Saturday, May 11, 2013

সাভারের ভবন ধস: বিশ্বে দ্বিতীয় বৃহত্তম শিল্প দুর্ঘটনা

সাভারের রানা প্লাজার ধসকে এর আগে দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় শিল্প দুর্ঘটনা হিসেবে ধরা হলেও বর্তমানে মৃতের সংখ্যা এক হাজার ছাড়িয়ে যাওয়ায় এটিকে এখন বিশ্বের সবচেয়ে ভয়াবহ শিল্প দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে দ্বীতিয় বৃহত্তম হিসেবে ধরা হচ্ছে।

এর আগে ইকোনোমিস্ট পত্রিকা তাদের অনলাইন সংস্করণে সাভারের ভবন ধসে নিহতের ঘটনায় ‘বাংলাদেশে বিপর্যয়: ধ্বংসস্তূপে ছিন্নবস্ত্র’ শিরোনামে একটি নিবন্ধ ছেপেছে এবং এটাকে সবচেয়ে ভয়াবহ বিপর্যয় হিসেবে উল্লেখ করেছে।

তারা তাদের নিবন্ধে এটিকে ১৯৮৪ সালের ২ ও ৩ ডিসেম্বর ভারতের মধ্য প্রদেশের ভুপাল ইউনিয়ন কারবাইড ইন্ডিয়া লিমিটেডে গ্যাস বিস্ফোরণে ৩ হাজার ৭৮৭ জন নিহত হওয়ার ঘটনার সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে।

নিয়ম ভঙ্গ করে ভবন নির্মাণের বিষয়টিও উঠে আসে ইকোনোমিস্টের ওই নিবন্ধে। তাতে বলা হয়েছে, পাঁচ তলার অনুমতি নিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে আটতলা ভবন।

এছাড়া বাংলাদেশে পোশাক কারখানার “বিস্ফোরণ” ঘটেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে নিবন্ধে। আর এর অন্যতম কারণ হিসেবে সস্তায় শ্রমিকের সহজলভ্যতাকে উল্লেখ করেছে ইকোনোমিস্ট। বাংলাদেশে একজন শ্রমিকের বেতন মাত্র তিন হাজার টাকা, যা চীনের চেয়ে এক পঞ্চমাংশ।

গত বছর পাকিস্তানের পোশাক কারখানায় অগ্নিকান্ডে ২৬০ জন নিহত হয়েছিল। একই বছর বাংলাদেশের “তাজরীন ফ্যাশনে” অগ্নিকান্ডে ১১২ জন নিহত হন। সম্প্রতি (৮ মে) ঢাকার মিরপুরে ‘তুন হাই’ একটি নামক তৈরি পোশাক কারখানায় অগ্নিকান্ডে পুলিশের ডিআইজিসহ ৮ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া ‘স্পেকটাম’ গার্মেন্টসে ধসের ঘটনায় অনেক শ্রমিকের প্রাণহনি ঘটে।

সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের মতে, একের পর এক ভয়াবহ দুর্ঘটনার কারণে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক কারখানায় বিপর্যয় নেমে আসতে পারে। বিদেশি ক্রেতারা বাংলাদেশ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে পারে। চীনের পরে সবচেয়ে বড় তৈরি পোশাক শিল্পের বাজার বাংলাদেশে। এরকম দুর্ঘটনা বন্ধ না করা গেলে বাংলাদেশ তৈরি পোশাক শিল্পের বিশাল এ বাজার হারাতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট বোদ্ধাদের ধারণা।

আর তাই সরকারকে এ ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে বলে তারা মত ব্যক্ত করেন।

এদিকে, ধসে পড়া রানা প্লাজার ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে ১৭তম দিন শুক্রবার ভোর ৬টা থেকে সকাল দুপুর পর্যন্ত আরও ২০টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ নিয়ে ভবন ধসের উদ্ধার করা মরদেহের মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩৩ জনে। এর মধ্যে ৭১০ জনের মৃতদেহ শনাক্ত হওয়ার পর স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

ঘটনাস্থলে স্থাপিত সেনাবাহিনীর কন্ট্রোলরুম থেকে এসব তথ্য জানা যায়।

উদ্ধারকর্মীরা জানান, এখন যেসব লাশ উদ্ধার করা হচ্ছে, সেগুলোর অধিকাংশই গলিত, অর্ধগলিত। ফলে মরদেহ শনাক্ত ও হস্তান্তর করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ছে।

উল্লেখ্য, গত ২৪ এপ্রিল সকাল পৌনে ৯টার দিকে সাভার বাসস্ট্যান্ড বাজারে যুবলীগ নেতা সোহেল রানার মালিকানাধীন নয়তলা বাণিজ্যিক ভবন ‘রানা প্লাজা’ ধসে পড়ে। এতে হাজারের অধিক প্রাণহানির এ ভয়বহ ঘটনা ঘটে। এছাড়া আহত ও জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় দুই হাজার ৪৩৭ জন শ্রমিককে।

সাভারের মর্মান্তিক এ ঘটনায়  আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে দেশের পোশাক শিল্প। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও, জাতিসংঘ ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো পোশাকশিল্পের সমালোচনায় মুখর হয়ে উঠেছে। এমনকি বিদেশি ক্রেতা প্রতিষ্ঠান কয়েকটি পোশাক কারখানার পরিবেশ ও মান নিয়ে প্রশ্ন তুলে বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবসা করবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে।

এর আগে গত নভেম্বর মাসে সাভারের আশুলিয়ায় তাজরীন ফ্যাশনে অগ্নিকাণ্ডে শতাধিক পোশাক শ্রমিকের প্রাণহানি হয়।

২০ জুন একইসাথে কমদামি আইফোন এবং আইফোন ফাইভএস!

এ বছরেই অ্যাপলের সুলভ মূল্যের আইফোন উন্মুক্ত হচ্ছে এমন নিশ্চিত খবর পুনরায় প্রতিবেদনে উঠে এসছে। গত বছর জনপ্রিয় আইপ্যাডের সারিতে সুলভ মূল্য ও ছোট আকৃতির পণ্যটি রাখার পর থেকেই খবর রটে যে কমদামি আইফোন আনছে অ্যাপল। যখন থেকেই পণ্যটি যেমন চরম আলোচিত সেরকমই প্রত্যাশিত। বর্তমানে ইটিরেড সাপ্লাই প্রতিবেদনের তথ্য মতে, বিশ্বের বৃহত্তম প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের কমদামি আইফোন এ বছরেই বাজারে আসবে।

অ্যাপলের আইফোন প্রস্ততকারী প্রতিষ্ঠান ফক্সকনের ইট্রেড সাপ্লাই সুত্র জানিয়েছে, বাজেট-স্মার্টফোন প্রকাশে অ্যাপল ভিষণ চেষ্টা চালাচ্ছে।

উল্লেখ্য, গত বছরও ইট্রেড সাপ্লাই সুত্র আসন্ন অ্যাপল পণ্যাদি সম্পর্কে সঠিক তথ্য ফাঁস করেছিল যখন তাদের তালিকার প্রথমেই ছিল আইফোন ফাইভের নাম।

সম্প্রতি জেপি মর্গানের দুজন বিশেষজ্ঞ গোকুল হরিহারান এবং মার্ক মসকোইটজ জানান, অ্যাপলের কমদামি আইফোন বাজেট-শ্রেণীর পণ্য হওয়ার সম্ভাবনা নেই। নি:সন্দেহে এটি মধ্য-সারির পণ্যের তালিকায় থাকবে যা স্যামসাং গ্যালাক্সি সিরিজ ব্যবসায় বাঁধা হয়ে দাড়াবে। তাদের মতে এ বছরে পণ্যটি বাজারে আসলে এ বিভাগের ২৫ ভাগ অ্যাপলের দখলে থাকবে।

এদিকে প্রযুক্তি ব্লগ টেকটাসে বলা হয়েছে অ্যাপলের অভ্যন্তরীণ নথিপত্র ফাঁসে জানা যায় কমদামি আইফোনের মূল্য প্রায় ৩০০ থেকে ৪০০ ডলারের আশপাশে থাকবে। এছাড়া প্রকাশ হওয়া ছবি দেখে জোরদিয়ে বলা হচ্ছে এতে গ্লোসি প্লাস্টিক থাকবে। বর্তমানে অনুমানকৃত তথ্যের ভিত্তিতে ব্যাপকভাবে সমালোচিত আসছে ২০ জুন ‌একইসাথে কমদামি আইফোন এবং আরও আধুনিক বৈশিষ্টযুক্ত আইফোন ফাইভএস অবমুক্ত হবে।

দাম কমেছে গ্যালাক্সি স্মার্টফোনে

বিশ্বে এখন জনপ্রিয় স্মার্টফোনের তালিকায় গ্যালাক্সি নোট টু, গ্যালাক্সি গ্র্যান্ড এবং গ্যালাক্সি এস ডুয়োস এগিয়ে আছে। এ ফোনগুলোর মাধ্যমে স্মার্টফোন বাজারে অপ্রত্যাশিত পরিবর্তন এসেছে।

সবার জন্য গ্যালাক্সি স্মার্টফোন কেনাকে আরও সহজ করতে স্যামসাং নিয়ে এসেছে দারুণ অফার। এখন গ্রাহকেরা ৯ থেকে সর্বোচ্চ ১২ মাসের কিস্তিতে কোনো প্রকার সুদ ছাড়াই কিনতে পারবেন এ তিন ঘরানার স্মার্টফোন।

এ অফারের আওতায় গ্রাহকদের খুব বেশি খরচও করতে হবে না। ১২ মাসের কিস্তিতে গ্যালাক্সি নোট টু মডেলের জন্য প্রতিমাসে দিতে হবে ৫,৪৬০ টাকা, গ্যালাক্সি গ্র্যান্ডের জন্য ২,৯৯০ টাকা এবং ৯ মাসের কিস্তিতি গ্যালাক্সি এস ডুয়োসের জন্য ২,২১০ টাকা।

এরই মধ্যে এ তিন ফোনের দাম কমিয়েছে স্যামসাং। গ্যালাক্সি নোট টু এখন ৬৫,৫০০ টাকা (আগে ৬৭,৫০০ টাকা), গ্যালাক্সি গ্র্যান্ড ৩৫,৯০০ টাকা (আগে ৩৯,৫০০ টাকা) এবং গ্যালাক্সি এস ডুয়োস ১৯,৯০০ টাকা (আগে ২৩,৫০০ টাকা)।

এসব স্মার্টফোনের আগ্রহী গ্রাহকেরা ব্র্যাক ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড এবং সিটি ব্যাংক অ্যামেক্স ক্রেডিট কার্ড ছাড়াও ব্যাংক এশিয়ার ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করতে পারবেন। এ ছাড়াও দেশজুড়ে শতাধিক স্যামসাং আউটলেট থেকে সহজ কিস্তিতে এ ক্রয় সুবিধা উপভোগ করা সম্ভব।

কমছে না মোবাইল ইন্টারনেটের দাম!

১৯৯৬ সাল। বাংলাদেশ প্রথম ভিস্যাটের মাধ্যমে ইন্টারনেটের সঙ্গে যুক্ত হয়। তখন প্রতি এমবিপিএস ইন্টারনেটের জন্য ব্যয় হতো ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। কিন্তু সে সময় সরকারিভাবে বিটিসিএল কোনো ব্যান্ডউইথড বিক্রি করত না।

এ মুহূর্তে বিটিসিএল এবং ম্যাঙ্গো যৌথভাবে দেশে ব্যান্ডউইথড বিক্রি করছে। তবে দফায় দফায় ব্যান্ডউইথের দাম কমলেও প্রান্তিক ভোক্তাদের কাছে এর সুফল অধরাই রয়ে যাচ্ছে। এ নিয়ে মোবাইল অপারেটর এবং ইন্টারনেট সেবাদাতারা অবকাঠামোতে বিপুল বিনিয়োগের কথা সামনে তুলে ধরেছেন।

দেশের মোবাইল অপারেটর সেবাদাতাদের অনেকেই মনে করেন, এ ব্যয় কমে আসতে আরও কিছুটা সময় লাগবে। বাজারে বহুমুখী প্রতিযোগিতায় এখনও ইন্টারনেট সেবাদাতারা প্রত্যাশিত মুনাফা থেকে অনেক দূরে। আর সে কারণেই ইন্টারনেট ব্যয় কমিয়ে আনতে সরকারকেই আরও অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে। প্রয়োজনে এ খাতে ভর্তূকি দেওয়ার কথাও চিন্তা করা যেতে পারে।

প্রসঙ্গত, দেশে ২০০৪ সালে মোবাইল ইন্টারনেট চালু হয়। তখন প্রতি মেগাবাইট পার সেকেন্ড (এমবিপিএস) ব্যান্ডউইথের দাম ৭২ হাজার টাকা ছিল। এর ৮ বছর পরে এসে দাম হয়েছে ৮ হাজার টাকা। কিন্তু দাম কমানোর বিপরীত চিত্রে কমেনি মোবাইলভিত্তিক ইন্টারনেট সেবার ব্যয়।

ইন্টারনেটের দাম সাশ্রয়ী করতে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) নির্দেশনা জারির প্রক্রিয়া শুরু করলেও এখনও তা বাস্তবায়ন হয়নি।

এ প্রসঙ্গে বিটিআরসি’র চেয়ারম্যান সুনীল কান্তি বোস জানান, ব্যান্ডউইথের দাম কমানো হলেও মোবাইল অপারেটরদের ইন্টারনেট সেবার মূল্য সে অনুযায়ী কমেনি। এ বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। নির্দেশনা জারির প্রক্রিয়াও থেমে আছে। এ জটিলতাও অনুসন্ধানের দাবি রাখে।

২০০৪ সালে গ্রামীণফোন ‘পি১’ প্যাকেজের মাধ্যমে মোবাইলভিত্তিক ইন্টারনেট সেবা শুরু করে। এ মুহূর্তে গ্রাহকের প্রয়োজন অনুযায়ী বিভিন্ন অপারেটরের বেশ কিছু প্যাকেজ চালু করেছে। তবে এসব প্যাকেজের জটিল সব সমীকরণের পেছনের গ্রাহক হয়রানির অন্তহীন অভিযোগ রয়েছে।

গ্রামীণফোনের একজন গ্রাহক ‘পি১ প্যাকেজে’ যতটুকু ব্যান্ডউইথ ব্যবহার করেন, তাকে সে পরিমাণ বিল পরিশোধ করতে হয়। অর্থাৎ এটি গ্রাহকের ব্যবহারের ওপর নির্ভরশীল। শুরুতে পি১ প্যাকেজে প্রতি কিলোবাইট ইন্টারনেট ব্যবহারে গ্রাহককে ব্যয় করতে হতো ২ পয়সা।

২০০৮ সাল থেকে পর্যায়ক্রমে ব্যান্ডউইথের দাম কমে যথাক্রমে ১৮ হাজার, ২০০৯ সালে ১২ হাজার, ২০১১ সালে ১০ হাজার এবং সর্বশেষ ৮ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়। বিগত আট বছরে পাঁচ দফায় ব্যান্ডউইথের মূল্য ৬৪ হাজার টাকা কমানো হলেও পি১ প্যাকেজে গ্রাহককে এখনও কিলোবাইট প্রতি সেই ২ পয়সা করেই দিতে হচ্ছে।

এ মুহূর্তে মোবাইল ইন্টারনেটে গ্রামীণফোন ১৫ এমবি ৩৩ টাকা এবং রবি ২০ এমবিতে ২৩ টাকা চার্জ করছে। ফলে দেশের সাধারণ ইন্টারনেট ভোক্তাদের কাছে ব্যান্ডউইথের দাম কমে আসার সুফল উপভোগ্য হচ্ছে না।

ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার অব বাংলাদেশের নবনির্বাচিত কমিটির পরিচালক সুমন আহমেদ সাবির বাংলানিউজকে বলেন, ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের দাম কমানোর সঙ্গে ভোক্তাদের সেবাব্যয়ও কমিয়ে আনা হচ্ছে। তবে মোবাইল ইন্টারনেটের ক্ষেত্রে হিসাবটা একেবারেই ভিন্ন।

দেশের এখন ইন্টারনেটভিত্তিক কনটেন্টের (অডিও, ভিডিও, লাইভ খবর-মিডিয়া) ব্যাপক চাহিদা তৈরি হয়েছে। ফলে ইন্টারনেট চাহিদাও বেড়েছে বহুগুণ। কিন্তু ইন্টারনেট মোবাইলমুখী হওয়ায় তা ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে।

এক্ষেত্রে বর্তমান দামের প্রেক্ষাপটে ১ হাজার টাকায় ব্রডব্যান্ড প্যাকেজের দাম ৭০০ টাকায় কমিয়ে আনা হয়েছে। তবে পাড়া-মহল্লাভিত্তিক ইন্টারনেট গতির প্রশ্নে অভিযোগ আছে, এটা সত্য।

দেশে ইন্টারনেটের সেবাব্যয় কমিয়ে আনলে কি ধরনের ব্যবসার সুযোগ তৈরি হবে এমন প্রশ্নে বেসিসের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি শামীম আহসান বাংলানিউজকে বলেন, দেশের ৫০ হাজার মানুষ এখন আউটসোর্সিং নির্ভরশীল। এ খাতে বাংলাদেশের বার্ষিক আয় এখন ৩ কোটি ডলার। সুতরাং, ইন্টারনেটের ব্যয় কমিয়ে আনলে এ খাতের উদ্যোক্তারা প্রণোদনা পেতেন।

তিনি আরও বলেন, এর ফলে আগামী দুই বছরের মধ্যে দেশে লাখেরও বেশি আউটসোর্স কর্মী তৈরির সুযোগ সৃষ্টি হবে। আর এ খাতের আয় তখন ১৫ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। তাই দেশের আইসিটি শিল্পের দ্রুত বিকাশ এবং দক্ষ কর্মী গড়ে তুলতে ব্রডব্যান্ড এবং মোবাইল ইন্টারনেটের সেবাব্যয় সাশ্রয়ী, সেবাবান্ধব এবং সহজলভ্য করতে হবে। বিপরীতে ইন্টারনেটের গতি বাড়ানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।

এ ছাড়াও দেশে ওয়াইম্যাক্স ইন্টারনেট সেবাদাতা কিউবি এবং বাংলালায়ন এখনও গ্রাহকবান্ধব সেবা নিশ্চিত করতে পারেনি। ঢাকা শহরেই বিভিন্ন স্থানে এখনও ইন্টারনেট সেবায় বেশ কিছু প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হচ্ছেন ওয়াইম্যাক্স গ্রাহকেরা। সুষ্ঠু নেটওয়ার্ক বিন্যাস ছাড়াই গ্রাহক বৃদ্ধির কারণে এ সমস্যা হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টরা অভিমত দিয়েছেন।

তবে এসবের বিপরীতে উচ্চমূল্যে সেবাব্যয় নেওয়ার নানামুখী অভিযোগ রয়েছে। এমনকি গ্রাহক সেবা নিয়েও ভোগান্তির কথা বাংলানিউজকে জানিয়েছেন অনেকেই। আরও একবার ব্যান্ডউইথের দাম কমে আসায় দেশের ইন্টারনেট গ্রাহকদের মধ্যে এখন নতুন উদ্দীপনা এসেছে। তবে সব ধরনের ইন্টারনেট সেবাদাতাদের বিক্রয়োত্তর সেবার ওপরই নির্ভর করবে এ সুফল কতটা ভোক্তা অনুকূলে যাচ্ছে।

অপহরণের ১০ বছর পর তিন নারী জীবিত উদ্ধার!

যুক্তরাষ্ট্রে ওহাইও অঙ্গরাজ্য থেকে অপহরণের এক দশক পর তিন নারীকে উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার জরুরি সেবা নাম্বার ৯১১তে সাহায্যের জন্য তাদের একজনের ফোন পাওয়ার পরেই ওহাইও’র ক্লিভল্যান্ডের একটি বাড়ি থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়। ওই বাড়ি থেকে তিন ভাইকে আটক করা হয়েছে।

পুলিশ জানায়, তিনজনের মধ্যে আমেন্ডা বেরি পুলিশকে ফোন করেন এবং তাদের উদ্ধার করার অনুরোধ জানান।

তিনি ফোনে বলেন, “ আমাকে সাহায্য করুন, আমি আমেন্ডা বেরি। আমি অপহৃত হয়েছিলাম, আমি ১০ বছর যাবৎ নিখোঁজ। আমি এখানে, আমি এখন মুক্ত।”

এরপর দ্রুত পুলিশ সেখানে গিয়ে তাদের উদ্ধার করে। এসময় একটি ছয় বছরের শিশুকে উদ্ধা করা হয়েছে।

২০০৩ সালের ২১ এপ্রিল ১৬ বছর বয়েসে আমেন্ডা বেরি তার চাকুরি থেকে ফেরার পথে অপহৃত হন। এর এক বছর পর ১৪ বছর বয়সে জিনা ডিজিজাস স্কুল থেকে ফেরার পথে এবং মিশেল নাইট ২০০২ সালে অপহৃত হন।

তিন নারীকে কিভাবে উদ্ধার করা হয় পুলিশ এ ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য জানায় নি। তারা তিনজনই সুস্থ আছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ

মুখ দিয়ে লিখে এসএসসি পাস!

হাত দুটি’র আঙ্গুল অচল। তবুও শৈশবে মা-বাবার কাছে বায়না ধরে স্কুলে যাওয়ার। সেই শৈশবে প্রথম শ্রেণী।

এরপর প্রাথমিকের গণ্ডি পেরিয়ে মাধ্যমিক। এবার মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরোনোর জন্য এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে জিপিএ ৩.৫০ পেয়েছে ফিরোজ। মুখে কলম আঁকড়ে লিখে ভালো রেজাল্ট করায় সহপাঠীরা খুশি।

পুরো নাম ফেরদৌস আলম ফিরোজ। সাহাবুদ্দিন-ফিরোজা দম্পতির চার সন্তানের মধ্যে সবার বড় সে। বাড়ি লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার শ্রীরামপুর গ্রামে। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে চতুর্থ শ্রেণীর  চাকরি করেন বাবা সাহাবুদ্দিন। সেখান থেকে যা পান তা দিয়ে সংসার চলে কোনো মতো।

এসএসসি পরীক্ষায় উপজেলার কাউয়ামারী আপ্তার উদ্দিন প্রধান উচ্চ বিদ্যালয় থেকে পরীক্ষা দিয়েছিল সে।

ফিরোজের মা ফিরোজা বেগম বাংলানিউজকে জানান, হাত দুটি দিয়ে কোনো কাজ করতে পারে না তার ছেলে। শুধু ডান হাতের বুড়ো আঙ্গুলগুলো একটু-আধটু শক্তি আছে। ভাত খেতে পারে না। তাই পরিবারের অন্যদের সহযোগিতায় খেতে হয়।

প্রতিবন্ধী ফিরোজ বাংলানিউজকে বলেন, ‍“আমি লেখাপড়া করে প্রতিবন্ধী শব্দটিকে জয় করতে চাই। দোয়া করবেন আমি যেন ভালোভাবে পড়ালেখা শেষ করতে পারি।”

প্রধান শিক্ষক আখেরুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, “শারীরিক অক্ষমতা বাধা হতে পারেনি তার। মুখের সাহায্যে কলম ধরে পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ ৩.৫০ পেয়ে আমাদের স্কুলের সম্মান বাড়িয়েছে।”

ধসের শঙ্কা নিয়ে ঢাবির কয়েক হাজার শিক্ষার্থীর হলবাস

হলের বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য ফাটল, ঘন ঘন প্লাস্টার খসে পড়া আর মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্প হলেই যেকোনো সময় ধসে পরতে পারে হলের পুরো কাঠামো— এভাবেই আতঙ্কের মধ্যে হলবাস করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি হলের হাজার হাজার শিক্ষার্থী। সম্প্রতি মুহসীন হলের টিভি কক্ষের ছাদের একটি বড় অংশের প্লাস্টার ধসে ২ শিক্ষার্থী আহত হওয়ার ঘটনায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে এ আতঙ্ক আরও বেড়ে যায়। আর আতঙ্ক বৃদ্ধির নতুন কারণ হিসেবে তো আগেই যোগ হয়েছে সাভারের রানা প্লাজা ধসে পড়ার মতো ভয়াবহ ঘটনা।

শিক্ষার্থীরা জানান, যেকোনো সময় ভূমিকম্প বা অন্য যেকোনো কারণে হল ধসে পড়তে পারে। তাই এখানে আমাদের সময় কাটাতে হয় এক ধরনের আতঙ্কের মধ্য দিয়ে। তাছাড়া মাঝে মাঝে প্লাস্টার ধসে আহতও হতে হচ্ছে কাউকে কাউকে। কম মাত্রার ভূমিকম্প হলেই শিক্ষার্থীরা আতঙ্কিত হয়ে হল থেকে বের হওয়ার জন্য ছোটাছুটি শুরু করে দেন । অনেকেই প্রাণভয়ে দু’তলা কিংবা তিন তলা থেকে লাফিয়েও পড়েন।

সংশ্লিষ্ট হলগুলোর প্রাধ্যক্ষরা জানান, শিক্ষার্থীদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে তার‍া লিখিতভাবে হল ভবন সংস্কারের বিষয়টি জানান। কিন্তু আবেদনে প্রশাসন এতই সামান্য অর্থ দেয় যে, তা দিয়ে পুরোপুরি সংস্কার সম্ভব হয় না।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্র জানায়, অর্থের অভাবেই তারা পুরোপুরি সংস্কার করতে পারছেন না।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও বিশেষজ্ঞরা বেশ কয়েকটি হলকে ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে— ‘৬৭ সালে নির্মিত মুহসীন হল, ’৬২ সালে নির্মিত মাস্টার দা সূর্যসেন হল, ’৫৭ সালে নির্মিত জহুরুল হক হল, ’৬৬ সালে নির্মিত স্যার পি জে হার্টস ইন্টারন্যাশনাল হল ও ’৬৩ সালে নির্মিত রোকেয়া হল।

এছাড়া ফজলুল হক মুসলিম হল, শহীদুল্লাহ হল, সলিমুল্লাহ মুসলিম হলও রয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ হলের তালিকায়।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, মুহসীন হল, সূর্যসেন হল, ফজলুল হক হল, জহুরুল হক হলের বিভিন্ন স্থানে রয়েছে ফাটল। এসব হলের বিমগুলোতেও দেখা দিয়েছে গভীর ফাটল। প্রায়ই প্লাস্টার খসে পড়াও একটি আতঙ্ক উদ্রেককারী ঘটনা। হল প্রশাসনের কাছে বারবার জানিয়েও তারা এর কোনো স্থায়ী প্রতিকার পাচ্ছেন না। এর মধ্যে মুহসীন হলের অবস্থাই বেশি নাজুক।

বুয়েটের বিশেষজ্ঞ শিক্ষকরা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশলীরা  মনে করেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকটি হল ভূমিকম্প ঝুঁকিতে থাকলেও ’৭০ সালের আগে নির্মিত ভবনগুলোই তুলনামূলক বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে জগন্নাথ হলের পুরাতন ভবনসমূহ, এসএম হল, শহীদুল্লাহ হল, ফজলুল হক মুসলিম হল, মুহসীন হল, সার্জেন্ট জহুরুল হক হল এবং মাস্টার দা সূর্য সেন হল।

বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েটি হল ঝুঁকিপূ্র্ণ, ভূমিকম্পের জন্য তো বটেই। কারণ এগুলো বেশির ভাগই নির্মাণের পর প্রায় ৬০-৭০ বছর অতিক্রম করেছে। আর যে সব হলে ফাটল দেখা দিয়েছে তার বেশির ভাগই অনেক আগে তৈরি, তখন ভবন নির্মাণে ভূমিকম্পের কথা চিন্তা করা হয়নি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. মফিজুল ইসলাম বলেন, “সাভার ট্রাজেডিতে সতর্ক হয়ে আমরা ইতোমধ্যে বিভিন্ন হলের স্থায়িত্ব এবং বর্তমান অবস্থার ওপর এক্সপার্টদের দ্বারা সার্ভে চালাচ্ছি। একটি বিখ্যাত বিদেশী কোম্পানির সহায়তায় খুব শীঘ্রই একটি সমীক্ষা চালানো হবে। তাদের রিপোর্টের ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

তিনি আরও বলেন, “যে সব হলে ফাটল দেখা দিচ্ছে বা প্লাস্টার ধসে পড়ছে সেসব হলে আমরা মেরামত কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। জিয়াউর রহমান ও বঙ্গবন্ধু হলে কাজ চলছে। মুহসীন হলের এক অংশের কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে, কিন্তু অর্থের অভাবে পুরোটা সম্পন্ন করা যায়নি। আমরা ২০১১ সালের দিকে সংস্কারের জন্য ১৬ কোটি টাকা পাই, এর পুরো অর্থ এখনো হাতে আসেনি। টাকা পেলে বাকিগুলোতে দ্রুত হাত দেওয়া হবে।”

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ইন্টারন্যাশনাল হলে পিছনের স্টাফ কোয়ার্টার, আইবিএর হোস্টেল, ফজলুল হক হলের একটি ব্লক, জহুরুল হক হলের এক্সটেনশন বিল্ডিংয়ের অবস্থা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এসব ভবনে যেকোনো সময় বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, কিছু কিছু ভবন এতটাই অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছে যেগুলো সংস্কার করলেও কোনো লাভ হবে না। সেজন্য নতুন কোনো হল নির্মিত হলে তাতে ঝঁকিপূর্ণ হলের শিক্ষার্থীদের স্থানান্তরিত করে সেটা ভেঙে ফেলে নতুন করে তৈরি করতে হবে। তা না হলে কেবল সংস্কার ভূমিকম্প রোধ করতে পারবে না।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য় অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বাংলানিউজকে বলেন, “আর্থিক সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বত্রই সংস্কার কাজ চলছে।  নতুন নতুন হল নির্মাণ করা হচ্ছে। ধীরে ধীরে এসব সমস্যা কেটে যাবে।”

উল্লেখ্য, ১৯৮৫ সালের ১৫ই অক্টোবর জগন্নাথ হলের  টিভি কক্ষের ছাদ ধসে ৩৯ শিক্ষার্থীর প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।

সাভারের ‘মৃত্যুকূপ’ থেকে ফেরা জিয়া জিপিএ-৫ পেয়েছে

গরিব ঘরের সন্তান জিয়াউর রহমান। একটি ভালো কলেজে ভর্তির টাকা জোগার করতেই সাভারের রানা প্লাজায় চাকরি নিয়েছিল সে। কিন্তু ভয়াবহ ভবন ধসে গুরুতর আহত জিয়া কবির কবিতার মতোই, মৃত্যুর মুখ থেকে জীবনের দিকে পালিয়ে আসে।

মৃত্যুকূপ থেকে ফিরে জীবনের চরম এ দুঃসময়ের মধ্যেও সুসংবাদ হচ্ছে, এবারের এসএসসি পরীক্ষায় এই মেধাবী জিপিএ-৫ পেয়েছে। কিন্তু পরম আনন্দের মধ্যেও দুঃশ্চিন্তা যেন পিছু ছাড়ছে না তার।

ভালো কলেজে ভর্তি অত:পর লেখাপড়া চালিয়ে যেতে প্রয়োজন টাকা। কিন্তু সেই টাকা কে দেবে, কিভাবে জোগার হবে, সেই চিন্তায় অস্থির জিয়া ও তার পরিবার।

মেধাবী জিয়ার সোজাসাপ্টা ভাষ্য, “আমি ভালো কলেজে ভর্তি হতে চাই। লেখাপড়া করে বড় চিকিৎসক হতে চাই।”

জানা গেছে, ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার বড়হিত ইউনিয়নের নওপাড়া গ্রামের মজুর আব্দুল হেলিমের ৪ সন্তানের মধ্যে জিয়া তৃতীয়। ঢাকায় তার বাবা দিনমজুর ও মা জুলেখা খাতুন গৃহ পরিচারিকার কাজ করেন।

প্রতিকূল পরিস্থিতিতে দারিদ্র্যের যাতাকলে পিষ্ট হয়েও এবারের এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পেয়েছে জিয়া।

জিয়া বলেন, “আমার আত্মবিশ্বাস ছিল ভালো করবো। সেই বিশ্বাস থেকেই এইচএসসি’তে ভালো কলেজে ভর্তির টাকা জোগার করতে সাভারের রানা প্লাজার পোশাক কারখানায় কাজ নিয়েছিলাম। ২৫ এপ্রিল আল্লাহ’র অশেষ রহমতে ‘ভয়ঙ্কর মৃত্যুকূপ’ থেকে প্রাণে রক্ষা পেয়েছি। কিন্তু এখন আমার স্বপ্ন কিভাবে পূরণ হবে কিছুই জানি না।”

অদম্য এ মেধাবী’র বাবা-মায়ের স্বপ্ন তাদের ছেলে চিকিৎসক হবে।

এ প্রসঙ্গে জিয়া বলেন, “বাবা-মায়ের ভীষণ ইচ্ছা আমি ভালো কলেজে পড়বো। চিকিৎসক হবো। মানবতার সেবা করবো। কিন্তু এরজন্য তো প্রয়োজন অর্থ। সেই অর্থই তো আমাদের নেই।”

দারিদ্র্যের অন্ধকার ঘরে এক টুকরো আশার আলো জ্বালিয়েছেন জিয়া। ছেলের এ ফলাফলে খুশি বাবা আব্দুল হেলিম ও মা জুলেখা বেগমও। কিন্তু তাদের মুখে হাসি নেই।

সংসার চালাতেই যেখানে চরম হিমশিম খেতে হয়, সেখানে ছেলের শিক্ষা খরচ কিভাবে চালাবেন, এ নিয়ে ভীষণ চিন্তিত জিয়ার বাবা-মা।

জিয়ার বাবা আব্দুল হেলিম বলেন, “আমরা দরিদ্র মানুষ। কেউ যদি আমার ছেলেকে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে সাহায্যের জন্যে এগিয়ে আসতেন তবে আমাদের সেই স্বপ্ন পূরণ হতো।”

জিয়ার কৃতিত্বের প্রশংসা করে ঈশ্বরগঞ্জ বিশ্বেশ্বরী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাসিম উদ্দিন জানান, “শত অভাব ও দুঃখ জিয়াকে দমিয়ে রাখতে পারেনি। প্রতি ক্লাসেই সে মেধার স্বাক্ষর রেখেছে। মেধাবী এ তরুণকে অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌছাঁতে সবার সহযোগিতার প্রয়োজন।”

কক্সবাজারে পর্ণো ভিডিও চক্রের ৫ নারীসহ আটক ১৫

কক্সবাজার শহরের কলাতলীর হোটেল মোটেল জোনের সি ভিউ অ্যাপার্টম্যান্ট থেকে বৃহস্পতিবার রাতে পর্ণো ভিডিও তৈরি চক্রের  ৫ নারী সদস্যসহ ১৫ জনকে আটক করেছে পুলিশ।

আটকদের মধ্যে রয়েছেন এ চক্রের প্রধান হোতা কক্সবাজার হোটের মোটেল  ও গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম সিকদারের ছোট ভাই জসিম উদ্দিন। জমিস উদ্দিন কক্সবাজার শহরের বাহারছড়া এলাকার মৃত আশরাফজ্জামানের ছেলে।

আটক অন্যান্যরা হলেন, লাইট হাউজ এলাকার মৃত আমির হোসেনের ছেলে আবদুর রাজ্জাক, পোকখালী নতুন বাজার এলাকার অজি উল্লাহ ছেলে মো. সেলিম উল্লাহ, র্পূব পোকখালী এলাকার মো. ইলিয়াছের ছেলে আইয়ুব, একই এলাকার মোজাফ্ফর আহমদের ছেলে এনামুল কবির, লাইট হাউজ এলাকার মৃত আলমের ছেলে শুক্কুর আলী, বিডিআর ক্যাম্প এলাকার ইয়াদ করিমের ছেলে সাদেকুর রহমান, ভারুয়াখালি এলাকার মৃত এমদাদুলের ছেলে সেলিম উল্লাহ, বরগুনার আব্দু রহমান ব্যাপারীর ছেলে সুমন এবং বড় মহেশখালী নুর মোহাম্মদের ছেলে সাইদ।

আটক চক্রের নারী সদস্যরা হলেন, রোহিঙ্গা আমেনা, চকরিয়ার সুমি, রামুর ইয়াসমিন, চকরিয়ার সায়েমা এবং লোহাগড়ার রুজিনা।

সিভিউ অ্যাপার্টমেন্টির এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, কক্সবাজার হোটের মোটেল  ও গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম সিকদারের ছোট ভাই জসিম উদ্দিন ও তার সহযোগী সেলিম মিলে একটি চক্র পর্ণো ছবি তৈরি করে আসছে। রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে পর্ণো ভিডিওসহ এদের আটক করে।

কক্সবাজার সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জমিস উদ্দিন জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ওই অ্যাপার্টমেন্টে অভিযান চালিয়ে অসামাজিক কাজ করার সময় ৫ নারী সহ ১৫ জনকে আটক করা হয়।

এদিকে খোদ কক্সবাজার হোটের মোটেল ও গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদকের ছোট ভাইকে হোটেল মোটেল জোনে অসামাজিক কার্যকলাপ ও পর্ণো ফ্লিম তৈরির সঙ্গে জড়িত থাকায়ে আটক হওয়ায় শহরে জুড়ে তুমুল সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে, কক্সবাজার হোটের মোটেল ও গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সাধারণ
 সম্পাদক আবুল কাশেম সিকদার কিছুই জানেন না বলে জানিয়েছেন।

অনুসন্ধানে জানা যায়, একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে কক্সবাজারের আবাসিক হোটেল কেন্দ্রিক পর্ণো ভিডিও তৈরি করে তা বাজারজাত করে আসছে। কক্সবাজারের প্রায় ৩০টি হোটেল এ চক্রটির নিরাপদ আশ্রয়স্থলে পরিণত হয়েছে। চক্রটির সঙ্গে রয়েছে নারী সদস্যরাও। এতে হোটেল মোটেল ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নিয়ে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

১৯ ঘণ্টা পর সিরিয়ায় ইন্টারনেট চালু!

টানা ১৯ ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর সিরিয়ায় আবার চালু হয়েছে ইন্টারনেট সুবিধা। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় হঠাৎ করেই ইন্টারনেট সংযোগ থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে দেশটি। অপটিক্যাল ফাইবার কেব্‌লের ত্রুটির কারণেই এমনটি হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির সরকারি গণমাধ্যম। বিশেষজ্ঞরা অবশ্য এ কথা মানতে নারাজ। গত নভেম্বরে টানা তিন দিন দেশটিতে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ ছিল। অনেকের ধারণা, বিদ্রোহ দমাতে সরকার ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করেছিল।
তানজিল আহমেদ জনি, সূত্র: বিবিসি