Monday, April 25, 2011

মোর্শেদের মফিজ মিডিয়া

মফিজ একজন গীতিকার কিন্তু এলাকায় তার গান কেউ তেমন পছন্দ করে না। অথচ সে পাঁচ বছর ধরে গান গায় এবং ইতোমধ্যেই ৯৮৩টা গান লিখেছে। মফিজের এই দুঃখে এক জন বুদ্ধি দেয় গানের সিডি বের করলে শিল্পীর কদর বাড়বে। এমতাবস্থায় পত্রিকার বিজ্ঞাপন মারফত যোগাযোগ ঘটে ভুয়া প্রতিষ্ঠান গোলাপী মিডিয়ার সঙ্গে। গোলাপী মিডিয়া মফিজকে শিল্পীর পরিচয়পত্র দেয়-এর পর শুরু হয় মফিজের কদর, এমন কি পছন্দের মেয়েটির ক্ষেত্রেও এক পর্যায়ে মা তার অলঙ্কার দিয়ে সাহায্য করেন মফিজকে, অলঙ্কার বিক্রির টাকা দিয়ে গোলাপী মিডিয়ার মারফতে গানের রেকর্ডিং শুরু হয়। মোবারক হোসেনের রচনায় এবং ম ম মোর্শেদের পরিচালনায় 'মফিজ মিডিয়া' শিরোনামের নাটকের গল্পটি এগিয়ে চলে এমনি করে। এতে অভিনয় করেছেন ঝুনা চৌধুরী, সীমানা, সিদ্দিক, ম ম মোর্শেদ, হাসি আপা, পরশ প্রমুখ।

সজল-শখ জুটি

প্রায় এক বছর পর আবারও জুটি হয়ে অভিনয় করলেন সজল ও শখ। 'শেষ চিঠি' নামের নাটকটি ফরহাদ লিমনের রচনা ও যৌথভাবে পরিচালনা করেছেন জয়ন্ত মণ্ডল এবং সাজ্জাদ সনি। নাটকে সীমান্ত চরিত্রে অভিনয় করেছেন সজল এবং রায়া চরিত্রে শখ। এই নাটকে অভিনয় প্রসঙ্গে সজল বলেন, 'শখ অনেক ভালো অভিনয় শিল্পী। আমি তার সঙ্গে কাজ করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। প্রতিটা কাজকেই শখ খুব সহজেই গ্রহণযোগ্যতা দিতে পারে। আশা করি, দর্শকরা আমাদের জুটি আগের চেয়ে ভালো উপভোগ করবে।'

সুবর্ণার স্বামী সাজু

'কমল বিবির অতিথিশালা এবং কানা সিরাজউদ্দৌলা' নামের একটি ধারাবাহিকে সুবর্ণা মুস্তাফার স্বামীর চরিত্রে অভিনয় করছেন তরুণ অভিনেতা সাজু খাদেম। নাটকটি রচনা করেছেন মুনতাসির বিপন এবং পরিচালনা করেছেন বদরুল আনাম সৌদ। এ প্রসঙ্গে সুবর্ণা মুস্তাফা জানান, সাজু অনেক ভালো অভিনেতা। তার ভালো একটি গুণ আছে। আর তা হলো, সে যে কোনো অভিনয়ের সঙ্গে মিশে যেতে পারে। আশা করছি, নাটকটি ভালো লাগবে। কমেডিধর্মী এই ধারাবাহিকে অভিনয় প্রসঙ্গে সাজু জানান, আমি সুবর্ণা আপার সঙ্গে এর আগেও অভিনয় করেছি। কিন্তু এ নাটকে আমার আর সুবর্ণা আপার চরিত্রটি একটু ভিন্ন। তার সঙ্গে জুটি হয়ে অভিনয় করতে পেরে ভালো লাগছে। তিনি আরও বলেন, 'নাটকটিতে আমি একজন অন্ধ ব্যক্তির চরিত্রে অভিনয় করেছি। নাটকে অন্ধ ব্যক্তিটি নিজেকে নবাব সিরাজউদ্দৌলার মতো প্রতাপশালী মনে করেন। এ জন্য তার বাসায় যে কোনো অতিথি এলেই তাকে সাদরে অভ্যর্থনা জানান। তবে তার স্ত্রী কমল বিবি বিষয়টি ভালোভাবে নেন না। ফলে দু'জনের মধ্যে এক ধরনের রেষারেষি লেগেই থাকত। এমনি করে চলতে থাকে নাটকের গল্প। নাটকটির শুটিং চলছে। এটি প্রচার হবে এটিএন বাংলায়।

চলে গেলেন ভারতের আধ্যাত্মিক গুরু সাঁই বাবা জন্মদিনে বিমর্ষ শচীন

৩৮ তম জন্মদিনটিতে বিমর্ষ ক্রিকেটের জীবন্ত কিংবদন্তি শচীন টেন্ডুলকার। আধ্যাতিক গুরু সত্য সাঁই বাবার মহাপ্রয়াণে জন্মদিনে বিষণ্ন, দারুণভাবে ব্যাথিত ভারতের এই ব্যাটিং জিনিয়াস। বেশ কিছুদিন থেকেই অসুস্থ ছিলেন সাঁই বাবা। তাই বাবার আরগ্যের জন্য প্রর্থনা করতে টুইটারের বার্তা পাঠান ব্যাটিং জিনিয়াস। কিন্তু অবশেষে গতকাল সকাল ৭ টা ৪০ মিনিটে ৮৫ বছর বয়সে দেহ ত্যাগ করেন শচীনের আধ্যাতিক গুরু।
জন্মদিনকে জাকজমপূর্ণভাবেই পালন করার কথা ছিল হায়দ্রাবাদের কাকাতিয়া হোটেলে, যেখানে ম্যাচ খেলতে সপরিবারে উঠেছেন শচীন। ৩৮তম জন্মদিনে কাটা হবে ৩৮ কেজি ওজনের কেক। বড় একটা পার্টি দিবেন মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের মালিক টিনা আম্বানি। যেখান উপস্থিত থাকার কথা ছিল বলিউড তারকাদের। কিন্তু মহাগুরু সত্য সাঁই বাবার প্রয়াণে সব আয়োজন বাতিল করা হয়েছে। সাঁই বাবার মৃত্যুতে শোকাভিভূত ভারতীয়রা। তবে শচীন যেন একটু বেশিই আঘাত পেয়েছেন। তাই কিনা গতকাল মাঠে নামার আগ পর্যন্ত কথা বলেননি কারও সঙ্গেই। জন্মদিনের উৎসব তো দূরের কথা, মাঠে নামার আগে টিমমেটদের সঙ্গেও কোনো কথা বলেননি। এমনকি গতকাল সকালে নাস্তাও করেননি বলে সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছে কাকাতিয়া হোটেলের ম্যানেজার
কথা ছিল জন্মদিনে পুনেতে যুদ্ধাহত সেনাদের সঙ্গে সময় কাটাবেন টেন্ডুলকার। কেননা একজন সৈনিক দেশের জন্য নিজেকে উজাড় করে দিয়ে লড়াই করেন। আর সেনাদের কাছ থেকেই তো শেষ পর্যন্ত লড়াই করার প্রেরণা পেয়েছেন তিনি। গতকাল মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের ম্যাচ থাকার কারণে ইচ্ছাপূরণ হয়নি শচীনের। তবে দুই দিন আগেই ভিডিও কলফারেন্সের মাধ্যমে জানিয়ে দিয়েছেন তার বার্তা। সেই বার্তায় শচীন যুদ্ধাহত সৈনিকদের অভিনন্দন জানিয়েছেন এবং সময় পেলেই তাদের সঙ্গে দেখা করারও প্রতিজ্ঞা করেছেন।
সত্য সাঁই বাবার মহাপ্রয়াণে জন্মদিনে অনুষ্ঠান না হলেও পুরীর সমুদ্র তীরে তৈরি করা হয়েছিল শচীনের বিশাল প্রতিকৃতি। আহমেদাবাদে রঙ এবং রেখায় চিত্রিত হয়েছে ১৫০০ ফুট দীর্ঘ শচীনের জীবন কাহিনী। প্রতি জন্মদিনই নানা পার্টি ও অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পালন করেছেন লিটল মাস্টার। পেয়েছেন অজস পুরষ্কার। আর এবার জীবনের সেরা পুরুষ্কারটা পেয়ে গেলেন জন্মদিনের ২২ দিন আগেই। ভারতীয়দের এনে দিলেন বিশ্বকাপের দ্বিতীয় শিরোপা। ৩৮তম জন্মদিনে এর চেয়ে বড় পুরষ্কার আর কী হবে পারে! তবে সাঁই বাবার মৃত্যু যেন সব কিছুকে ম্লাণ করে দিয়ে গেছে। শচীন যখনই কোনো সফরে যেতেন তার আগে সময় পেলেই চলে যেতেন গুরুর কাছে। তাই আধ্যাতিক গুরুর মৃত্যু শচীনকে মনকে দারুনভাবে নাড়া দিয়ে গেছে। সারাদিন রুমের দরজায় লাগিয়ে রেখেছিলে 'ডোন্ট ডিস্টার্ব' লেখা প্লাকার্ড।

বাংলাদেশের বোলিং কোচ হতে পারেন আকরাম

জেমি সিডন্স চলে গেছেন। ক্রিকেটে নতুন কোচের জন্য বিসিবি খুব শীঘ্রই পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেবে বলে বোর্ডের মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস জানিয়েছেন। মূল কোচের পাশাপাশি ব্যাটিং ও বোলিং কোচও খোঁজা হচ্ছে। ভারতের সাবেক অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলিকে ব্যাটিং কোচ বানানোর চিন্তা বোর্ডের রয়েছে। বিশেষ করে সভাপতি আ হ ম মুস্তফা কামালের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক থাকাতে সৌরভের দায়িত্ব নেওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে কেউ কেউ মনে করছেন। কিন্তু ক্রিকেটার হিসেবে সৌরভের যে অবস্থান তাতে তিনি বাংলাদেশের শুধু ব্যাটিং কোচ হতে চাইবেন কিনা তা দেখার বিষয়। যতই সম্পর্ক থাকুক বাংলাদেশের দায়িত্ব নিলে তিনি মূল কোচই হতে চাইবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে সৌরভকে ব্যাটিং কোচ হওয়ার অফার আদৌ দেওয়া হবে কিনা তা বিসিবিরই অনেক পরিচালকই বলতে পারেননি।
এদিকে আবার পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক ওয়াসিম আকরামকে বাংলাদেশের বোলিং কোচের দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে বল গুঞ্জনও শোনা যাচ্ছে। বোর্ড সভাপতির সঙ্গে আকরাম খানের বন্ধুত্বের কথা ক্রীড়াঙ্গনে সবারই জানা আছে। যে সময় আকরাম বোলার হিসেবে বিশ্ববিখ্যাত ছিলেন তখুনি মুস্তফা কামালের এক অনুরোধে আবাহনীতে খেলে যান। সেক্ষেত্রে আকরামকে যদি সত্যি অফার দেওয়া হয় তাহলে তার ঢাকায় উড়ে আসাটা অবিশ্বাসের কিছু হবে না। অবশ্য এর পেছনে পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধার ব্যাপারও জড়িত রয়েছে।

Sunday, April 24, 2011

ছবি এডিটিং সফটওয়্যার

ছবি এডিট করার পাশাপাশি ছবিতে স্পেশাল ইফেক্টের জন্য ফটো ফিল্টার সফটওয়্যারটি খুবই জনপ্রিয়। সফটওয়্যারটির সাহায্যে ছবি এডিটিংসহ বিভিন্ন ধরনের ফিল্টারিংয়ের কাজও করা সম্ভব। সফটওয়্যারটি http://www.hongkiat.com/blog/11-free-alternatives-softwares-to-adobe-photoshop/ ঠিকানা থেকে বিনা মূল্যে ডাউনলোড করা যাবে।

এসার ও গেটওয়ে নোটবুকের সঙ্গে বিনা মূল্যে ওয়াইম্যাক্স সংযোগ

এসার ও গেটওয়ে নোটবুকের সঙ্গে বিনা মূল্যে ওয়াইম্যাক্স সংযোগ দিচ্ছে এঙ্িিকউটিভ টেকনোলজিস লিমিটেড (ইটিএল)। 'হিট ফর দ্য ম্যাঙ্মিাম উইথ এসার অ্যান্ড বাংলালায়ন ওয়াইম্যাঙ্' স্লোগানের এ অফার ৯ এপ্রিল শেষ হওয়ার কথা থাকলেও চলবে ১৫ মে পর্যন্ত। দেশব্যাপী এসার মল ও নির্বাচিত এসার-গেটওয়ে রিসেলারদের কাছ থেকে ক্রেতারা এ সুযোগ গ্রহণ করতে পারবেন। অফারের আওতায় ক্রেতারা এসার এবং গেটওয়ের নোটবুক কিনলেই বিনা মূল্যে ৬০ দিনের জন্য বাংলালায়ন ওয়াইম্যাঙ্ প্রিপেইড সংযোগ ব্যবহার করতে পারবেন।

তথ্য বিক্রি করছে ফেইসবুক!

ফেইসবুক ব্যবহারকারীদের প্রোফাইল, স্ট্যাটাস আপডেট, মেসেজসহ বিভিন্ন তথ্য বিজ্ঞাপনদাতাদের কাছে বিক্রি করছে বলে জানিয়েছে লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমস। আর ফেইসবুক ব্যবহারকারীদের এই তথ্যাদি পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে বিজ্ঞাপনদাতারা তাঁদের পণ্যের বিপণন কৌশল নির্ধারণ করে ব্যবসায় সফলতা অর্জন করছেন। ফলে ফেইসবুক ব্যবহারকারীদের মনস্তাত্তি্বক চাওয়া, আগ্রহ এমনকি তারা বন্ধুদের সঙ্গে কী ধরনের তথ্য বিনিময় করে সে অনুযায়ী অনলাইনে বিজ্ঞাপন প্রচার করে থাকে বলে ধারণা করা হচ্ছে। অর্থাৎ যদি কোনো ফেইসবুক ব্যবহারকারী তার প্রোফাইলের রিলেশন স্ট্যাটাস পরিবর্তন করে 'এনগেজড' লেখে তবে তার ফেইসবুকের পর্দায় বেশিমাত্রায় স্থানীয় বিবাহ কার্যক্রম পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর বিজ্ঞাপন প্রচার করে থাকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। একই সঙ্গে যদি ফেইসবুক ব্যবহারকারীরা নিজের শখের তালিকায় লেখে 'মোটরসাইকেল' তবে তার ফেইসবুকের পর্দায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের তৈরি মোটরসাইকেল বিক্রির বিজ্ঞাপন প্রচার করা হয়। যদিও ফেইসবুকের অ্যাডভার্টাইজিং অ্যান্ড গ্লোবাল অপারেশনস বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট ডেভিড ফিচার জানিয়েছেন, ফেইসবুক ব্যবহারকারীরা যেন সহজেই তাদের প্রয়োজনীয় পণ্যগুলো খুঁজে পায় সে জন্যই এ কার্যক্রম গ্রহণ করেছে ফেইসবুক। তবে বিজ্ঞাপনদাতাদের কাছে ফেইসবুক ব্যবহারকারীদের অজান্তে তাদের ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশ অনুচিত বলে মনে করছেন নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা। ফেইসবুকের এ কার্যক্রম ফেইসবুক ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্যের ওপর নজরদারি বলে মনে করছেন তাঁরা।

রাজশাহী মেডিক্যালের দুই ছাত্রের হাতে বন্ধু খুন

মাহবুব আলম রাসেল, জ্যোতির্ময় জয় ও সাবি্বর হোসেন। তাঁরা একে অপরের বন্ধু। বন্ধুত্বের এই বন্ধন যে এভাবে ছিন্ন হবে তা ভাবতেও পারেননি রাসেলের বাবা মকবুল হোসেন। কিন্তু তা-ই সত্যি হলো। রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজের দুই ছাত্রবন্ধু জয় ও সাবি্বরের হাতেই খুন হলেন রাজশাহী কলেজের ছাত্র ও ব্যবসায়ী রাসেল (২৪)। পাওনা টাকা পরিশোধে চাপ দেওয়ায় রাসেলকে খুন করা হয় বলে জানা গেছে।
হত্যাকাণ্ডের ১৭ দিন পর গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজের ক্যান্টিনের পিছনের একটি ড্রেন থেকে রাসেলের গলিত লাশ উদ্ধার করে র‌্যাব। রাসেলের পরিবারের করা মামলায় এর আগে গতকাল ভোররাতে জয়কে গ্রেপ্তার করা হয়। জয়ের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতেই র‌্যাব সদস্যরা রাসেলের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠান। রাসেলের আরেক বন্ধু সাবি্বর পলাতক।
রাসেলদের বাড়ি নাটোরের লালপুর উপজেলায়। জয় নাটোরের বাগাতিপাড়া গ্রামের জগদিশ চন্দ্র সরকারের ছেলে। তিনি রাজশাহী মেডিক্যাল
কলেজের পঞ্চম বর্ষের (৪৭তম ব্যাচ) ছাত্র। তাঁর সহপাঠী সাবি্বর গাজীপুর জেলার মৃত শাহাদত হোসেনের ছেলে। তাঁদের পরিবার বর্তমানে ঢাকার রামপুরা এলাকায় থাকে।
জয়ের দেওয়া তথ্য উদ্ধৃত করে র‌্যাব জানায়, রাসেল আইপিএলের বাজি জিতে সাবি্বরের কাছে তিন লাখ টাকা পেতেন। তা ছাড়া ১৫ শতাংশ সুদে ধার নেওয়া দেড় লাখ টাকা পেতেন জয়ের কাছে। ওই টাকা পরিশোধে চাপ দেওয়ায় জয় ও সাবি্বর গত ৪ এপ্রিল রাসেলকে নাটোরের আবদুলপুর বাজারে তাঁর ইলেকট্রনিকসের দোকান থেকে ডেকে নিয়ে আসেন। এরপর ওই দিনই রাত ১২টার দিকে তাঁরা রাসেলকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চারু মামার ক্যান্টিনের সামনে নিয়ে যান। সেখানে ক্যান্টিনের সামনে বসে তাঁরা তিনজন তিনটি ফেনসিডিল পান করেন। রাসেলকে তাঁরা ফেনসিডিলের যে বোতলটি পান করতে দিয়েছিলেন তাতে ঘুমের ওষুধ মেশানো ছিল। এ কারণে রাসেল ফেনসিডিল পানের কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘুমিয়ে পড়েন। এরপর রাসেলকে হত্যা করার জন্য তাঁর শরীরে সাবি্বর বিষজাতীয় ইনজেকশন পুশ করেন। ১০ মিনিট পরে রাসেল মারা যান। এরপর জয় ও সাবি্বর দুজনে মিলে রাসেলের লাশ চারু মামার ক্যান্টিনের পিছনে নিয়ে ড্রেনের স্লাব ও মাটি তুলে সেখানে ফেলে দেন। দ্রুত পচে যাওয়ার জন্য লাশের ওপর প্রথমে সিমেন্ট ও কাপড় দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। এরপর মাটি দিয়ে চাপা দিয়ে কচুগাছ লাগানো হয়।
জয় র‌্যাবকে জানান, তিনি মানুষের কংকালের ব্যবসা করতেন। রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ থেকে কংকাল কিনে নিয়ে অন্য জায়গায় বিক্রি করতেন। এই ব্যবসার জন্য তিনি রাসেলের কাছ থেকে টাকা ধার নিয়েছিলেন। রাসেলকে হত্যা করার জন্য সাবি্বর ও জয় এক সপ্তাহ আগেই পরিকল্পনা করে রেখেছিলেন।
রাসেলের বাবা মকবুল হোসেন জানান, জয় হিন্দু সমপ্রদায়ের ছেলে হলেও প্রায় সাত বছর আগে নাটোর ক্যান্টনমেন্ট কলেজে একাদশ শ্রেণীতে একসঙ্গে পড়ার সময় রাসেলের সঙ্গে তার বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। এরপর এইচএসসি পাস করে রাসেল রাজশাহী কলেজে অর্থনীতিতে এবং জয় রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হয়। সেই সুবাদে মাঝে-মধ্যেই জয় তাঁদের বাসায় যাতায়াত করত। একপর্যায়ে জয়ের বন্ধু সাবি্বরের সঙ্গেও বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে রাসেলের। মকবুল হোসেন জানান, জয় ও সাবি্বর ঠিকাদারি ব্যবসা এবং কোচিং সেন্টার খোলার নাম করে প্রায় ১০ লাখ টাকা রাসেলের কাছ থেকে ধার নিয়েছিল। এই টাকা পরিশোধের জন্য রাসেল মাঝে-মধ্যেই তাদেরকে বলত।
মকবুল হোসেন আরো জানান, গত ৪ এপ্রিল দোকানের মালামাল কেনার নাম করে রাসেল তার বন্ধু জয় ও সাবি্বরের সঙ্গে নাটোরের আবদুলপুর রেলস্টেশন থেকে বিকেল ৫টার সময় পদ্মা ট্রেনে চড়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেয়। ওই দিন সন্ধ্যা ৭টায় ছেলের সঙ্গে কথা হয় মকবুলের। রাত ১০টার দিকে রাসেলের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। পরদিনও রাসেলের ফোন বন্ধ পাওয়ায় তিনি সাবি্বরকে ফোন করেন। তখন সাবি্বর তাঁকে জানিয়েছিলেন, রাসেল ভালো আছে, কোনো সমস্যা হয়নি। চার্জ না থাকায় তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ হয়ে আছে। সে খুব ব্যস্ত থাকায় কথা বলতে পারছে না বলেও জয় মকবুল হোসেনকে জানিয়েছিলেন। এরপর মকবুল হোসেনের সঙ্গে জয় ও সাবি্বর এভাবে আরো কয়েকবার প্রতারণা করতে থাকেন। সর্বশেষ জয়ের সঙ্গে গত ৭ এপ্রিল কথা হয় মকবুল হোসেনের।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে মকবুল হোসেন বলেন, 'রাসেলকে এভাবে কৌশলে অপহরণ করে হত্যা করা হবে, এটা কখনো চিন্তাই করতে পারিনি। আমি ছেলে হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই।' ছেলের মৃত্যুর খবর শুনে রাসেলের মা রেহেনা খাতুন শয্যাশায়ী হয়ে পড়েছেন।
রাসেলের ভগি্নপতি মাজেদুর রহমান জানান, রাসেলের ফোন বন্ধ থাকার পর যখন জয় ও সাবি্বরের মোবাইলও বন্ধ হয়ে যায়, তখন তাঁদের সন্দেহ হয়। এরপর রাসেলের পরিবারের লোকজন ধারণা করেন, তাঁকে জয় ও সাবি্বর অপহরণ করেছে। কোনোমতেই তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারায় গত ১৫ এপ্রিল রাসেলের বাবা লালপুর থানায় জয় ও সাবি্বরের নামে একটি অপহরণ মামলা করেন।
রাজশাহী র‌্যাব-৫-এর ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর রাকিবুল হাসান সাংবাদিকদের জানান, জয় ও সাবি্বর দুজনই রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজে পড়ে বলে মামলাটি হাতে পাওয়ার পর লালপুর থানা থেকে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। এরপর মোবাইল ট্র্যাকারের মাধ্যমে জয়কে গতকাল ভোর ৩টার দিকে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। গতকাল রাতে তাঁকে লালপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়। পলাতক সাবি্বরকেও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে তিনি জানান।
জয়ের দেওয়া তথ্য উল্লেখ করে র‌্যাব জানায়, রাসেলকে হত্যার পর গত ৯ এপ্রিল সাবি্বর ও ১০ এপ্রিল জয় রাজশাহী ছেড়ে পালিয়ে যান। মেজর রাকিবুল বলেন, 'জয়ের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী আমরা অনেকটাই নিশ্চিত হয়েছি এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জয় ও সাবি্বরই জড়িত ছিলেন। আর কেউ জড়িত আছে বলে আমাদের কাছে মনে হচ্ছে না।'
গতকাল সন্ধ্যায় ময়নাতদন্ত শেষে রাসেলের লাশ তাঁর গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হলে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। তাঁর লাশ একঝলক দেখার জন্য এলাকার শত শত নারী-পুরুষ ভিড় জমায়। রাতেই পারিবারিক কবরস্থানে রাসেলের দাফন সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে।
যেভাবে উদ্ধার হলো লাশ : জয়কে নিয়ে র‌্যাবের একটি দল গতকাল দুপুর ২টার দিকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজের চারু মামার ক্যান্টিন এলাকায় আসে। এরপর যেখানে রাসেলকে পুঁতে রাখা হয়েছিল সেখানে র‌্যাব ও সাংবাদিকদের নিয়ে যান জয়। কলেজের মূল ভবন থেকে ১০ হাত দূরে উত্তর পাশে চারু মামার ক্যান্টিন। ক্যান্টিনের পেছনে মাটি আর পানিতে ভরে যাওয়া একটি ড্রেন। সব সময় পানি জমে থাকে বলে এখানে কিছু কচুগাছও জন্ম নিয়েছে। এই কচুগাছের মধ্যে সামান্য একটু আলগা করা মাটি। তার ওপর চাপানো রয়েছে ছোট ভাঙা একটি স্লাব। জয় নিজে স্লাবটি টেনে তুলতেই লাশের পচা গন্ধ বের হতে থাকে। পরে ডোম ডেকে রাসেলের লাশ তোলা হয়।
রাসেলের পরিচিতি : নাটোরের লালপুর উপজেলার মকবুল হোসেনের এক ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে রাসেল ছিলেন ছোট। ২০০৩ সালে নাটোরের করিমপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করে রাসেল নাটোর ক্যান্টনমেন্ট কলেজে ভর্তি হন। এরপর সেখান থেকে ২০০৫ সালে এইচএসসি পাস করে অনার্স পড়ার জন্য রাজশাহী কলেজে অর্থনীতি বিভাগে ভর্তি হন। ছাত্র থাকা অবস্থায়ই ২০০৮ সালের ১৬ এপ্রিল তিনি বিয়ে করেন। বিয়ের পর রাসেল এলাকায় ইলেকট্রনিকসের দোকান দেন। তাঁর আড়াই বছরের একটি ছেলে সন্তান আছে।

রাজধানীর পাঁচ স্থানে টাইমবোমার তথ্যে পুলিশে দৌড়ঝাঁপ

রাজধানীর পাঁচটি স্থানে টাইমবোমা পোঁতা হয়েছে। বিস্ফোরণ ঘটানো হবে। কাফরুল থানার ওসিকে ফোন করে এক তরুণী জানান এ সংবাদ। এমন খবরে নড়েচড়ে বসে পুলিশ প্রশাসন। শুরু হয় দৌড়ঝাঁপ। কিন্তু তথ্য অনুযায়ী গলদঘর্ম হয় পুলিশ। কোথাও মেলেনি টাইমবোমার আলামত। এরই মধ্যে বন্ধ হয়ে যায় তথ্যদাতা তরুণীর মোবাইল ফোনের নম্বরটিও। তবে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) শনাক্ত করতে পেরেছে ওই তরুণীকে। মিথ্যা তথ্য দিয়ে পুলিশকে বিভ্রান্ত করার অপরাধে গত শুক্রবার রাতে কাফরুল এলাকা থেকে রোমানা বিনতে সাইফ (১৯) নামের ওই তরুণীকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ। এ ঘটনায় রোমানার বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে। গতকাল শনিবার তাকে আদালতে হাজির করা হয়।
ডিবি কর্মকর্তারা জানান, এইচএসসি পরীক্ষার মাঝখানে কোনো বিরতি না থাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে পরীক্ষা স্থগিতের উদ্দেশ্যে মিথ্যা তথ্য দেয় রোমানা। সে কাফরুলের একটি কলেজ থেকে চলমান এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। তার বাবার নাম সাইফুল ইসলাম।
ডিবি সূত্রে জানা যায়, গত ১৮ এপ্রিল রাতে রোমানা কাফরুল থানার ওসি আবদুল লতিফকে সরকারি মোবাইল ফোনে কল করে জানায় বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটার, রাইফেলস স্কয়ার ও আবাহনী মাঠসহ রাজধানীর পাঁচটি স্পটে টাইমবোমা পুঁতে রাখা হয়েছে। বোমাগুলো ১৯ এপ্রিল সকাল সাড়ে ৯টা থেকে ১০টা ৪৯ মিনিটের মধ্যে বিস্ফোরিত হবে বলেও জানায় রোমানা। কে বোমা ফাটাবে জানতে চাইলে রোমানা পুলিশকে জানায়, তার স্বামী এর সঙ্গে জড়িত। স্বামীকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড থেকে বিরত রাখতে এর আগে রোমানা স্বামীর বাড়ি থেকে চলে গিয়েছিল বলেও জানায়। এরপর পুলিশ ঘটনা অনুসন্ধান করে প্রমাণ পায় রোমানা সম্পূর্ণ মিথ্য তথ্য দিয়েছে।
ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে রোমানা জানায়, সে আতঙ্ক সৃষ্টি করে পরীক্ষা স্থগিতের আশায় ওই মিথ্যা তথ্য দিয়েছিল। স্বামী-সংসার নিয়ে মিথ্যা নাটক করেছিল বলেও জানায় রোমানা। সে অবিবাহিত এবং তার কোনো সন্তান নেই। পুরো ঘটনাই বানোয়াট বলে স্বীকার করে রোমানা।