Sunday, April 24, 2011

গিলক্রিস্টের কাছে ক্লাব নয়, দেশই বড়

দেশ বড় না ক্লাব-প্রশ্ন তুলে দিয়েছে এবারের আইপিএল। ইংল্যান্ডে টেস্ট সিরিজের জন্য লঙ্কান বোর্ড ৫ মে'র মধ্যে দেশে ফিরতে বলেছিল কুমার সাঙ্গাকারাদের। এতে অসন্তোষ প্রকাশ করেন শ্রীলঙ্কার খেলোয়াড়রা। পরে ভারতীয় বোর্ডের চাপে ৫-এর বদলে ১৮ মে দেশে ফিরতে বলা হয় সাঙ্গাকারাদের। ওয়েস্ট ইন্ডিজের কিয়েরন পোলার্ডও আইপিএলের জন্য খেলছেন না পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ। আর সাবেক ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক ক্রিস গেইল প্রথম দুই ওয়ানডেতে সুযোগ না পেয়ে চলে এসেছেন আইপিএল খেলতে। তাই তাঁর ওপর খেপেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ড। এমন সময়ই সর্বকালের সেরা উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান অ্যাডাম গিলক্রিস্ট জানালেন, তাঁর মতে ক্লাব নয়, সবার কাছে দেশের গুরুত্বই বেশি হওয়া উচিত, 'আমি বিশ্বাস করি সব ক্রিকেটারেরই সবার আগে দেশকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত। আইপিএলে খেলার আমন্ত্রণ পাওয়াটা আমাদের জন্য সৌভাগ্যের কিন্তু আমরা এই সুযোগটা পেয়েছি দেশের হয়ে ভালো খেলার কারণেই।' অবশ্য দেশ আর ক্লাবের মধ্যে কোনো একটাকে বেছে নেওয়ার ব্যাপারটি যে জোর করে চাপিয়ে দেওয়ার মতো নয় সে কথাও স্বীকার করেছেন আইপিএলে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের অধিনায়ক, 'শেষ পর্যন্ত এটা সংশ্লিষ্ট ক্রিকেটার আর সে দেশের বোর্ডের সমঝোতার ব্যাপার।' পিটিআই

শ্বশুরের গানে সালমার কণ্ঠ

সালমার সর্বশেষ একক 'বৃন্দাবন' প্রকাশিত হয়েছে গত বছর। অ্যালবামের গানগুলো পছন্দ করেন শ্রোতা। আসছে ঈদে নতুন অ্যালবাম প্রকাশ করার পরিকল্পনা করেছেন ক্লোজআপ ওয়ান খ্যাত এই গায়িকা। এটি হবে সালমার ষষ্ঠ একক। সালমা জানান, তাঁর প্রথম একক অ্যালবামের সুরকার-সংগীত পরিচালক শওকত আলী ইমন এ অ্যালবামেও সংগীত করবেন। গানের কথা থাকবে বিভিন্ন গীতিকারের। তবে এবারের অ্যালবামের একটি বিষয় সালমার কাছে একেবারেই আলাদা। এ অ্যালবামে সালমা গাইবেন তাঁর শ্বশুর মোস্তাফিজুর রহমান ফিজুর লেখা গান।
সালমা বলেন, 'আমার শ্বশুর অনেক গান লিখে গেছেন। কিছু গান আমি হাতে পেয়েছি। গানগুলোর কথা আমার বেশ মনে ধরেছে। আর তাই সেখান থেকে দু-একটি গান আমার অ্যালবামেও রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

গরমের বলিউড

যতই চরম হোক গরম, থাকতে হবে ঠাণ্ডা। দেখতে যেন তাজাই লাগে। দেখা যাক, বলিউডের নায়িকারা কেমন সাজ পোশাক নিচ্ছেন এই গরমে
কারিনা কাপুর
পোশাকটার রং উপচে পড়ছে। ম্যাঙ্ইি তো বলে পোশাকটাকে। ছিমছাম লাগছে খুব। নজরও কাড়ছে।

ক্যাটরিনা কাইফ
বার্বি হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন ক্যাট এই সময়ে। দেখতে বাচ্চা বাচ্চা লাগে। গরমের এত ভালো আর হয় না। কী আরামেই না বসে আছে গোল গলা টি-শার্ট আর খাটো চেক স্কার্ট পরে! পায়ে গলিয়েছে স্নিকার। আর চুলের হলুদ ব্যান্ডটা তো ওকে রীতিমতো আদুরী করে তুলেছে।

শিল্পা শেঠি
পা দেখাতে ভালোবাসেন শিল্পা। মানতেই হবে দেখতে ভালো। ফ্রকটার রং যেমন ভালো, আরামও পাচ্ছেন মনে হয়।

সোনম কাপুর
দীর্ঘাঙ্গী, মায়াবী চেহারার মেয়েটা পরেছে অ্যাংলোদের মতো একটা পোশাক। আবার মনে হয় সম্ভ্রান্ত ব্রিটিশ রমণী।

ট্যাক্সি চালিয়ে বিখ্যাত বাংলাদেশের শামীম

নিউইয়র্ক থেকে লস অ্যাঞ্জেলেসের দূরত্ব দুই হাজার ৭৪০ মাইল। এই পথে টানা ছয় দিন গাড়ি চালিয়ে ইতিহাসের অংশ হলেন বাংলাদেশি ট্যাক্সিচালক মোহাম্মদ আলম ওরফে শামীম। আর এ ইতিহাস তিনি সৃষ্টি করেছেন জন বেলিটস্কি ও ড্যান উইবেন নামের যুক্তরাষ্ট্রের দুই নাগরিকের জন্য। ঘটনাটি গোটা আমেরিকায় ব্যাপক কৌতূহলের জন্ম দিয়েছে।
ঘটনার শুরু ড্যান উইবেন (৩২) কিভাবে তাঁর জন্মদিন কাটাবেন তা নিয়ে। অনেক জল্পনা-কল্পনার পর সিদ্ধান্ত নেন নিউইয়র্ক থেকে ট্যাক্সিতে করে তাঁরা লস অ্যাঞ্জেলেস ভ্রমণের মধ্য দিয়ে জন্মদিন উদ্যাপন করবেন। যেই ভাবা সেই কাজ। তাঁরা পাঁচ হাজার ডলারে ভাড়া করেন শামীমের ট্যাক্সি তবে জ্বালানি ও পথের সব ধরনের ব্যয়ও তাঁরা বহন করবেন বলে জানান। এ প্রস্তাবে রাজি হন শামীম। ১৬ এপ্রিল রাত ১১টায় লাগোয়ার্ডিয়া এয়ারপোর্ট থেকে যাত্রা শুরু হয়। ছয় দিন পর ২২ এপ্রিল লস অ্যাঞ্জেলেস সিটিতে গিয়ে পৌঁছেন তাঁরা। টিভি, রেডিও ও বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের সাংবাদিকরা তাঁদের এ চ্যালেঞ্জিং যাত্রার অভিজ্ঞতার কথা জানতে চান। সেটি ফলাও করে প্রচারও হয়।
ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার বাসিন্দা মোহাম্মদ আলম শামীম ১৪ বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রে যান ডিভি লটারি জিতে। ১২ বছর ধরে নিউইয়র্ক সিটিতে তিনি ট্যাক্সি চালাচ্ছেন। শামীম তাঁর প্রতিক্রিয়ায় জানান, 'বিষয়টিকে আমি চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছিলাম। যখন লস অ্যাঞ্জেলেসে পৌঁছি তখন সে এক লঙ্কাকাণ্ড ব্যাপার। মিডিয়াকর্মীরা ঘিরে ধরেন আমাদের।' তিনি বলেন, জিপিএসের (গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম) নির্দেশে গাড়ি চালিয়েছেন বিধায় কোনো অসুবিধা হয়নি।
জন বেলিটস্কি বলেন, 'বন্ধুর জন্মদিন এমনভাবে পালন করতে চেয়েছিলাম, যা হবে মজার, ঝুঁকিপূর্ণ এবং চমকপ্রদ। এবং সেটি ঘটল।'
উল্লেখ্য, নিউইয়র্ক সিটির ৪৪ হাজার ক্যাবচালকের মধ্যে প্রায় ১২ হাজার বাংলাদেশি। এর আগে যাত্রীর ফেলে যাওয়া বিপুল অর্থ ও স্বর্ণালংকার ফিরিয়ে দিয়ে বাংলাদেশি ওসমান চৌধুরীসহ বেশ কজন যে সততার পরিচয় দেন, তা গোটা যুক্তরাষ্ট্রে আলোচিত হয়।

NEW WAY TO EARN MONEY IN ONLINE

Saturday, April 23, 2011

গেইল ঝড়ে বিধ্বস্ত কলকাতা

ক্রিস গেইল এসেই যেন নিজের রূপটা দেখিয়ে নিলেন আইপিএলকে। মাত্র ৫৪ বল থেকে ৭টি ছয় ও ৯টি চার মেরে করলেন ৯৮ রান। এরপর? অনেকক্ষণ ঠেকে ছিলেন তিনি ৯৮ রানে। বিরাট কোহলি চাইলে গেইলের সেঞ্চুরিটা আটকে দিতে পারতেন। কিন্তু তিনি সহযাত্রীর এই বিরল সম্মান থেকে বঞ্চিত হওয়া মেনে নিতে চাইলেন না। কোহলি ১৮তম ওভারের প্রথম বলেই চার মেরে নিজেদের স্কোর নিয়ে গেলেন ১৭০ রানে। এর আগে কলকাতা নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে করেছিল ১৭১ রান। গেইলের ৯৮। বিজয়ের জন্য প্রয়োজন আর মাত্র ২ রান। ইকবাল আব্দুল্লার চারটি বল ঠেকিয়ে দিলেন কোহলি। কিন্তু ইকবাল পঞ্চম বলটি হোয়াইট দিয়ে ভয় ধরিয়ে দিয়েছিলেন সবার মনে। এমনকি কোহলি নিজেই বিরক্তি প্রকাশ করছিলেন বার বার। তবে শেষ বলটি হলো কোন রান ছাড়াই। উনিশতম ওভারটি করতে এলেন সাকিব আল হাসান। প্রথম বলেই স্ট্রাইকে থাকা ক্রিস গেইল চার মারলেন। সেই সঙ্গে গ্যালারি যেন নতুন করে জেগে উঠল। ৫৫ বলে ১০২ রানের ইনিংস খেললেন ক্রিস গেইল। সঙ্গে থাকা কোহলি করেছেন ২৩ বলে ৩০ এবং এর আগে দিলশান করেছেন ৩১ বলে ৩৮ রান। শচীন টেন্ডুলকার কিছুদিন আগেই করেছিলেন সেঞ্চুরি। মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের অধিনায়ক সেঞ্চুরি পূর্ণ করেছিলেন শেষ বলে। ক্রিস গেইলও অনেকটা তাই করলেন। দেশ থেকে একরকম অভিমান করে চলে আসার ক্যারিবীয় এই তারকা রয়েল চ্যালেঞ্জার্স বাঙ্গালুরুর পক্ষে খেলতে নেমেই প্রমাণ করলেন নিজেকে। সেই সঙ্গে আইপিএল জমিয়েও তুললেন। বর্তমানে পয়েন্ট টেবিলে ৬ ম্যাচ থেকে ২ জয় নিয়ে পঞ্চম স্থানে আছে বাঙ্গালুরু। শীর্ষে থাকা কলকাতা নেমে গেছে দ্বিতীয় স্থানে। তারা ৬ ম্যাচ থেকে জয় পেয়েছে ৩টিতে।
গেইল ঝড় শুরু হওয়ার আগে গৌতম গাম্ভীরের ৩৮ বলে ৪৮ এবং ক্যালিসের ৪২ বলে ৪০ রান কলকাতাকে মোটামুটি নিরাপদ সংগ্রহই এনে দিয়েছিল। কিন্তু ক্রিস গেইল যে তার স্বভাবসুলভ ঝড় নিয়ে মাঠে উপস্থিত হবেন তা কে জানতো? জানেনি বলেই গতকাল কলকাতা নাইট রাইডার্স হেরে গেল ৯ উইকেটে। আরবিন্দ ২ এবং সাঈদ ও ভেট্টরি একটি করে উইকেট নিয়েছিলেন রয়েল চ্যালেঞ্জার্স বাঙ্গালুরুর পক্ষে। কলাকাতার পক্ষে একমাত্র উইকেটটি নিয়েছেন বালাজি। কিন্তু কোন লাভ হয়নি কেকেআরের। শাহরুখ খান মাঠে দাঁড়িয়ে দেখলেন নিজের দলের পরাজয়। ম্যাচ সেরা নির্বাচিত হয়েছেন সেঞ্চুরি করা ক্রিস গেইল।

নতুন প্রেমে মন মজাইয়া...

জন আব্রাহামের সঙ্গে বিপাশা বসুর দীর্ঘদিনের সম্পর্ক ভেস্তে গেছে খুব বেশিদিন হয়নি। খবর রটেছে, এই বিচ্ছেদের কষ্ট ভুলতে বিপাশা নাকি এবার 'সিঙ্গুলারিটি' ছবিতে তার সহ-তারকা জশ হার্নেটের কাছাকাছি আসার চেষ্টা করছেন। ছবিটির শুটিংয়ের বাইরেও প্রচুর সময় তারা একসঙ্গেই কাটাচ্ছেন। খবর ইন্দো-এশিয়ান নিউজ সার্ভিসের।
সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, হলিউডি ছবি 'সিঙ্গুলারিটি'তে একসঙ্গে অভিনয় করছেন বিপাশা ও জশ। ভারতের মধ্যপ্রদেশে ছবিটির শুটিং করছেন তারা। শুটিংয়ের সময় তো বটেই, শুটিং শেষেও প্রচুর সময় তারা একে অপরের সানি্নধ্যেই থাকছেন।

কৃষ্ণচূড়ায় লেগেছে আগুন

সময়টা বৈশাখ। কাঠফাটা রোদ, অসহনীয় গরম, আবার হঠাৎ কালবৈশাখী। সবমিলিয়ে একটা বিরক্তিকর প্রকৃতি। এত কষ্টের মাঝেও একটাই সান্ত্বনা, সময়টা এখন কৃষ্ণচূড়ার। চারদিকে যেন রঙের আগুন ধরেছে। সে আগুন নেভানোর কোনো দমকলও নেই। ব্যস্ত এই শহরের এদিক-সেদিক একটু চোখ ফেললেই চোখে পড়বে লাল রঙা কৃষ্ণচূড়া। লাল রঙা এ ফুলগুলোর দিকে একবার তাকালে চোখ ফেরানো দায়।
কৃষ্ণচূড়ার বৈজ্ঞানিক নাম ডেলোনিখ রেজিয়া (Delonix regia)। চমৎকার পত্রপল্লব আর আগুন লাল ফুল ছাড়ানো ছাড়া এর যেন আর কোনো কাজ নেই। এটি ফাবাসিয়ি পরিবারের অন্তর্গত। গুলমোহর নামেও এর বেশ পরিচিতি রয়েছে। একটা সময় ছিল এটা শুধু মাদাগাস্কারের শুষ্ক পত্রঝড়া জঙ্গলে পাওয়া যেত এদের। কিন্তু এর সৌন্দর্য একে জঙ্গল থেকে তুলে নিয়ে এসেছে ইট-কাঠের শক্ত শহরেও। রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন বড় বড় সড়কের পাশেও এদের শক্ত অবস্থান।
কৃষ্ণচূড়া গাছের লাল, কমলা, হলুদ ফুল এবং উজ্জ্বল সবুজ পাতা একে দৃষ্টিনন্দন করে তোলে। সৌন্দর্য ছড়ানো ছাড়াও, এই গাছ উষ্ণ আবহাওয়ায় শীতল ছায়া দিয়ে থাকে। এরা উচ্চতায় সর্বোচ্চ ১২ মিটার হলেও শাখা-পল্লবে এর উচ্চতা অনেক। শুষ্ক অঞ্চলে গ্রীষ্মকালে এর পাতা ঝরে গেলেও, নাতিষীতোষ্ণ অঞ্চলে এটি চিরসবুজ।
কৃষ্ণচূড়া ফুলের রঙ উজ্জ্বল লাল। আমাদের দেশে বসন্তকালে এ ফুল ফোটা শুরু করে। গ্রীষ্মের কিছুটা সময়ও তাদের যৌবন টিকে থাকে। এর ফুলগুলো বড় চারটি পাপড়ি দিয়ে মোড়া। পাপড়িগুলো প্রায় ৪ সেন্টিমিটারের মতো লম্বা হতে পারে। এর পাতা ৩০-৫০ সেন্টিমিটার লম্বা এবং ২০-৪০টি উপপত্রবিশিষ্ট।
কৃষ্ণচূড়া জন্মানোর জন্য উষ্ণ বা প্রায়-উষ্ণ আবহাওয়ার দরকার। বাংলাদেশ ছাড়াও আফ্রিকা, হংকং, তাইওয়ান, ভারতসহ বিশ্বের অনেক দেশে এটি জন্মে থাকে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেরও কিছু কিছু উপত্যকায় এদের দেখা যায়। তবে এসব অঞ্চলে ফুল ফোটার সময় ভিন্ন।

ভ্যাটিকান সিটি

পৃথিবীতে সবচেয়ে ছোট স্বাধীন রাষ্ট্র ভ্যাটিকান সিটি। যার আয়তন মাত্র ০.৪৪ বর্গ কিলোমিটার। ভ্যাটিকান সিটির লোকসংখ্যা প্রায় ৯২০ জন। ইউরোপ মহাদেশের অন্যতম শক্তিশালী রাষ্ট্র ইতালির রাজধানী রোমের পাশেই এই রাষ্ট্রের অবস্থান। ১৯২৯ সালের দিকে ইতালির ফ্যাসিবাদী সরকার প্রধান বিনেটো মুসোলিনির সময়ে পিটরো গ্যাসপারি নামক একজন বিশিষ্ট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব মুসোলিনির অনুমতি সাপেক্ষে ভ্যাটিক্যান সিটি প্রতিষ্ঠা করেন। রহস্যঘেরা এ ছোট্ট দেশটিকে নিয়ে লোকমুখে নানা কথা প্রচলিত আছে। ভ্যাটিকান সিটিটি সবসময় থাকে শান্ত_ এর চারপাশে বিরাজ করে সুনসান নীরবতা, দেশটিতে কোনো রমণী বসবাস করে না বলেই ধরে নেওয়া হয়। যারা ভ্যাটিকান সিটিতে বসবাস করে সবাই ক্যাথলিক পোপ। তারা সারা পৃথিবীতে খ্রিস্টধর্মের শান্তির বার্তা প্রচার করেন। প্রথম শতাব্দী থেকেই ভ্যাটিকান সিটিতে খ্রিস্টধর্মের সাধু বা পোপরা বসবাস শুরু করেন। তখন ভ্যাটিকান সিটি স্বাধীন-সার্বভৌম কোনো রাষ্ট্র ছিল না। শুধু ইতালির অধীনে ছোট শহর বলে পরিচিত ছিল। ১৯২৯ সালে ভ্যাটিকান স্বাধীনতা লাভ করলেও এখনো জাতিসংঘের সদস্য হতে পারেনি। সাধারণ জনগণ ইতালি ও ল্যাটিন উভয় ভাষাই ব্যবহার করে। দেশটির সাক্ষরতার হার ৯৯.২%। বার্ষিক গড় আয় ১৬০০ মার্কিন ডলার। তবে সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো, ভ্যাটিকান সিটির যেসব নাগরিক বৃদ্ধ হয়ে যায় তাদের ইতালিতে প্রেরণ করা হয় বাকি জীবন অতিবাহিত করার জন্য। আর এতে বৃদ্ধদের পরিবর্তে আনা হয় তরুণ সাধু-সন্ন্যাসীদের। প্রথম শতক থেকে শুরু করে বর্তমান পর্যন্ত প্রায় ৪ লাখ পোপ এখানে স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। তবে অন্যান্য দেশের মতো এখানেও রয়েছে সরকার পদ্ধতি_ মন্ত্রী-এমপি, যারা সুন্দর ও সুচারুভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা করেন। ভ্যাটিকান সিটির চতুর্দিকে শুধু সবুজ আর সবুজ, নানা গাছ-গাছালিতে এই ছোট্ট রাষ্ট্রটি পরিবেষ্টিত। ভ্যাটিকান সিটির রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কোনো সেনাবাহিনী নেই, তবে ইতালির সরকার এই দেশটিকে নিরাপত্তা বিধানের জন্য নিয়োগ করেছে কয়েকশ নিরাপত্তাকর্মী। পোপ ষোড়শ বেনেডিক্টের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য নিয়োজিত রয়েছে বিশ্বের অন্যতম নামকরা নিরাপত্তা প্রাতিষ্ঠান সুইজ গার্ড (Swiss Gurd) সাংবিধানিক নিময় অনুযায়ী পোপই রাষ্ট্রের সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী। তিনি সাংবিধানিক বিধি মোতাবেক রাষ্ট্রটি পরিচালনা করেন। সারা বিশ্বের অন্যতম পবিত্র স্থান বলে ঘোষিত ভ্যাটিকান সিটিকে ১৯৮৪ সালে জাতিসংঘ 'বিশ্ব ঐতিহাসিক স্থান' হিসেবে ঘোষণা করে_ বর্তমানে রাষ্ট্রটি খ্রিস্টান ধর্মের অন্যতম প্রধান স্থান হিসেবে বিবেচিত।

ভয়ঙ্কর ইয়াবা আগ্রাসনে ঢাকা

প্রথমে বেলা করে ঘুম থেকে ওঠা, খাওয়া-দাওয়া কমে যাওয়া, রাতজাগা, চড়া মেজাজ_ এ সবই হলো ভয়ঙ্কর ইয়াবা সেবনকারীর প্রাথমিক আলামত। পরে এক সময় ফুসফুস, কিডনি বিকল হতে হতে শরীর অকার্যকর হয়ে চলে যায় মৃত্যুর দিকে। সেই ইয়াবার সাম্রাজ্য এখন ঢাকায়। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, ঢাকা নগরীতেই প্রতিদিন ১৪ লাখ ইয়াবার চাহিদা। চার গ্রেডের মিলে ব্যবসায়ী সংখ্যা ১৫ হাজার। উঠতি টিনএজ ছেলেমেয়ে এখন ইয়াবা আগ্রাসনের শিকার। গুলশান, বনানী, ধানমন্ডি ও উত্তরার অভিভাবকদের জন্য দুঃসংবাদ। আপনাদের ছেলেমেয়ের হাতের নাগালেই এখন ইয়াবা। ইয়াবা ভাসছে অলিতে-গলিতে। বেশ কয়েকটি গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যানুযায়ী প্রতি ওয়ার্ডে ২০০'র বেশি ইয়াবা ব্যবসায়ী রয়েছে। জানা যায়, হাতে খরচের টাকা বেশি পাওয়া ছেলেমেয়েরাই এখন ইয়াবার নেশায় আসক্ত। এমনকি ডাক্তার, প্রকৌশলী ও তরুণ ব্যাংকার ব্যবসায়ীদের কাছেও ইয়াবা ভীষণ প্রিয়। এ ভয়াবহ মাদক 'ইয়াবা' নিয়ে সরকারসহ দেশবাসী উদ্বিগ্ন হলেইবা কি আসে যায়। আইনশৃক্সখলা বাহিনীর চোখের সামনে চলছে অলিগলিতে বেচাকেনা। এমন লাভজনক ব্যবসায় দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম শেষ হলেইবা কি! এর বিরুদ্ধে কোথাও সাঁড়াশি অভিযান নেই। কারণ এটা বন্ধ হলেই যে বখরা বা চাঁদার মোটা অংক আদায় হবে না।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সন্ধ্যা নামলেই গুলশান, ধানমন্ডি, বনানী ও উত্তরার বিস্তীর্ণ এলাকার অলিগলিতে উঠতি ছেলেমেয়েরা যেখানেই জড়ো হচ্ছে সেখানেই চলছে ইয়াবা সরবরাহ। মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রে এক সময় হেরোইনসেবীদের সংখ্যা বাড়ত। এখন ইয়াবা আসক্তদের নিয়ে আসছেন অভিভাবকরা। শাড়ির আঁচলে অসহায় মায়েরা অশ্রুতে চোখ মোছেন নীরবে। বাবার বুকে গভীর বেদনা- দীর্ঘশ্বাস। সন্তানকে নিয়ে দেখা বড় বড় স্বপ্ন এখন ইয়াবার কারণে দুঃস্বপ্ন হয়ে যাচ্ছে।
জানা যায়, রাজধানীতে এমএলএম (মাল্টিলেভেল মার্কেটিং) পদ্ধতিতেই চলছে ইয়াবার রমরমা ব্যবসা। চারটি গ্রেডে বিভক্ত হয়ে ইয়াবা ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করছে গডফাদাররা। সবচেয়ে নিচের গ্রেডের ইয়াবা ব্যবসায়ীর বিক্রির টার্গেট থাকে প্রতিদিন ৪০-৫০টি। ওই গ্রেডের একেক ব্যবসায়ীর নিয়ন্ত্রণে ১০-১২ জনের সেবক গ্রুপ থাকে।
তবে প্রতিদিন লাখ পিসের অধিক ব্যবসা করে এমন মাদক ব্যবসায়ীর (প্রথম গ্রেড) সংখ্যাও বর্তমানে ১০০ ছাড়িয়ে গেছে। তাদের অর্ধেকের বেশি সারা দেশে ইয়াবা সরবরাহ করে। এদের অনেকেই অন্য ব্যবসার আড়ালে দেদারসে ইয়াবার ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। রাজধানীর এমন কোনো গলি বাদ নেই যেখানে ইয়াবা ব্যবসায়ী নেই। র‌্যাবের ম্যাজিস্ট্রেট আনোয়ার পাশা জানান, অবিশ্বাস্য রকমভাবে ইয়াবার বিস্তার ঘটছে সারা দেশে। প্রতি গলিতেই রয়েছে ইয়াবা ব্যবসায়ী। আশ্চর্যজনক হলেও সত্যি, ইয়াবা সেবক ও ব্যবসায়ীর তালিকায় ডাক্তার-প্রকৌশলী থেকে শুরু করে দিনমজুর পর্যন্ত প্রায় সব পেশার মানুষই রয়েছেন। তবে এর নিয়ন্ত্রণে র‌্যাব সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
এদিকে খোদ রাজধানীতেই তৈরি হচ্ছে নকল ইয়াবা। ১৭ এপ্রিল মীরহাজিরবাগের ৪২৮/১ নম্বর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে যাত্রাবাড়ী থানা পুলিশ এমনই নকল ইয়াবা কারখানার সন্ধান পায়। এ সময় কারখানা থেকে দুই রাউন্ড গুলি, একটি বিদেশি পিস্তল ও নকল ইয়াবা তৈরির বিভিন্ন উপকরণসহ জাকির হাসান ওরফে জুয়েল (৩০) ও নাসির উদ্দিন (৩৭) নামের দুজনকে গ্রেফতার করে। গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের ধারণা রাজধানীতে আরও নকল কারখানা থাকতে পারে।
ডিবির সহকারী পুলিশ কমিশনার সাদিরা খাতুন জানান, সাবানের গুঁড়া, মোমের গুঁড়া, হেরোইন, বিশেষ ফ্লেভার মিশিয়ে ওই কারখানায় নকল ইয়াবা তৈরি হচ্ছিল। তবে বর্তমানে এমএলএম পদ্ধতিতে ইয়াবার ব্যবসা হওয়ার কারণে এর বিস্তার রোধ করা খুব কঠিন হচ্ছে। একই সঙ্গে কক্সবাজার সীমান্তবর্তী এলাকায় নজরদারি আরও বাড়াতে হবে।
অনুসন্ধানে আরও জানা গেছে, ব্যবসা বাড়ানোর কৌশল হিসেবে ইয়াবা ব্যবসায়ীরা প্রথমে তার পরিচিতজনদের কাছে একটি ইয়াবা বড়ি ফ্রি দিচ্ছে। প্রথমবার খাওয়ার পরই ওই ব্যক্তি অন্য রকম সতেজতা, একই সঙ্গে যৌন উত্তেজনা অনুভব করে। দুই-একদিন এর থেকে বিরত থাকলেও ওই অনুভূতি ভুলতে পারে না। ওই সময় ইয়াবা ব্যবসায়ীর কাছে গেলে সে কম মূল্যে তাকে আবার আরেকটি ইয়াবা পিল দেয়। এক পর্যায়ে সে আসক্ত হয়ে পড়ে ইয়াবাতে। প্রথমদিকে একটিতে অভ্যস্ত থাকলেও ক্রমান্বয়ে কারও কারও সেবনের মাত্রা সর্বোচ্চ ৬-৮টিতে গিয়ে ঠেকে। ওই সময় ইয়াবা ব্যবসায়ী সেবনকারীকে বিক্রেতা হিসেবে বেছে নেয়। টার্গেট দেয় দৈনিক ৪০-৫০টি। ওই ইয়াবা বিক্রির ফলে তার সেবনের খরচ অনেকটাই উঠে যাচ্ছে। একটি ইয়াবার দাম ৩০০-৪০০ টাকা। তাই সেবনকারীরা ২৫০ টাকায় এনে বিক্রি করতে উৎসাহবোধ করে। এতে তার সেবন বাবদ খরচের টাকা উঠে যায়। তবে পরিচিতজনদের বাইরে ইয়াবা বিক্রি করে না ইয়াবা ব্যবসায়ীরা। তারা স্কুল-কলেজ বিশেষ করে ইংরেজি মিডিয়ামের ছাত্রছাত্রীদের এখন টার্গেট করে অগ্রসর হচ্ছে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আলী জানান, ইয়াবার আগ্রাসন ঠেকাতে রাজধানীসহ দেশের প্রতিটি জেলায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার জন্য বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। রাজধানীতে প্রতি মাসে কমপক্ষে ২০টি অভিযান চালানো হচ্ছে। এর সাফল্যও আমরা ইতোমধ্যে পেয়েছি।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর ঢাকা মেট্রো অঞ্চলে গত বছর ৬৬টি মামলার বিপরীতে ইয়াবা উদ্ধার হয় মোট ৫ হাজার ৫৪৭টি। গ্রেফতারের সংখ্যা ৯০। তবে গত চার মাসে ১২৩টি মামলার বিপরীতে ইয়াবা উদ্ধার হয় ৭ হাজার ৭৯৫টি। গ্রেফতারের সংখ্যা ১৩১।
র‌্যাব সূত্র জানায়, গত বছর বিভিন্ন সময় অভিযান চালিয়ে ৭৫ হাজার ৮৫৪টি ইয়াবা উদ্ধারসহ ৫৭১ জনকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। তবে চলতি বছর ২০ এপ্রিল পর্যন্ত ১৮ হাজার ৯৩৬টি ইয়াবা উদ্ধারসহ ২১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়। র‌্যাবের গোয়েন্দা শাখার পরিচালক লে. কর্নেল জিয়াউল আহসান জানান, র‌্যাব শুরু থেকেই ইয়াবার ব্যাপারে বিশেষ প্রাধান্য দিচ্ছে। তবে সীমান্ত এলাকা অনেক দীর্ঘ হওয়ার কারণে পুরো সীমান্ত এলাকা র‌্যাবের মাধ্যমে কাভার দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এ বিষয়টি নিয়ে কর্তৃপক্ষকে আরও গভীরভাবে ভাবা উচিত।