Saturday, March 2, 2013

গণহত্যা বন্ধ না হলে পরিণাম ভয়াবহ

দেশময় সংঘাতে প্রাণহানির ঘটনাকে পৈশাচিক ‘গণহত্যা’ বলে বর্ণনা করে অবিলম্বে তা বন্ধ করার দাবি জানিয়েছেন বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া। নইলে এর পরিণাম ভয়াবহ হবে বলে সরকারকে হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন তিনি।
গতকাল শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়া এ হুঁশিয়ারি জানান। ব্লগে আল্লাহ, মহানবী (সা.) ও ইসলামের কথিত অবমাননার প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও গত বৃহস্পতিবার জামায়াতের নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণার পর সারা দেশে সহিংসতায় ব্যাপক প্রাণহানির ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এ সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়। এসব হত্যাকাণ্ডের জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সরকারি দলের ‘সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের’ দায়ী করেন খালেদা জিয়া।
এর প্রতিবাদে রাজধানী ঢাকাসহ সব মহানগর ও জেলা সদরে আজ শনিবার প্রতিবাদ মিছিল এবং ৫ মার্চ মঙ্গলবার সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ঘোষণা দেন বিএনপির চেয়ারপারসন। রবি ও সোমবার জামায়াত আগেই হরতাল ডেকেছে। এখন মঙ্গলবারসহ তিন দিনের হরতালের ফাঁদে পড়ল দেশ।
কর্মসূচিতে বাধা না দিতে সরকার ও প্রশাসনকে উদ্দেশ করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘আর একটি গুলিও যেন চালানো না হয়। জুলুম-নির্যাতনের পথ বেছে নিলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রাজপথে প্রতিরোধ গড়ে তুলব।’ যেকোনো মূল্যে জাতীয় ঐক্য ও সংহতি বজায় রাখতে এই সংকটের মুহূর্তে দেশবাসীকে রাজপথে নেমে আসারও ডাক দেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে শুধু বক্তব্য দিয়েই তিনি চলে যান, কোনো প্রশ্নের জবাব দেননি।
‘আমি স্তম্ভিত, ক্ষুব্ধ ও গভীরভাবে মর্মাহত। এর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানোর কোনো ভাষা আমার নেই’ —এই বলে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য শুরু করেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী। প্রাণহানির ঘটনার উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সরকার গণহত্যার পৈশাচিক তাণ্ডবে মেতে উঠেছে। পাখির মতো গুলি করে মানুষ হত্যা চলছে। এ ধরনের গণহত্যার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েই আমরা ১৯৭১ সালে মাতৃভূমিকে স্বাধীন করেছিলাম। সেই স্বাধীন দেশে আবার অন্য কোনো অজুহাতে কখনো কোনো সরকার গণহত্যার পথ বেছে নেবে, তা আমরা মেনে নিতে পারি না।’
খালেদা জিয়া বলেন, দেশের বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ধর্ম পবিত্র ইসলাম এবং মহান স্বাধীনতাকে আজ পরিকল্পিতভাবে প্রতিপক্ষ বানিয়ে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয়েছে। গোটা জাতিকে আজ বিভক্ত করে ফেলা হয়েছে। একটি কুচক্রী মহল মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নের নামে আল্লাহ, মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) ও ইসলামের বিরুদ্ধে নোংরা কুৎসা রটনায় লিপ্ত হয়েছে।
শাহবাগ আন্দোলনের প্রতি ইঙ্গিত করে খালেদা জিয়া বলেন, একটি গোষ্ঠীকে সরকার উসকানিমূলক ও বেআইনি কর্মকাণ্ড সংঘটনে আশকারা ও সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। তারা প্রতিনিয়ত ঘৃণা, বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে। ভিন্নমতাবলম্বীদের ধরে ধরে জবাই করার আওয়াজ তুলছে। সম্মানিত নাগরিকদের নাম ধরে হুমকি, সরকারবিরোধী সংবাদপত্র এবং টিভি চ্যানেলগুলো বন্ধ করার হুমকি দিচ্ছে। নির্যাতিত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে বেআইনিভাবে গ্রেপ্তারের জন্য চাপ সৃষ্টি করছে। বিভিন্ন ব্যাংক, বিমা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা ও ভাঙচুরে উৎসাহিত করছে।
লিখিত বক্তব্যে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলা একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের বিষয়ে সরাসরি কোনো মন্তব্য করেননি বিরোধীদলীয় নেতা। তবে তিনি বলেন, ট্রাইব্যুনালের একটি রায়ের বিরুদ্ধে শাহবাগে যে বিক্ষোভের আয়োজন করা হয়, সরকার তার সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে। বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে অভিযুক্তদের ফাঁসি দেওয়ার যে দাবি জানানো হয়, প্রধানমন্ত্রী সংসদে দাঁড়িয়ে তার প্রতি শুধু সমর্থনই ব্যক্ত করেননি, বরং ট্রাইব্যুনালের বিচারকদের প্রতি বিক্ষোভকারীদের দাবি বিবেচনায় রেখে রায় দেওয়ার আহ্বান জানান। কোনো সভ্য ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে এ ধরনের ঘটনা নজিরবিহীন। এসব ঘটনার মাধ্যমে ন্যায়বিচারের সর্বশেষ আশাটুকুও সম্পূর্ণ তিরোহিত হয়ে যায়। তাই এই ট্রাইব্যুনালের যেকোনো রায়ই এখন প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে থাকবে।
খালেদা জিয়া দাবি করেন, জনগণের গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার হীন উদ্দেশ্যে সরকার ইতিমধ্যে পরিকল্পিতভাবে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বাড়িঘরে আক্রমণ চালিয়ে দেশে বিরাজমান সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ধ্বংসের অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এরা একই উদ্দেশ্যে শান্তিপ্রিয় বৌদ্ধধর্মাবলম্বীদের ওপরও হামলা চালিয়েছিল। তিনি সরকারকে এমন আত্মঘাতী ষড়যন্ত্র থেকে বিরত থাকার এবং দেশবাসীকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের যেকোনো অপচেষ্টার বিরুদ্ধে সজাগ থাকার আহ্বান জানান।
বিএনপির চেয়ারপারসন সব ধর্ম-মতের এবং পাহাড় ও সমতলবাসী প্রত্যেক গণতন্ত্রকামী নাগরিকের প্রতি এই বলে আহ্বান জানান, ‘আসুন, দল-মত-শ্রেণী-পেশা নির্বিশেষে সকলে মিলে দেশ বাঁচাই, মানুষ বাঁচাই। ফ্যাসিবাদকে মোকাবিলা করে মহান মুক্তিযুদ্ধের সুবর্ণ ফসল গণতন্ত্রকে রক্ষা করি।

(ব্লগার রাজীব হত্যা) নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ ছাত্র গ্রেপ্তার

ব্লগার আহমেদ রাজীব হায়দার হত্যায় জড়িত সন্দেহে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে। গতকাল শুক্রবার রাতে রাজধানীর কয়েকটি এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
আজ শনিবার ডিবি কার্যালয়ে এ ব্যাপারে সংবাদ ব্রিফিং করা হয়। সেখানে জানানো হয়, ডিবি পুলিশ মো. ফয়সাল বিন নাঈম ওরফে দীপ (২২), মো. মাকসুদুল হাসান অনিক (২৩), মো. এহসান রেজা রুম্মান (২৩), মো. নাঈম সিকদার ইরাদ (১৯) ও নাফিস ইমতিয়াজকে (২২) গ্রেপ্তার করেছে। তাঁরা সবাই বেসরকারি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের ছাত্র।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের তথ্য
ডিবি পুলিশ দাবি করেছে, গ্রেপ্তার আসামিরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন তাঁরা নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নামাজ কক্ষে নামাজ পড়তে গিয়ে পরষ্পরের সঙ্গে পরিচিত ও ঘনিষ্ঠ হন। সেই সূত্রে তাঁরা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা ও ইন্টারনেটে বিভিন্ন তথ্য শেয়ার করতেন।
ডিবির দাবি, গ্রেপ্তার ছাত্ররা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন তাঁদের দলের এক বন্ধু একসময় বাংলাদেশ ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি তাঁদের কিছু ব্লগের ঠিকানা দেন। সেখান থেকেই তাঁরা ‘থাবা বাবা’সহ কয়েকজন ব্লগারের লেখার সঙ্গে পরিচিত হন এবং ‘থাবাবাবা’ নামধারী ব্লগারকে উচিত শিক্ষা দেওয়ার পরিকল্পনা করেন। আর এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৫ ফেব্রুয়ারি মিরপুরের পলাশনগর এলাকার নিজ বাসার সামনের রাস্তায় রাজীবকে খুন করেন।

রাজীবকে হত্যার জন্য দুটি দল গঠন?
ডিবি পুলিশ দাবি করেছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার ছাত্ররা পুরো হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনাটি সম্পর্কে তাঁদের জানিয়েছে। সে ভাষ্য অনুযায়ী, রাজীবকে হত্যা পরিকল্পনার পর তাঁরা ‘ইনটেল গ্রুপ’ গঠন করেন। এই দলের কাজ ছিল ব্লগ ও ফেসবুক থেকে তাঁর সম্পর্কে নানা তথ্য সংগ্রহ করা ও তাঁর পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া। আর রাজীবকে হত্যার জন্য তাঁরা ‘এক্সিকিউশন গ্রুপ’ গঠন করেন। প্রায় এক মাস সময় ধরে তাঁরা রাজীবকে অনুসরণ করেছেন।

হত্যাকাণ্ডে ব্যবহূত সরঞ্জাম উদ্ধার
গ্রেপ্তার ছাত্রদের কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহূত দুটি চাপাতি, চারটি ছোরা, একটি বাই সাইকেল, এক জোড়া কেডস, সাতটি বিভিন্ন মডেলের মোবাইল সেট ও একটি স্কুল ব্যাগ উদ্ধার করা হয়েছে বলে ডিবি জানিয়েছে।
তাঁদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কাকরাইলে জাতীয় চলচ্চিত্র প্রকাশনা অধিদপ্তরের পুকুর পাড় থেকে জুতা জোড়া উদ্ধার করে পুলিশ। এ ছাড়া একটি চাপাতি ও চারটি ছোরা শেরে বাংলা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের রাস্তার পাশের ড্রেন থেকে উদ্ধার করা হয়।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বিস্তারিত তথ্য
ফয়সালের বাড়ি ঢাকার মাতুয়াইলে। তিনি কোডা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। মাকসুদুলের বাড়ি ঢাকার কেরানীগঞ্জে। তিনি ম্যাপললিফ থেকে ও লেভেল এবং এ লেভেল পাস করে একই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। তাঁরা দুজনই এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সম্মান শেষ বর্ষের ছাত্র। এহসানের বাড়ি ঝিনাইদহ জেলায় ও নাঈমের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এবং তাঁরা দুজনই নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রনিক অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র। নাফিসের বাড়ি চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে। তিনি সানসাইন গ্রামার স্কুল থেকে ও লেভেল এবং এ লেভেল পাস করে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ-তে ভর্তি হন। তিনি তৃতীয় বর্ষের ছাত্র।

বিভিন্ন এলাকায় অভিযান
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা ও অপরাধ তথ্য পশ্চিম বিভাগের ডিসি মোল্যা নজরুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে এডিসি মশিউর রহমান, এডিসি মানস কুমার পোদ্দার ও জ্যেষ্ঠ এসি মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে ডিবির একাধিক দল ঢাকার কাকরাইল, বারিধারা বসুন্ধরা, পান্থপথ ও খিলগাঁও এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে রাজীব হত্যায় জড়িত সন্দেহে এই পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে।

১৫ ফেব্রুয়ারি খুন হন রাজীব
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি রাতে মিরপুরের পলাশনগরে নিজ বাড়ির সামনে খুন হন ব্লগার আহমেদ রাজীব হায়দার। এ ব্যাপারে পল্লবী থানায় মামলা হয়। থানা পুলিশের পাশাপাশি ডিবি পুলিশ তদন্ত শুরু করে।
প্রাথমিক তদন্তে হত্যার সঙ্গে সাতজনের জড়িত থাকার প্রমাণ পায় ডিবি পুলিশ। পলাতক অন্য দুজনতে ধরতে পুলিশ তত্পরতা চালাচ্ছে।

Friday, March 1, 2013

দেশের কয়েকটি এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি

নাশকতা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কায় সাতক্ষীরার পৌর এলাকা, কুষ্টিয়ার ছয়টি উপজেলা ও সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলায় আজ শুক্রবার ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।

সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরা থেকে আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক জানান, আজ ভোর ছয়টা থেকে জেলার পৌর এলাকায় অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক মো. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার এ আদেশ জারি করেন। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জয়দেব চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

কুষ্টিয়া: আমাদের কুষ্টিয়া অফিস জানায়, নাশকতার আশঙ্কায় কুষ্টিয়া, মিরপুর, ভেড়ামারা, কুমারখালী ও খোকসা পৌর এলাকায় এবং দৌলতপুর উপজেলায় ১৪৪ জারি করেছে প্রশাসন। আজ বেলা দুইটা থেকে রাত ১০টা দশটা পর্যন্ত এ আদেশ বহাল থাকবে।
জেলার ছয় উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তারা (ইউএনও) ১৪৪ ধারা জারির বিষয়টি প্রথম আলো ডটকমকে নিশ্চিত করেন। সংশ্লিষ্ট এলাকায় মাইকিং করে বিষয়টি জানানো হয়েছে।

রায়গঞ্জ: আমাদের রায়গঞ্জ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কায় জেলার রায়গঞ্জ পৌরসভা এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। আজ রাত নয়টা পর্যন্ত এ আদেশ বহাল থাকবে বলে রায়গঞ্জের ইউএনও কার্যালয় জানিয়েছে।
রায়গঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুল হাই বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়াকরা হয়েছে।

সারা দেশে জামায়াত-পুলিশ সংঘর্ষ চার পুলিশ সদস্যসহ নিহত ৩৯

ঢাকা: একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসির রায় ঘোষণার আগে ও পরে সারা দেশে জামায়াত-পুলিশ সংঘর্ষে নিহত হয়েছে ৩৯ জন। রায় ঘোষণার পর রংপুরে ছয়জন, ঠাকুরগাঁওয়ে পাঁচজন, চট্টগ্রামের লোহাগড়ায় পুলিশ সদস্যসহ দুইজন, গাইবান্ধায় তিন পুলিশ সদস্যসহ  ছয়জন, সাতক্ষীরায় নয়জন, কক্সবাজারে দুইজন, নোয়াখালীতে দুইজন এবং বগুড়া, মৌলভীবাজার, দিনাজপুরে ও নাটোরে চারজন নিহত হয়। আর রাজধানী ঢাকায় মারা গেছেন একজন।এছাড়া রায় ঘোষণার আগে সিরাজগঞ্জে নিহত হয় দুইজন।

বৃহস্পতিবার দুপুরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১’এর চেয়ারম্যান বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীর রায় ঘোষণা করেন। নতুন বার্তা ডটকমের ব্যুরো প্রধান ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:

রংপুর: রায় ঘোষণার আধাঘণ্টার মধ্যে রংপুরের মিঠাপুকুর ও পীরগাছায়  জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে মিঠাপুকুরে ছয়জন নিহত হয়েছে।  তারা হলেন- বালারহাট হুলাশু এলাকার  মাহমুদল হাসান (২৮), মির্জাপুরের মশিউর রহমান(২৫), লতিফপুরের সাদেকুল ইসলাম(২৫),  মাঠের হাটের আশিকুর রহমান এবং কাশিপুরের সাহেদ আলী(৪৩) মারা যায়। এছাড়া রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে একজন। তার পরিচয় পাওয়া যায়নি।

গাইবান্ধা: সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় জামায়াত-পুলিশের সংঘর্ষে তিন পুলিশ সদস্যসহ  ছয়জন নিহত হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে সুন্দরগঞ্জের বামনডাঙ্গা পুলিশ তদন্তকেন্দ্রে তিন পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।

অপরদিকে, সুন্দরগঞ্জ শহরে জামায়াত-পুলিশ সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়।

ঠাকুরগাঁও:  সাঈদীর ফাঁসির রায়ের প্রতিবাদে জেলার সদর উপজেলা গড়েয়াতে জামায়াত-পুলিশ সংঘর্ষে পাঁচজন মারা যায়। ঘটনাস্থলেই একজন মারা যান। স্থানীয় ক্লিনিকে মারা যান দুইজন। আর বাকি দুইজন মারা যায় জেলা সদর হাসপাতালে।

নিহতরা হলেন- ফিরোজ (২৮) পিতা- রবিউল হক, রুবেল (১৮) পিতা- রুহুল আমীন, নিরঞ্জন ওরফে মিথু (১৬) পিতা-শুক্র পাল, মনির (১৭) পিতা- মমিনুল ও সুমন (২২) পিতা- রফিকুল।

চট্টগ্রাম: রায় ঘোষণার পর লোহাগাড়া উপজেলার চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়কের রাজঘাটা এলাকায় পুলিশের সঙ্গে জামায়াত-শিবির কর্মীদের সংঘর্ষে পুলিশের এক সদস্য (তারেক) এবং মেজবাহ উদ্দিন নামে এক ব্যক্তি নিহত হন।

এছাড়া সাতকানিয়া উপজেলার কেরানীহাট এলাকায় সংঘর্ষে কমপক্ষে ২০ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।

নাটোর: সাঈদীর রায় ঘোষণার পর নাটোরের লালপুরের নাটোর-পাবনা মহাসড়কের কদিমচিলানে হরতাল সমর্থকরা পুলিশের গাড়ি ও একটি সিএনজি পিকআপ পুড়িয়ে দেয়। এছাড়া সংঘর্ষে খায়রুল ইসলাম নামে এক যুবলীগকর্মী নিহত হয়। নিহত খায়রুল কদিমচিলান গ্রামের দোলু ডাক্তারের ছেলে।

সাঈদীর মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণার পর উপজেলার কদিমচিলানের গোধরা গ্রামে পুলিশের সঙ্গে হরতাল সমর্থকদের সংঘর্ষ হয়। অতর্কিত হামলা করে তারা পুলিশের ব্যবহৃত একটি হিউম্যান হলারে (সিএনজি) আগুন ধরিয়ে দেয়।

এ সময় পুলিশের সঙ্গে আওয়ামী লীগকর্মীরা শিবিরকর্মীদের উদ্দেশ্যে গুলি করলে দুই শিবিরকর্মী গুলিবিদ্ধ হয়। এ সময় শিবির জামায়াতকর্মীরা পাল্টা হামলা করলে পুলিশসহ ১১জন আহত হয়। আহতদের মধ্যে যুবলীগ কর্মী খায়রুল ইসলামকে (৩৬) হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যায়। আহত ছয় পুলিশ সদস্যের মধ্যে আনিছুর রহমান ও সাইদুল ইসলামকে নাটোর সদর হাসপাতাল ও বাকি চারজনকে বনপাড়া পাটোয়ারী ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।

সাতক্ষীরা: সাঈদীর ফাঁসির রায় ঘোষণার প্রতিবাদে ও তার মুক্তির দাবিতে বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে জামায়াত- শিবির কর্মীদের সঙ্গে পুলিশ ও বিজিবি সদেস্যর সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় রাবার বুলেট ও টিয়ার শেলের আঘাতে নয়জন নিহত ও পুলিশ সাংবাদিকসহ অর্ধশত আহত হয়। 

নিহতরা হলেন- সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ঘোনা গ্রামের রবিউল ইসলাম (২৫), মোশারফ হোসেন, এমদাদ হোসেন ও নেবাখালী গ্রামের অজিয়ার রহমানের ছেলে শাহিন (২৫), সদরের  শিবিরকর্মী আলী মোস্তফা (২০), খানপুরের জামায়াতকর্মী সাইফুল্লাহ (২০), হরিশ পুরের শিবিরকর্মী তুহিন(২০), ঘোনার জামায়াত কর্মী আনারুল (৩০) ও ইকবাল।

বিকেল চারটায় সদর উপজেলার সাঈদী মুক্তি পরিষদ, জামায়াত ও শিবির নেতাকর্মীরা শহরের কদমতলা বাজার থেকে এক প্রতিবাদ মিছিল বের করে শহরের অভিমুখে আসার সময় সার্কিট হাউজ মোড়ে পৌঁছালে পুলিশ ও বিজিবি বাধা দেয়। এ সময় মিছিল কারীরা বাধা উপেক্ষা করে সামনে এগোতে চাইলে পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা  রাবার বুলেট ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়ার চেষ্টা করে।

এ সময় মাওলানা সাঈদী মুক্তি পরিষদ, জামায়াত ও শিবির নেতাকর্মীরা বাধা উপেক্ষা করে সামনে এগিয়ে যেতে চাইলে সংঘর্ষ বেধে যায়। এ সময় ছাত্রলীগ, পুলিশ ও বিজিবির গুলিতে তিনজন নিহত ও অর্ধাশতাধিক নেতা কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছে বলে জেলা জামায়াতে প্রচার সম্পাদক আজিজুর রহমান জানান। 

কক্সবাজার: দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসির রায় ঘোষণার পর কক্সবাজার সদরসহ উপজেলাগুলোতে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। দুপুরে জামায়াত-শিবির রাস্তায়  বিক্ষোভ করে। এ সময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে জেলার বিভিন্ন স্থানে শতাধিক রাউন্ড গুলি ছোড়ে। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে দুইজন নিহত হন। ২০ জন গুলিবিদ্ধসহ আহত হন শতাধিক।

নিহতরা হলেন সাজ্জাদ ও আব্দুর রশিদ। বিকাল সাড়ে চারটার দিকে পুলিশের গুলিতে তারা নিহত হন।

অপরদিকে, সাঈদীর ফাঁসির রায়কে স্বাগত জানিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও অংগ সংগঠনের নেতাকর্মীরা চকরিয়া, উখিয়া ও পেকুয়াতে আনন্দ মিছিল বের করে। এসময় তাদের সঙ্গে জামায়াত শিবির কর্মীদের সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়।

দুপুর থেকে কক্সবাজার জেলার পেকুয়া উপজেলা সদর ও রাজাখালী এলাকায় বিএনপি জামায়াত সমর্থকদের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এসময় আওয়ামী লীগ সমর্থিত বেশ কিছু বাড়ি-ঘর ও দোকানপাট ভাঙচুর করা হয়। বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসীকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ ফাঁকা ছোড়ে। এছাড়াও আহত হয় অর্ধশতাধিক।

চকরিয়া পৌর শহর এবং বিভিন্ন গ্রামে ব্যাপক বিক্ষোভ ও ভাঙচুর হয়। এসময় গুলিবিদ্ধসহ আহত হয় বেশ কয়েকজন। ব্যরিকেট দেয়া হয় চকরিয়া-মহেশখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের বেশ কয়েকটি পয়েন্টেও।

কক্সবাজার সদর উপজেলার ঈদগাঁওতে কয়েক সহস্রাধিক লোক রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করলে পুলিশের সঙ্গে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এসময় তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়। কক্সবাজার-টেকনাফ মহাসড়কে কোটবাজার ও উখিয়াসহ বিভিন্ন পয়েন্টে বিক্ষোভ করে।


নোয়াখালী: সাঈদীর ফাঁসির রায় ঘোষণার পরপরই নোয়াখালীর জেলা শহর মাইজদী ও বেগমগঞ্জসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে জামায়াত-শিবির কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংর্ঘষ হয়। এতে দুইজন নিহত হয়।

সাঈদীর মামলার রায় ঘোষনার পরই নোয়াখালী শহরের মফিজ প্লাজা ও গোদার মসজিদ এলাকা থেকে মিছিল বের করে জামায়াত ও শিবিরের কর্মীরা। তারা এসময় সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে জামায়াত-শিবিরের কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে।

শিবির কর্মীরা এসময় বেশকিছু ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ প্রায় শতাধিক রাউন্ড  গুলি ছোড়ে। একপর্যায়ে শিবির কর্মীরা দত্তেরহাটে আল-আমিন বাসের ডিপোতে বারটি বাস ভাঙচুর করে এবং চারটি বাসে আগুন দেয়। দত্তের হাটে একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান এবং এ সময় সংঘর্ষে আরো ১০ জন আহত হন ।

ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার (এসপি) মাহবুব রশীদ জানান, ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

অন্যদিকে, জেলার বেগমগঞ্জের রাজগঞ্জ ইউনিয়নের  রাজগঞ্জ বাজারে হিন্দু অধ্যুসিত গঙ্গা প্রসাদ ভূঁইয়া বাড়ি, সুতার বাড়িসহ কয়েক বাড়ি ভাঙচুর ও  আগুন দেয়া হয়।

হামলা ও ভাঙচুরের ওইসব বাড়ির নারী-পুরুষসহ পাঁচ-ছয়জন আহত হয়েছে বলে স্থানীয় সুত্র জানিয়েছে। খবর পেয়ে বেগমগঞ্জ সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মাহবুব আলম খানের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ও র্যা ব  রাজগঞ্জ ঘটনাস্থলে যায়।

এ সময় রাজগঞ্জ বাজারে পুলিশ পরিস্থি নিয়ন্ত্রণে আনতে এলোপাথারি গুলি চালালে লিটন(২৪) নামে এক মাছ বিক্রেতা মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায় এবং আরো ৫/৬জন গুলিবিদ্ধ হয়।

দিনাজপুর: রাণীরবন্দরে পুলিশ ও বিজিবির সঙ্গে জামায়াত র্মীদের সংঘর্ষ ঘটে। এ সময় গুলিতে জামায়াত কর্মী ফয়জার রহমান ঘটনাস্থলেই মারা যান।

এ সময় পুলিশের গুলিতে তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়। এছাড়া সংঘর্ষে একজন পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।

পরিস্থিতি নিয়স্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে বিপুল সংখ্যক পুলিশ, বিজিবি ও র্যাব মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে থেমে থেমে সংঘর্ষ চলছে। উত্তেজিত জনতা রাণীরবন্দরে দুইটি বাসে অগ্নিসংযোগ ও তিন থেকে চারটি বাস ভাঙচুর করে।

মৌলভীবাজার: মৌলভীবাজার জেলার সীমান্ত উপজেলা বড়লেখা দক্ষিণভাগ ও কাঁঠাতলি ইউনিয়নের জামায়াত-পুলিশ সংঘর্ষে লোকমান হোসেন (২৫) নামে এক যুবক নিহত এবং অন্তত  ১০ জন আহত হয়েছে।

এছাড়া জামাত-শিবিরের হামলায় দক্ষিণভাগসহ বড়লেখার বিভিন্ন স্থানে দোকান-পাঠ ভাঙচুর ও একটি স মিলে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।

এ সময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শতাধিক রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষণ করেছে।  বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে এলাকায় বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।

বড়লেখা থানা পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানান, দেলওয়ার হোসেন সাঈদীর ফাঁসির রায় ঘোষণার পর জামাত-শিবিরের নেতাকর্মীরা বৃহস্পতিবার দুপুরে মৌলভীবাজারের বড়লেখা দক্ষিণভাগ বাজারের প্রায় ১০টি দোকানে ভাঙচুর চালায়। এ সময় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি লতা মিয়ার স মিলে অগ্নিসংযোগ করা হয়।

অপরদিকে, কাঁঠালতলি সওদাঘর ব্রিকফিল্ডের সামনে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা বিখোভ করে। এক পর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পুলিশের সঙ্গে জামায়াত-শিবিরের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলতে থাকে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শতাধিক রাউন্ড গুলি ও টিয়ারশেল ছোড়ে । এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন প্রায় ১০ জন। এদের মধ্যে লুকমান হোসেন নামের এক যুবক মারা গেছে। তার বাড়ি দক্ষিণভাগ গ্রামে। পিতার নাম আব্দুল মন্নান। 

রড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মর্তা (ওসি/তদন্ত) ওয়াকিল উদ্দিন জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় পরিস্থিতি তাদের নিয়ন্ত্রণে। বড়লেখা উপজেলা ইউএনও সৈয়দ আমিরুল ইসলাম, এডিশনাল এসপি নুরুল ইসলাম এলাকা পরিদর্শন করেছেন।
বগুড়া: বগুড়ার সুজাদাবাদ এলাকার দহপাড়া গ্রামে জামায়াত-পুলিশের সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছে। নিহতের নাম সবেদ আলী (৫৫)। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে তিনি মারা যান।

সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জে হরতাল চলাকালে সংঘর্ষের সময় পুলিশের গুলিতে দু’জন মারা গেছেন। তারা হলেন সদর উপজেলার চণ্ডিদাসগাতি গ্রামের আব্দুল জলিলের ছেলে শিবিরকর্মী রুহুল আমিন (১৮) ও রাজাখাঁরচর গ্রামের আলমগীর হোসেনের ছেলে শিবিরকর্মী মুক্তার হোসেন। সদর উপজেলার চণ্ডিদাসগাতিতে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

সকাল আটটায় চণ্ডিদাসগাতিতে সড়ক অবরোধ করে পিকেটাররা। এরপর পুলিশ ও র্যা ব সেখানে অবস্থান নেয়। সকাল সাড়ে ১১টার পর সংঘর্ষ শুরু হয়। পুলিশের প্রতি ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে পিকেটাররা। পুলিশ ও র্যা বও পাল্টা গুলি চালায়। ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে আহত হয় অর্ধশতাধিক। গুলিবিদ্ধ হয় কমপক্ষে ২০ জন। গুরুতর অবস্থায় কয়েকজনকে সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতাল ও বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। এরপর সদর হাসপাতালে একজন এবং অন্য এক ক্লিনিকে নেয়ার পথে মারা যায় আরও একজন।

এর আগে সকাল থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম সংযোগ সড়কের নলকাতে মহাসড়ক অবরোধ করে পিকেটাররা। এ সময় তারা উত্তরবঙ্গগামী অন্তত পাঁচটি বাস-ট্রাক ভাঙচুর করে। সকাল ৮টার দিকে পুলিশ হরতালকারীদের বাধা দিলে পুলিশের সঙ্গে হরতাল সমর্থকদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশ পাঁচ রাউন্ড রাইফেলের গুলি, ৩০ রাউন্ড টিয়ারশেল ও অসংখ্য রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এ সময় তিন মহিলাসহ চারজনকে আটক করা হয়েছে।

বেলকুচিতে পুলিশ, আওয়ামী লীগ ও পিকেটারদের সংঘর্ষে কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছে। জিনিয়াস ল্যারেটরি স্কুলে আগুন দেয়া হয়েছে। বেলকুচি ইসলামী ব্যাংকে ভাঙচুর করা হয়। এ সময় তিনজনকে আটক করে পুলিশ। এদিকে বৃহস্পতিবার সকালে উল্লাপাড়ার শ্রীকোলা বাসস্ট্যা এলাকা থেকে পুলিশ উপজেলা জামায়াতের আমির শাহজাহান আলীসহ চারজনকে আটক করে।

Thursday, February 28, 2013

সাঈদীকে ‘কুত্তার বাচ্চা’ বলায় ট্রাইব্যুনালে হট্টগোল

ঢাকা: জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মামলায় সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার পর ট্রাইব্যুনালের কাস্টডিতে থাকা সাঈদী বলেন,“মাননীয় আদালত আপনারা আপানাদের বিবেকধারা অনুযায়ী ন্যায়বিচার করেননি। এ রায় দিয়ে আপনারা আপনাদের শপথ ভঙ্গ করেছেন। শাহবাগের কতিপয় নাস্তিক ও মুরতাদের চাপে আপনারা এ রায় দিয়েছেন।”
বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ রায় শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
মাওলানা সাঈদীর কথা বলার শেষ হতে না হতেই ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত সরকার সমর্থক জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি আনোয়ার হোসেন চিৎকার দিয়ে সাঈদীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “কুত্তার বাচ্চা চুপ থাক।”
সঙ্গে সঙ্গে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি ইউসুফ হোসেন বাচ্চু বলেন, “ওই রাজাকারের বাচ্চা চুপ কর।” এসময় তিনি কাঠগড়ায় থাকা সাঈদীর দিকে তেড়ে আসার চেষ্টা করলে সরকার পক্ষের প্রসিকিউটররা তাকে বাধা দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
এসময় আসামিপক্ষের আইনজীবীরা সরকার সমর্থকদের ট্রাইব্যুনালে দাঁড়িয়ে এমন আচরণে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।
পরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীরর সদস্যরা ট্রাইব্যুনালের ভিতরে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে দ্রুত মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে ট্রাইব্যুনালের হাজতখানায় নিয়ে যায়। পরে হাজতখানার সম্মুখভাগ পুলিশ অবরুদ্ধ করে রাখে।
এর আগে বিচার শুরু আগে সাঈদীকে পোনে ১০টার দিকে ঢাকা কেন্দ্রী কারাগার থেকে নিয়ে আসা হয়। ১১টা ১০ মিনিটে তাকে ট্রাইব্যুনালের ভিতর আসামির কাস্টডিতে নিয়ে বসানো হয়।
রায় পড়া শুরু হলো তিনি কখনো রায় শুনতে থাকেন, কখনো চোখ বন্ধ করে থাকেন। আবার কখনো হাতে থাকা কুরআন শরীফ তেলাওয়াত করতে থাকেন

দুটি অভিযোগে সাঈদীর ফাঁসি

জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আট ও ১০ নম্বর অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারপতি এ টি এম ফজলে কবীরের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ রায় দেন।
এটি একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার তৃতীয় ও এই ট্রাইব্যুনাল থেকে দেওয়া প্রথম রায়। রায় ছিল ১২০ পৃষ্ঠার।

সাঈদী ছিলেন রাজাকার বাহিনীর সাধারণ সদস্য

বেলা ১১টা ১০ মিনিটে বিচারপতি এ টি এম ফজলে কবীরের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এজলাসে বসেন।
১২০ পৃষ্ঠার রায় পড়ার শুরুতেই বিচারপতি এ টি এম ফজলে কবীর বলেন, ‘দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর পরিচয় সারা দেশের মানুষ জানেন। কিন্তু তাঁর বর্তমানের যে পরিচয়, সে পরিচয়ে আমরা কোনো বিচার করছি না। ১৯৭১ সালে তাঁর বয়স ছিল ৩০ বছর। সাক্ষীদের সাক্ষ্য থেকে জানা গেছে, তিনি রাজাকারদের কোনো কমান্ডার ছিলেন না। তিনি রাজাকার বাহিনীর একজন সাধারণ সদস্য ছিলেন। উর্দু ভাষা জানার কারণে পাকিস্তানি সেনাদের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ সর্ম্পক তৈরি হয়। তাই তিনি পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে প্রতিটি অভিযানে অংশ নিতেন। তাঁর গ্রাম ছিল পিরোজপুরের সাউদখালিতে। তাঁর বিরুদ্ধে যারা সাক্ষ্য দিয়েছেন, তাঁরা ওই গ্রামের নিরীহ সাধারণ মানুষ।
তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষে ২৮ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। আসামিপক্ষে সাক্ষ্য দিয়েছেন ১৭ জন। সাক্ষীদের সাক্ষ্য পর্যালোচনা করে আমরা রায় ঘোষণা করছি।’ শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত রায়ের প্রথম অংশ পড়ছেন বিচারপতি আনোয়ারুল হক।

অ্যাম্বুলেন্সে করে ট্রাইব্যুনালে নেওয়া হয় সাঈদীকে

সাঈদীকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে ট্রাইব্যুনালে নেওয়া হয়। সকাল নয়টা ৩৭ মিনিটে শিশু একাডেমীর পাশের ফটক দিয়ে ট্রাইব্যুনালে নেওয়া হয় সাঈদীকে। এরপর তাঁকে ট্রাইব্যুনাল-১-এর হাজতখানায় রাখা হয়েছে। বেলা ১১টা নয় মিনিটে তাঁকে ট্রাইব্যুনালের কাঠগড়ায় তোলা হয়।

ট্রাইব্যুনাল এলাকায় নিরাপত্তা

সাঈদীর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় ঘোষণা উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল, হাইকোর্ট ভবন ও আশপাশের এলাকায় কড়া নিরাপত্তাবলয় তৈরি করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
গোটা এলাকায় কোনো যানবাহন ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। দোয়েল চত্বর এলাকা, কার্জন হল ও বঙ্গবাজার সংলগ্ন রাস্তা, কদম ফোয়ারা সংলগ্ন রাস্তা, মত্স্য ভবন ও প্রেসক্লাব এলাকার সড়কে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে আটকে রাখা হয়েছে। পথচারীদের চলাচলও সংরক্ষিত করা হয়েছে। কেবল প্রেসক্লাব এলাকার রাস্তা দিয়েই পথচারীরা হেঁটে হাইকোর্ট এলাকায় যেতে পারছেন। পুরাতন হাইকোর্ট ভবনে ট্রাইব্যুনালের দুটি ফটকেই প্রায় অর্ধশতাধিক র্যাব ও পুলিশ সদস্য মোতায়েন রয়েছে।
এদিকে, যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে হাইকোর্টের সামনে জড়ো হয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সদস্যরা। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে স্লোগান দিচ্ছেন তাঁরা।
মুক্তিযুদ্ধকালের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ এটি হবে প্রথম রায়।

ফিরে দেখা
২০১০ সালের ২৫ মার্চ ট্রাইব্যুনাল গঠনের পর মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে প্রথম মামলা করা হয় সাঈদীর বিরুদ্ধে। এই মামলার বিচার শুরু হয় প্রথম, যুক্তি উপস্থাপনও শেষ হয় প্রথম। তবে ২০১২ সালের ২২ মার্চ গঠিত ট্রাইব্যুনাল-২ ইতিমধ্যে দুটি মামলার রায় দিয়েছেন। এর মধ্যে গত ২১ জানুয়ারি জামায়াতের সাবেক সদস্য আবুল কালাম আযাদকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৫ ফেব্রুয়ারি জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। সাঈদীর বিরুদ্ধে রায় হবে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের তৃতীয় রায়।
সাঈদীর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলার বিচারিক কার্যক্রম চলেছে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে, রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষকে দুই দফায় যুক্তি উপস্থাপন করতে হয়েছে। ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন অন্যান্য মামলার তুলনায় এটিতে সাক্ষীর সংখ্যাও বেশি।

ট্রাইব্যুনালের প্রথম মামলা: ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে করা মামলায় ২০১০ সালের ২৯ জুন জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ ও দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী গ্রেপ্তার হন। ওই বছরের ২১ জুলাই সাঈদীর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগের তদন্ত শুরু হয়। ২ নভেম্বর তাঁকে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ২০১১ সালের ১১ জুলাই রাষ্ট্রপক্ষ সাঈদীর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে। ৩ অক্টোবর ট্রাইব্যুনাল তাঁর বিরুদ্ধে ২০টি অভিযোগ গঠন করে আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু করেন।

২০ অভিযোগ: আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইন, ১৯৭৩-এর ৩(২) ধারায় সাঈদীর বিরুদ্ধে যে ২০টি অভিযোগ গঠন করা হয়, তার মধ্যে রয়েছে একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধকালে গণহত্যা (জেনোসাইড) ও বিভিন্ন ধরনের মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটন এবং তাতে সহযোগিতা করা। মানবতাবিরোধী অপরাধগুলোর মধ্যে রয়েছে হত্যা, অপহরণ, আটক রাখা, নির্যাতন, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ, লুণ্ঠন ও ধর্মান্তর করা এবং এ ধরনের অপরাধে সহযোগিতা করা।
সাক্ষ্য গ্রহণ ও যুক্তি উপস্থাপন: ২০১১ সালের ৭ ডিসেম্বর এ মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়। ২০১২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত রাষ্ট্রপক্ষের ২৭ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়। ৮ এপ্রিল থেকে নয় কার্যদিবসে জবানবন্দি দেন রাষ্ট্রপক্ষের শেষ সাক্ষী ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. হেলালউদ্দিন। ৭ মে থেকে আসামিপক্ষ তাঁকে ৪৮ কার্যদিবস জেরা করে। ২ সেপ্টেম্বর থেকে ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত আসামিপক্ষে ১৭ জন সাফাই সাক্ষ্য দেন। ৬ ডিসেম্বর প্রথমবারের মতো রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে রায় অপেক্ষাধীন (সিএভি) রাখা হয়।
কিন্তু স্কাইপে বিতর্কের জের ধরে ১১ ডিসেম্বর ট্রাইব্যুনাল-১-এর চেয়ারম্যান পদ থেকে বিচারপতি নিজামুল হক সরে দাঁড়ালে ১৩ ডিসেম্বর এই ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করা হয়। আসামিপক্ষ পুনর্বিচারের আবেদন জানায়। চলতি বছরের ৩ জানুয়ারি পুনর্গঠিত ট্রাইব্যুনাল আসামিপক্ষের পুনর্বিচারের আবেদন খারিজ করলেও দুই পক্ষকে আবার মামলার সারসংক্ষেপ ও আইনি বিষয়ে যুক্তি উপস্থাপনের নির্দেশ দেন। সে অনুসারে দ্বিতীয় দফায় দুই পক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে ২৯ জানুয়ারি ট্রাইব্যুনাল আবার রায় অপেক্ষাধীন (সিএভি) রাখেন।

Wednesday, February 27, 2013

সাঈদীর রায় বৃহস্পতিবার

আগামী কাল সাঈদীর রায় ঘোষনা করবে আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল। একারনে প্রজন্ম চত্বরকে আহবান করা হচ্ছে আজ সন্ধ্যা থেকেই সবাই যেনো কোর্ট চত্বর এবং এর আশেপাশে অবস্থান নেয়।

এইচএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি-৬৬

সহকারী অধ্যাপক, ঢাকা স্টেট কলেজ, ঢাকা

Right Form of Verbs 
প্রিয় শিক্ষার্থীরা, আজ তোমাদের জন্য ইংরেজি ২য় পত্রের ১ নম্বর প্রশ্ন অর্থাৎ Right Form of Verbs নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নে মোট ৫টি শূন্যস্থান সংবলিত একটি Passage (with clue/ without clue) দেওয়া থাকবে এবং নম্বর থাকবে ৫। উত্তর লেখার সময় passage-টি তোলার কোনো প্রয়োজন নেই। শুধু উত্তর লিখলেই চলবে। আগে তোমরা নিজে চেষ্টা করবে। তারপর উত্তরের সঙ্গে তা মিলিয়ে নেবে।
Set-4
 Complete the passage with suitable verbs from the list. Put them in the correct tense. Use the negative where necessary: 5
Be—reach—work—come—confine —dominate—succeed
Today women play an important role in all spheres of life. Once they were (a)—by men. They (b)—no longer (c)—within the four walls. They have (d)—out of kitchens and are (e)—hand in hand with man.
Set-4. Ans. try yourself
Set-5
 Complete the passage with suitable verbs from the list. Put them in the correct tenses. Use the negatives where necessary. 5
result—add—enjoy—take—be— fall—reduce
Since the people of Bangladesh do not possess knowledge of health and (a)—much health care, malnutrition (b)—to the sufferings of the people. Most of the children of Bangladesh (c)—deprived of enough calories from the food (d)—by them. Lack of vitamin A (e)—in the eye-sight of many children.
Set-5: Ans. (a) do not take (b) adds (c) are (d) enjoyed (e) results
Set-6
 Complete the passage with suitable verbs from the list. Put them in the correct tense. Use the negative where necessary: 5
Dare—desire—attain—be—may—
should—assist
Everyone (a)—success in life but very few can (b)—it. One of the main reasons for his failure is that many people (c)—take risks. We must remember that life (d)—not a bed of roses. It is full of troubles and problems. We (e)—face them with courage.
Set-6. Ans. Try Yourself
Set-7
 Complete the passage with suitable verbs from the list. Put them in the correct tenses. Use the negatives where necessary. 5
read—think—weep—say— torture—pray—go
One day while I (a)—newspaper sitting in my room, a woman with her little baby in her lap came to me (b)—I could not recognize her first, and she introduced herself and complained against her husband (c)—that she severely (d)—by him. I heard everything and advised her (e)—to the court.
Set-7: Ans. (a) was reading (b) weeping (c) saying (d) had been tortured (e) to go.

নাম পাল্টাচ্ছে হেরাল্ড ট্রিবিউন

বিখ্যাত ইংরেজি দৈনিক পত্রিকা ইন্টারন্যাশনাল হেরাল্ড ট্রিবিউন-এর নাম ইন্টারন্যাশনাল নিউইয়র্ক টাইমস-এ পরিবর্তিত হচ্ছে। পত্রিকাটির মালিক প্রতিষ্ঠান নিউইয়র্ক টাইমস এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে এই শরতেই পত্রিকাটির নামের ওই পরিবর্তন আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের বাইরের পাঠকদের কাছে ৪০ বছর ধরে এটি আইএইচটি নামে ব্যাপকভাবে পরিচিত হয়ে আসছে।
নিজ ভাবমূর্তি সুসংহত করতে নিউইয়র্ক টাইমস-এর গ্রহণ করা বিভিন্ন পরিকল্পনার ধারাবাহিকতায় ওই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এসব পরিকল্পনার অধীন চলতি মাসে বোস্টন গ্লোব পত্রিকা বিক্রি করে দেওয়ার ঘোষণা দেয় নিউইয়র্ক টাইমস ।
নিউইয়র্ক টাইমস-এর প্রধান নির্বাহী মার্ক থম্পসন বলেছেন, পত্রিকাটিতে আরও নতুন সংবাদকর্মী নিয়োগ দেওয়া হবে। বিদেশে এর পাঠক জনপ্রিয়তা বাড়ানো তাঁদের লক্ষ্য।
বিবিসির সাবেক মহাপরিচালক থম্পসন গত বছরের নভেম্বরে নিউইয়র্ক টাইমস-এ যোগ দেন।
২০০৩ সালে আইএইচটির পূর্ণাঙ্গ মালিকানা লাভ করে নিউইয়র্ক টাইমস। ইতিপূর্বে পত্রিকাটির ৫০ শতাংশ মালিকানার অধিকারী ছিল প্রতিদ্বন্দ্বী ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকা। আন্তর্জাতিক পত্রিকা আইএইচটি তার ১২৫ বছরের ইতিহাসে আরও কয়েকবার নাম পরিবর্তনের সম্মুখীন হয়। পত্রিকাটি ১৮৮৭ সালে যাত্রা শুরু করে। বিবিসি।

বিচার চাইতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার

গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক এক সদস্যের কাছে বিচার চাইতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন এক গৃহবধূ। এই অভিযোগে গত সোমবার কাপাসিয়া থানায় মামলা হয়েছে।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকালে কাপাসিয়ার সনমানিয়া ইউনিয়নের একটি গ্রামের এক গৃহবধূ তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে বিচার চাইতে যান সনমানিয়া ইউপির ২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য মাইন উদ্দিনের কাছে। তিনি অভিযোগ শোনার কথা বলে ওই গৃহবধূকে স্থানীয় আড়াল বাজারে নিজের দোকানের পেছনের একটি কক্ষে নিয়ে ধর্ষণ করেন। এরপর ধর্ষণের কথা কাউকে না জানাতে প্রাণনাশের হুমকি দেন।
ওই গৃহবধূ প্রথমে ঘটনাটি কাউকে না জানালেও পরে স্বামীকে খুলে বলেন। তাঁর স্বামী পরে ইউপি চেয়ারম্যান, সদস্য ও নারী সদস্যদের কাছে গিয়ে বিচার চান। কিন্তু বিচার না পেয়ে সোমবার ওই গৃহবধূ মাইন উদ্দিনের বিরুদ্ধে কাপাসিয়া থানায় ধর্ষণের অভিযোগে একটি মামলা করেন ।
গৃহবধূর স্বামী বলেন, ‘আমার স্ত্রীর সঙ্গে মাঝেমধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে একটু ঝগড়াবিবাদ হতো। তারই পরিপ্রেক্ষিতে আমার স্ত্রী মাইন উদ্দিন মেম্বারের কাছে বিচার চাইতে যান। কিন্তু মেম্বার আমার স্ত্রীকে ধর্ষণ করেন।’
এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে মাইন উদ্দিনের মুঠোফোনে কল করলেও তা বন্ধ পাওয়া গেছে।
ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘ধর্ষণের ঘটনাটি শুনেছি। মাইন উদ্দিন মেম্বার ঘটনাটি আপস করে দিতে বলেছেন। আমি বলেছি, এসব বিষয়ে কোনো আপস করা যায় না। আইনগতভাবে যা হয়, তাই করা উচিত।’
কাপাসিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. দেলওয়ার হোসেন বলেন, আসামি মাইন উদ্দিনকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।