Tuesday, April 19, 2011

‘সৌরভই ভারতের সেরা অধিনায়ক’

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অঙ্গন থেকে বেশ কিছুদিন আগেই বিদায় নিয়েছেন ভারতের সাবেক অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলি। এবারের আইপিএলের আসরেও তাঁর প্রতি আগ্রহ দেখায়নি কোনো দলই। এমনকি কলকাতা নাইট রাইডার্সও গঠিত হয়েছে ‘প্রিন্স অব কলকাতা’কে ছাড়া। অন্যদিকে ভারতের বর্তমান অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি আছেন ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ উচ্চতায়। কয়েক দিন আগেই ভারতের দ্বিতীয় অধিনায়ক হিসেবে তুলে ধরেছেন বিশ্বকাপ শিরোপা। ব্যাট হাতেও মোটামুটি ধারাবাহিক ভালো পারফরমেন্স দেখিয়ে দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন সামনে থেকে। কপিল দেবের পর ভারতের সফল অধিনায়কের কথা বলতে গেলে ধোনির কথাই হয়তো বলবেন অনেকে। কিন্তু ভারতের আরেক সাবেক অধিনায়ক মোহাম্মদ আজহারউদ্দিন কিন্তু ভারতের সবচেয়ে সফল অধিনায়ক হিসেবে সৌরভ গাঙ্গুলির কথাই বলেছেন।
ভারতীয় ক্রিকেটের কিছুটা টলমল অবস্থার মধ্যে সৌরভ বেশ শক্ত হাতে হাল ধরেছিলেন বলে মনে করেন আজহারউদ্দিন। ধোনি যে এবার বিশ্বকাপ শিরোপা জয়ের স্বাদ নিতে পারল, তার পাটাতনটা ‘দাদা’ই তৈরি করে দিয়েছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন আজহার। তিনি বলেছেন, ‘ভারতীয় ক্রিকেটের খারাপ সময়ে সৌরভ অধিনায়কত্বের দায়িত্ব নিয়ে একটা উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এনেছিল। বর্তমান অধিনায়ক ধোনির হাত ধরে সেটার আরও উন্নতি হয়েছে।’

ওয়াসিমের বন্দনায় বালাজি

অনেকদিন ধরেই ফর্ম ভালো যাচ্ছিল না বালাজির। ফলে ভারতের বিশ্বকাপ দলেও তার ঠাঁই হয়নি। আইপিএলে তার দল চেন্নাই সুপার কিংসও তাই তাকে ধরে রাখেনি। শেষ পর্যন্ত জায়গা হয়েছে শাহরুখ খানের দল কোলকাতা নাইট রাইডার্সে। আর এখানেই এসে বদলে গেলেন ভারতের এক সময়ের জাতীয় দলের সেরা ফাস্ট বোলার লক্ষীপতি বালাজি। গত ম্যাচে রাজস্থান রয়্যালসের বিপক্ষে চার ওভার বল করে ১৫ রানে তুলে নিলেন ৩টি উইকেট। কি সেই পরশ পাথর যা তাকে হঠাৎ এমন করে বদলে দিল? বালাজি নিজের মুখের সেই পরশপাথরের নাম উল্লেখ করলেন_ ওয়াসিম আকরাম।
আকরামের কাছ থেকে শিখেই ভালো বল করছেন বলে জানান বালাজি। তাই আকরামের বন্দনায় মত্ত হতে ভুল করলেন না তিনি। বালাজি বলেন, 'আমরা সকলেই অবগত আছি আকরামের সামর্থ্য সম্পর্কে। দলের প্রত্যেকের জন্য আদর্শ তিনি। তার থেকে আমরা প্রতিনিয়ত শিখছি। যেমন ধরুন প্রতিপক্ষের বিপক্ষে কিভাবে আক্রমণ করতে হবে, কি পরিস্থিতিতে কিভাবে বল করতে হবে। একজন বোলার হিসেবে প্রতিটি বিষয় জানা খুবই জরুরী। আর আকরাম আমাদের সবকিছুই শিখান। পরবর্তী প্রজন্মও তার কাছ থেকে অনেক কিছু শিখবে।'
বালাজির দল কোলকাতা নাইট রাইডার্স এ মুহুর্তে টেবিলের শীর্ষে অবস্থান করছে। তবে তাতে গা ভাসিয়ে দিতে ইচ্ছুক নন বালাজি। তিনি বলেন, 'এখনো অনেক খেলা বাকি। পরবর্তী দশটি ম্যাচে যে কোন কিছু ঘটতে পারে। ভালো খেলেই পরবর্তী পর্বে যেতে চাই আমরা।'

টানা ম্যাচে ক্লান্ত ক্রিকেটাররা

খেলোয়াড়দের কাজই খেলা নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটানো। তাদের ধ্যান-ধারণা, চিন্তা-চেতনা সব কিছুই থাকে খেলাধুলাকে ঘিরেই। যাপিত জীবনের পুরোটাই যেন তাদের ক্রীড়াকেন্দ্রিক। কিন্তু তারপরও পরম সত্যটি হচ্ছে, তারা মানুষ। মেশিন তো নয় যে, দিনরাত ক্লান্তিহীনভাবে কাজ করে যাবে। টানা কাজ করার পর অবসাদ আসবেই। তবে সম্প্রতি আইসিসি সূচি যেন ক্রিকেটারদের মেশিন বানিয়ে দিয়েছে। একের পর এক সিরিজ খেলে ক্রিকেটাররা যেন ক্লান্ত, পরিশ্রান্ত হয়ে পড়েছে। যেন তাদের হাতে দম ফেলানোর ফুরসতটুকুও নেই।
প্রথমে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের কথা চিন্তা করুন, নিউজিল্যান্ডের পর জিম্বাবুয়ে সিরিজ। তারপর বিশ্বকাপের টানা দেড় মাস। এরপরই অস্ট্রেলিয়া সিরিজ। ক্রিকেটারদের ক্লান্ত করে দিয়েছে। মনে হতে পারে যে, বাংলাদেশ গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নেওয়ায় তারা অস্ট্রেলিয়া সিরিজের আগে বেশ কয়েক দিন সময় পেয়েছে। তবে অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটারদের অবস্থা চিন্তা করলে তো তাদের বোরট ছাড়া অন্য কিছু ভাবাই কঠিন। কেননা ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে অ্যাশেজ ও সাত ওয়ানডের রেশ কাটতে না কাটতেই বিশ্বকাপ। তার পরপরই বাংলাদেশ সফর। এরপর আবার আইপিএলে দুই মাস টানা খেলতে হবে।
টানা একের পর এক সিরিজ থাকার কারণেই আগামী জুনে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারতের শীর্ষ পাঁচ ক্রিকেটারকে বিশ্রাম দেওয়ার চিন্তা করা হচ্ছে। শোনা যাচ্ছে ওই সিরিজে শচীন টেন্ডুলকার, অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি, বিরেন্দর শেবাগ, হরভজন সিং ও জহির খানের খেলার সম্ভাবনা কম। তাহলে বলা যায় যে, ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে ভারতের দ্বিতীয় সারির দলই যাচ্ছে। এতে ক্রিকেট যে তার আসল রূপ হারাচ্ছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
ক্লান্ত লঙ্কান ক্রিকেটাররাও। তারা ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে টেস্ট ও ওয়ানডে সিরিজের পরই শুরু করেছিল বিশ্বকাপ মিশন। জুলাইয়ের ২ তারিখ বিশ্বকাপ শেষ হওয়ার পরই আবার ক্রিকেটাররা আইপিএল নিয়ে মহাব্যস্ত। আবার আইপিএল শেষ হওয়ার আগেই ইংল্যান্ড সফর। একই সমস্যায় নিউজিল্যান্ড ও ইংল্যান্ডের ক্রিকেটাররাও।
দেড় মাসের লম্বা বিশ্বকাপ আসরের পরই দুই মাস দীর্ঘ টুর্নামেন্ট আইপিএল যেন ক্রিকেটারদের ক্লান্ত করে দিচ্ছে। যদিও বিশ্বকাপ আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট আর আইপিএল ভারতের ঘরোয়া লিগ। কিন্তু খেলেন তো একই ক্রিকেটাররা। তাছাড়া বর্তমানে আইপিএল আইসিসির অনুমতি প্রাপ্ত পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ঘরোয়া আসর। এই দুটি আসরের সময় সাড়ে তিন মাস। এ ছাড়া আগে পিছে বিভিন্ন দেশের দু-একটি সিরিজ তো রয়েছেই। তাই একটানা এই দীর্ঘ সময় মাঠে থেকে ফিটনেস ধরে রাখা কঠিন সাধ্যই বটে। আর এই দীর্ঘ সময় খেলার কারণেই ইতোমধ্যেই অনেক তারকা ক্রিকেটার ইনজুরিতে পড়েছেন। ইংল্যান্ডের তারকা ক্রিকেটার কেভিন পিটারসেন ও স্টুয়াড ব্রড, আহমেদ শেহজাদ ইনজুরিতে পড়ার কারণ হিসেবে টানা ম্যাচ খেলাকেই দায়ী করেছেন চিকিৎসকরা। এই কারণে ইনজুরিতে পড়েছেন অস্ট্রেলিয়ার স্টিভ স্মিথ, নিউজিল্যান্ডের অলরাউন্ডার জ্যাকব ওরাম, ভারতের পেস বোলার প্রভিন কুমার, আশিষ নেহরা, শ্রীলঙ্কার অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ, ওয়েস্ট ইন্ডিজের ডোয়াইন ব্রাভো। এ ছাড়া তারকা ক্রিকেটারদের অনেকেই হালকা ইনজুরি নিয়েও খেলছেন। তাই ক্রিকেট বিশ্লেষকদের আশঙ্কা আইসিসির লম্বা সূচির কারণে ক্রিকেট আকর্ষণই হারিয়ে ফেলে কিনা! চলমান আইপিএলে ক্রিকেটারদের ক্লান্ত মুখোচ্ছবিই তা বলে দেয়। এক্ষেত্রে আইসিসি কর্মকর্তাদের দূরদর্শিতার অভাবকেই দায়ী করছেন অনেকে। কেননা তারা যখন সূচি তৈরি করেন তখন কী খেয়াল থাকে না যে, লম্বা সূচিতে ক্লান্ত হয়ে পড়তে পারেন ক্রিকেটাররা! মাঠে ক্রিকেটারদের পরিশ্রান্ত চেহরা তো ক্রিকেটের বিবর্ণ রূপকেই নির্দেশ করে।

অস্ট্রেলিয়ার শক্তি শেষ হয়ে যায়নি : ক্লার্ক

মাইকেল ক্লার্ক অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক হয়েছেন পতনের যুগে। সেখান থেকে তিনি কতটা তুলে আনতে পারবেন নিজেদেরকে তা কেবল ভবিষ্যতই বলতে পারে। স্টিভ ওয়াহ পরবর্তী যুগে অস্ট্রেলিয়াকে বিশ্ব ক্রিকেট দেখেছে অপ্রতিরোধ্য শক্তি হিসেবে। রিকি পন্টিংয়ের সত্যিকারের শক্তি ছিলেন শেন ওয়ার্ন-ম্যাকগ্রা-হেইডেনরা। তাদের যুগ শেষ হয়ে যাওয়ার পর বিশ্ব ক্রিকেট দেখলো রিকি পন্টিংয়ের ঝুলিতে কোনো জাদু ছিল না। বরং তার জাদু ছিলেন তার সতীর্থরাই। অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট বক্সের জাদু যারা ছিলেন তাদের সবাই অবসরে। রিকি পন্টিংই কেবল এখনো টিকে আছেন। তবে আর কতদিন? এই প্রশ্ন বোধ হয় এখন করাই যায়। বিশ্বকাপ শেষে রিকি পন্টিংয়ের অবসরের পর ক্লার্ক যুগের সূচনা। প্রথমেই বাংলাদেশের মত দেশ পেয়ে হোয়াইটওয়াশ করার কৃতিত্ব পেয়েছে তার দল। কিন্তু সত্যিকারের ক্রিকেট শক্তির বিপরীতে মাঠে নামলেই বুঝা যাবে মাইকেল ক্লার্কের আধিপত্য। ক্লার্ক অবশ্য বলছেন একটি নতুন যুগের সূচনা করার জন্যই তিনি এসেছেন। তিনি রান করতে চান নিজের ব্যাট দিয়ে। সেই সঙ্গে দলকে অনেক বিজয় উপহার দিতে চান। মাইকেল ক্লার্কের অস্ত্র নেই রিকির মতো।
গ্ল্যান ম্যাকগ্রাদের জন্ম এতটা তাড়াতাড়ি হয় না। তবে কি নিয়ে লড়বেন ক্লার্ক? অস্ট্রেলিয়ার আত্মাভিমান? এই শক্তি নিয়ে মাঠের লড়াইয়ে অন্তত জয় পাওয়া সহজ হবে না অসি অধিনায়কের জন্য। মাইকেল ক্লার্কের সামনে এখন নতুন চ্যালেঞ্জ। তাকে খুঁজে বের করতে হবে দাবার ঘুঁটি। ওয়াটসন হতে পারেন সেই ঘুঁটি। কিন্তু এক ওয়াটসনের উপর কতটা ভরসা রাখতে পারবেন ক্লার্ক? এতসব হতাশার পরও ক্লার্ক অবশ্য আশা করছেন অস্ট্রেলিয়া নিজেদের শক্তি ঠিকই প্রদর্শন করবে মাঠে। তিনি বলছেন, 'অধিনায়ক এবং একজন ক্রিকেটারের মাঝে পার্থক্য রয়েছে। আমি অনেক আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছি। কিন্তু অধিনায়ক হিসেবে আমার খেলা হবে আলাদা। মাঠে ভালো কিছু করতে হবে এবং সেই সঙ্গে দলকে উপহার দিতে হবে বিজয়।' মাইকেল ক্লার্ক কতটা ভালো অধিনায়ক হিসেবে নিজের পরিচিতি দাঁড় করাতে পারবেন তা কেবল ভবিষ্যতই বলতে পারে। তবে তিনি যে সহজেই নিজেদের স্থান থেকে সরে দাঁড়াবেন না তা বিশ্ব ক্রিকেটকে এখনই বুঝে নিতে হবে।

আকরাম খান প্রধান নির্বাচক!

বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের নির্বাচক পদে আসছে পরিবর্তন। বর্তমান নির্বাচন কমিটির মেয়াদ শেষ হচ্ছে এ মাসেই। এর মধ্যেই গঠন করা হবে নতুন নির্বাচক কমিটি। আজ বিসিবির কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় এ বিষয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাহী (সিইও) মঞ্জুর আহমেদ। জানা গেছে, প্রধান নির্বাচক রফিকুল আলম ছাড়া বাকি দুই নির্বাচক আকরাম খান ও জাহিদ রাজ্জাক মাসুমকে রাখা হবে নতুন কমিটিতে। তাছাড়া নতুন মুখ হিসেবে দেখা যেতে পারে হাবিবুল বাশার সুমন অথবা খালেদ মাসুদ পাইলটকে। তবে এ দুজনের ব্যাপারে বোর্ড কর্মকর্তাদের আপত্তি থাকলে তখন খুঁজে নেওয়া হবে অন্য কোনো সাবেক ক্রিকেটারকে। তবে রফিকুল আলমের উত্তরসূরি হিসেবে প্রধান নির্বাচকের দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে আকরাম খানকেই। এ ছাড়া আজকের সভায় আলোচনা হবে বিশ্বকাপে সাফল্য-ব্যর্থতা নিয়েও। বিশ্বকাপে আয়-ব্যয়ের প্রাথমিক হিসাবও উপস্থাপন করা হবে। আজকের সভায় আলোচনা হবে আঞ্চলিক ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন গঠনের বিষয়টিও।
আজ শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে বিদায়ী সংবর্ধনা দেওয়া হবে কোচ জেমি সিডন্সকে।

মাশরাফির অভিমান

ঘরোয়া লিগে বিকেএসপির বিপক্ষে আবাহনীর হয়ে ব্যাটিং করার সময় রান নিতে গিয়ে পড়ে হাঁটুর লিগামেন্ট ছিঁড়ে গিয়েছিল মাশরাফি বিন মর্তুজার। বিশ্বকাপে খেলার আশায় অস্ট্রেলিয়া গিয়েও তখন অস্ত্রোপচার করেননি তিনি। কারণ লিগামেন্ট ছিঁড়ে গেলেও কিছুদিনের জন্য তিনি ক্রিকেট খেলতে পারবেন বলে ডাক্তাররা তাকে আশ্বস্ত করেছিলেন। তবে শেষমেশ বিশ্বকাপ আর খেলা হয়নি তার। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে হোম সিরিজে খেললেও সমস্যায় ভুগেছেন। তাই দীর্ঘমেয়াদে ক্রিকেট খেলে যেতে চাইলে তাকে এখনই অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে অস্ত্রোপচার করা প্রয়োজন। জুলাইয়ের আগে বাংলাদেশের কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচও নেই। তাই এখনই উত্তম সময় অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে চিকিৎসা করানোর। ছয় মাসের জন্য ভিসাও করা আছে তার। যাওয়ার আগে শুধু চিকিৎসক ডেভিড ইয়াংয়ের কাছ থেকে সময় চেয়ে নিতে হবে। তবে সেটি চাইলেই যে পাওয়া যাবে তা মাশরাফির নিজেরও জানা। তারপরও অস্ত্রোপচার করার জন্য অস্ট্রেলিয়া যাচ্ছেন না মাশরাফি। কারণ আর কিছুই নয়, বিসিবির সঙ্গে মান-অভিমান।
মাশরাফি অভিমানের সুরে বললেন, 'যেতে তো চাই এ মাসেই। টাকার জন্য বসে আছি। চিকিৎসা খরচ না পেলে অস্ট্রেলিয়া গিয়ে কি লাভ?' মাশরাফি অভিমান করে বসে আছেন যে কেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) থেকে তাকে অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার জন্য বলা হচ্ছে না। তিনি বলেন, 'সবাই তো জানে আমার হাঁটুতে অস্ত্রোপচার করা দরকার। আলাদা করে বোর্ডের কাছে বলার প্রয়োজন কী আছে।'
তবে বোর্ডের মতামত ভিন্ন। তারা চায় মাশরাফি আগে বোর্ডের কাছে আবেদন করুক। বাংলাদেশ ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান এনায়েত হোসেন বলেন, 'মাশরাফি কবে যেতে চায় সেটা তো আমাদের আগে জানাতে হবে। নিয়ম হলো, সে আগে আবেদন করবে। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বোর্ড তার অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার ব্যবস্থা করবে।' তবে বোর্ডের সঙ্গে এ মান-অভিমান পালায় মাশরাফির চিকিৎসাই শুধু বিলম্বিত হচ্ছে। আর এ অভিমানই না শেষ পর্যন্ত তার ক্রিকেট ক্যারিয়ারের জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায়_ এমন দুশ্চিন্তা মাশরাফি ভক্তদের।

মোনেম মুন্নার পর সাকিব

ফুটবলে বাংলাদেশের মান কখনো আহামরি ভালো ছিল না। তার পরও ফুটবল নিয়ে দেশের মানুষের উন্মাদনার শেষ ছিল না। স্টেডিয়ামে ফুটবল খেলা হলে দুপুরের মধ্যে গ্যালারি ভরে যেত। সেই সব দৃশ্য এখন অতীত হয়ে গেছে। বর্তমান প্রজন্মের কেউ বিশ্বাসই করতে চায় না একসময় মোহামেডান-আবাহনীর খেলা মানেই পুরো দেশে উত্তেজনা ছড়িয়ে যেত। আসলে তাদেরই বা দোষ কি, কেননা এখন বড় দুই দলের ফুটবল লড়াইয়ে তো হাতে দর্শক গোনা যায়।
ফুটবলে এত করুণ হাল হলেও বাংলাদেশের এক ফুটবলার বিদেশিদের হৃদয়ে এখনো ঠাঁই পেয়ে আছেন। অনেকে বিশ্বাস করবেন না, তার পরও সত্যি যে প্রতিবেশী কলকাতার ফুটবলপ্রেমীরা এখনো বাংলাদেশের এক ফুটবলারকে ভুলতে পারেননি। তিনি বেঁচেও নেই, কয়েক বছর আগে ভক্তদের কাঁদিয়ে চিরবিদায় নিয়েছেন। হ্যাঁ বাংলাদেশের মাঠকাঁপানো প্রয়াত ফুটবলার মোনেম মুন্নার কথা বলছি। মুন্না কি শুধু বাংলাদেশের দর্শকদের মন জয় করেছিলেন? না, কলকাতার দর্শকরা এখনো তাকে স্মরণ করেন। তা না হলে কলকাতাবিখ্যাত নিউমার্কেটের অধিকাংশ দোকানে তার ছবি টাঙিয়ে রাখা হবে কেন? অবশ্য মুন্নার ছবি বিশেষ এক দলের সমর্থকরা টাঙিয়ে রেখেছেন। ১৯৮৯ সালে তিনি কলকাতা লিগে ইস্টবেঙ্গলে খেলতে যান। এর আগেও কলকাতা মাঠে অনেক বিদেশিই খেলে যান। কিন্তু মুন্নার পারফরম্যান্স এখনো স্মরণীয় হয়ে আছে তাদের মাঝে। সেবার লিগে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয় ইস্টবেঙ্গল। দুর্দান্ত খেলেছিলেন মোনেম মুন্না। এতটা অসাধারণ যে ইস্টবেঙ্গলের সমর্থকরা নিজেদের কোনো ফুটবলারের ছবি না টাঙালেও মুন্নার ছবি এখনো দেয়ালে আটকিয়ে রেখেছেন। মুন্নার পর আরেক বাংলাদেশি খেলোয়াড় কলকাতার দর্শকদের হৃদয় জয় করতে যাচ্ছেন। তিনি আর কেউ নন, ক্রিকেটে জাতীয় দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। আইপিএল খেলতে এবার তিনি কলকাতা নাইট রাইডার্সের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে খেলার জন্য নাইটের পক্ষে প্রথম দুটো ম্যাচে মাঠে নামতে পারেননি। কিন্তু যে দুই ম্যাচে তিনি মাঠে নেমেছেন তাতেই কলকাতাবাসীর হৃদয় জয় করতে শুরু করেছেন। সৌরভ গাঙ্গুলি বাদ পড়ায় নাইট রাইডার্সে ভারতীয় বাঙালি কোনো খেলোয়াড় ছিলেন না। এ নিয়ে কলকাতাবাসী আক্ষেপে ফুঁসে উঠেছিলেন। কিন্তু পরের দেশ হলেও একমাত্র বাঙালি খেলোয়াড় হয়ে সাকিব মাঠে নামায় সেই আক্ষেপ কমতে শুরু করেছে। রবিবার ইডেন গার্ডেনে রাজস্থানের বিরুদ্ধে সাকিব যে বোলিং প্রদর্শন করেছেন তা দেখে তো কলকাতার দর্শকরা মহাখুশি। পরদিন যেসব পত্রিকায় সাকিবের ছবি ছাপা হয়েছে তা কেটে দোকানপাট এমনকি বাসায়ও টাঙানো শুরু হয়েছে। কলকাতা থেকে প্রকাশিত এক দৈনিক উল্লেখ করেছে, সাকিবের ভিউকার্ড চড়া দামেও কাউকে কাউকে কিনতে দেখা গেছে। যত ম্যাচ যাবে কলকাতার দর্শকদের মাঝে সাকিবের জনপ্রিয়তা ততই বৃদ্ধি পাবে বলে পত্রিকাটি উল্লেখ করেছে।

ধোনিই সবচেয়ে বেশি ধনী

ফুটবলে সর্বোচ্চ উপার্জনকারী কে? এই প্রশ্নের উত্তরে সবাই একবাক্যে আর্জেন্টাইন তারকা লিওনেল মেসির কথাই বলবেন। বার্সেলোনার এই তারকা বর্তমানে বছরে আয় করছেন ৮০ কোটি ডলার বা ৫ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। ক্রীড়াবিদদের মাঝে সবার উপরে আছেন টাইগার উডস। তিনি বছরে আয় করেন ১.৭ বিলিয়ন ডলার! দ্বিতীয় স্থানেই আছেন টেনিস কিংবদন্তি রজার ফেদেরার। বছরে তার আয়ের পরিমাণ ১.১৫ বিলিয়ন ডলার। ক্রিকেটারদের নিয়েও বর্তমানে এই আগ্রহ ভক্তদের মাঝে ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমান ক্রিকেট দুনিয়ায় কে সর্বোচ্চ উপার্জনকারী? ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) ক্রিকেটারদের সামনে এক নতুন দুয়ার খুলে দিয়েছে। এর আগে ক্রিকেটারদের আয়ের সবচেয়ে বড় উৎস ছিল ইংল্যান্ডের কাউন্টি ক্রিকেট। কিন্তু সেখানে সব ক্রিকেটাররা খেলার সুযোগই পেতেন না। আইপিএল এসে সেই সুযোগ অনেকটা বাড়িয়ে দিয়েছে। এবং কাউন্টির চেয়ে এখানে টাকার অঙ্কটাও বেড়ে গেছে অনেক। গত তিন আসরে আইপিএল কাউন্টির চেয়ে বেশ সাড়াও জাগিয়েছে বিশ্ব ক্রিকেটে। ক্রিকেটারদের মাঝে সর্বোচ্চ উপার্জনকারী হিসেবে ফরবেস ম্যাগাজিন ২০০৯ সালেই প্রকাশ করেছিল ভারতীয় অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনির নাম। এখনো পর্যন্ত তিনি শীর্ষেই আছেন। ধোনি বর্তমানে বছরে আয় করছেন সর্বোচ্চ ১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি টাকায় যার পরিমাণ প্রায় ৭০ কোটি টাকা। মহেন্দ্র সিং ধোনি বর্তমানে ১৭টি কোম্পানির ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর। এই তালিকায় ভারতের যে কোনো ব্যক্তিকে হিসেব করলে তিনি দ্বিতীয় স্থানে থাকবেন। প্রথম স্থানে আছেন বলিউড কিং শাহরুখ খান। ক্রিকেটারদের আয়ের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে আছেন ক্রিকেটের মহারাজ শচীন টেন্ডুলকার। তিনি বছরে আয় করছেন ৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বা প্রায় ৫৬ কোটি টাকা। মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের অধিনায়ক শচীন টেন্ডুলকার এবারের আইপিএল উপলক্ষে বীমা করিয়েছেন ১২ কোটি রুপির। এই তালিকায় তিনি আছেন পঞ্চম স্থানে। বীমা করার দিক থেকেও সবার উপরে আছেন ধোনি। তার বীমার পরিমাণ ৩৪ কোটি রুপি। এরপর আছেন সুরেশ রায়না (২০.৫ কোটি রুপি), মাহেলা জয়াবর্ধনে (২০.৫ কোটি রুপি) এবং ডেল স্টেইন (১৬ কোটি রুপি)। বছরে আয়ের দিক থেকে ক্রিকেটারদের মাঝে তৃতীয় স্থানে আছেন আরেক ভারতীয় যুবরাজ সিং। তিনি বছরে আয় করছেন সাড়ে ৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বা সাড়ে ৩৮ কোটি টাকা। চতুর্থ স্থানেও আছেন ভারতীয় ক্রিকেটার রাহুল দ্রাবিড়। তার আয়ের পরিমাণ বছরে ৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ৩৫ কোটি টাকা। পঞ্চম স্থানে ইংলিশ ক্রিকেটার এন্ড্রু ফ্লিনটফ। তিনি বছরে আয় করছেন ৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ২৮ কোটি টাকা। ষষ্ঠ স্থানে আছেন ক্রিকেটকে বিদায় জানানো কলকাতার মহারাজ সৌরভ গাঙ্গুলী। তিনি বছরে আয় করতেন সাড়ে ৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বা সাড়ে ২৪ কোটি টাকা। সপ্তম স্থানে আছেন সাবেক অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক রিকি পন্টিং। তিনি বছরে আয় করছেন সৌরভের সমান সাড়ে ৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বা সাড়ে ২৪ কোটি টাকা। অষ্টম স্থানে থাকা অসি গতি তারকা ব্রেট লির আয় বছরে ৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ২১ কোটি টাকা। নবম স্থানে থাকা ইংলিশ ক্রিকেটার কেভিন পিটারসেনের আয়ও ৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ২১ কোটি টাকা। দশম স্থানে থাকা বর্তমান অসি অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্কের আয় বছরে ২.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বা সাড়ে ১৭ কোটি টাকা।
ক্রিকেটারদের মাঝে উপার্জন করার দিক থেকে এগিয়ে আছেন ভারতীয় ক্রিকেটাররাই। শীর্ষ দশ জনের পাঁচ জনই ভারতীয় ক্রিকেটার। মহেন্দ্র সিং ধোনি, শচীন টেন্ডুলকার, যুবরাজ সিং, রাহুল দ্রাবিড় এবং সৌরভ গাঙ্গুলী। অস্ট্রেলিয়ার আছেন তিনজন। রিকি পন্টিং, ব্রেট লি এবং মাইকেল ক্লার্ক। ইংলিশ ক্রিকেটার আছেন দুজন। এন্ড্রু ফ্লিনটফ এবং কেভিন পিটারস। গত বছরের আয়ের হিসেব অনুযায়ী এই তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। এবার দেখা যাক চলতি বছরে কে হতে পারেন সর্বোচ্চ উপার্জনকারী ক্রিকেটার। তবে তা জানার জন্য অপেক্ষা করতে হবে বছর শেষ হওয়া পর্যন্ত।

Monday, April 18, 2011

তুমি আর আমি

'এই ধরণীতে আমরা
থাকব একসঙ্গে,
শুধু তুমি আর আমি।
সত্যিই বলছি, ঈশ্বরই আমাদের মিলিয়েছেন,
তাঁর ইশারায়ই তোমাকে খুঁজে পেয়েছি আমি।'
'টকিং বুক' অ্যালবামের 'ইউ অ্যান্ড মি' শিরোনামের চমৎকার এই রোমান্টিক গান স্টিভি ওয়ান্ডার গেয়েছিলেন ১৯৭২ সালে। ২৯ এপ্রিল অনুষ্ঠিতব্য ব্রিটেনের হবু রাজা প্রিন্স উইলিয়াম ও কেট মিডলটনের বিয়ে উপলক্ষে নতুন করে গানটি রেকর্ড করেছেন জর্জ মাইকেল।
রাজকীয় এ বিয়ের জন্য গানটিকেই সেরা উপহার হিসেবে মানছেন জর্জ। তাই গানটিকে ওয়েবসাইট থেকে বিনা পয়সায় ডাউনলোড করার সুযোগও তিনি দিচ্ছেন ভক্তদের। এক সাক্ষাৎকারে জর্জ বলেছেন, 'গত সপ্তাহেই এই চমৎকার গানের কথা মনে হয়। আর তখনই এটিকে উপহার হিসেবে চিন্তা করে ফেলি। এটা তাঁদের প্রতি আমার শুভেচ্ছা ও উচ্ছ্বাসের প্রতিফলন হিসেবেও ধরা যেতে পারে।'

খাঁচায় কেজ

Nicoles Cas
কী এমন দোষ তার? মানুষ কি মাতাল হয় না? মাতাল হয়ে কি ঝগড়া করে না? না হয়, মাথা গরম করে বউকে চড়-থাপ্পড় মেরেই বসেছেন। আর সেটা খোলা রাজপথেই করেছিলেন। তাই বলে কি নিকোলাস কেজের মতো অস্কারজয়ী অভিনেতাকে হাতকড়া পরাতে হবে? শুধু কি হাতকড়া পরানো, পুলিশ স্টেশনে নিয়ে পুরো পাঁচ ঘণ্টা আটকে রাখা হলো তাঁকে। হাজতে পুরেই ক্ষান্ত হয় নিউ অরলিয়ন্সের পুলিশ বিভাগ। রাজপথে মাতলামি, পারিবারিক নির্যাতন, জনসাধারণের শান্তিভঙ্গ_একগাদা কারণ দেখিয়ে মামলাও ঠুকে দিয়েছে তারা। অবশ্য শেষ পর্যন্ত এক বন্ধুর বদৌলতে হাজতে রাতটা কাটাতে হয়নি। ১১ হাজার ডলারের বিনিময়ে জামিন পেয়েছেন 'ন্যাশনাল ট্রেজার' তারকা। ক্ষমা চাওয়ায় স্ত্রী অ্যালিস কিমও রাতটা ঘরেই কাটাতে দিয়েছেন। তবে ঘটনার শেষ এখানেই নয়, ৩১ মে ঠিকই আদালতে হাজির হতে হবে নিক কেজকে। আর অপরাধ প্রমাণিত হলে...