Monday, March 4, 2013

এইচআইভির চিকিত্সায় সাফল্য

এইচআইভি ভাইরাস শরীরে নিয়ে জন্ম নেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের একটি শিশুর সেরে ওঠার লক্ষণ দেখতে পেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকেরা। তাঁরা বিশেষ ধরনের একটি ওষুধ প্রয়োগ করে এ সাফল্য পেয়েছেন।
গবেষকেরা আশা করছেন, বিশেষ ধরনের এ চিকিত্সা পদ্ধতিটি সফল হলে শিশুদের এইচআইভি সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করা যাবে। এক খবরে এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি অনলাইন।
তাঁরা জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের মিসিসিপি অঞ্চলের মফস্বলের একটি হাসপাতালে শরীরে এইচআইভি ভাইরাস নিয়ে জন্ম হয়েছিল মেয়েশিশুটির। শিশুটির বয়স যখন এক বছর পূর্ণ হয়, তখন থেকেই তাকে চিকিত্সা দেওয়া শুরু হয়েছিল। এখন তার বয়স আড়াই বছর। গত এক বছরে শিশুটির শরীরে এইচআইভি-সংক্রান্ত কোনো জটিলতা দেখতে পাননি গবেষকেরা। তাঁরা অবশ্য আরও পর্যবেক্ষণ করবেন এবং এ চিকিত্সা পদ্ধতিটি নিয়ে পরীক্ষা চালাবেন বলেই জানিয়েছেন।
গবেষকদের ভাষ্য, মেয়েটি যদি সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে ওঠে, তবে এইচআইভি থেকে রক্ষা পাওয়ার ক্ষেত্রে দ্বিতীয় ঘটনা হবে এটি। ২০০৭ সালে টিমোথি রে ব্রাউন নামে একজন ব্যক্তি এইচআইভি থেকে রক্ষা পান।
যুক্তরাষ্ট্রের জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ডেবোরাহ পারসুদ আটলান্টায় অনুষ্ঠিত রেট্রোভাইরাসেস অ্যান্ড অপরচুনিস্টিক ইনফেকশনস নামক এক সম্মেলনে এ সাফল্যের কথা জানান।
গবেষক পারসুদ জানিয়েছেন, শিশুদের এইচআইভি নিরাময়যোগ্য হতে পারে—এ পরীক্ষা তা প্রমাণ করেছে। যে শিশুটিকে নিয়ে এ পরীক্ষা করা হয়েছে তার ক্ষেত্রে এইচআইভি সংক্রমণের ঝুঁকি ছিল সর্বোচ্চ। গবেষকেরা মেয়েটির চিকিত্সায় দ্রুততম সময়ে এ ওষুধ প্রয়োগ করেন।

হাতঘড়িই স্মার্টফোন

অনেকেই হয়তো আশা করেছিলেন যে স্মার্টফোন যদি হাতে পরা যেত! তাঁদের জন্য সুখবর। শিগগিরই হাতঘড়ি ব্যবহার করেই ফোনকল থেকে শুরু করে ইন্টারনেট ব্রাউজ, ছবি তোলা এমনকি ভিডিওচিত্রও ধারণ করা যাবে।
অবশ্য বাজার গবেষকেরা এ আশায় আরও রসদ জুগিয়ে বলছেন, চলতি বছর হবে পরিধেয় প্রযুক্তির বছর। অর্থাত্ এ বছর হাতঘড়ি ও চশমার মতো প্রযুক্তিপণ্যের প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়বে। তার অর্থ—এমনতরো আরও বেশ কিছু স্মার্ট পণ্য চলতি বছরেই বাজারে আসবে।
এ বিষয়ে মানুষের আগ্রহের কথা মাথায় রেখে কানাডার ইলেকট্রনিক পণ্য নির্মাতা নেপচুন কম্পিউটার সম্প্রতি এমন একটি হাতঘড়ি তৈরি করছে, যা স্মার্টফোনের মতোই ব্যবহার করা যাবে। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে প্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট গিজম্যাগ।
নেপচুনের তৈরি করা এ হাতঘড়ির নাম হবে ‘পাইন’। নকশা পর্যায়ে থাকা এ হাতঘড়িতে মাইক্রো সিমকার্ড ব্যবহার করে ফোন করা যাবে। এ ছাড়া এর মাধ্যমে ই-মেইল পাঠানো, সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইট ব্যবহার করা, গান শোনা, ভিডিওচিত্র দেখা ও অডিও-ভিডিও ধারণ করা যাবে। হাতঘড়িতে থাকবে পাঁচ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরা, হার্ট রেট মনিটর, এফএম রেডিও, ডিজিটাল কম্পাস। নিয়ার ফিল্ড কমিউনিকেশন বা এনএফসি প্রযুক্তির ‘পাইন’ হাতঘড়ি হবে পানিরোধী।
অ্যান্ড্রয়েডনির্ভর ২.৪ ইঞ্চি মনিটরযুক্ত পাইন হাতঘড়িতে ব্লুটুথ, ওয়াইফাই, ভারচুয়াল কোয়ারটি কিবোর্ড থাকবে।
নেপচুন কর্তৃপক্ষের ভাষ্য, তাদের তৈরি ‘পাইন’ হাতঘড়ির পাশাপাশি ক্ষুদ্র স্মার্টফোন হিসেবেও ব্যবহার করা যাবে। এ জন্য হাতঘড়ির বেল্ট খুলে রাখতে হবে।
চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাস নাগাদ ‘পাইন’ ব্র্যান্ডের হাতঘড়ি যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার বাজারে আসতে পারে। এ পণ্যটির দাম হতে পারে প্রায় ৩৫০ মার্কিন ডলার।
প্রযুক্তি বিশ্লেষকেরা জানিয়েছেন, স্মার্টফোনের মতোই সব ধরনের প্রযুক্তি নিয়ে বাজারে আসছে স্মার্ট হাতঘড়ি। তাই নতুন ক্রেতাদের ভাবতেই হবে স্মার্টফোন, নাকি স্মার্ট ওয়াচ?

মানসিক চাপ কমাতে ছয়টি উপায়

মানসিক চাপে ভোগেন না এমন কোনো মানুষ নেই। কিন্তু অনেকেই এই চাপ মোকাবিলা করতে পারেন না। এর প্রভাব ফেলে শরীরে ও মনে, দেখা দেয় নানা রোগ। তাই মানসিক চাপে বা টেনশনে পড়লে দ্রুত তা থেকে বের হয়ে আসার চেষ্টা করুন। এ ক্ষেত্রে নিচের পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করতে পারেন:
১. লম্বা করে শ্বাস নিন নাক দিয়ে, কয়েক সেকেন্ড ধরে রাখুন, শ্বাস ছাড়ুন মুখ দিয়ে। প্রশ্বাসের সময় তলপেট প্রসারিত করুন। চোখ বন্ধ করে এ পদ্ধতি প্রয়োগ করুন, অনেকটা স্বস্তি অনুভব করবেন। রক্তচাপ কমবে, পেশি বিশ্রাম পাবে, উদ্বেগ-দুশ্চিন্তা প্রশমিত হবে।
২. মন ভালো করার অন্যতম কার্যকর উপায় হচ্ছে প্রিয় গানে মগ্ন হওয়া। তা ক্লাসিক, রবীন্দ্র, নজরুল, আধুনিক, ব্যান্ড বা সিনেমার গান যেকোনো কিছুই হতে পারে।
৩. বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে আড্ডা দিন। বেড়াতে যান বন্ধু বা আত্মীয়স্বজনের বাসায়। স্থানের পরিবর্তন মনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
৪. সুনিদ্রা মানসিক চাপ কমিয়ে দেয়। ঘুম না এলে গল্পের বই পড়তে পড়তে বা গান শুনতে শুনতে ঘুমান। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ইচ্ছেমতো ঘুমের ওষুধ খাবেন না।
৫. শুধু শরীর সুস্থ রাখাই নয়, ব্যায়াম মানসিক চাপ কমাতেও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে।
৬. মানসিক চাপে থাকলে অনেকেই ঝুঁকে পড়েন মাদকের দিকে। এতে কোনো উপকারই হয় না বরং শারীরিক ও মানসিক স্থায়ী ক্ষতি হয়। তাই ধূমপান ও মাদককে ‘না’ বলুন।
মানসিক চাপে শরীরের ক্ষতি
মাথা
খিটখিটে মেজাজ, মনঃসংযোগের ঘাটতি, অনিদ্রা
ত্বক
ত্বকের নানা সমস্যা, যেমন: ব্রণ
হাড়ের সংযোগস্থল ও মাংসপেশি
যন্ত্রণা, চাপ ও হাড়ক্ষয়
হূৎপিণ্ড
রক্তচাপ, হূদ্স্পন্দন ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ে
পাকস্থলী
পেটব্যথা, বমিভাব ও ওজনের ওঠানামা
অন্ত্র
বদহজম, ডায়রিয়া ও কোষ্ঠকাঠিন্য

এইচএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি-৭১

অধ্যায়-১
প্রিয় শিক্ষার্থীরা, আজ তোমাদের জন্য ব্যবসায় নীতি ও প্রয়োগ ১ম পত্রের ১ নম্বর অধ্যায় থেকে বহুনির্বাচনী প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করব।
 বহুনির্বাচনী প্রশ্নোত্তর
১. Being busy বা ব্যস্ত থাকা ইংরেজি কোন শব্দের আক্ষরিক অর্থ?
ক. Business খ. Commerce
গ. Trade ঘ. Industry
২. মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে পণ্য ও সেবাসামগ্রী উৎপাদন, বণ্টন ও এর সংশ্লিষ্ট সব বৈধ অর্থনৈতিক কাজকে কী বলে?
ক. ব্যবসা খ. বাণিজ্য
গ. পণ্য বিনিময় ঘ. আত্মকর্মসংস্থান
৩. নিচের কোনটি ব্যবসার সমীকরণ?
ক. B = I+T+AT খ. B = IT+TA+TE
গ. B = TM+IAT+TEM ঘ. B = I+EAT
৪. ব্যবসার অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য কোনটি?
ক. মূলধন বৃদ্ধি খ. কর্মসংস্থান সৃষ্টি
গ. অর্থ উপার্জন ঘ. জাতীয় সম্পদের সদ্ব্যবহার
৫. ‘বিক্রির অভিপ্রায়’কে চিহ্নিত করা যায় ব্যবসার— i. কার্যাবলি হিসেবে
ii. উদ্দেশ্য হিসেবে iii. বৈশিষ্ট্য হিসেবে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i খ. ii গ. i ও iii ঘ. iii
৬. খনিজ তেলকে পরিশোধন করে অকটেন, পেট্রল, কেরোসিন ইত্যাদি প্রস্তুত কোন শিল্পের অন্তর্ভুক্ত?
ক. সংযোজন শিল্প খ. বিশ্লেষণ শিল্প
গ. যৌগিক শিল্প ঘ. সমন্বিত শিল্প
৭. ট্রেড কোন ধরনের বাধা দূর করে?
ক. স্থানগত খ. ব্যক্তিগত গ. সময়গত ঘ. অর্থগত
৮. বাদশা মিয়া ঢাকার হাজারীবাগ বাজার থেকে প্রতিদিন সকালে টাটকা শাকসবজি কিনে ভ্যানগাড়িতে করে ঝিগাতলার বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করেন। বাদশা মিয়া কোন ধরনের উপযোগ সৃষ্টি করেন?
ক. ব্যক্তিগত ও স্থানগত খ. সময়গত ও অর্থগত গ. ঝুঁকিগত ও স্থানগত ঘ. অর্থগত ও ব্যক্তিগত
উদ্দীপকটি পড়ে ৯ ও ১০ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও:
কামরুল ‘শেখ হাসিনা যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র’ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে বাড়িতে একটি ‘ডেইরি ফার্ম’ গড়ে তোলেন। হঠাৎ গরুর খুরারোগ বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ায় সে চিন্তিত হয়ে পড়ল।
৯. উদ্দীপকে বর্ণিত ফার্মটি কোন ধরনের শিল্প?
ক. উৎপাদন খ. সেবামূলক গ. প্রজনন ঘ. নির্মাণ
১০. খুরারোগ থেকে কামরুলের ব্যবসার মূলধন রক্ষার্থে করণীয়— i. ফার্মের সব গরু বিক্রি করা
ii. নিয়মিত খুরারোগের প্রতিষেধক ব্যবহার করা
iii. অন্য কোনো ব্যবসায় পুঁজি স্থানান্তর করা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i খ. ii গ. iii ঘ. i, ii ও iii
১১. ব্যবসা সফল হওয়ার জন্য কোন উপাদানটি সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ?
ক. সামাজিক দায়িত্ব পালন
খ. ভোক্তার সন্তুষ্টি অর্জন
গ. অপেক্ষাকৃত কম মূল্যে পণ্য বিক্রি
ঘ. অধিক উৎপাদন
১২. বিভিন্ন দ্রব্যের মৌলিক মানের সীমা নির্ধারণকে কী বলে?
ক. প্রমিতকরণ খ. পর্যায়িতকরণ
গ. বাজারজাতকরণ ঘ. মোড়কীকরণ
১৩. নিচের কোনটি ব্যবসার বৈশিষ্ট্য নয়?
ক. উপযোগ সৃষ্টি খ. বিক্রির অভিপ্রায়
গ. মুনাফা অর্জন ঘ. দূরদৃষ্টি
১৪. খাল-বিল, নদী ও সাগর থেকে মাছ ধরা কোন শিল্পের অন্তর্গত?
ক. সর্জন খ. প্রজনন গ. নিষ্কাশন ঘ. সেবা পরিবেশক
১৫. নিচের কোনটি প্রত্যক্ষ-সেবার উদাহরণ?
ক. মৎস্য চাষ খ. সাংবাদিকতা
গ. বিদ্যুৎ উৎপাদন ঘ. রাস্তাঘাট নির্মাণ
১৬. মো. মেহেদী আলু উৎপাদনের মৌসুমে কম মূল্যে আলু কিনে কোল্ডস্টোরে সংরক্ষণ করেন এবং পরবর্তী সময়ে অধিক দামে বিক্রি করেন। মেহেদীর ব্যবসাটি ব্যবসার কোন বিভাগের আওতাধীন?
ক. শিল্প খ. বাণিজ্য
গ. প্রত্যক্ষ-সেবা ঘ. পণ্যবিনিময়
১৭. ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকাগুলোয় অধিক পরিমাণে শিল্পকারখানা গড়ে ওঠার গুরুত্বপূর্ণ কারণ কোনটি?
ক. সহজে শ্রমিক পাওয়া যায় বলে
খ. ব্যবসায় পরিবেশের অনুকূল উপাদানের জন্য
গ. কাঁচামালের সহজলভ্যতার জন্য
ঘ. শিল্পকারখানা নির্মাণের জন্য সহজে জায়গা পাওয়া যায় বলে
১৮. নিচের কোনটি ব্যবসায়িক সিদ্ধান্তকে সর্বাধিক প্রভাবিত করে?
ক. যোগাযোগব্যবস্থা খ. ব্যবসার পণ্য
গ. ব্যবসার পরিবেশ ঘ. ব্যবসার স্থান
১৯. সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিবেশকে প্রভাবিত করে কোনটি?
ক. জনগোষ্ঠী খ. মানবসম্পদ
গ. সরকারি নীতিমালা ঘ. কারিগরি শিক্ষা
২০. কোনো দেশের প্রতিরক্ষাব্যবস্থা শক্তিশালী হওয়া গুরুত্বপূর্ণ কেন?
ক. অর্থনৈতিক ভিত্তি মজবুত করার জন্য
খ. আইনশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে
গ. ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নয়নে
ঘ. সার্বভৌমত্ব সুরক্ষার জন্য।

ব্যবসায় নীতি ও প্রয়োগ ১ম পত্র: সঠিক উত্তর
অধ্যায়-১: ১. ক ২. ক ৩. ক ৪. গ ৫. ঘ ৬. খ ৭. খ ৮. ক ৯. ক ১০. খ ১১. খ ১২. ক ১৩. ঘ ১৪. গ ১৫. খ ১৬. খ ১৭. খ ১৮. গ ১৯. ক ২০. ঘ।

আরও আট ব্লগারকে হত্যার পরিকল্পনা ছিল

আহমেদ রাজীব হায়দারের মতো আরও আটজন ব্লগারকে হত্যা করার পরিকল্পনা ছিল গ্রেপ্তার হওয়া পাঁচ তরুণের। রিমান্ডে প্রথম দিনের জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি) এ তথ্য দিয়েছেন।
রাজীব হত্যা মামলার তদন্ত-তদারক কর্মকর্তা ডিবির উপকমিশনার মোল্ল্যা নজরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, আসামি এহসান রেজা ওরফে রুম্মান ও ফয়সাল বিন নাঈম ওরফে দীপ জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, তাঁরা ‘নাস্তিক’ হিসেবে রাজীবের মতো আরও আটজন ব্লগারকে চিহ্নিত করেন এবং তাঁদেরও খুনের পরিকল্পনা করছিলেন। কিন্তু পরিকল্পনা বাস্তবায়নের আগেই তাঁরা ধরা পড়ে গেছেন। এ কথা জানার পরপর গতকাল রোববার এই দুজনের বাসায় তল্লাশি চালিয়ে ধর্মভিত্তিক কিছু পুস্তিকা ও কম্পিউটারের দুটি হার্ডডিস্ক যাচাই-বাছাই করার জন্য ডিবি কার্যালয়ে আনা হয়।
তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, রিমান্ডের প্রথম দিনে গতকাল নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির পাঁচ ছাত্র এহসান রেজা, ফয়সাল, নাঈম সিকদার ওরফে ইরাদ, নাফিস ইমতিয়াজ ও মাকসুদুল হাসান ওরফে অনিক ব্লগার রাজীবকে খুন করার কথা স্বীকার করেন। জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা বলেছেন, এ হত্যায় তাঁদের সঙ্গে আরও দুজন ছিলেন। এ ছাড়া তাঁদের সমমনা আরেকটি দল এর আগে গত জানুয়ারিতে উত্তরায় ব্লগার আসিফ মহিউদ্দিনের ওপর হামলা করেছিল বলেও তাঁরা বলেছেন।
ডিবির জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম জানান, রাজীব হত্যার পরিকল্পনাকারী গ্রেপ্তার হওয়া পাঁচজনের কথিত ওই বড় ভাই ও তাঁদের অপর সহযোগীকে গ্রেপ্তারের অভিযান চলছে।
পরিবারের বক্তব্য: গতকাল বিকেলে রুম্মানদের কাকরাইলের বাসায় গেলে তাঁর বাবা আলী রেজা এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘১৫ ফেব্রুয়ারি রাজীব খুন হওয়ার পর রুম্মান খুব স্বাভাবিক ছিল, তার আচরণে মনে হয়নি সে মানুষ খুন করেছে। বরং রাজীব খুন হওয়া নিয়ে বাসায় আলাপকালে রুম্মান বলেছে, “নাস্তিক রাজীব ধর্মের বিরুদ্ধে লিখেছে। ও মারা গেছে ভালোই হইছে।” তখন ওর মা ছেলেকে বুঝিয়েছেন, “খারাপ কিছু কইরো না, তোমার বাবার অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ হয়ে গেছে। তুমি আমাদের একমাত্র ভরসা।’”
আলী রেজা আরও বলেন, কয়েক দিন আগে জামায়াতের আন্দোলন শুরু হলে মসজিদে নামাজ পড়তে গেলে রুম্মানকে পুলিশ আটক করে। এরপর মহল্লাবাসীর সুপারিশে পুলিশ ওকে ছেড়ে দেয়। তিনি বলেন, রুম্মান কোনো সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিল না।
তবে অপর এক আত্মীয় প্রথম আলোকে বলেছেন, রুম্মান হিযবুত তাহ্রীরের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
গ্রেপ্তার হওয়া নাঈম সিকদার ওরফে ইরাদের মামা ব্যাংক কর্মকর্তা বেলাল আহমেদ দাবি করেন, ‘ইরাদ কোনোভাবেই মানুষ খুনের সঙ্গে জড়িত নয়। গ্রেপ্তারের পর আমি ফোনে তার সঙ্গে কথা বললে, সে খুন করার কথা অস্বীকার করেছে। সে ছোটবেলা থেকে রোজা-নামাজ করত। কারও সঙ্গে উচ্চবাচ্য করে কথাও বলত না।’ তিনি মনে করেন, ফেসবুকে কোনো মন্তব্য করা নিয়ে ইরাদ ফেঁঁসে গেছে। তাঁর জানামতে, ইরাদ কোনো দল বা সংগঠনের সঙ্গে জড়িত নন।
মাকসুদুল হাসান ওরফে অনিকের বাবা আবদুল আজিজ দাবি করেন, অনিককে ফাঁসানো হয়েছে। কোনোভাইে তিনি খুন করতে পারেন না। খুনের দিন ১৫ ফেব্রুয়ারি রাত নয়টায় অনিক বাসায় ছিলেন।
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর পল্লবীর পলাশনগরের বাসার সামনে ব্লগার রাজীব হায়দারকে কুপিয়ে ও ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। এরপর নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির পাঁচ ছাত্রকে ডিবি গ্রেপ্তার করে। তাঁদের সাত দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে ডিবি!

Sunday, March 3, 2013

চাঁদে সাঈদী

মাঝ রাতে চাঁদের গায়ে জামায়াত নেতা মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ছবি দেখা গেছে বলে গুজব ছড়িয়ে পড়েছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। অনেকে টেলিফোনে ও মেসেজের মাধ্যমে গত রাতে চাঁদের গায়ে সাঈদীর স্পষ্ট ছবি দেখা যায় বলে গুজব ছড়ায়। এই গুজবের বিষয় মসজিদের মাইকেও ঘোষণা দেয়া হয়েছে। এমন হুজব শুনে আজ সকালে অনেক সাধারণ ধর্মপ্রাণ মানুষ জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে হরতালের পক্ষে পিকেটিংএ নামে। বগুড়ায় সমজিদের মাইকে এরকম ঘোষণা দেয়া হয়। সকাল থেকে জামায়াত শিবিরের সঙ্গে বিভিন্ন এলাকা থেকে সাধারণ মানুষও হরতালের পক্ষে মিছিলে যোগ দেয়। এতে পুরো জেলায় ব্যাপক সহিংতা ছড়িয়ে পড়ে। এখনও জেলার অবস্থা থমথমে। এদিকে চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায়ও এ ধরনের গুজবে শ’ শ’ মানুষ রাস্তায় নেমে এসে সাঈদীর মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ করে। এ বিষয়ে আলেমরা জানিয়েছেন, এ ধরনের ঘটনা বিশ্বাসযোগ্য নয়। এ ধরনের গুজবে বিশ্বাস করা ধর্ম বিশ্বাসের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

Saturday, March 2, 2013

সিলেট ও মৌলভীবাজারে ভূকম্পন

সিলেট ও মৌলভীবাজারে আজ শনিবার সকাল সাতটা ৪৩ মিনিটে মাঝারি মাত্রার ভূকম্পন অনুভূত হয়েছে। তবে কোথাও কোনো ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
ঢাকা আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, ভূমিকম্পটির উত্পত্তিস্থল ঢাকা থেকে ১৯৫ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী ভারতের আসামে। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৫.৪।
আমাদের জুড়ি (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি জানান, উপজেলায় আজ সকালে ভূমিকম্পের কারণে আতঙ্কিত হয়ে অনেকে রাস্তায় নেমে আসে। স্থানীয় লোকজনের ভাষ্য, ভূমিকম্পটি তিন সেকেন্ড স্থায়ী ছিল।

গণহত্যা বন্ধ না হলে পরিণাম ভয়াবহ

দেশময় সংঘাতে প্রাণহানির ঘটনাকে পৈশাচিক ‘গণহত্যা’ বলে বর্ণনা করে অবিলম্বে তা বন্ধ করার দাবি জানিয়েছেন বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া। নইলে এর পরিণাম ভয়াবহ হবে বলে সরকারকে হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন তিনি।
গতকাল শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়া এ হুঁশিয়ারি জানান। ব্লগে আল্লাহ, মহানবী (সা.) ও ইসলামের কথিত অবমাননার প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও গত বৃহস্পতিবার জামায়াতের নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণার পর সারা দেশে সহিংসতায় ব্যাপক প্রাণহানির ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এ সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়। এসব হত্যাকাণ্ডের জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সরকারি দলের ‘সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের’ দায়ী করেন খালেদা জিয়া।
এর প্রতিবাদে রাজধানী ঢাকাসহ সব মহানগর ও জেলা সদরে আজ শনিবার প্রতিবাদ মিছিল এবং ৫ মার্চ মঙ্গলবার সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ঘোষণা দেন বিএনপির চেয়ারপারসন। রবি ও সোমবার জামায়াত আগেই হরতাল ডেকেছে। এখন মঙ্গলবারসহ তিন দিনের হরতালের ফাঁদে পড়ল দেশ।
কর্মসূচিতে বাধা না দিতে সরকার ও প্রশাসনকে উদ্দেশ করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘আর একটি গুলিও যেন চালানো না হয়। জুলুম-নির্যাতনের পথ বেছে নিলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রাজপথে প্রতিরোধ গড়ে তুলব।’ যেকোনো মূল্যে জাতীয় ঐক্য ও সংহতি বজায় রাখতে এই সংকটের মুহূর্তে দেশবাসীকে রাজপথে নেমে আসারও ডাক দেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে শুধু বক্তব্য দিয়েই তিনি চলে যান, কোনো প্রশ্নের জবাব দেননি।
‘আমি স্তম্ভিত, ক্ষুব্ধ ও গভীরভাবে মর্মাহত। এর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানোর কোনো ভাষা আমার নেই’ —এই বলে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য শুরু করেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী। প্রাণহানির ঘটনার উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সরকার গণহত্যার পৈশাচিক তাণ্ডবে মেতে উঠেছে। পাখির মতো গুলি করে মানুষ হত্যা চলছে। এ ধরনের গণহত্যার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েই আমরা ১৯৭১ সালে মাতৃভূমিকে স্বাধীন করেছিলাম। সেই স্বাধীন দেশে আবার অন্য কোনো অজুহাতে কখনো কোনো সরকার গণহত্যার পথ বেছে নেবে, তা আমরা মেনে নিতে পারি না।’
খালেদা জিয়া বলেন, দেশের বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ধর্ম পবিত্র ইসলাম এবং মহান স্বাধীনতাকে আজ পরিকল্পিতভাবে প্রতিপক্ষ বানিয়ে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয়েছে। গোটা জাতিকে আজ বিভক্ত করে ফেলা হয়েছে। একটি কুচক্রী মহল মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নের নামে আল্লাহ, মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) ও ইসলামের বিরুদ্ধে নোংরা কুৎসা রটনায় লিপ্ত হয়েছে।
শাহবাগ আন্দোলনের প্রতি ইঙ্গিত করে খালেদা জিয়া বলেন, একটি গোষ্ঠীকে সরকার উসকানিমূলক ও বেআইনি কর্মকাণ্ড সংঘটনে আশকারা ও সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। তারা প্রতিনিয়ত ঘৃণা, বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে। ভিন্নমতাবলম্বীদের ধরে ধরে জবাই করার আওয়াজ তুলছে। সম্মানিত নাগরিকদের নাম ধরে হুমকি, সরকারবিরোধী সংবাদপত্র এবং টিভি চ্যানেলগুলো বন্ধ করার হুমকি দিচ্ছে। নির্যাতিত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে বেআইনিভাবে গ্রেপ্তারের জন্য চাপ সৃষ্টি করছে। বিভিন্ন ব্যাংক, বিমা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা ও ভাঙচুরে উৎসাহিত করছে।
লিখিত বক্তব্যে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলা একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের বিষয়ে সরাসরি কোনো মন্তব্য করেননি বিরোধীদলীয় নেতা। তবে তিনি বলেন, ট্রাইব্যুনালের একটি রায়ের বিরুদ্ধে শাহবাগে যে বিক্ষোভের আয়োজন করা হয়, সরকার তার সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে। বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে অভিযুক্তদের ফাঁসি দেওয়ার যে দাবি জানানো হয়, প্রধানমন্ত্রী সংসদে দাঁড়িয়ে তার প্রতি শুধু সমর্থনই ব্যক্ত করেননি, বরং ট্রাইব্যুনালের বিচারকদের প্রতি বিক্ষোভকারীদের দাবি বিবেচনায় রেখে রায় দেওয়ার আহ্বান জানান। কোনো সভ্য ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে এ ধরনের ঘটনা নজিরবিহীন। এসব ঘটনার মাধ্যমে ন্যায়বিচারের সর্বশেষ আশাটুকুও সম্পূর্ণ তিরোহিত হয়ে যায়। তাই এই ট্রাইব্যুনালের যেকোনো রায়ই এখন প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে থাকবে।
খালেদা জিয়া দাবি করেন, জনগণের গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার হীন উদ্দেশ্যে সরকার ইতিমধ্যে পরিকল্পিতভাবে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বাড়িঘরে আক্রমণ চালিয়ে দেশে বিরাজমান সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ধ্বংসের অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এরা একই উদ্দেশ্যে শান্তিপ্রিয় বৌদ্ধধর্মাবলম্বীদের ওপরও হামলা চালিয়েছিল। তিনি সরকারকে এমন আত্মঘাতী ষড়যন্ত্র থেকে বিরত থাকার এবং দেশবাসীকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের যেকোনো অপচেষ্টার বিরুদ্ধে সজাগ থাকার আহ্বান জানান।
বিএনপির চেয়ারপারসন সব ধর্ম-মতের এবং পাহাড় ও সমতলবাসী প্রত্যেক গণতন্ত্রকামী নাগরিকের প্রতি এই বলে আহ্বান জানান, ‘আসুন, দল-মত-শ্রেণী-পেশা নির্বিশেষে সকলে মিলে দেশ বাঁচাই, মানুষ বাঁচাই। ফ্যাসিবাদকে মোকাবিলা করে মহান মুক্তিযুদ্ধের সুবর্ণ ফসল গণতন্ত্রকে রক্ষা করি।

(ব্লগার রাজীব হত্যা) নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ ছাত্র গ্রেপ্তার

ব্লগার আহমেদ রাজীব হায়দার হত্যায় জড়িত সন্দেহে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে। গতকাল শুক্রবার রাতে রাজধানীর কয়েকটি এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
আজ শনিবার ডিবি কার্যালয়ে এ ব্যাপারে সংবাদ ব্রিফিং করা হয়। সেখানে জানানো হয়, ডিবি পুলিশ মো. ফয়সাল বিন নাঈম ওরফে দীপ (২২), মো. মাকসুদুল হাসান অনিক (২৩), মো. এহসান রেজা রুম্মান (২৩), মো. নাঈম সিকদার ইরাদ (১৯) ও নাফিস ইমতিয়াজকে (২২) গ্রেপ্তার করেছে। তাঁরা সবাই বেসরকারি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের ছাত্র।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের তথ্য
ডিবি পুলিশ দাবি করেছে, গ্রেপ্তার আসামিরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন তাঁরা নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নামাজ কক্ষে নামাজ পড়তে গিয়ে পরষ্পরের সঙ্গে পরিচিত ও ঘনিষ্ঠ হন। সেই সূত্রে তাঁরা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা ও ইন্টারনেটে বিভিন্ন তথ্য শেয়ার করতেন।
ডিবির দাবি, গ্রেপ্তার ছাত্ররা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন তাঁদের দলের এক বন্ধু একসময় বাংলাদেশ ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি তাঁদের কিছু ব্লগের ঠিকানা দেন। সেখান থেকেই তাঁরা ‘থাবা বাবা’সহ কয়েকজন ব্লগারের লেখার সঙ্গে পরিচিত হন এবং ‘থাবাবাবা’ নামধারী ব্লগারকে উচিত শিক্ষা দেওয়ার পরিকল্পনা করেন। আর এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৫ ফেব্রুয়ারি মিরপুরের পলাশনগর এলাকার নিজ বাসার সামনের রাস্তায় রাজীবকে খুন করেন।

রাজীবকে হত্যার জন্য দুটি দল গঠন?
ডিবি পুলিশ দাবি করেছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার ছাত্ররা পুরো হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনাটি সম্পর্কে তাঁদের জানিয়েছে। সে ভাষ্য অনুযায়ী, রাজীবকে হত্যা পরিকল্পনার পর তাঁরা ‘ইনটেল গ্রুপ’ গঠন করেন। এই দলের কাজ ছিল ব্লগ ও ফেসবুক থেকে তাঁর সম্পর্কে নানা তথ্য সংগ্রহ করা ও তাঁর পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া। আর রাজীবকে হত্যার জন্য তাঁরা ‘এক্সিকিউশন গ্রুপ’ গঠন করেন। প্রায় এক মাস সময় ধরে তাঁরা রাজীবকে অনুসরণ করেছেন।

হত্যাকাণ্ডে ব্যবহূত সরঞ্জাম উদ্ধার
গ্রেপ্তার ছাত্রদের কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহূত দুটি চাপাতি, চারটি ছোরা, একটি বাই সাইকেল, এক জোড়া কেডস, সাতটি বিভিন্ন মডেলের মোবাইল সেট ও একটি স্কুল ব্যাগ উদ্ধার করা হয়েছে বলে ডিবি জানিয়েছে।
তাঁদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কাকরাইলে জাতীয় চলচ্চিত্র প্রকাশনা অধিদপ্তরের পুকুর পাড় থেকে জুতা জোড়া উদ্ধার করে পুলিশ। এ ছাড়া একটি চাপাতি ও চারটি ছোরা শেরে বাংলা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের রাস্তার পাশের ড্রেন থেকে উদ্ধার করা হয়।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বিস্তারিত তথ্য
ফয়সালের বাড়ি ঢাকার মাতুয়াইলে। তিনি কোডা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। মাকসুদুলের বাড়ি ঢাকার কেরানীগঞ্জে। তিনি ম্যাপললিফ থেকে ও লেভেল এবং এ লেভেল পাস করে একই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। তাঁরা দুজনই এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সম্মান শেষ বর্ষের ছাত্র। এহসানের বাড়ি ঝিনাইদহ জেলায় ও নাঈমের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এবং তাঁরা দুজনই নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রনিক অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র। নাফিসের বাড়ি চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে। তিনি সানসাইন গ্রামার স্কুল থেকে ও লেভেল এবং এ লেভেল পাস করে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ-তে ভর্তি হন। তিনি তৃতীয় বর্ষের ছাত্র।

বিভিন্ন এলাকায় অভিযান
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা ও অপরাধ তথ্য পশ্চিম বিভাগের ডিসি মোল্যা নজরুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে এডিসি মশিউর রহমান, এডিসি মানস কুমার পোদ্দার ও জ্যেষ্ঠ এসি মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে ডিবির একাধিক দল ঢাকার কাকরাইল, বারিধারা বসুন্ধরা, পান্থপথ ও খিলগাঁও এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে রাজীব হত্যায় জড়িত সন্দেহে এই পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে।

১৫ ফেব্রুয়ারি খুন হন রাজীব
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি রাতে মিরপুরের পলাশনগরে নিজ বাড়ির সামনে খুন হন ব্লগার আহমেদ রাজীব হায়দার। এ ব্যাপারে পল্লবী থানায় মামলা হয়। থানা পুলিশের পাশাপাশি ডিবি পুলিশ তদন্ত শুরু করে।
প্রাথমিক তদন্তে হত্যার সঙ্গে সাতজনের জড়িত থাকার প্রমাণ পায় ডিবি পুলিশ। পলাতক অন্য দুজনতে ধরতে পুলিশ তত্পরতা চালাচ্ছে।

Friday, March 1, 2013

দেশের কয়েকটি এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি

নাশকতা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কায় সাতক্ষীরার পৌর এলাকা, কুষ্টিয়ার ছয়টি উপজেলা ও সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলায় আজ শুক্রবার ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।

সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরা থেকে আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক জানান, আজ ভোর ছয়টা থেকে জেলার পৌর এলাকায় অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক মো. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার এ আদেশ জারি করেন। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জয়দেব চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

কুষ্টিয়া: আমাদের কুষ্টিয়া অফিস জানায়, নাশকতার আশঙ্কায় কুষ্টিয়া, মিরপুর, ভেড়ামারা, কুমারখালী ও খোকসা পৌর এলাকায় এবং দৌলতপুর উপজেলায় ১৪৪ জারি করেছে প্রশাসন। আজ বেলা দুইটা থেকে রাত ১০টা দশটা পর্যন্ত এ আদেশ বহাল থাকবে।
জেলার ছয় উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তারা (ইউএনও) ১৪৪ ধারা জারির বিষয়টি প্রথম আলো ডটকমকে নিশ্চিত করেন। সংশ্লিষ্ট এলাকায় মাইকিং করে বিষয়টি জানানো হয়েছে।

রায়গঞ্জ: আমাদের রায়গঞ্জ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কায় জেলার রায়গঞ্জ পৌরসভা এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। আজ রাত নয়টা পর্যন্ত এ আদেশ বহাল থাকবে বলে রায়গঞ্জের ইউএনও কার্যালয় জানিয়েছে।
রায়গঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুল হাই বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়াকরা হয়েছে।