Tuesday, May 3, 2011

১০০ টাকার প্রাইজবন্ডের ড্র অনুষ্ঠিত

১০০ টাকা মূল্যমানের বাংলাদেশ প্রাইজবন্ডের ৬৩তম ড্র গতকাল ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার আবদুল জলিল মিঞা। ড্র-তে ৩৩ সিরিজের (কক, কখ, কগ,ক্স-,খঙ, খচ,খছ) জন্য ৪৬টি পুরস্কার হিসেবে এক হাজার ৫১৮টি পুরস্কার ঘোষণা করা হয়। জানা যায়, এ লটারিতে প্রথম পুরস্কার পেয়েছেন 'কক থেকে খছ' এই ৩৩টি সিরিজের একজন করে ০১৪২২৬৫ নম্বরের ৩৩ জন। প্রথম পুরস্কার হিসেবে তারা প্রত্যেকে ছয় লাখ টাকা করে পাবেন। দ্বিতীয় পুরস্কার পেয়েছেন প্রতি সিরিজের একজন করে ০১৫৯৩৮২ নম্বরের ৩৩ জন। তারা প্রত্যেকে তিন লাখ ২৫ হাজার টাকা করে পাবেন। তৃতীয় পুরস্কার পেয়েছেন প্রতি সিরিজের দুজন করে ০০৬৯২৫৪ এবং ০৮১২৩৯৫ নম্বরের ৬৬ জন। তারা প্রত্যেকে এক লাখ টাকা করে পাবেন। চতুর্থ পুরস্কার পেয়েছেন প্রতি সিরিজের দুজন করে ০৩৮৩৮৭৪ এবং ০৪০৯৩৫৭ নম্বরের ৬৬ জন। তারা প্রত্যেকে ৫০ হাজার টাকা করে পাবেন। এ ছাড়া পঞ্চম পুরস্কার হিসেবে প্রতিটি সিরিজের প্রতিটিতে ৪০ জন করে এক হাজার ৩২০ জনকে দেওয়া হবে ১০ হাজার টাকার পুরস্কার। পঞ্চম পুরস্কারের সিরিজের নম্বরগুলো হলো :- ০০১৫৩৫৯, ০০৫২১১৩, ০০৭৯৯৮৭, ০১৬০০৪৮, ০১৬৫১১৫, ০১৬৮২০৩, ০১৭০৬১৬, ০১৮৭০৬০, ০২১৫০৯৭, ০২১৯১৭৬, ০২৬৮৫৮৭, ০৩৪৪৯১৩, ০৩৯২৭২৫, ০৩৯৬৭৯৪, ০৪৮৬০৫২, ০৪৯৪১৯৯, ০৫০৫৫০৯, ০৫০৬৩২৭, ০৫১২৪৪৪, ০৫৪৩৬২২, ০৫৪৯১৪১, ০৫৫৬৪৫৩, ০৫৬০৯৬৬, ০৫৬৫৭২৩, ০৫৭২৬৬২, ০৫৭৮৬৪৬, ০৫৮৯৩৩১, ০৬৩৯৬৩৯, ০৬৫১৯৫০, ০৬৬৩৯৬৩, ০৬৮২১৫৩, ০৬৮৭৪৩০, ০৭১৯৫৮০, ০৭৫২৫৮৩, ০৭৬১৬২০, ০৮৩৫৯৫৪, ০৮৪৫১৮১, ০৯৩৪০৪১, ০৯৬০৩২০ এবং ০৯৭২৭১০।

নায়িকা নিশি ও তার কথিত স্বামী আটক

রাজধানীর উত্তরায় এক গৃহকর্মীর রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় চিত্রনায়িকা নারগিস আক্তার নিশি ও তার কথিত স্বামী জাহেদ মান্নাকে আটক করেছে পুলিশ। নিহত গৃহকর্মীর নাম প্রিয়া আক্তার নাসিমা (২১)। গতকাল দুপুরে উত্তরা ১১ নম্বর সেক্টরের ১৮ নম্বর সড়কের ৭৩ নম্বর বাসা থেকে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় প্রিয়ার লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা করেছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উত্তরা থানার উপ-পরিদর্শক (এস আই) আবুল মিয়া জানান, আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে চিত্রনায়িকা নিশি ও জাহেদ মান্নাকে আটক করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নিশি জানিয়েছেন, রবিবার তার কক্ষ থেকে বেশকিছু জিনিস চুরি হয়। এ সন্দেহে তিনি প্রিয়াকে সামান্য মারধর করেন।
এসআই আবুল মিয়া আরও জানান, গতকাল ১২টার দিকে প্রিয়া ওই ঘটনার জের ধরে অভিমান করে হয়তো রান্নাঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রিয়ার গ্রামের বাড়ি রাজবাড়ী। কয়েক মাস ধরে তিনি নিশির বাসায় কাজ করছেন। উত্তরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল হাসান জানান, জাহেদ মান্নার সঙ্গে নিশির সম্পর্কের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে নিশির দাবি মান্না তার হবু স্বামী। নায়িকা নিশি ৭৩ নম্বরের ওই তিনতলা ভবনের দোতলার ফ্ল্যাটে একাকী থাকতেন। মান্না বিবাহিত। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মান্না নিজেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষক বলে দাবি করেছেন। অপর একটি সূত্রে জানা যায়, লাশটি উদ্ধারের পর ওই দুজনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসার সময় স্থানীয় বস্তির কিছু লোক পুলিশের ওপর চড়াও হয়। তারা আটক নিশি ও জাহেদ মান্নাকে ছেড়ে দিতে বলে। পুলিশ থানার উদ্দেশে রওনা হলে তারা একপর্যায়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়ে মারে। এতে এক দারোগাসহ দুই কনস্টেবল আহত হন।
প্রসঙ্গত, এর আগেও নায়িকা নিশির বিরুদ্ধে গৃহকর্মী নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছিল ২০০৫ সালে। ওই সময় একই থানায় নিশির বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন আইনে মামলা হয়েছিল। ওই মামলায় নিশি গ্রেফতারও হন।

অসুস্থ মায়ের পাশে সাকিব

মায়ের অসুস্থতার খবর শুনে গত রবিবার কলকাতা থেকে ঢাকায় উড়ে এসেছিলেন সাকিব আল হাসান। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে 'বলিউড বাদশাহ' শাহরুখ খানের কলকাতা নাইট রাইডার্সের পক্ষে খেলছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। সাকিবের মা বেশ কয়েকদিন ধরেই জ্বরে ভুগছিলেন। এরপর অবস্থা গুরুতর হলে গত পরশু ভর্তি করা হয় এ্যাপোলো হাসপাতালে।
অসুস্থ মায়ের পাশে থাকার ইচ্ছা থাকলেও আইপিএল চলাতে গতকাল রাতেই তিনি ঢাকা ছেড়েছেন। ৪ লাখ ডলার পারিশ্রমিকে সাকিব এবারই প্রথম খেলছেন আইপিএলে। আইপিএল ছাড়াও বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে কাউন্টি ক্রিকেটে খেলেছেন সাকিব। গত বছর সাকিব ওরচেস্টারশায়ারের পক্ষে খেলেছিলেন এই বাঁ হাতি অলরাউন্ডার।
নাইট রাইডার্সের ৮ ম্যাচের প্রথম দুটি ও শেষ দুটি খেলেননি বাংলাদেশ অধিনায়ক। মাঝের চারটিতে নিজের প্রতিভার প্রমাণ রাখে ১৫.৫৭ গড়ে ৭ উইকেট নিয়ে। শেন ওয়ার্নের রাজস্থান রয়্যালসের বিপক্ষে অভিষেক ম্যাচেই ২ উইকেট নেন ২১ রানে এবং অভিষেক ওভারেই উইকেট নেন সাকিব। ৪৮ ঘণ্টা পর একই দলের বিপক্ষে প্রথম তিন ওভার ছিলেন উইকেটশূন্য। শেষ ওভারের চতুর্থ ও পঞ্চম বলে উইকেট নিয়ে হ্যাটট্রিকের আশা জাগিয়েছিলেন সাকিব। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর হ্যাটট্রিক করতে পারেননি। পরের ম্যাচে কোচি টাস্কারের বিপক্ষে অবশ্য হ্যাটট্রিক করতে না পারলেও ২৮ রানে নেন ৩ উইকেট। চতুর্থ ম্যাচে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের বিপক্ষে এসে খেঁই হারিয়ে ফেলেন বিশ্বের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার। ক্যারিবীয় ওপেনার ক্রিস গেইলের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে খড়কুঠোর মতো উড়ে গিয়েছিলেন। ওই ম্যাচে দুই-চার ও দুই ছয়ে সাকিব ২.১ ওভারে রান দিয়েছিলেন ২৯।
৪ ম্যাচে ১৪.১ ওভার বোলিং করে ৭ উইকেট নিয়েছেন ১০৯ রান খরচ করে। ৮ ম্যাচে ১৭ উইকেট নিয়ে সবার উপরে রয়েছেন শ্রীলঙ্কান ফাস্ট বোলার ল্যাসিথ ম্যালিঙ্গা। এরপরই রয়েছেন সাবেক অস্ট্রেলিয়ান লিজেন্ড লেগ স্পিনার শেন ওয়ার্ন ৮ ম্যাচে ১১ উইকেট নিয়ে। ১০ উইকেট নিয়ে এর পরপরই অবস্থান করছেন চেন্নাই সুপার কিংসের ডগ বলিঞ্জার ও নাইট রাইডার্সের বাঁ হাতি স্পিনার ইকবাল আবদুল্লাহ।

হোয়াইট হাউসের সামনে আনন্দ উল্লাস

বিজয়ের ধ্বনিতে ফেটে পড়েছে হাজার হাজার মার্কিনি। হোয়াইট হাউসের সামনে গভীর রাতে সমবেত হাজার হাজার মানুষ 'ইউএসএ' 'ইউএসএ' বলে উল্লাস করছে। আল-কায়েদা নেতা ওসামা বিন লাদেনের মৃত্যুর খবর প্রচারের সঙ্গে সঙ্গে হর্ষধ্বনিতে ফেটে পড়ে সবাই। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এই ঘোষণা দেন। এ সময় অনেককে মার্কিন পতাকা বহন করতে দেখা যায়। তারা আকাশের দিকে পতাকা মেলে ধরছে। খবর বিবিসি, সিএনএন ও আল-জাজিরার।
লাদেনের মৃত্যুর খবর টেলিভিশনে প্রচারের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট আকস্মিকভাবে তার ভাষণের ঘোষণাটি আসে। এরপর দু-একজন করে একে একে হাজার হাজর মানুষ হোয়াইট হাউসের সামনে জড়ো হতে থাকে। হোয়াইট হাউসের সামনে উপস্থিত নিউইয়র্কের দমকল বাহিনীর কর্মী কেনেথইস্পথ জানান, 'আজ রাতে আমি আমেরিকান বলে গর্ববোধ করছি।'
লাদেনের মৃত্যুর খবর জানেন কিনা প্রশ্ন করা হলে হোটেলের ক্লার্ক বেকি গ্রেন্ট বলেন, দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর এমন খবর পেলাম।
পাকিস্তানে মার্কিন বাহিনীর হাতে নিহত হওয়ার পর ইন্টারনেট ও মার্কিনিদের উল্লাসের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। টুইটার এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিভিন্ন মন্তব্যে আনন্দের প্রকাশ ঘটেছে।
ইয়াহু মেসেজে একজন লিখেছেন, 'অবশেষে আজ রাতে আমি ঘুমাতে যাচ্ছি। লাদেন দীর্ঘদিন লুকিয়ে ছিল। অবশেষে সে ধরা পড়েছে এবং মারা পড়েছে। আমি এ মুহূর্তে খুবই খুশি।'

ন্যাটো হামলায় গাদ্দাফির ছেলেসহ তিন নাতি নিহত

ন্যাটো বিমান বাহিনীর হামলায় লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলিতে মুয়াম্মার গাদ্দাফির ছোট ছেলে সাইফ আল-আরব (২৯) এবং তিন নাতি নিহত হয়েছেন। সরকারি মুখপাত্র মুসা ইব্রাহিম রবিবার এ তথ্য জানিয়েছেন। খবর এএফপির।
লিবিয়া সংকট সমাধানে গাদ্দাফির দেওয়া আলোচনার প্রস্তাব ন্যাটো ও বিদ্রোহী বাহিনী নাকচ করে দেওয়ার পরপরই এ হামলার ঘটনা ঘটল। এক সংবাদ সম্মেলনে মুসা ইব্রাহিম সাইফের নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, শনিবার বিকালে ন্যাটো বাহিনীর এক হামলায় আল-আরব নিহত হন। সাইফ জার্মানিতে পড়াশোনা করতেন। তিনি আরও জানান, হামলার সময় গাদ্দাফি ও তার স্ত্রী বাসভবনে ছিলেন। তবে তারা অক্ষত আছেন। মুখপাত্র আরও জানান, গাদ্দাফি কোথায় আছেন গোয়েন্দারা এই তথ্য ফাঁস করে দিয়েছেন। ন্যাটো বিমান হামলা চালানোর কথা নিশ্চিত করলেও সাইফ আল-আরবের নিহত হওয়ার ব্যাপারে কিছু জানায়নি। এর আগে রাজধানী ত্রিপোলিতে কমপক্ষে তিনটি ক্ষেপণাস্ত্র বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।
ন্যাটোর এক বিবৃতিতে জানানো হয়, তারা গাদ্দাফির বাসভবন বাব-আল-আজিজিয়ার আশপাশের এলাকায় শনিবার বিকালে হামলা চালিয়েছে। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে গাদ্দাফির ছেলের মৃত্যুর খবর প্রচারিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিদ্রোহীরা আধ ঘণ্টাব্যাপী তাদের নিয়ন্ত্রিত পূর্বাঞ্চলীয় শহর বেনগাজিতে গুলি ছোড়ে, রকেট নিক্ষেপ করে উল্লাস করে।
লিবিয়ায় বিদ্রোহীদের সেনা মুখপাত্র কর্নেল আহমেদ ওমর বাণী জানান, আমরা খুবই খুশি যে বিমান হামলায় গাদ্দাফির ছেলে নিহত হয়েছেন। এ জন্য আমরা গুলি ছুড়ে এটা উদযাপন করছি। এর আগে মুসা সাংবাদিকদের গাদ্দাফির বিধ্বস্ত বাসভবনে নিয়ে যান। তবে এ ঘটনায়ই যে গাদ্দাফির ছেলে নিহত হয়েছেন তার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
এর আগে শনিবার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে গাদ্দাফি ন্যাটো বাহিনীর উদ্দেশে বলেন, তিনি পদত্যাগ করছেন এ রকমটি আশা করা ভুল। তিনি বলেন, 'আমার পদত্যাগের কোনো ইচ্ছা নেই। আমি লিবিয়াতেই থাকব। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত লড়ে যেতে চাই।'
জাতিসংঘ কর্মী প্রত্যাহার : লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলিতে কর্মরত আন্তর্জাতিক সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে প্রত্যাহার করে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতিসংঘ।
ন্যাটো বিমান হামলায় গাদ্দাফির ছেলে নিহত হওয়ার পর উত্তেজিত জনতা বিদেশি দূতাবাসসহ জাতিসংঘ অফিসে হামলা চালালে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। খবর বিবিসির।
এদিকে লিবিয়ায় মিশন তছনছ করার পর ব্রিটেন সরকার সে দেশে নিয়োজিত লিবিয়ান রাষ্ট্রদূতকে সে দেশ ছেড়ে যেতে বলেছে।

সাগরে ফেলে দেওয়া হলো লাশ

আল কায়দার প্রতিষ্ঠাতা ও জঙ্গি নেতা ওসামা বিন লাদেনের মৃতদেহ সাগরে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে। পাকিস্তান থেকে তার মরদেহ আফগানিস্তানে নিয়ে যাওয়ার পর তা সাগরে ভাসিয়ে দেওয়া হয়। মার্কিন পদস্থ কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে গতকাল এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি। তবে অনেকেই সন্দেহ প্রকাশ করে বলেছেন, সাগরে ভাসিয়ে দেওয়া লাশটিই কি ওসামা বিন লাদেনের নাকি অন্য কারো?

যেভাবে আল-কায়েদার শীর্ষ নেতা

পরিবারের বাইরে গিয়েই জঙ্গি সংগঠন আল-কায়েদার শীর্ষ নেতায় পরিণত হন ওসামা বিন লাদেন। সৌদি আরবে ১৯৫৭ সালে তার জন্ম। ধনকুবের মুহাম্মদ বিন লাদেনের ৫০ সন্তানের একজন তিনি। ১৭ বছর বয়সে ওসামা প্রথমবারের মতো দূরসম্পর্কের এক সিরীয় বোনকে বিয়ে করেন। এরপর তিনি আরও চারটি বিয়ে করেন। তার কমপক্ষে ২৩ জন সন্তানের কথা জানা যায়। খবর রয়টার্স, বিবিসি ও আল-জাজিরা। মুসলমানরা যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে সন্ত্রাসবাদের শিকার হচ্ছে বলে বিশ্বাস করতেন ওসামা। যদিও এর আগে তিনি ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম সহযোগী। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়নে ১৯৮০ এর দশকে আফগানিস্তানে সোভিয়েত বাহিনীর বিরুদ্ধে জঙ্গি তৎপরতায় অংশ নেন ওসামা।
১৯৯০ এর দশকে আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যে বিভিন্ন মার্কিন স্থাপনায় হামলার পরিকল্পনাকারী হিসেবে অভিযুক্ত ছিলেন তিনি। এরপর তাকে পরিবার থেকে ত্যাজ্য করা হয়, বাতিল হয় সৌদি আরবের নাগরিকত্বও। ওই সময়ই আল-কায়েদা গঠন করেন তিনি। নব্বইয়ের দশকে তিনি আবার আফগানিস্তানে ফিরে আসেন। এখানে তালেবান শাসনের ছত্রছায়ায় বিভিন্ন ক্যাম্পে সারা বিশ্ব থেকে আসা ইসলামী জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ চালিয়ে যান তিনি। ১৯৯৮ সালে পূর্ব আফ্রিকায় যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসে বোমা হামলার পর আফগানিস্তানের ক্যাম্পে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অক্ষত ছিলেন ওসামা। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্র ও পেন্টাগনে হামলায় প্রায় তিন হাজার মানুষ নিহত হন। লাদেন এ হামলার দায় স্বীকার করেন। তিনি গোপন স্থান থেকে এক বক্তব্যে বলেন, এ হামলা তার প্রত্যাশা ছাড়িয়ে গেছে। এরপর গত এক দশক ধরে লাদেনকে ধরতে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় অভিযান চলেছে। ধরিয়ে দিলে আড়াই কোটি ডলার পুরস্কারের খাঁড়া মাথায় নিয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর চোখে ধুলো দিয়ে ছিলেন ওসামা।
২০০৯ সালের ডিসেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা জানান, লাদেনের অবস্থান ও কার্যক্রম সম্পর্কেও তাদের কাছে কোনো তথ্য নেই। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের ঘটনার পরে বিন লাদেন ও আল-কায়েদার দ্বিতীয় প্রধান আইমান আল-জাওয়াহিরির বক্তব্যসহ ৬০টির বেশি ভিডিও প্রকাশিত হয়, যাতে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশে আরও ভয়াবহ হামলার হুমকি দেওয়া হয়।

ওসামা বিন লাদেন নিহত

পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদ থেকে মাত্র ৬২ কিলোমিটার উত্তরের আবোত্তাবাদ। রবিবার। স্থানীয় সময় রাত ১০টা ৩০ মিনিট। নিশ্চিত খবরের ভিত্তিতে আফগানিস্তান থেকে সামরিক হেলিকপ্টারে উড়ে এলেন মার্কিন মেরিন বাহিনীর চৌকস একদল কমান্ডো। লক্ষ্য 'যুক্তরাষ্ট্রের এক নম্বর শত্রু' আল-কায়েদার শীর্ষ নেতা ওসামা বিন লাদেন। মুহূর্তেই সুরক্ষিত একটি ভবনের চারপাশে অবস্থান নেন তারা। এ ভবনেই পলাতক জীবন যাপন করছেন আল-কায়েদার শীর্ষ নেতা ওসামা বিন লাদেন। ততক্ষণে বিষয়টি টের পেয়ে গেছেন বিন লাদেনের অনুগত যোদ্ধারা। কিন্তু হলে কী হবে, শেষরক্ষা হয়নি। ৪০ মিনিটের ওই রুদ্ধশ্বাস অভিযানে আপ্রাণ চেষ্টা করেও বিন লাদেনকে বাঁচাতে পারেননি তারা। মার্কিন এ অভিযানে লাদেন ছাড়াও নিহত হয়েছেন তার এক ছেলেসহ তিনজন। ওয়াশিংটন বিন লাদেনের নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেছেন, লাদেনকে হত্যার মাধ্যমে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে যুক্তরাষ্ট্র বড় বিজয় অর্জন করল। বেশ কয়েক বছর ধরেই এমন খবর বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছিল যে আল-কায়েদা শীর্ষ নেতা বিন লাদেন পাকিস্তানের দূরবর্তী উপজাতি-অধ্যুষিত এলাকায় লুকিয়ে আছেন। আবার কখনো এমনও খবর বেরিয়েছে, আল-কায়েদার শীর্ষ এই নেতা লুকিয়ে আছেন আফগানিস্তানেরই কোনো সীমান্ত এলাকায়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাকে সে স্থানে পাওয়া গেল, যেখান থেকে পকিস্তানের রাজধানী খুব বেশি দূরে নয়। শুধু তা-ই নয়, যে ভবনে অভিযান চালানো হয়েছে, সেটি পাকিস্তানের অন্যতম একটি সেনানিবাসের অত্যন্ত নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় আবৃত এলাকায় অবস্থিত।
আবোত্তাবাদ এলাকায় প্রায় নয় হাজার বর্গফুট জমির ওপর তিনতলা ভবন। চারদিক ১৪ ফুট উঁচু দেয়ালে ঘেরা। দেয়ালের ওপর কাঁটাতারের বেড়া। ইন্টারনেট বা টেলিফোন সংযোগ নেই। ওই ভবনে স্ত্রী-পরিজনসহ অবস্থান করছিলেন মার্কিন মোস্ট ওয়ান্টেড ওসামা বিন লাদেন। হঠাৎই এমন খবর চলে আসে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে। এমন খবরের ভিত্তিতে অভিযানের জন্য দ্রুত প্রস্তুত হয় আফগানিস্তানে থাকা মার্কিন বাহিনী। কিন্তু খবরটি আসলে কতটুকু নিশ্চিত সে বিষয়ে কিছুটা দ্বিধাগ্রস্ত ছিল তারা। কারণ এর আগেও বহুবার এ ধরনের খবরের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করেছে তারা। নিষ্ফল হয়েছে সেসব অভিযান। বিষয়টি তারা পরিষ্কার হয় পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইর সহযোগিতায়। এরপর আর দেরি নয়। আফগানিস্তান থেকে উড়ে আসে বেশ কয়েকটি সামরিক হেলিকপ্টার। শুরু হয় রুদ্ধশ্বাস এক অভিযান। সঙ্গে ছিলেন আইএসআইয়ের কর্মকর্তারাও।
ভবনটির ওপর দিয়ে প্রথমে সামরিক হেলিকপ্টারগুলো বেশ কয়েকবার চক্কর দেয়। এর পরই সেগুলো নেমে আসে মাটিতে। অবস্থান নেয় ভবনের আশপাশে। হেলিকপ্টারগুলো থেকে বের হয়ে আসেন ১৫ থেকে ২০ জন মার্কিন সেনা। তারা ছিলেন বিভিন্ন অস্ত্রে সজ্জিত। হেলিকপ্টার থেকে প্রথম তারা কথা বলেন আশপাশে বসবাসকারী কয়েকটি বাড়ির বাসিন্দাদের সঙ্গে। সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যে তাদের লক্ষ্যবস্তু ওই ভবন সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয়। জবাবে তারা জানান, বাড়িটি ১৪-১৫ বছর আগে এক পশতুন নির্মাণ করেন। এখন এটি ভুতুড়ে বাড়ি বলেই তাদের কাছে পরিচিত। এখানে যারা বসবাস করেন, তারা খুব একটা বাইরে বের হন না। যা-ও দু-একজন বের হন, তারা সাধারণ মানুষের সঙ্গে মেশেন না। জানাশোনার পর্ব শেষে মার্কিন সেনারা আশপাশের বাসিন্দাদের দরজা-জানালা বন্ধ করে ঘরের ভেতর অবস্থান করার অনুরোধ জানান। এ সময় বন্ধ করে দেওয়া হয় ওই এলাকার বিদ্যুৎ ব্যবস্থা। অন্ধকারে ডুবে যায় পুরো এলাকা। শুরু হয় মূল অভিযান।
যে বাড়িতে বিন লাদেন অবস্থান করছিলেন, এতে প্রবেশের ফটক ছিল দুটি। চারদিক থেকে ভবনটি ঘেরাও করে ফেলা হয়। অবস্থান নেওয়া হয় দুই ফটকে, যাতে কোনোভাবেই পালিয়ে যেতে না পারেন আল-কায়েদা নেতা। শুরু হয় প্রচণ্ড গোলাগুলি। প্রতিরোধে সর্বাত্মক চেষ্টা চালান ভবনে অবস্থান করা তার অনুগতরা। কিন্তু প্রশিক্ষিত আর অস্ত্রসজ্জিত মার্কিন বাহিনীর সামনে বেশিক্ষণ টিকে থাকতে পারেননি তারা। সর্বশেষ চেষ্টা নিজের জীবন বিসর্জন দিয়ে নেতাকে বাঁচিয়ে রাখা। সে ভাবনা থেকেই, মার্কিন সেনারা যখন খুব কাছাকাছি, লড়াই করার রসদ যখন ফুরিয়ে গেছে, ঠিক তখন, বিন লাদেনকে মাঝখানে রেখে চারদিকে মানব-বর্ম রচনা করেন অনুগতরা। মানব-বর্মে অংশ নেন একজন নারীও। মার্কিন সেনারা গুলি ছুড়তে থাকে মানব-বর্ম লক্ষ্য করে। ঝাঁজরা হয়ে যায় মানব-বর্ম। লুটিয়ে পড়তে থাকেন অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা একে একে। নিহত হন বিন লাদেনের এক ছেলে, একান্ত অনুগত ও সবচেয়ে বিশ্বস্ত এক বার্তাবাহক। নিহত হন মানব-বর্মে অংশ নেওয়া ওই নারীও। তবে তিনি বিন লাদেনের চতুর্থ স্ত্রী কি না, এ নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।
রুদ্ধশ্বাস মার্কিন এ অভিযানের শেষ সময়টা পর্যন্ত বেঁচে ছিলেন বিন লাদেন। ওই সময় তাকে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়। কিন্তু নিজ সিদ্ধান্তে অনড় থাকেন আল-কায়েদা নেতা। জানিয়ে দেন, 'ইসলামের শত্রু' যুক্তরাষ্ট্রের কাছে আত্মসমর্পণ নয়। বীর কখনো আত্মসমর্পণ করে না। মৃত্যু হলে হোক। এর পরই অত্যাধুনিক অস্ত্র তাক করে বেশ কয়েকটি গুলি করা হয় বিন লাদেনের মাথায়। মাটিতে লুটিয়ে পড়েন 'যুক্তরাষ্ট্রের এক নম্বর শত্রু'। শেষ হয় বিন লাদেন উপাখ্যানের।
লাদেনের নিহত হওয়ার পর বিষয়টি হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়। নিহত ব্যক্তি বিন লাদেন কি না, এ জন্য করা হয় ডিএনএ পরীক্ষা।
এদিকে মার্কিন অভিযানে বিন লাদেন নিহত হয়েছেন বলে যে দাবি করেছে ওয়াশিংটন, এ বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি আল-কায়েদা। তাদের পক্ষ থেকে বিষয়টি স্বীকারও করা হয়নি। তবে লাদেনকে হত্যার পর তার অনুগতরা যে কোনো ধরনের ক্ষতি করতে পারে আশঙ্কায় মার্কিন নাগরিকদের চলাফেরার ওপর সতর্কতা জারি করেছে ওয়াশিংটন। সূত্র : রয়টার্স, বিবিসি ও দ্য গার্ডিয়ান।

Monday, May 2, 2011

ধারাবাহিক নির্মাণে

নির্মাতা পরিচয়ে অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তাফার আত্মপ্রকাশ হয়েছে আগেই। এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি একক নাটক নির্মাণ করেছেন তিনি। এবার একটি ধারাবাহিক নাটক নির্মাণ করতে যাচ্ছেন এই অভিনেত্রী। 'কোমল বিবির অতিথিশালা ও কানা সিরাজ উদ দৌলা' নামের নাটকটি রচনা করেছেন বদরুল আনাম সৌদ ও হাসান শাহরিয়ার।
নাটকটিতে সুবর্ণা মুস্তাফার সঙ্গে যৌথ পরিচালক হিসেবে থাকবেন বদরুল আনাম সৌদ। এরই মধ্যে নাটকটির বেশ কিছু পর্বের শুটিং শেষ হয়েছে। নাটকটি শিগগিরই এটিএন বাংলায় প্রচারিত হওয়ার কথা রয়েছে।

আরেকটি স্টুডিও থিয়েটার

১ মে ঢাকায় আরেকটি স্টুডিও থিয়েটার চালু হচ্ছে। গতি থিয়েটার ঢাকার মোহাম্মদপুরে নিজস্ব মহড়াকক্ষকে স্টুডিও থিয়েটারে রূপ দিচ্ছে। নিজস্ব লাইট, সাউন্ড, পর্দা আর দর্শক আসনের ব্যবস্থা থাকবে এই স্টুডিওতে। গতির কর্মীরা তাঁদের সৃজনশীলতা দিয়ে মহড়াকক্ষের স্বল্প পরিসরের গভীরতা কিভাবে বাড়ানো যায়, এ সম্পর্কে নানা রকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে। মে দিবস থেকে গতির স্টুডিও থিয়েটারের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হবে। এদিন সন্ধ্যায় বিশ্বের সব শ্রমজীবী মানুষের প্রতি সম্মান জানিয়ে গতি থিয়েটার মঞ্চায়ন করবে আশিক সুমনের নাট্যরূপ আর মণি পাহাড়ির নির্দেশনায় নাটক 'রুটি'। এতে অভিনয় করছেন তাহসিন রহমান ও আশিক সুমন। অন্যান্য মঞ্চে নাটক মঞ্চায়নের পাশাপাশি প্রতি শুক্রবার গতির বিভিন্ন প্রযোজনার প্রদর্শনী হবে এই স্টুডিও থিয়েটারে_এমনটি আশা করছেন গতির সব কর্মী।