্দে যন্ত্রটি বিস্ফোরিত হলে এর বিভিন্ন যন্ত্রাংশ ওই শ্রমিকদের শরীরে লেগে তাঁদের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলে আনোয়ারুল নিহত হন। আহত তিনজনকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে কমলের মৃত্যু হয়।
কারখানার প্রকৌশলী মো. মহসীন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। সাভার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান জানান, লাশ দুটি এখন পুলিশ হেফাজতে আছে।
Sunday, March 17, 2013
ওবামা মিথ্যাবাদী: পেলিন
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাকে মিথ্যাবাদী বলে অভিহিত করেছেন রিপাবলিকান দলের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী সারাহ পেলিন।
আজ রোববার বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, গতকাল শনিবার ওয়াশিংটনের কাছে কনজারভেটিভ পলিটিকেল অ্যাকশন কনফারেন্সে পেলিন এ কথা বলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কা অঙ্গরাজ্যের সাবেক এই নেতা বলেন, ‘বারাক ওবামা সর্বকালের মধ্যে সবচেয়ে স্বচ্ছ প্রশাসনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। বারাক ওবামা, আপনি মিথ্যে বলেছেন।’
এ বক্তব্যের পর সেখানে অবস্থিত রিপাবলিকান আইনপ্রণেতা ও রক্ষণশীল কর্মীরা হাততালি দেন।
পেলিন তাঁর ভাষণে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের এক রিপাবলিকান সদস্যের বক্তব্যের পুনরাবৃত্তি করেন। ২০০৯ সালে কংগ্রেসে অবৈধ অভিবাসীদের স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে ভাষণ দেওয়ার সময় ওবামার বিরুদ্ধে ওই রিপাবলিকান সদস্য মিথ্যা বলার অভিযোগ তোলেন।
পেলিন তাঁর বক্তৃতায় রিপাবলিকান দলকে রক্ষণশীল মূল্যবোধ ধারণ করারও আহ্বান জানান।
আজ রোববার বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, গতকাল শনিবার ওয়াশিংটনের কাছে কনজারভেটিভ পলিটিকেল অ্যাকশন কনফারেন্সে পেলিন এ কথা বলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কা অঙ্গরাজ্যের সাবেক এই নেতা বলেন, ‘বারাক ওবামা সর্বকালের মধ্যে সবচেয়ে স্বচ্ছ প্রশাসনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। বারাক ওবামা, আপনি মিথ্যে বলেছেন।’
এ বক্তব্যের পর সেখানে অবস্থিত রিপাবলিকান আইনপ্রণেতা ও রক্ষণশীল কর্মীরা হাততালি দেন।
পেলিন তাঁর ভাষণে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের এক রিপাবলিকান সদস্যের বক্তব্যের পুনরাবৃত্তি করেন। ২০০৯ সালে কংগ্রেসে অবৈধ অভিবাসীদের স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে ভাষণ দেওয়ার সময় ওবামার বিরুদ্ধে ওই রিপাবলিকান সদস্য মিথ্যা বলার অভিযোগ তোলেন।
পেলিন তাঁর বক্তৃতায় রিপাবলিকান দলকে রক্ষণশীল মূল্যবোধ ধারণ করারও আহ্বান জানান।
Subscribe to:
Posts (Atom)