Wednesday, March 6, 2013

৫৬ বছর পর শ্বশুরবাড়িতে প্রণব তেষ্টা মেটালেন ডাবের জলে

নড়াইল থেকে: দিল্লি থেকে ঢাকা। তারপর শ্বশুরবাড়ি নড়াইলের ভদ্রবিলা। নিরাপত্তায় নেয়া হয় বাড়তি ব্যবস্থা। জলপানের নানা আয়োজন। জামাইবাবু যে ভারত অধিপতি। ভদ্রবিলার গৌরব আর অহঙ্কার। শ্বশুরবাড়ি বসে তেষ্টা মেটালেন ডাবের জলে। তারপর স্বাদ নিলেন কুলের। শ্বশুর পক্ষের লোকজন তাকে আপ্যায়নের জন্য বিভিন্ন ধরনের ফলমূলসহ দেশীয় বিভিন্ন ধরনের খাবারের আয়োজন করেছিলেন। কিন্তু তিনি ডাবের জল এবং কুল বরই ছাড়া আর খিছু খাননি। কুল খেতে খেতে আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে আলাপচরিতায় মেতে উঠেন। প্রথমেই শ্বশুরবাড়ির পারিবারিক মন্দিরে পূজা দেন। এরপর ওই বাড়িতে তৈরি করা মঞ্চে উঠে আত্মীয়দের উদ্দেশে কথা বলেন। প্রেসিডেন্টের আত্মীয়-স্বজনরা জানায়, প্রণব মুখার্জি নড়াইল সদর উপজেলার চাঁচড়া গ্রামে মামা শ্বশুরবাড়ি একটি মন্দির করে দেয়ার ঘোষণা দেন। শ্বশুরবাড়ির মন্দিরে পূজা-অর্চনাসহ শ্বশুরকুলের স্বজনদের সঙ্গে একান্তে ৫০ মিনিট সময় কাটান প্রণব ও তার স্ত্রী শুভ্রা। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার পঙ্কজ শরণ, তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মোস্তফা ফারুকী মোহাম্মদ, ডিসি জহুরুল হক, জেলা পরিষদ প্রশাসক এডভোকেট সুবাস বোসসহ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দ। বিয়ের ৫৬ বছর পর এ প্রথমবারের মতো তিনি গতকাল সস্ত্রীক শ্বশুরবাড়ি বেড়িয়ে গেলেন। সঙ্গে তাদের পালিত কন্যাও ছিল। এতকাল পরে জামাইবাবু ও বোন শুভ্রা মুখার্জিকে কাছে পেয়ে আবেগ আপ্লুত ছোটভাই কানাইলাল আনন্দ অশ্রু সংবরণ করতে পারেননি। জামাইবাবু প্রণব মুখার্জি ও বোন শুভ্রা মুখার্জি কানাইলালকে সান্ত্বনা দেন। তারা জানিয়েছেন সময় কম তাই বেশি সময় থাকা যাচ্ছে না। তবে ভাগ্যে থাকলে আবার দেখা হবে এমনটাই জানিয়েছেন। কানাইলাল তাদের রিসিভশন জানানোর জন্য সকাল থেকে প্রস্তুতি নিয়ে অধির আগ্রহে বাড়িতেই ছিলেন। ভারতের প্রেসিডেন্ট প্রণব মুখার্জি সস্ত্রীক হেলিকপ্টারযোগে সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে নড়াইল সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অবতরণ করেন। ডিসি জহুরুল হক তাকে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন নড়াইল-১ আসনের সংসদ সদস্য কবিরুল হক মুক্তি, নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য এস কে আবু বাকের, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য ফরিদা রহমান ও ফজিলাতুন্নেসা বাপ্পী ও পুলিশ সুপার সরদার রকিবুল ইসলাম। প্রণব মুখার্জি সস্ত্রীক সেখান থেকে সড়ক পথে শ্বশুরালয়ে যান। অন্য একটি হেলিকপ্টারে ২৩ সদস্যের একটি প্রতিনিধি (ডেলিগেট) দল নড়াইল শহরের কুড়িগ্রাম হলিপ্যাডে অবতরণ করেন। বেলা  ১১টা ২৭ মিনিটে শ্বশুরবাড়ি পৌঁছান বিশাল গাড়িবহর নিয়ে। গাড়ি বহরে এসএসএফ, দেশীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গাড়ি, ডিসি-এসপির গাড়ি, প্রটোকলের গাড়িসহ মোট ৩২টি গাড়ি ছিল। হু হু করে সাইরেন বাজিয়ে নড়াইলের এস এম সুলতান চিত্রা সেতু পার হয়ে গাড়িগুলো চলে যায় ভদ্রবিলা গ্রামে। রাস্তার দু’পাশে দাঁড়িয়ে ছিল হাজারো কৌতূহলি মানুষ ভারতের প্রেসিডেন্টকে এক নজর দেখার জন্য। কিন্তু সে সুযোগ কারও ভাগ্যে জোটেনি। তিনি যে গাড়িতে ছিলেন। গাড়িটি ছিল কালো রঙের। গ্লাসের রং ছিল কালো। বাংলাদেশ ও ভারতের পতাকা দেখে সাধারণ মানুষ অনুমান করেন এ গাড়িতে প্রেসিডেন্ট আছেন। প্রেসিডেন্টের হেলিকপ্টার নড়াইলে অবতরণের সঙ্গে সঙ্গে নড়াইলের প্রধান প্রধান সড়কের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। হেলিকপ্টারে উঠার পর আবার যান চলাচল শুরু হয়। প্রেসিডেন্ট প্রণব মুখার্জি বেলা ১২টায় ভদ্রবিলা শ্বশুরবাড়ি হতে বের হন। সড়ক পথে সোজা চলে আসেন হেলিকপ্টারের কাছে। ১২টা ৪৩ মিনিটের সময় তাকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি কুষ্টিয়ার শিলাইদহে যাওয়ার উদ্দেশে আকাশে উড়ে। প্রেসিডেন্ট ১ ঘণ্টা ৫৩ মিনিটের সফরে সার্বিক ব্যববস্থাপনায় ছিল জেলা প্রশাসন। তাদের নিরাপত্তার সার্বিক দায়িত্বে ছিল এসএসএফ। হরতালসহ বর্তমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতির বিষয় মাথায় রেখে মোতায়েন করা হয় দুই প্লাটুন বিজিবি, পুলিশ, আর্মড পুলিশ, র‌্যাবসহ অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থার বিপুলসংখ্যক সদস্য, ডগ স্কোয়াড ও নৌ ডুবুরি। সুদীর্ঘ বিবাহিত জীবনে এ প্রথম সদর উপজেলার ভদ্রবিলা গ্রামে শ্বশুরবাড়িতে পদচিহ্ন দিলেন বিশ্বের অন্যতম ক্ষমতাধর রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপ্রধান।
৩ দিনের সফর শেষে ফিরে গেলেন ভারতের প্রেসিডেন্ট
কূটনৈতিক রিপোর্টার জানান, ঢাকায় রাষ্ট্রীয় সফর শেষে দেশে ফিরে গেছেন ভারতের প্রেসিডেন্ট প্রণব মুখার্জি। সফরের তৃতীয় ও শেষ দিনে রাজধানী ঢাকা, নড়াইলের শ্বশুরালয়, কুষ্টিয়ায় কবিগুরুর স্মৃতিবিজড়িত শিলাইদহ কুঠিবাড়ী ও টাঙ্গাইলের ভারতেশ্বরী হোমস-এ ব্যস্ত সময় কাটিয়ে গতকাল সন্ধ্যায় দিল্লির উদ্দেশে রওনা হন। প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের মন্ত্রী-উপদেষ্টা ও পদস্থ সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তারা হজরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাকে বিদায় জানান। রোববার দুপুরে ফার্স্ট লেডি বাংলাদেশের মেয়ে শুভ্রা মুখার্জিসহ ৯০ সদস্যের প্রতিনিধি দল নিয়ে ঢাকায় এসেছিলেন ভারতের প্রথম বাঙালি প্রেসিডেন্ট প্রণব মুখার্জি। প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর প্রথম বিদেশ সফরে বাংলাদেশে আসা বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী প্রণব মুখার্জি এখানে অবস্থানকালে প্রেসিডেন্ট মো. জিল্লুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেন। এছাড়া, জাতীয় সংসদের স্পিকার আবদুল হামিদ এডভোকেট, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, পররাষ্ট্রমন্ত্রী  ডা. দীপু মনি, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, তথ্য মন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, প্রধানমন্ত্রীর দুই উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান ও ড. গওহর রিজভী, সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইদুজ্জামান এবং সপরিবারে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। সফরকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৭তম সমাবর্তনে তাকে সম্মানসূচক ডক্টর অব ল’ ডিগ্রি দেয়া হয়। তিনি সমাবর্তন বক্তা হিসেবে সেখানে গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতাও করেন। এছাড়া, মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদানের জন্য প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী যৌথভাবে তার হাতে ‘বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ সম্মাননা’ তুলে দেন। ভারতের প্রেসিডেন্ট ও ফার্স্ট লেডি তাদের সম্মানে আয়োজিত বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় ভোজে যোগ দেন। তিনি ঢাকাস্থ ভারতীয় নাগরিকদের সঙ্গেও মতবিনিময় করেন। ঢাকায় শত ব্যস্ততার মাঝেও ব্যাংককে চিকিৎসাধীন ড. কামাল হোসেনের মতো সুহৃদের খোঁজখবর নিতে ভুলেননি প্রণব মুখার্জি। সফরকালে ভারতীয় প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বিরোধী দলের নেতা বেগম খালেদা জিয়ার সাক্ষাতের কথা থাকলেও পরে তার দলের তরফে তা বাতিল করা হয়।
ঢাকায় রেল ইঞ্জিন উদ্বোধন: রেলওয়ের উন্নয়নে ভারত থেকে আমদানি করা ইঞ্জিন আর ট্যাংক ওয়াগন উদ্বোধন করেছেন ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। গতকাল দিনের শুরুতে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট  রেলস্টেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সঙ্গে নিয়ে ভারতের প্রেসিডেন্ট তা উদ্বোধন করেন। এ সময় তারা পাশাপাশি দাঁড়িয়ে সবুজ পতাকা নাড়ার পর ২০টি ট্যাংক ওয়াগন ও একটি ব্রেকভ্যান সংযুক্ত ব্রডগেজ ইঞ্জিন চালু হয়। স্টেশনে উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে রেলওয়ের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আবু তাহের ইঞ্জিন ও ওয়াগনগুলো আমদানির বিষয়ে অবহিত করেন। তিনি জানান, ভারতের সঙ্গে ১০০  কোটি ডলারের ঋণচুক্তির আওতায়  রেলওয়েতে ৭৩ কোটি ডলারের ১৪টি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে যার মধ্যে ৬৩ কোটি ডলারের ১১টি প্রকল্পের কাজ শুরু হয়ে গেছে। বাংলাদেশ  রেলওয়ে ভারতের কাছ থেকে ২৬টি ব্রডগেজ ইঞ্জিন, ১৫৬টি ব্রডগেজ ট্যাংক ওয়াগন ও ৬টি ব্রেকভ্যান কিনছে। তিনি জানান, আগামী এপ্রিল  থেকে ইঞ্জিনগুলো আসা শুরু হবে। তবে ভারতের প্রেসিডেন্টের সফর উপলক্ষে নির্ধারিত সময়ের আগেই গত বুধবার ২টি লোকোমোটিভ আসে। বর্ণাঢ্য এ উদ্বোধনীতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর, রেলমন্ত্রী  মো. মুজিবুল হক, ডাক ও  টেলিযোগাযোগমন্ত্রী সাহারা খাতুনসহ  রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

Tuesday, March 5, 2013

জামায়াত-শিবিরেরতালিকা তৈরি

আগামী ১৫ দিনের মধ্যে জামায়াত-শিবিরেরতালিকা তৈরি করে তা কেন্দ্রে পাঠাতে নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান ও যুব সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি ওমর ফারুক চৌধুরী।

মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে যুব সংগ্রাম পরিষদের উদ্যোগে হরতালবিরোধী সমাবেশে তিনি এ নির্দেশ দেন।

ওমর ফারুক বলেন, “বিশৃঙ্খলাকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। তবে আইন হাতে তুলে না নিয়ে, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে সোর্পদ ওমর ফারুক বলেন, “বিশৃঙ্খলাকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। তবে আইন হাতে তুলে না নিয়ে, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে সোর্পদ করতে হবে।”

প্রণবের হোটেলের বাইরে বিস্ফোরণ

সোমবার দুপুর দুটো৷হঠাত্‍ই বিস্ফোরণ ঢাকার সোনারগাঁও হোটেলের সামনে সার্ক ফোয়ারা মোড়ে৷ মুহূর্তের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়৷ কারণ এই হোটেলেই উঠেছেন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়৷ বাংলাদেশ পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গিয়েছে, দুপুর  দুটো নাগাদ সার্ক ফোয়ারা মোড়ে অটোয় চড়ে এসে দুই যুবক হাতবোমা ছুড়ে পালায়৷এর কিছুক্ষণ আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠান শেষে হোটেলে ফেরেন রাষ্ট্রপতি৷ তারপরই এই বিস্ফোরণের জেরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়৷ যদিও, বোমটি অত্যন্ত কম শক্তিশালী ছিল বলে জানিয়েছে ঢাকা পুলিশ৷ তবে, বিস্ফোরণ সত্ত্বেও রাষ্ট্রপতির পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচির কোনও পরিবর্তন হচ্ছে না বলে বিদেশমন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে৷< > রাজাকারদের ফাঁসির দাবি ও মৌলবাদীদের পাল্টা প্রতিবাদে  বাংলাদেশে এখন অগ্নিগর্ভ অবস্থা৷ এই অবস্থায় বাংলাদেশ সফরে গিয়ে, সেদেশের গণতন্ত্রের উপর আস্থা প্রকাশ করেন রাষ্ট্রপতি৷ একইসঙ্গে, নাম না করে মৌলবাদীদের হিংসাত্মক আন্দোলনকেও যে তিনি সমর্থন করেন না তা বুঝিয়ে দেন তিনি৷ এই পরিস্থিতিতে ভারতের রাষ্ট্রপতির হোটেলের সামনে এই বিস্ফোরণের ঘটনা রীতিমত চিন্তা বাড়িয়েছে বাংলাদেশ প্রশাসনের৷ মঙ্গলবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে একটি ট্রেনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যাবেন রাষ্ট্রপতি৷ এরপর যাবেন নরাইলে৷ রাষ্ট্রপতির সফর ঘিরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে৷
 তিনদিনের বাংলাদেশ সফরে গিয়ে ঢাকায় রয়েছেন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়৷ আজ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকের কথা রয়েছে রাষ্ট্রপতির৷ এদিকে, হরতালের দোহাই দিয়ে ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক এড়ালেন বাংলাদেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি সভানেত্রী খালেদা জিয়া৷ খালেদার আচরণে ক্ষুব্ধ ভারত৷ শাহবাগ আন্দোলন নিয়ে ভারতের অবস্থানে অসন্তুষ্ট হয়েই কি খালেদার এই আচরণ? কূটনৈতিক মহলে উঠছে প্রশ্ন৷

Monday, March 4, 2013

দুটি ট্যাবলেট পিসি আনছে স্যামসাং

ক্রেতাদের চাহিদা বিবেচনায় টাচ স্ক্রিনের দুটি অত্যাধুনিক ট্যাবলেট পিসি বাজারে ছাড়ছে স্যামসাং। 'সিরিজ ৭ ক্রোনোস' ও 'সিরিজ ৭ আল্ট্রা' নামের এ দুটি ট্যাবলেটে টাচ ছাড়াও থাকছে পূর্ণাঙ্গ এইচডি ডিসপ্লে, উইন্ডোজ-৮ সহ সর্বাধুনিক প্রযুক্তির সুবিধা। ট্যাবলেট পিসির পাশাপাশি অফিসে সার্বক্ষণিক ব্যবহারে জন্য একটি টাচ মনিটর বাজারে ছাড়ছে কম্পানিটি। দেখতে সাধারণ এলসিডি মনিটরের মতো হলেও 'সিরিজ ৭ টাচ (এসসি৭৭০)'তেও থাকছে উইন্ডোস-৮। এর ফলে ক্রেতারা এখন মনিটরে আঙুলের স্পর্শ দিয়েই কম্পিউটার পরিচালনা করতে পারবে।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর ক্রেতা-পরিবেশকদের নিয়ে ভারতের হায়দরাবাদের কনভেনশন সেন্টারে দুই দিনের 'স্যামসাং ফোরাম ২০১৩' সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরেন কম্পানিটির দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়ার প্রধান বিডি পার্ক। সম্মেলনের শেষ দিনে এ অঞ্চলের দেশগুলোর সাংবাদিকদের নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনের পর পণ্যগুলো প্রদর্শন করা হয়। অত্যাধুনিক এসব ট্যাবলেট ও মনিটরের পাশাপাশি উচ্চ প্রযুক্তির টেলিভিশন, গ্যালাক্সি সিরিজের ট্যাবলেট নোটও বাজারে ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছে স্যামসাং। পণ্যগুলো এ বছরের বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশে পাওয়া যাবে বলে জানান স্যামসাং বাংলাদেশ প্রধান চুন স্যু মুন।
সিরিজ ৭ ক্রোনোস : কোয়াড কোর সমৃদ্ধ এটি খুবই চিকন ও পাতলা। মাত্র ২০.৯ মিলিমিটার পুরু এটি। র‌্যাম এক্সিসিলেটর থাকায় ব্যবহারসহ ইন্টারনেট ব্রাউজিং এর ক্ষেত্রে ১৫০ শতাংশ বেশি গতিসুবিধা ভোগ করা যাবে। ১৫.৬ ইঞ্চির পূর্ণাঙ্গ এইচডি ডিসপ্লে ও ১০ পয়েন্ট টাচ সুবিধার কারণে কাজ ও বিনোদনের ক্ষেত্রে বাড়তি সুবিধা পাওয়া যাবে।
সিরিজ ৭ আল্ট্রা : এটি আরো পাতলা ও হালকা। এতে থাকছে ১৩.৩ ইঞ্চির পূর্ণাঙ্গ এইচডি ডিসপ্লে ও ১০ পয়েন্ট টাচ স্ক্রিন। এর ২৫৬ গিগাবাইট ধারণ ক্ষমতা রয়েছে।
সিরিজ ৭ টাচ (এসসি ৭৭০) : নতুন এ মনিটরের মাধ্যমে স্যামসাং বিশ্বের মনিটর বাজারে শীর্ষ স্থানে পৌঁছানোর আশা করছে। এটি স্যামসাংয়ের বাজারে ছাড়া প্রথম উইন্ডোস-৮ সমৃদ্ধ ১০ পয়েন্ট মাল্টিটাচ ডিসপ্লে। মনিটরে আঙুল ব্যবহার করেই ক্রেতা যেকোনো কিছু ঘুরানো, সিলেক্ট করাসহ বিভিন্ন ধরনের কাজ করতে পারবে।
গ্যালাক্সি নোট ৫১০ : ২০১২ সালে সারা বিশ্বে মোবাইল ফোনসেটের মধ্যে গ্যালাক্সি নোটের বিক্রি সবচেয়ে বেশি হয়েছে জানিয়ে কম্পানি কর্তৃপক্ষ জানায়, ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে আরো আকর্ষণীয় নোট তৈরি করেছে স্যামসাং। এর মধ্যে একটি হলো গ্যালাক্সি নোট ৫১০। এটিকে যে কেউ ট্যাবলেট হিসেবে ব্যবহারের পাশাপাশি নোট, ডায়েরি ও ই-বুক রিডার হিসেবেও ব্যবহার করতে পারবে। এটিকে ডিজিটাল শিডিউলার ও ব্যক্তিগত ডায়েরি হিসেবেও ব্যবহার করা যাবে। নোটটির ধারণক্ষমতা ১৬ গিগাবাইট।
৮৫ এস ৯ টিভি : ৮৫ ইঞ্চি মনিটরের এ টেলিভিশনটি বাংলাদেশসহ এ অঞ্চলের দেশগুলোর বাজারে পাওয়া যাবে আগামী মে মাসের শেষের দিকে। এ ছাড়া ৬৫ ইঞ্চির মনিটরের আরেকটি টেলিভিশনও বাজারে আসবে প্রায় একই সময়ে।
এনএক্স৩০০ : এটি একটি স্মার্ট ক্যামেরা। এতে রয়েছে এনএক্স ৪৫ মিমি এফ ১.৮ ২ডি/৩ডি লেন্স। এটি দিয়ে স্থির চিত্রের পাশাপাশি ভিডিও ধারণ করা যাবে। এতে রয়েছে ২০.৩ মেগাপিক্সেল এপিএস-সি সিএমওএস সেন্সর। ফলে উচ্চ মানসম্পন্ন ছবি তোলা যাবে।
এ ছাড়া মিনিটে ৪০ পৃষ্ঠা পর্যন্ত ছাপানোর ক্ষমতাসম্পন্ন প্রিন্টার, অত্যাধুনিক রেফ্রিজারেটর ও ওয়াশিং মেশিন বাজারে ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছে কম্পানিটি।

এইচএসসি ২০১৩ প্রস্তুতি : বাংলা প্রথম পত্র

সৃজনশীল প্রশ্ন একটি তুলসী গাছের কাহিনী
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
নদীভাঙন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার হয়ে প্রতিবছর অসংখ্য মানুষ বাস্তুভিটা হারিয়ে সর্বস্বান্ত ও আশ্রয়হীন হয়ে পড়ে। একটু মাথা গোঁজার ঠাঁই খুঁজতে তারা ছুটে আসে শহরে। দু-চারজনের বস্তিতে ঠাঁই মিললেও অধিকাংশই জীবনবঞ্চনার শিকার হয়ে পথে-ঘাটে ও স্টেশনে-ফুটপাতে পড়ে থাকে। হরিদাস তাদেরই একজন। হিন্দু বলে বস্তিতেও তার ঠাঁই মেলে না। অগত্যা সে লঞ্চঘাটের একটা নির্জন স্থানে আশ্রয় পেয়ে যেন প্রাণ ফিরে পায়। একটা অচেনা কষ্টকে দীর্ঘশ্বাসে দূর করতে চায় হরিদাস। কিন্তু তার চোখে কেবলই হারানো বাস্তুভিটার বেদনাময় চিত্র। এরই মধ্যে হঠাৎ পুলিশের উচ্ছেদ অভিযানে হরিদাস আশ্রয়হীন হয়ে পড়ে।
ক) কত দিনের মাথায় উদ্বাস্তু দল দখলকৃত বাড়িটি ছেড়ে দিয়েছিল?
অথবা, বাড়ি ছাড়ার মেয়াদ চব্বিশ ঘণ্টা থেকে বেড়ে কত দিন হয়েছিল?
খ) 'অন্যের অপমান দেখার নেশা বড় নেশা'_কথাটির প্রাসঙ্গিক ব্যাখ্যা দাও।
গ) নদীভাঙন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার মানুষগুলোর সঙ্গে 'একটি তুলসী গাছের কাহিনী' গল্পের উদ্বাস্তু মানুষগুলোর কী সাদৃশ্য/বৈসাদৃশ্য রয়েছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ) দেশ বিভাগের ফলে সৃষ্ট উদ্বাস্তু সমস্যা ও সাম্প্রদায়িকতা উদ্দীপকে কিভাবে প্রতিফলিত/ প্রতিস্থাপিত হয়েছে? 'একটি তুলসী গাছের কাহিনী' গল্পের সমাজবাস্তবতা আলোচনা প্রসঙ্গে বিশ্লেষণ করো।

উত্তর : ক. দশম দিনের মাথায় উদ্বাস্তু দল দখলকৃত বাড়িটি ছেড়ে দিয়েছিল।
অথবা, (উত্তর) : বাড়ি ছাড়ার মেয়াদ চব্বিশ ঘণ্টা থেকে সাত দিন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছিল।
খ) সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর 'একটি তুলসী গাছের কাহিনী' গল্পে দেশ বিভাগের অব্যবহিত পরই ঢাকার একটি পরিত্যক্ত বাড়ি দখল করে কলকাতা থেকে আগত কয়েকজন উদ্বাস্তু কর্মচারী।
কিন্তু ভাগ্য তাদের সুপ্রসন্ন নয়। উদ্বাস্তু দলটি বাড়ি দখল করার কয়দিনের মাথায় পুলিশ এসে জানায়, সরকারের হুকুমে তাদের এ বাড়ি ছেড়ে দিতে হবে। এতে বাড়ির নতুন বাসিন্দারা নানা রকম ওজর-আপত্তি তুলতে থাকে। এমতাবস্থায় আশপাশে লোকজন জড়ো হয়। নিরাশ্রিত ভাগ্যাহত ওই উদ্বাস্তু দলটির তখনকার দুর্দশাপূর্ণ পরিস্থিতিতে রাস্তায় কৌতূহলী জনতার ভিড় জমা প্রসঙ্গেই গল্পের লেখক আলোচ্য উক্তিটি করেছেন। আমাদের সমাজের উৎসুক জনতার সাধারণ প্রবণতা হলো কারো কোনো অপমানজনক পরিস্থিতিতে অতিমাত্রায় কৌতূহল প্রদর্শন। লেখক সাধারণ জনতার এই চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য বোঝাতেই উক্তিটি করেছেন।
গ) সমাজসচেতন কথাশিল্পী সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর 'একটি তুলসী গাছের কাহিনী' গল্পে দেশ বিভাগের ফলে সৃষ্ট উদ্বাস্তু জীবনের সংকট চমৎকারভাবে অঙ্কিত হয়েছে।
দেশ বিভাগের ফলে ধর্মীয় দ্বিজাতিতত্ত্বের কারণে আপন নিবাস খুঁজে পেতে মানুষ দেশত্যাগী হয়। আশ্রিত মানুষগুলো ঘরবাড়ি ছেড়ে অপর দেশে গিয়ে হয় অনাশ্রিত, উদ্বাস্তু। তদ্রূপ উদ্দীপকের মানুষগুলোও নদীভাঙন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার হয়ে বাস্তুভিটা হারিয়ে পরিণত হয় উদ্বাস্তুতে। এ যেন গল্পের উদ্বাস্তু সংকটের আরেক প্রতিচিত্র।
গল্পে কলকাতা থেকে আগত মতিন, মোদাব্বের ও তার সঙ্গীরা ঢাকা শহরে এসে আশ্রয়ের সন্ধানে উদয়াস্ত ঘোরাফেরা করতে থাকে। হঠাৎ একদিন তারা একটি নির্জন তালাবদ্ধ পরিত্যক্ত বাড়ি পেয়ে ন্যায়-অন্যায়ের বোধ উপেক্ষা করে হৈ-হুল্লোড় করে দখল করে নেয়। কলকাতার ঘিঞ্জি পরিবেশে জীবনযাপন আর উদ্বাস্তু জীবনের অনিশ্চয়তা কাটিয়ে তারা ভাবতে থাকে, দখলকৃত বাড়িটি তাদের জন্য এক পরম নির্ভরতার আশ্রয়। উদ্বাস্তু জীবনের উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠা থেকে তারা যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচে। ভিন্ন প্রেক্ষাপটে হলেও উদ্দীপকের মানুষগুলোও বাস্তুভিটা হারিয়ে আশ্রয়হীন হয়ে মাথা গোঁজার ঠাঁই খুঁজতে শহরে ছুটে আসে। নিঃস্ব হরিদাস তাদেরই একজন। একটু মাথা গোঁজার ঠাঁই খুঁজতে শহরে এসে বস্তিতেও তার ঠাঁই মেলে না। অগত্যা সে লঞ্চঘাটে আশ্রয় নেয়। কিন্তু সে আশ্রয়ও বেশি দিন স্থায়ী হয় না। গল্পের উদ্বাস্তু মানুষগুলোর মতোই পুলিশের উচ্ছেদ অভিযানে আবার আশ্রয়হীন হয়ে পড়ে। দেশ বিভাগের কারণেই হোক আর প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলেই হোক তারা সবাই উদ্বাস্তু জীবনের গভীর সংকটে নিমজ্জিত। তারা বাস্তুভিটা হারিয়ে আশ্রয়হীন উদ্বাস্তুতে পরিণত হয়েছে। এদিক থেকে নদীভাঙন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার মানুষগুলোর সঙ্গে 'একটি তুলসী গাছের কাহিনী' গল্পের উদ্বাস্তু মানুষগুলোর সাদৃশ্য রয়েছে। বাস্তুহারা, সর্বহারা, অনাশ্রিত জীবনের এমন মানবিক বাস্তবতাই জীবনসন্ধানী লেখক সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর 'একটি তুলসী গাছের কাহিনী' গল্পে চিত্রিত হয়েছে।
ঘ) কথাশিল্পী সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ তাঁর 'একটি তুলসী গাছের কাহিনী' গল্পে দেশ বিভাগের ফলে উদ্বাস্তু মানুষের দুঃখ-জর্জরিত অনিশ্চিত জীবনের কথা নিখুঁত বর্ণনায় উপস্থাপন করেছেন।
উদ্দীপকে নদীভাঙন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার হয়ে মানুষের জীবনের যে দুর্ভোগপূর্ণ জীবনচিত্র ফুটে উঠেছে তা যেন গল্পের উদ্বাস্তু সংকটের আরেক প্রতিচিত্র। গল্পের উদ্বাস্তু মানুষগুলোর মানবেতর জীবনযাপনের সঙ্গে উদ্দীপকের উদ্বাস্তু মানুষগুলোর জীবনবঞ্চনার কোনো পার্থক্য নেই। উভয় ক্ষেত্রেই সংকটময় উদ্বাস্তু জীবনের এক করুণ চিত্র ফুটে উঠেছে।
লেখক তাঁর গল্পে দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে দেশ ভাগ হয়ে যাওয়ায় সৃষ্ট সামাজিক সমস্যার সামগ্রিক চিত্রটি তুলে ধরেছেন। দেশ ভাগের পেছনে সক্রিয় ছিল জটিল রাজনীতি। এতে সৃষ্ট উদ্বাস্তু সমস্যাটিই প্রধানরূপে প্রতীয়মান হয়; কিন্তু এর পেছনে সাম্প্রদায়িক সংকট প্রকটরূপে বিদ্যমান ছিল। সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, অনেক মানুষের স্বদেশভূমি ত্যাগ, উদ্বাস্তুদের আগমনে সমাজজীবন ক্ষত-বিক্ষত হয়েছিল। পূর্ব বাংলা থেকে হিন্দুরা চলে যায় পশ্চিম বাংলায়। পশ্চিম বাংলা থেকে মুসলমানরা চলে আসে পূর্ব বাংলায়। দেশত্যাগী হয়ে হিন্দু-মুসলমান উভয়েই হারায় বাস্তুভিটা। ফলে তাদের জীবনে নেমে আসে চরম দুর্দশা। অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার প্রশ্নে মাথা গোঁজার একটু নিরাপদ আশ্রয়ের প্রত্যাশায় এসব মানুষের মধ্যে দেখা যায় নৈতিক মূল্যবোধের চরম অবক্ষয়। সামাজিক অস্থিরতার ডামাডোলে জবরদখল, লুটতরাজ স্বাভাবিক মনে হয়। অবৈধ দখলের মাধ্যমে কেউ কেউ আশ্রয় জোটাতে পারলেও জীবনের নিরাপত্তা, সংশয়ের মধ্যেই থেকে যায়।
ভিন্ন প্রেক্ষাপটে হলেও উদ্দীপকে আমরা অনুরূপ চিত্রই প্রতিফলিত হতে দেখি। প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার মানুষগুলোও বসতবাড়ি হারিয়ে সর্বস্বান্ত ও আশ্রয়হীন হয়ে পড়ে। একটু মাথা গোঁজার ঠাঁই খুঁজতে তারা ছুটে আসে শহরে। ভাগ্যগুণে গল্পের উদ্বাস্তু মানুষগুলোর মতো পরিত্যক্ত বাড়ি পাওয়ার মতোই নদীভাঙা মানুষগুলোর দু-চারজনের ঠাঁই মেলে বস্তিতে। গল্পের উদ্বাস্তুদের মতো অনেককেই জীবন বঞ্চনার শিকার হয়ে পথেঘাটে, স্টেশনে-ফুটপাতে পড়ে থাকতে দেখা যায়। হরিদাস তাদেরই একজন। গল্পে কলকাতা থেকে আগত মতিন, মোদাব্বেরসহ তাদের সঙ্গীরা ঢাকার একটি পরিত্যক্ত বাড়ি দখল করে নিলেও উদ্দীপকের হরিদাসের কপালে বস্তিও জোটে না। 'হিন্দুয়ানির চিহ্ন' তুলসী গাছটি শেষ পর্যন্ত রক্ষা পেলেও হিন্দু বলে হরিদাসের বস্তিতেও ঠাঁই মেলে না। পুলিশের উচ্ছেদ অভিযানে তার জীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। আর এই উদ্বাস্তু জীবনের দুর্ভোগ-দুর্দশার বেদনাময় চিত্রটিই লেখক 'একটি তুলসী গাছের কাহিনী' গল্পে তুলে ধরেছেন।

শহিদুল ইসলাম
প্রভাষক
ন্যাশনাল আইডিয়াল কলেজ
খিলগাঁও, ঢাকা

এইচআইভির চিকিত্সায় সাফল্য

এইচআইভি ভাইরাস শরীরে নিয়ে জন্ম নেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের একটি শিশুর সেরে ওঠার লক্ষণ দেখতে পেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকেরা। তাঁরা বিশেষ ধরনের একটি ওষুধ প্রয়োগ করে এ সাফল্য পেয়েছেন।
গবেষকেরা আশা করছেন, বিশেষ ধরনের এ চিকিত্সা পদ্ধতিটি সফল হলে শিশুদের এইচআইভি সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করা যাবে। এক খবরে এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি অনলাইন।
তাঁরা জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের মিসিসিপি অঞ্চলের মফস্বলের একটি হাসপাতালে শরীরে এইচআইভি ভাইরাস নিয়ে জন্ম হয়েছিল মেয়েশিশুটির। শিশুটির বয়স যখন এক বছর পূর্ণ হয়, তখন থেকেই তাকে চিকিত্সা দেওয়া শুরু হয়েছিল। এখন তার বয়স আড়াই বছর। গত এক বছরে শিশুটির শরীরে এইচআইভি-সংক্রান্ত কোনো জটিলতা দেখতে পাননি গবেষকেরা। তাঁরা অবশ্য আরও পর্যবেক্ষণ করবেন এবং এ চিকিত্সা পদ্ধতিটি নিয়ে পরীক্ষা চালাবেন বলেই জানিয়েছেন।
গবেষকদের ভাষ্য, মেয়েটি যদি সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে ওঠে, তবে এইচআইভি থেকে রক্ষা পাওয়ার ক্ষেত্রে দ্বিতীয় ঘটনা হবে এটি। ২০০৭ সালে টিমোথি রে ব্রাউন নামে একজন ব্যক্তি এইচআইভি থেকে রক্ষা পান।
যুক্তরাষ্ট্রের জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ডেবোরাহ পারসুদ আটলান্টায় অনুষ্ঠিত রেট্রোভাইরাসেস অ্যান্ড অপরচুনিস্টিক ইনফেকশনস নামক এক সম্মেলনে এ সাফল্যের কথা জানান।
গবেষক পারসুদ জানিয়েছেন, শিশুদের এইচআইভি নিরাময়যোগ্য হতে পারে—এ পরীক্ষা তা প্রমাণ করেছে। যে শিশুটিকে নিয়ে এ পরীক্ষা করা হয়েছে তার ক্ষেত্রে এইচআইভি সংক্রমণের ঝুঁকি ছিল সর্বোচ্চ। গবেষকেরা মেয়েটির চিকিত্সায় দ্রুততম সময়ে এ ওষুধ প্রয়োগ করেন।

হাতঘড়িই স্মার্টফোন

অনেকেই হয়তো আশা করেছিলেন যে স্মার্টফোন যদি হাতে পরা যেত! তাঁদের জন্য সুখবর। শিগগিরই হাতঘড়ি ব্যবহার করেই ফোনকল থেকে শুরু করে ইন্টারনেট ব্রাউজ, ছবি তোলা এমনকি ভিডিওচিত্রও ধারণ করা যাবে।
অবশ্য বাজার গবেষকেরা এ আশায় আরও রসদ জুগিয়ে বলছেন, চলতি বছর হবে পরিধেয় প্রযুক্তির বছর। অর্থাত্ এ বছর হাতঘড়ি ও চশমার মতো প্রযুক্তিপণ্যের প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়বে। তার অর্থ—এমনতরো আরও বেশ কিছু স্মার্ট পণ্য চলতি বছরেই বাজারে আসবে।
এ বিষয়ে মানুষের আগ্রহের কথা মাথায় রেখে কানাডার ইলেকট্রনিক পণ্য নির্মাতা নেপচুন কম্পিউটার সম্প্রতি এমন একটি হাতঘড়ি তৈরি করছে, যা স্মার্টফোনের মতোই ব্যবহার করা যাবে। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে প্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট গিজম্যাগ।
নেপচুনের তৈরি করা এ হাতঘড়ির নাম হবে ‘পাইন’। নকশা পর্যায়ে থাকা এ হাতঘড়িতে মাইক্রো সিমকার্ড ব্যবহার করে ফোন করা যাবে। এ ছাড়া এর মাধ্যমে ই-মেইল পাঠানো, সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইট ব্যবহার করা, গান শোনা, ভিডিওচিত্র দেখা ও অডিও-ভিডিও ধারণ করা যাবে। হাতঘড়িতে থাকবে পাঁচ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরা, হার্ট রেট মনিটর, এফএম রেডিও, ডিজিটাল কম্পাস। নিয়ার ফিল্ড কমিউনিকেশন বা এনএফসি প্রযুক্তির ‘পাইন’ হাতঘড়ি হবে পানিরোধী।
অ্যান্ড্রয়েডনির্ভর ২.৪ ইঞ্চি মনিটরযুক্ত পাইন হাতঘড়িতে ব্লুটুথ, ওয়াইফাই, ভারচুয়াল কোয়ারটি কিবোর্ড থাকবে।
নেপচুন কর্তৃপক্ষের ভাষ্য, তাদের তৈরি ‘পাইন’ হাতঘড়ির পাশাপাশি ক্ষুদ্র স্মার্টফোন হিসেবেও ব্যবহার করা যাবে। এ জন্য হাতঘড়ির বেল্ট খুলে রাখতে হবে।
চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাস নাগাদ ‘পাইন’ ব্র্যান্ডের হাতঘড়ি যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার বাজারে আসতে পারে। এ পণ্যটির দাম হতে পারে প্রায় ৩৫০ মার্কিন ডলার।
প্রযুক্তি বিশ্লেষকেরা জানিয়েছেন, স্মার্টফোনের মতোই সব ধরনের প্রযুক্তি নিয়ে বাজারে আসছে স্মার্ট হাতঘড়ি। তাই নতুন ক্রেতাদের ভাবতেই হবে স্মার্টফোন, নাকি স্মার্ট ওয়াচ?

মানসিক চাপ কমাতে ছয়টি উপায়

মানসিক চাপে ভোগেন না এমন কোনো মানুষ নেই। কিন্তু অনেকেই এই চাপ মোকাবিলা করতে পারেন না। এর প্রভাব ফেলে শরীরে ও মনে, দেখা দেয় নানা রোগ। তাই মানসিক চাপে বা টেনশনে পড়লে দ্রুত তা থেকে বের হয়ে আসার চেষ্টা করুন। এ ক্ষেত্রে নিচের পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করতে পারেন:
১. লম্বা করে শ্বাস নিন নাক দিয়ে, কয়েক সেকেন্ড ধরে রাখুন, শ্বাস ছাড়ুন মুখ দিয়ে। প্রশ্বাসের সময় তলপেট প্রসারিত করুন। চোখ বন্ধ করে এ পদ্ধতি প্রয়োগ করুন, অনেকটা স্বস্তি অনুভব করবেন। রক্তচাপ কমবে, পেশি বিশ্রাম পাবে, উদ্বেগ-দুশ্চিন্তা প্রশমিত হবে।
২. মন ভালো করার অন্যতম কার্যকর উপায় হচ্ছে প্রিয় গানে মগ্ন হওয়া। তা ক্লাসিক, রবীন্দ্র, নজরুল, আধুনিক, ব্যান্ড বা সিনেমার গান যেকোনো কিছুই হতে পারে।
৩. বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে আড্ডা দিন। বেড়াতে যান বন্ধু বা আত্মীয়স্বজনের বাসায়। স্থানের পরিবর্তন মনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
৪. সুনিদ্রা মানসিক চাপ কমিয়ে দেয়। ঘুম না এলে গল্পের বই পড়তে পড়তে বা গান শুনতে শুনতে ঘুমান। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ইচ্ছেমতো ঘুমের ওষুধ খাবেন না।
৫. শুধু শরীর সুস্থ রাখাই নয়, ব্যায়াম মানসিক চাপ কমাতেও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে।
৬. মানসিক চাপে থাকলে অনেকেই ঝুঁকে পড়েন মাদকের দিকে। এতে কোনো উপকারই হয় না বরং শারীরিক ও মানসিক স্থায়ী ক্ষতি হয়। তাই ধূমপান ও মাদককে ‘না’ বলুন।
মানসিক চাপে শরীরের ক্ষতি
মাথা
খিটখিটে মেজাজ, মনঃসংযোগের ঘাটতি, অনিদ্রা
ত্বক
ত্বকের নানা সমস্যা, যেমন: ব্রণ
হাড়ের সংযোগস্থল ও মাংসপেশি
যন্ত্রণা, চাপ ও হাড়ক্ষয়
হূৎপিণ্ড
রক্তচাপ, হূদ্স্পন্দন ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ে
পাকস্থলী
পেটব্যথা, বমিভাব ও ওজনের ওঠানামা
অন্ত্র
বদহজম, ডায়রিয়া ও কোষ্ঠকাঠিন্য

এইচএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি-৭১

অধ্যায়-১
প্রিয় শিক্ষার্থীরা, আজ তোমাদের জন্য ব্যবসায় নীতি ও প্রয়োগ ১ম পত্রের ১ নম্বর অধ্যায় থেকে বহুনির্বাচনী প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করব।
 বহুনির্বাচনী প্রশ্নোত্তর
১. Being busy বা ব্যস্ত থাকা ইংরেজি কোন শব্দের আক্ষরিক অর্থ?
ক. Business খ. Commerce
গ. Trade ঘ. Industry
২. মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে পণ্য ও সেবাসামগ্রী উৎপাদন, বণ্টন ও এর সংশ্লিষ্ট সব বৈধ অর্থনৈতিক কাজকে কী বলে?
ক. ব্যবসা খ. বাণিজ্য
গ. পণ্য বিনিময় ঘ. আত্মকর্মসংস্থান
৩. নিচের কোনটি ব্যবসার সমীকরণ?
ক. B = I+T+AT খ. B = IT+TA+TE
গ. B = TM+IAT+TEM ঘ. B = I+EAT
৪. ব্যবসার অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য কোনটি?
ক. মূলধন বৃদ্ধি খ. কর্মসংস্থান সৃষ্টি
গ. অর্থ উপার্জন ঘ. জাতীয় সম্পদের সদ্ব্যবহার
৫. ‘বিক্রির অভিপ্রায়’কে চিহ্নিত করা যায় ব্যবসার— i. কার্যাবলি হিসেবে
ii. উদ্দেশ্য হিসেবে iii. বৈশিষ্ট্য হিসেবে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i খ. ii গ. i ও iii ঘ. iii
৬. খনিজ তেলকে পরিশোধন করে অকটেন, পেট্রল, কেরোসিন ইত্যাদি প্রস্তুত কোন শিল্পের অন্তর্ভুক্ত?
ক. সংযোজন শিল্প খ. বিশ্লেষণ শিল্প
গ. যৌগিক শিল্প ঘ. সমন্বিত শিল্প
৭. ট্রেড কোন ধরনের বাধা দূর করে?
ক. স্থানগত খ. ব্যক্তিগত গ. সময়গত ঘ. অর্থগত
৮. বাদশা মিয়া ঢাকার হাজারীবাগ বাজার থেকে প্রতিদিন সকালে টাটকা শাকসবজি কিনে ভ্যানগাড়িতে করে ঝিগাতলার বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করেন। বাদশা মিয়া কোন ধরনের উপযোগ সৃষ্টি করেন?
ক. ব্যক্তিগত ও স্থানগত খ. সময়গত ও অর্থগত গ. ঝুঁকিগত ও স্থানগত ঘ. অর্থগত ও ব্যক্তিগত
উদ্দীপকটি পড়ে ৯ ও ১০ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও:
কামরুল ‘শেখ হাসিনা যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র’ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে বাড়িতে একটি ‘ডেইরি ফার্ম’ গড়ে তোলেন। হঠাৎ গরুর খুরারোগ বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ায় সে চিন্তিত হয়ে পড়ল।
৯. উদ্দীপকে বর্ণিত ফার্মটি কোন ধরনের শিল্প?
ক. উৎপাদন খ. সেবামূলক গ. প্রজনন ঘ. নির্মাণ
১০. খুরারোগ থেকে কামরুলের ব্যবসার মূলধন রক্ষার্থে করণীয়— i. ফার্মের সব গরু বিক্রি করা
ii. নিয়মিত খুরারোগের প্রতিষেধক ব্যবহার করা
iii. অন্য কোনো ব্যবসায় পুঁজি স্থানান্তর করা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i খ. ii গ. iii ঘ. i, ii ও iii
১১. ব্যবসা সফল হওয়ার জন্য কোন উপাদানটি সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ?
ক. সামাজিক দায়িত্ব পালন
খ. ভোক্তার সন্তুষ্টি অর্জন
গ. অপেক্ষাকৃত কম মূল্যে পণ্য বিক্রি
ঘ. অধিক উৎপাদন
১২. বিভিন্ন দ্রব্যের মৌলিক মানের সীমা নির্ধারণকে কী বলে?
ক. প্রমিতকরণ খ. পর্যায়িতকরণ
গ. বাজারজাতকরণ ঘ. মোড়কীকরণ
১৩. নিচের কোনটি ব্যবসার বৈশিষ্ট্য নয়?
ক. উপযোগ সৃষ্টি খ. বিক্রির অভিপ্রায়
গ. মুনাফা অর্জন ঘ. দূরদৃষ্টি
১৪. খাল-বিল, নদী ও সাগর থেকে মাছ ধরা কোন শিল্পের অন্তর্গত?
ক. সর্জন খ. প্রজনন গ. নিষ্কাশন ঘ. সেবা পরিবেশক
১৫. নিচের কোনটি প্রত্যক্ষ-সেবার উদাহরণ?
ক. মৎস্য চাষ খ. সাংবাদিকতা
গ. বিদ্যুৎ উৎপাদন ঘ. রাস্তাঘাট নির্মাণ
১৬. মো. মেহেদী আলু উৎপাদনের মৌসুমে কম মূল্যে আলু কিনে কোল্ডস্টোরে সংরক্ষণ করেন এবং পরবর্তী সময়ে অধিক দামে বিক্রি করেন। মেহেদীর ব্যবসাটি ব্যবসার কোন বিভাগের আওতাধীন?
ক. শিল্প খ. বাণিজ্য
গ. প্রত্যক্ষ-সেবা ঘ. পণ্যবিনিময়
১৭. ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকাগুলোয় অধিক পরিমাণে শিল্পকারখানা গড়ে ওঠার গুরুত্বপূর্ণ কারণ কোনটি?
ক. সহজে শ্রমিক পাওয়া যায় বলে
খ. ব্যবসায় পরিবেশের অনুকূল উপাদানের জন্য
গ. কাঁচামালের সহজলভ্যতার জন্য
ঘ. শিল্পকারখানা নির্মাণের জন্য সহজে জায়গা পাওয়া যায় বলে
১৮. নিচের কোনটি ব্যবসায়িক সিদ্ধান্তকে সর্বাধিক প্রভাবিত করে?
ক. যোগাযোগব্যবস্থা খ. ব্যবসার পণ্য
গ. ব্যবসার পরিবেশ ঘ. ব্যবসার স্থান
১৯. সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিবেশকে প্রভাবিত করে কোনটি?
ক. জনগোষ্ঠী খ. মানবসম্পদ
গ. সরকারি নীতিমালা ঘ. কারিগরি শিক্ষা
২০. কোনো দেশের প্রতিরক্ষাব্যবস্থা শক্তিশালী হওয়া গুরুত্বপূর্ণ কেন?
ক. অর্থনৈতিক ভিত্তি মজবুত করার জন্য
খ. আইনশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে
গ. ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নয়নে
ঘ. সার্বভৌমত্ব সুরক্ষার জন্য।

ব্যবসায় নীতি ও প্রয়োগ ১ম পত্র: সঠিক উত্তর
অধ্যায়-১: ১. ক ২. ক ৩. ক ৪. গ ৫. ঘ ৬. খ ৭. খ ৮. ক ৯. ক ১০. খ ১১. খ ১২. ক ১৩. ঘ ১৪. গ ১৫. খ ১৬. খ ১৭. খ ১৮. গ ১৯. ক ২০. ঘ।

আরও আট ব্লগারকে হত্যার পরিকল্পনা ছিল

আহমেদ রাজীব হায়দারের মতো আরও আটজন ব্লগারকে হত্যা করার পরিকল্পনা ছিল গ্রেপ্তার হওয়া পাঁচ তরুণের। রিমান্ডে প্রথম দিনের জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি) এ তথ্য দিয়েছেন।
রাজীব হত্যা মামলার তদন্ত-তদারক কর্মকর্তা ডিবির উপকমিশনার মোল্ল্যা নজরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, আসামি এহসান রেজা ওরফে রুম্মান ও ফয়সাল বিন নাঈম ওরফে দীপ জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, তাঁরা ‘নাস্তিক’ হিসেবে রাজীবের মতো আরও আটজন ব্লগারকে চিহ্নিত করেন এবং তাঁদেরও খুনের পরিকল্পনা করছিলেন। কিন্তু পরিকল্পনা বাস্তবায়নের আগেই তাঁরা ধরা পড়ে গেছেন। এ কথা জানার পরপর গতকাল রোববার এই দুজনের বাসায় তল্লাশি চালিয়ে ধর্মভিত্তিক কিছু পুস্তিকা ও কম্পিউটারের দুটি হার্ডডিস্ক যাচাই-বাছাই করার জন্য ডিবি কার্যালয়ে আনা হয়।
তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, রিমান্ডের প্রথম দিনে গতকাল নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির পাঁচ ছাত্র এহসান রেজা, ফয়সাল, নাঈম সিকদার ওরফে ইরাদ, নাফিস ইমতিয়াজ ও মাকসুদুল হাসান ওরফে অনিক ব্লগার রাজীবকে খুন করার কথা স্বীকার করেন। জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা বলেছেন, এ হত্যায় তাঁদের সঙ্গে আরও দুজন ছিলেন। এ ছাড়া তাঁদের সমমনা আরেকটি দল এর আগে গত জানুয়ারিতে উত্তরায় ব্লগার আসিফ মহিউদ্দিনের ওপর হামলা করেছিল বলেও তাঁরা বলেছেন।
ডিবির জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম জানান, রাজীব হত্যার পরিকল্পনাকারী গ্রেপ্তার হওয়া পাঁচজনের কথিত ওই বড় ভাই ও তাঁদের অপর সহযোগীকে গ্রেপ্তারের অভিযান চলছে।
পরিবারের বক্তব্য: গতকাল বিকেলে রুম্মানদের কাকরাইলের বাসায় গেলে তাঁর বাবা আলী রেজা এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘১৫ ফেব্রুয়ারি রাজীব খুন হওয়ার পর রুম্মান খুব স্বাভাবিক ছিল, তার আচরণে মনে হয়নি সে মানুষ খুন করেছে। বরং রাজীব খুন হওয়া নিয়ে বাসায় আলাপকালে রুম্মান বলেছে, “নাস্তিক রাজীব ধর্মের বিরুদ্ধে লিখেছে। ও মারা গেছে ভালোই হইছে।” তখন ওর মা ছেলেকে বুঝিয়েছেন, “খারাপ কিছু কইরো না, তোমার বাবার অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ হয়ে গেছে। তুমি আমাদের একমাত্র ভরসা।’”
আলী রেজা আরও বলেন, কয়েক দিন আগে জামায়াতের আন্দোলন শুরু হলে মসজিদে নামাজ পড়তে গেলে রুম্মানকে পুলিশ আটক করে। এরপর মহল্লাবাসীর সুপারিশে পুলিশ ওকে ছেড়ে দেয়। তিনি বলেন, রুম্মান কোনো সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিল না।
তবে অপর এক আত্মীয় প্রথম আলোকে বলেছেন, রুম্মান হিযবুত তাহ্রীরের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
গ্রেপ্তার হওয়া নাঈম সিকদার ওরফে ইরাদের মামা ব্যাংক কর্মকর্তা বেলাল আহমেদ দাবি করেন, ‘ইরাদ কোনোভাবেই মানুষ খুনের সঙ্গে জড়িত নয়। গ্রেপ্তারের পর আমি ফোনে তার সঙ্গে কথা বললে, সে খুন করার কথা অস্বীকার করেছে। সে ছোটবেলা থেকে রোজা-নামাজ করত। কারও সঙ্গে উচ্চবাচ্য করে কথাও বলত না।’ তিনি মনে করেন, ফেসবুকে কোনো মন্তব্য করা নিয়ে ইরাদ ফেঁঁসে গেছে। তাঁর জানামতে, ইরাদ কোনো দল বা সংগঠনের সঙ্গে জড়িত নন।
মাকসুদুল হাসান ওরফে অনিকের বাবা আবদুল আজিজ দাবি করেন, অনিককে ফাঁসানো হয়েছে। কোনোভাইে তিনি খুন করতে পারেন না। খুনের দিন ১৫ ফেব্রুয়ারি রাত নয়টায় অনিক বাসায় ছিলেন।
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর পল্লবীর পলাশনগরের বাসার সামনে ব্লগার রাজীব হায়দারকে কুপিয়ে ও ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। এরপর নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির পাঁচ ছাত্রকে ডিবি গ্রেপ্তার করে। তাঁদের সাত দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে ডিবি!