Saturday, March 30, 2013

4 Pakistanis among 16 held with bombs in city

Plainclothes police arrested 16 people, including four Pakistani nationals, along with eight bombs and 12.9 million Indian Rupees “while planning subversive activities in the city”.
Acting on a tip-off, a team of Detective Branch of police conducted simultaneous drives in several areas of the city, including Paltan, Nikunja, Kalabagan and Bangshal, from 2:30pm Friday to 4:30am Saturday and arrested the 16 people.
Contacted, Additional Deputy Commissioner Mashiur Rahman confirmed the arrest.
Apart from eight bombs and the Indian currencies, several passports were recovered from the arrestees’ possession, he added.
A Bangladeshi eye specialist was among the arrestees, said a DB official.
He said that the detainees might be the members of an outfit trying to carry out subversive activities in the capital or elsewhere in the country.

বিদ্যালয়ের পথে পথে অশ্লীল পোস্টার

কিশোরগঞ্জের ভৈরব পৌর শহরের প্রাচীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ রেলওয়ে উচ্চবিদ্যালয়। বিদ্যালয়সংলগ্ন ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের কালভার্ট। কালভার্টের নিচে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীর জটলা। তাদের দৃষ্টি সেতুর দেয়ালে। ওই স্থানে ইংরেজি ও বাংলা ছবির অশ্লীল পোস্টার সাঁটা।
‘কী দেখছ?’ জিগ্যেস করতেই মাথা নিচু করে বিদ্যালয়ের দিকে রওনা হয় শিক্ষার্থীরা। এটি গত বৃহস্পতিবার সকালের ঘটনা।
ওই বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এ টি এম খলিলুর রহমান বলেন, ‘অশ্লীল পোস্টার সাঁটার স্থান হিসেবে চলচ্চিত্র ব্যবসায়ীদের স্কুল-কলেজের সড়কগুলো যেন বেশি পছন্দ। আমার স্কুলের চারপাশে একই অবস্থা। কোমলমতি শিক্ষার্থীরা এসব দেখে আকৃষ্ট হচ্ছে। সর্বনাশ যা হওয়ার তা তো হয়েই যাচ্ছে।’
জানা গেছে, ভৈরব বাণিজ্যিক শহর। এখানে নৌবন্দর ও রেলওয়ে জংশন রয়েছে। কাজের প্রয়োজনে চারপাশের কয়েক হাজার মানুষ প্রতিদিন ভৈরবে আসা-যাওয়া করে।
ফলে স্বাধীনতার আগে থেকেই প্রেক্ষাগৃহগুলোর ব্যবসা সফল। ঢাকার সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাণিজ্যিক ছবি প্রদর্শন করা হয় এখানকার প্রেক্ষাগৃহগুলোতে; একইসঙ্গে ইংরেজি ছবির দর্শকও প্রচুর। প্রচার হিসেবে শহরের একাধিক স্থানে পোস্টার সাঁটা হয়, যার বেশির ভাগই অশ্লীল।
বৃহস্পতিবার সরেজমিনে দেখা গেছে, শহরের ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের কালভার্ট, শহীদ জিয়া তোরণ, মনামারা সেতু, বঙ্গবন্ধু সরণি সেতু, নতুন গলি, মালগুদাম, স্টেশন সড়ক, বাসস্ট্যান্ড ও ঋষিপট্টি সড়কে অশ্লীল পোস্টারের আধিক্য। এর মধ্যে ইংরেজি ছবির পোস্টারও রয়েছে। প্রতিটি পোস্টারে নারীদের অরুচিকর ও বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
এসব স্থান দিয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ে উচ্চবিদ্যালয়, কে বি পাইলট উচ্চবিদ্যালয়, এম পি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, জিল্লুর রহমান মহিলা ডিগ্রি কলেজ ও রফিকুল ইসলাম মহিলা কলেজের শিক্ষার্থীরা যাতায়াত করে।
রফিকুল ইসলাম মহিলা কলেজর অধ্যাপক মো. শহীদুল্লাহ বলেন, এমন স্থানে পোস্টার সাঁটা হয়েছে, চোখ পড়বেই। এমন পরিবেশে সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তা বাড়ছে।
উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, আজ থেকে আট বছর আগে ভৈরবে অশ্লীল পোস্টারের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে উঠেছিল। তখন এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি ও প্রেক্ষাগৃহের মালিকদের নিয়ে উপজেলা প্রশাসন সভা করে।
সিদ্ধান্ত হয়, পোস্টার সাঁটার আগে তা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) নজরে আনা হবে। অনুমোদনের পর সাঁটা হবে। উদ্যোগের কয়েক বছর নীতিমালার যথাযথ প্রয়োগ হয়। কিন্তু দুই বছর ধরে তা আর মানা হচ্ছে না।
জানতে চাইলে ভৈরবের ইউএনও সেলিম আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘ভৈরবে আমি নবাগত। এ কারণে বিষয়টি নজরে আসেনি। মালিকদের সঙ্গে কথা বলে প্রতিকারে যাব। না শুনলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

আবাসিক হোটেল থেকে ৫৬ জন গ্রেপ্তার

গাজীপুর সদর উপজেলার চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় গতকাল শুক্রবার রজনীগন্ধা ও ঈশা খাঁ আবাসিক হোটেলে অভিযান চালিয়ে যৌনকর্মীসহ ৫৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁদের মধ্যে হোটেল দুটির ব্যবস্থাপকও রয়েছেন।
এলাকাবাসী সূত্র জানায়, সদর উপজেলার চান্দনা চৌরাস্তা ও ভোগড়া এলাকায় বেশ কয়েকটি আবাসিক হোটেল গড়ে উঠেছে। এসব হোটেলে মাদক ও দেহ ব্যবসা করা হয় বলে এলাকাবাসী একাধিকবার থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।
গতকালের অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় প্রথম আলোকে বলেন, ‘আবাসিক হোটেলের নামে কেউ অবৈধ ব্যবসা করলেই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখন থেকে হোটেলগুলোয় নিয়মিত তদারকি করা হবে।’

ইউরোপের শীর্ষ পর্বতশৃঙ্গ জয় করলেন ওয়াসফিয়া

বাংলাদেশের এভারেস্ট বিজয়ী পর্বতারোহী ওয়াসফিয়া নাজরীন এবার জয় করলেন ইউরোপের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ মাউন্ট এলব্রুস। গত বৃহস্পতিবার রাশিয়ার স্থানীয় সময় সকাল সাতটা ৫১ মিনিটে তিনি এলব্রুস চূড়ায় আরোহণ করে বাংলাদেশের লাল-সবুজ পতাকা ওড়ান। মাউন্ট এলব্রুস জয়ের মাধ্যমে ওয়াসফিয়া সাত মহাদেশের সাতটি সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ অর্থাৎ সেভেন সামিটের মধ্যে পাঁচটিতে আরোহণ সম্পন্ন করলেন।
পাঁচ হাজার ৬৪২ মিটার (১৮ হাজার ৫১০ ফুট) উচ্চতার এলব্রুস পর্বতশৃঙ্গ রাশিয়ায় ইউরোপ ও এশিয়া মহাদেশের সীমান্তে অবস্থিত। চূড়ায় ওঠার পরপরই ফোনে ওয়াসফিয়া কথা বলেন তাঁর ‘বাংলাদেশ অন সেভেন সামিট’ কর্মসূচির মুখপাত্র করভি রাখসান্দের সঙ্গে। গতকাল শুক্রবার করভি প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওয়াসফিয়া এলব্রুসে তাঁর এই সফল অভিযান ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মৃতি এবং শাহবাগের চেতনা ও ন্যায়বিচারের প্রতি উৎসর্গ করেছেন।’
১৬ মার্চ শুরু হয়েছিল ওয়াসফিয়ার এলব্রুস অভিযান। অভিযানের বেশির ভাগ সময়ই প্রতিকূল আবহাওয়ার মধ্য দিয়ে এগোতে হয়েছে তাঁকে। ওয়াসফিয়ার ফেসবুক পাতা থেকে জানা যায়, চূড়া জয় করার সময় সেখানে বাতাসের গতিবেগ ছিল প্রতি ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার এবং তাপমাত্রা ছিল মাইনাস ৩৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড। পর্বত চূড়ায় ওঠার সময় ওয়াসফিয়ার গাইড ছিলেন আনা পেত্রোভা।
সেভেন সামিটের অংশ হিসেবে এলব্রুসের আগে ওয়াসফিয়া এশিয়ার মাউন্ট এভারেস্ট, আফ্রিকার কিলিমানজারো, দক্ষিণ আমেরিকার অ্যাকোনকাগুয়া ও অ্যান্টার্কটিকার ভিনসন ম্যাসিফ পর্বতশৃঙ্গ জয় করেছেন। ২০১১ সালে এলব্রুস অভিযানে গেলেও বিরূপ আবহাওয়ায় সেবার চূড়ায় আরোহণ করতে পারেননি।

উড়াল সেতুতে উড়ন্ত উল্লাস

ফাগুনের পড়ন্ত বিকেলে গতকাল শুক্রবার উত্সবের দোলায় দুলেছে সদ্য উদ্বোধন হওয়া ‘জিল্লুর রহমান উড়াল সেতু’ এলাকা। উড়াল সেতুকে ঘিরে এর ওপর তো বটেই, আশপাশেও ছিল আনন্দ আর উল্লাসের আমেজ।
গত ২৭ মার্চ উদ্বোধনের দিন বিকেলেই উত্সুক মানুষের ঢেউ আছড়ে পড়ে এই উড়ালসেতুতে। তবে হরতাল থাকায় এই কয়েকদিন রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে বিনোদন পিপাসুদের ভিড় তুলনামূলকভাবে কম ছিল। গত বৃহস্পতিবার ছিল সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস। তাই আনন্দের মাত্রা ছিল খানিকটা কম । কিন্তু সপ্তাহের ছুটির দিন হওয়ায় গতকাল বিকেলে ছিল উপচে পড়া ভিড়। কেউ এসেছেন মিরপুর থেকে, কেউ খিলক্ষেত, কেউ বনানী, আর কেউবা ক্যান্টনমেন্ট এলাকা থেকে। রাজপথ ফাঁকা থাকায় সবাই চোখের পলকে চলে এসেছেন উড়াল সেতুতে।
উড়াল সেতুর আশপাশের চিরসবুজ বৃক্ষরাজি, কিছুটা দূরে বিমানবন্দর থেকে উড়াল দেওয়া বিমানগুলোর নীলাকাশ ভেদ করে ওঠানামার দৃশ্য ঝিমিয়ে পড়া ঢাকাবাসীকে যেন জাগিয়ে তুলেছে। পিচঢালা পথে পাশে রেলগাড়িগুলোর যাওয়া-আসা তো আছেই। এজন্য ঘরের কোণে অলস বসে না থেকে, যে যার মতো করে চলে এসেছেন উড়ালসেতুর প্রান্তরে। স্ত্রী, সন্তান নিয়ে এসেছেন অনেকে। অনেকে আবার মা-বাবার সঙ্গে। আর প্রিয় মানুষকে সঙ্গে নিয়ে হেঁটে চলেছেন অবিরত উড়াল সেতুর এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে। এ ছাড়া ব্যক্তিগত গাড়ি বা মোটরসাইকেল নিয়ে ছোটাছুটি তো আছেই।
গতকাল মিরপুর ১১ নম্বর সেকশন থেকে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান এসেছিলেন স্ত্রী ও দুই বছরের মেয়ে নওশীনকে সঙ্গে নিয়ে। তিনি প্রথম আলো ডটকমকে জানান, গাড়ি নিয়ে বাসা থেকে বের হয়েছি বিকেল চারটায়। প্রশস্ত রাস্তা থাকায় মাত্র ১৫ মিনিটে আসতে পেরেছেন উড়াল সেতুর একেবারে মাঝামাঝি।
বিকেলের দিকে ভিড় বেশি না থাকলেও সন্ধ্যার পর থেকে লোক সমাগম বাড়তে থাকে উড়াল সেতুতে। তবে হাঁটার সুনির্দিষ্ট পথ না থাকায় সুবিশাল উড়াল সেতুর একেবারে মাঝখানে চলাচল করতে দেখা গেছে অনেককেই। মনের আনন্দে ছবি তুলছেন যে যাঁর মতো করে। চালকেরা সুযোগ পেলেই দ্রুত গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছেন। অনেকে আবার সব উপেক্ষা করে উড়াল সেতুর ডিভাইডারে বসে পড়েছেন।
এ ছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতি না থাকায় মোটরসাইকেলে কোনো কোনো তরুণ বিভিন্ন ধরনের কসরত প্রদর্শন করেছেন উড়াল সেতুর ওপর। তাই বিনোদনপ্রেমীদের শঙ্কা, এতে ঘটে যেতে পারে বড় কোনো দুর্ঘটনা। চোখের পলকে আনন্দ হতে পারে বেদনার রঙে নীল।

রিকশা চালিয়ে লাখপতি!


চলে আমার রিকশা হাওয়ার বেগে... ঝড়ের বেগে তিন চাকার রিকশা ছুটিয়েছেন এতকাল
কিন্তু ভাড়া সেই ১০-২০ টাকার বেশি নয়। আর রিকশা চালিয়ে লাখপতি? ঢাকার রিকশাওয়ালারা নিশ্চয়ই স্বপ্নেও ভাবেন না। রিকশাওয়ালাদের সেই অসম্ভব স্বপ্নকেই পূরণ করল প্রথম ঢাকা রিকশা ফিয়েস্তা। বিশ্বাস না হয় জিগ্যেস করুন রিকশাওয়ালা আবদুর রহিমকেই। ‘ঢাহাতে ছয় বছর রিকশা চালাইছি কিন্তু এত টাহা এক লগে পাই নাই।’ বলছিলেন রিকশাচালক আবদুর রহিম। ১৫ মার্চ আবদুর রহিম আর তিন সঙ্গী মিলে সত্যিকার অর্থেই হাওয়ার বেগে রিকশা চালিয়েছেন। জিতে নিয়েছেন রিকশা দৌড় প্রতিযোগিতার প্রথম পুরস্কার এক লাখ টাকা। টিভি ক্যামেরার সামনে সাক্ষাৎকারও দিয়েছেন রাতারাতি ‘সেলিব্রেটি’ আবদুর রহিম।
জাতীয় সংসদ ভবন থেকে পুরান ঢাকা হয়ে আবার জাতীয় সংসদ ভবন। এই ছিল দূরত্ব। রিলে রেসের আদলে এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেন ৮৪ জন রিকশাচালক। এই আয়োজনে সহযোগী হিসেবে ছিল বাংলাদেশ জাপান দূতাবাস ও জাপান আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা (জাইকা)। আয়োজনে সহযোগিতা করে মোজো।
রিকশাপ্রেমী
রিকশা আর রিকশাওয়ালাদের ঘিরেই এমন ভরপুর আয়োজন? চোখে পড়ার মতো ঘটনা তো বটেই।
এই আয়োজনের পেছনের মানুষদের মধ্যে অন্যতম সিসিলিয়া আমি কিটাজিমা। কিতাজিমার জন্ম আর্জেন্টিনায়। বাবা-মা দুজনেই জাপানি। বছর দুয়েক আগে প্রথমবার বাংলাদেশে এসেছিলেন এই চিত্রনির্মাতা। সেবারই বাংলাদেশি ঘরানার রিকশার সঙ্গে প্রথম পরিচয় কিতাজিমার। যাকে বলে প্রথম দেখাতেই প্রেম। কিতাজিমা মনে মনে তাঁর পরবর্তী তথ্যচিত্রের বিষয় খুঁজছিলেন। তথ্যচিত্রের বিষয় হিসেবে তিনি বেছে নেন রিকশাকে। কিতাজিমার সহায়তায় এগিয়ে আসেন এক জাপান-প্রবাসী বাংলাদেশি সলিমুল্লাহ কাজল। চারুকলা অনুষদের পড়ালেখা শেষে কাজল পাড়ি জমিয়েছিলেন জাপানে।
জাপানে দীর্ঘদিন কাজ করছেন টেলিভিশন প্রযোজক হিসেবে। কাজ করেছেন জাপানের এন টিভি, টিভি আশাহি, টিভি টোকিও এবং ফুজি টিভির সঙ্গে।
কিতাজিমার সঙ্গে আলাপ হওয়ার পর তাঁরা শুরু করেন রিকশা উৎসব আয়োজনের ভাবন-চিন্তা। তারই সুবাদে এই রিকশা ফিয়েস্তা।
রিকশা উৎসবের দ্বিতীয় দিনে কথা হয় আমি কিতাজিমার সঙ্গে। কাজল এবং কিতাজিমা দুজনই তখন ব্যস্ত সম্পাদনার কাজে। সম্পাদনার ফাঁকেই কিতাজিমা শোনালেন রিকশা নিয়ে তাঁর স্বপ্নের কথা। এই মুহূর্তে বাংলাদেশের রিকশা নিয়ে তৈরি তথ্যচিত্রটির কাজ মাঝামাঝি পর্যায়ে আছে। রিকশাকে সামনে রেখেই বাংলাদেশকে বাইরের দুনিয়ার মানুষের কাছে ইতিবাচকভাবে তুলে ধরতে চান তিনি। সামনে একটি পূর্ণদের্ঘ্য কাহিনিচিত্র তৈরি করতে চান কিতাজিমা। সেটিরও বিষয় বাংলাদেশের রিকশা এবং রিকশাওয়ালা। ছবির কাহিনিও মোটামুটি তৈরি।
বাংলাদেশের রিকশার কোন দিকটি বেশি ভালো লাগে কিতাজিমার?
‘এই রিকশাগুলো খুব দারুণভাবে সাজানো হয়। রঙিন আর ঝলমলে নতুন রিকশা দেখতে খুব ভালো লাগে’। বলছিলেন আমি কিতাজিমা।
রিকশার সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়েছেন সত্যি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আমি কিতাজিমার রিকশার চেয়ে বেশি পছন্দ বাংলাদেশের রিকশাওয়ালাদেরই।
রিকশাওয়ালার স্বপ্ন
রিকশা হাঁকিয়ে যাচ্ছে বাঘ মামা। আর তার পেছনে সওয়ারি শিয়াল পণ্ডিত।
বনের পশুপাখির এমন চিত্রায়ন চোখে পড়বে আমাদের রিকশাচিত্রেই। রিকশা ফিয়েস্তার অংশ হিসেবে ‘রিকশাওয়ালার স্বপ্ন’ শিরোনামে সপ্তাহব্যাপী রিকশাচিত্রের প্রদর্শনী ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের জয়নুল গ্যালারিতে।
জাপানি চিত্রনির্মাতা সিসিলিয়া আমি কিতাজিমা

লটারি জিতে হাজার কোটি টাকা!

শিকে ছিঁড়েছে তো ছিঁড়েছে, লটারি জিতে এক লাফে হাজার কোটি টাকার বেশি অর্থের মালিক বনে গেছেন ফ্রান্সের এক ব্যক্তি। গতকাল শুক্রবার এই লটারির ফল ঘোষণা করা হয় বলে ‘টাইমস অব ইন্ডিয়া’র খবরে জানানো হয়।
ভাগ্যবান ওই ব্যক্তির নাম প্রকাশ না করে খবরে জানানো হয়, লটারিতে জয়ী হয়ে বাংলাদেশি মুদ্রায় তিনি এক হাজার ২৯৬ কোটি ৬২ লাখ টাকা (১৩ কোটি ২৪ লাখ ৮৬ হাজার ৭৪৪ ইউরো) পেয়েছেন।
ওই ব্যক্তি নিয়মিত লটারির কুপন কিনে ভাগ্য পরীক্ষা করতেন। গত শুক্রবার লটারির ফল ঘোষণার সময় বিজয়ী হিসেবে তাঁর নাম ঘোষিত হয়।

লঙ্কা জয়ের পর...

‘আমরা করব জয়’ গাইতে সোহাগ গাজীকে একটুও অপেক্ষা করতে হয়নি। ওয়ানডে অভিষেকেই ড্রেসিংরুমে সুর মিলিয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের বিজয় সংগীতের সঙ্গে। পরের ম্যাচে আবারও। তার পরও শ্রীলঙ্কায় এসে ‘আমরা করব জয়’ গাইতে পারার মহিমাটা আলাদা হয়ে ধরা দিচ্ছে এই অফ স্পিনারের কাছে, ‘কী যে ভালো লেগেছে, বলে বোঝাতে পারব না।’
শেন জার্গেনসেনও ‘আমরা করব জয়’ গাইতে শিখে গেছেন। চর্চা করার সুযোগ যে খুব ঘন ঘনই মিলছে! বাংলাদেশ দলের অস্ট্রেলিয়ান কোচের এখন পর্যন্ত দুর্দান্ত রেকর্ড। প্রথম সিরিজেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিনটি জয়। শ্রীলঙ্কায় প্রথম সাফল্যের ইতিহাসেও লেখা থাকল তাঁর নাম। কাল দুপুরে টিম হোটেলে হাসতে হাসতে বললেন, ‘কথা-টথা বোধ হয় ভুল হয়ে যায়, তবে দলের সঙ্গে আমিও গলা ছেড়ে গাই।’
একটা সুবিধা তো আছেই। কথা আলাদা হতে পারে, সুরটা তো বিশ্বজনীন। ‘উই শ্যাল ওভারকাম’ তো কতই গেয়েছেন জীবনে! একজন কোচের জীবনে সবচেয়ে বড় আনন্দ হলো খেলোয়াড়দের ভালো করতে দেখা, জয় যেটির চূড়ান্ত পুরস্কার। জয়ের প্রতিক্রিয়া থেকে বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের মধ্যে পরিবর্তনটাও খুব ভালো বুঝতে পারছেন জার্গেনসেন, ‘আগে জেতার পর খেলোয়াড়েরা যেন বুঝতে পারত না, কী করবে। এখন উদ্যাপনটা খুব স্বতঃস্ফূর্ত হয়। কাল (পরশু) তো ড্রেসিংরুমে আমরা কোচিং স্টাফরাও ইচ্ছামতো লাফালাফি করেছি।’
তা লাফালাফি করার মতোই এক জয়। শ্রীলঙ্কায় এর আগের সব কটি সফর যেখানে লজ্জা আর লাঞ্ছনার প্রতিশব্দ হয়ে আছে, সেখানে এসে এবার ওয়ানডে সিরিজে ড্র। বৃষ্টি হয়তো আশীর্বাদ হয়েই এসেছিল, তার পরও ৮০ বলে ১০৫ রানও একেবারে সহজ ব্যাপার ছিল না। আবেগের আতিশয্যে মুশফিকুর রহিম যে এটিকে ‘দেশের বাইরে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জয়’ বলে ফেললেন, সেটি নিয়েও তাই ভ্রু কোঁচকানোর কিছু নেই। এই দিনে কোনো কিছুই ধরতে নেই। নইলে মুশফিকুরকে কার্ডিফের কথা মনে করিয়ে দেওয়া যেত। পোর্ট অব স্পেন বা গায়ানার কথাও।
২০০৫ সালে কার্ডিফের জয়টা এমন এক সময়ে, অস্ট্রেলিয়াকে যখন অন্য দলগুলো শুধু স্বপ্নেই হারাতে পারত। ২০০৭ বিশ্বকাপে পোর্ট অব স্পেনে ভারতের বিপক্ষে জয়টা তো সম্ভবত বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে সবচেয়ে তাৎপর্যময়। সেই জয়ের তরীতে ভেসে সুপার এইটে গিয়ে গায়ানায় যখন গ্রায়েম স্মিথের দলকে হারাল বাংলাদেশ, দক্ষিণ আফ্রিকা তখন ওয়ানডে র‌্যাঙ্কিংয়ে এক নম্বর।
কার্ডিফের রূপকথা ড্রেসিংরুম থেকে দেখেছেন। তবে পোর্ট অব স্পেন ও গায়ানায় মাঠেই জয়োল্লাস করেছেন মুশফিকুর নিজেও। সেসব ভুলে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয়টাকে এক নম্বর বলে ফেলার কারণ হয়তো একটাই—শ্রীলঙ্কায় এর আগে কখনোই কিছু জিততে না পারা।
২০০৬ সালে বাংলাদেশ সফরের সময় সনাৎ জয়াসুরিয়া বাংলাদেশ কোন কোন বড় দলকে হারিয়েছে শোনার পর গর্ব করে বলেছিলেন, ‘তোমরা এখনো আমাদের হারাতে পারোনি।’ নিয়তির কী খেলা, সেই সিরিজেই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম জয়। সাত বছরের মধ্যে শ্রীলঙ্কা বলতে গেলে বাংলাদেশের প্রিয় প্রতিপক্ষে পরিণত! বড় দলগুলোর মধ্যে শ্রীলঙ্কাকেই সবচেয়ে বেশিবার হারিয়েছে বাংলাদেশ। গত পরশুর আগ পর্যন্ত শ্রীলঙ্কার সঙ্গী ছিল ভারত। এখন বাংলাদেশের ‘দৈত্য বধ’-এর তালিকায় শ্রীলঙ্কার নাম আসছে চারবার। তিনবার ভারতের।
‘দৈত্য বধ’ কথাটাও বোধ হয় এখন আর খাটছে না। আবদুর রাজ্জাক তো বলেই দিলেন, ‘ওয়ানডেতে এমন কোনো দল নেই, যাদের আমরা হারাতে পারি না।’ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আগের তিনটি জয়ের প্রথম দুটিতে ছিলেন না। ২০০৯ সালের দ্বিতীয় জয়ের সময় বোলিং অ্যাকশনের কারণে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিষিদ্ধ ছিলেন। তাই তাঁর আনন্দটা একটু বেশি, ‘৫ উইকেট পেলাম। ২০০ উইকেটও হলো। টিমও জিতল। এই ম্যাচ থেকে আমি আর কীই-বা চাইতে পারতাম!’
মুশফিকুর রহিম এশিয়া কাপের সাফল্যভাস্বর ২০১২ শেষ হওয়ার পর নতুন বছরের লক্ষ্য ঠিক করেছিলেন দেশের বাইরে ভালো খেলা। বছরের প্রথম সফরেই সেই লক্ষ্যে যাত্রায় অবিস্মরণীয় এক সূচনা। প্রথমবারের মতো শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট ড্র, শ্রীলঙ্কায় প্রথম শ্রীলঙ্কা-বধ—আগামীকালের টি-টোয়েন্টিটাও জিতে গেলে হয়েই গেল!
তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডের মাহাত্ম্য তো শুধু জয়ে শেষ নয়, টি-টোয়েন্টির প্র্যাকটিসটাও তো সেরে ফেলা গেছে তাতে!

তেঁতুলিয়ায় ১৪৪ ধারা জারি

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনকে কেন্দ্র করে বিবদমান দুই পক্ষের নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের আশঙ্কায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। সংঘর্ষ এড়াতে ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কায় গতকাল শুক্রবার রাত ১২টা থেকে উপজেলা প্রশাসন আজ শনিবার রাত ১২টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করে।
পুলিশ জানায়, দীর্ঘদিন ধরে তেঁতুলিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের দুটি পক্ষের মধ্যে কোন্দল চলছে। আহ্বায়ক কমিটি আজ তেঁতুলিয়া সদর এলাকার চৌরাস্তায় দলীয় কার্যালয় চত্বরে উপজেলা আওয়ামী লীগের দ্বিবার্ষিক সম্মেলন ডাকে। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে অপর পক্ষ এই সম্মেলন প্রতিহত করার ঘোষণা দেয়। এতে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মনিরুজ্জামান প্রথম আলো ডটকমকে জানান, অপ্রীতিকর অবস্থা এড়াতে আজ রাত ১২টা পর্যন্ত তেঁতুলিয়া চৌরাস্তা ও আশপাশে ৫০০ মিটার এলাকাজুড়ে ১৪৪ ধারা বহাল থাকবে।

রাজধানীতে পাকিস্তানি ও জামায়াত নেতাসহ গ্রেপ্তার ১৬

রাজধানীর কাঁঠালবাগান, নিকুঞ্জ ও বংশালে অভিযান চালিয়ে চার পাকিস্তানিসহ ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গতকাল সন্ধ্যা সাতটা থেকে আটটা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
আজ শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে ডিএমপি কমিশনারের মুখপাত্র মনিরুল ইসলাম এ কথা জানান।
ডিএমপি কমিশনারের মুখপাত্র জানান, আটক চার পাকিস্তানি হলেন: সাঈদ উদ্দিন, মোহাম্মদ ফারহান, রুবিনা বেগম ও নার্গিস আক্তার। এ ছাড়া, জামায়াতের নেতা চিকিত্সক ফরিদ উদ্দিন আহমদ, ফরিদ উদ্দিন মাসুদ, মিজানুর রহমান, মাহফুজুর রহমানসহ আরও ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সংবাদ ব্রিফিংয়ে মনিরুল ইসলাম দাবি করেন, হরকাতুল জিহাদ, হরকাতুল মুজাহিদীনসহ যেসব জঙ্গি সংগঠনের কর্মকাণ্ড স্থবির ও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল, তাদের আবার চাঙা করার চেষ্টা করছিলেন ফরিদ উদ্দিন আহমদ। তিনি তাঁর অনুসারীদের কাছে ‘তাত্ত্বিক গুরু’ হিসেবে পরিচিত। তিনি সিলেটের ওসমানী মেডিকেল কলেজ থেকে চিকিত্সাবিদ্যায় পড়াশোনা শেষ করেন। সেখানকার ছাত্র থাকা অবস্থায় তিনি মেডিকেল কলেজ ছাত্রশিবিরের সভাপতি ছিলেন। পরে ফরিদ উদ্দিন আহমদ সিলেট মহানগর জামায়াতের সঙ্গে সম্পৃক্ত হন। এরপর তিনি মাদারীপুরে প্রায় এক যুগ জেলা জামায়াতের আমির ছিলেন।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে তিনি প্রার্থী হয়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেন। তিনি দেশে বড় ধরনের নাশকতা সৃষ্টির জন্য জঙ্গিদের সংগঠিত করার চেষ্টা করছিলেন।
গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য দিয়েছেন বলে দাবি করেন মনিরুল ইসলাম। জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ব্যাপারে তাঁর ভাষ্য, গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের উদ্দেশ্য ছিল বিভিন্ন ব্যাংকে ডাকাতি করে অর্থ জোগাড় করার পর তা দিয়ে পাকিস্তান থেকে অস্ত্র কেনা। এ ছাড়া, চার পাকিস্তানি জাল অর্থ ব্যবসায়ী তাঁদের আয়ের একটা অংশ জঙ্গিদের সংগঠিত করার কাজে ব্যয় করতে ফরিদ উদ্দিন আহমদকে দিতেন।
ডিএমপি কমিশনারের মুখপাত্রের দাবি, গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের কাছ থেকে আটটি হাতবোমা, প্রায় দেড় কোটি ভারতীয় ও পাকিস্তানি জাল রুপি, বিপুল পরিমাণ বোমা তৈরির সরঞ্জাম ইত্যাদি উদ্ধার করা হয়েছে।
ডিবি পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার মসিউর রহমান প্রথম আলো ডটকমকে জানান, এই ১৬ ব্যক্তির বিরুদ্ধে রাজধানীর কলাবাগান, খিলক্ষেত ও বংশাল থানায় তিনটি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়।