Monday, April 11, 2011

পাঁচতারার বৈশাখ আয়োজন

র‌্যাডিসন ওয়াটার গার্ডেন : পহেলা বৈশাখে র‌্যাডিসন ওয়াটার গার্ডেন হোটেলে থাকছে দেশি স্বাদের বাহারি খাবারের সমাহার। ওয়াটার গার্ডেন ব্রাসারির লাঞ্চ ও ডিনার বুফে মেন্যুতে পাওয়া যাবে শুঁটকি, টাকি মাছ, চিংড়ির ভর্তা, বেগুন ভর্তাসহ নানা পদের ভর্তা ও ভাজি। সালাদ স্টেশনে মিলবে সালাদ, রাইতা ও বিভিন্ন স্বাদের আচার। থাকবে পান্তা-ইলিশ, ভুনা খিচুড়ি, গরু ও মুরগির মাংসের ভুনা। গ্রামবাংলার ঐতিহ্য তুলে ধরতে স্টলে মিলবে ফিরনি, সেমাই, দই, বিভিন্ন ধরনের মিষ্টি ও গাজরের হালুয়া। থাকছে স্পাইস অ্যান্ড রাইস রেস্টুরেন্টের স্পেশাল ডিনার। রিজার্ভেশনের জন্য যোগাযোগ করতে পারেন ৮৭৫৪৫৫৫ নম্বরে।
ঢাকা রিজেন্সি : রিজেন্সিতে থাকছে তিন দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য আয়োজন। হোটেলের গ্রান্ডডিয়স রেস্টুরেন্ট লেভেল-৬-এ থাকছে বাঙালি খাবারের সমাহার। পান্তা-ইলিশ, ঝালমুড়ি, ফুচকা, বাতাসার স্বাদ নিতে নিতে আপনি ভাগ্যটাও পরীক্ষা করে নিতে পারেন ভাগ্যগণক টিয়া পাখির কাছে। শিশুদের জন্য দিনভর চলবে বাংলা কার্টুন। দুপুর ও রাতে থাকছে মজার সব খাবার। দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত চলবে এ আয়োজন।
ঢাকা শেরাটন হোটেল : দিনভর নানা আয়োজনে মেতে থাকবে ঢাকা শেরাটন হোটেল। সূর্যোদয়ের লগ্নে বর্ণাঢ্য আয়োজনে বরণ করে নেওয়া হবে নতুন বছরকে। উৎসবের মূল আকর্ষণ 'পিঠা ঘর'-এ থাকবে পাটিসাপ্টা, ভাপা ও ডিমপিঠার সমাহার। বাফেট ব্রেকফাস্ট হিসেবে থাকছে পান্তা ভাত, ভুনা খিচুড়ি, মাটন নেহারি ও বাহারি স্বাদের ভর্তা। শর্ষে ইলিশ, চিংড়ি-করলা ভাজি, বয়েল ফিশ কারি, বিফ ভুনা, পাবদা ফিশ কারি, কাঁচকি চচ্চড়ি, মাটন বিরিয়ানি, আমডাল, বাসমতি রাইস, হরেক রকমের ভর্তা_এই আইটেমগুলোর স্বাদ নিতে ঢুঁ মারতে হবে বীথিকার বুথে। নানা পদের মিষ্টির স্বাদ নিতে নিতে আপনি উপভোগ করবেন সুরের মূর্ছনা।

সরায় আলপনা

বৈশাখে সরায় নানা আলপনা এঁকে তা দিয়েই বাড়ি সাজান। আলপনা শিখিয়ে দিচ্ছেন চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী ফারজানা সুলতানা। ছবি : রফিকুর রহমান রেকু
উপকরণ : মাটির সরা, কাঠপেনসিল, আইকা, সাদা ও কালো রং, তুলি।

মেলায় যাওয়ার আগে

ত্বক
রুদ্র বৈশাখে ত্বকের যত্ন নেওয়া বেশি প্রয়োজন। একেবারে ঘরোয়া পদ্ধতিতে ত্বকের যত্ন নিতে চাইলে লোশনের সঙ্গে একটু পানি নিয়ে মুখে ভালোভাবে ম্যাসাজ করুন। তারপর পানিতে তুলো ভিজিয়ে মুখ মুছে নিন।
এবার যেকোনো ম্যাট সানস্ক্রিন মেখে নিন। দিনে ভারী সাজ না নেওয়াই ভালো। বেজ মেকআপ, ভারী ফাউন্ডেশন একদম নৈবচ নৈবচ। সাজে যতটা হালকা থাকবেন, ততই স্বচ্ছন্দে আনন্দ করতে পারবেন।
টিপস : হাত ব্যাগে ফেস পাউডার রাখুন। গরম থাকবে, ঘামে ভিজে সাজ নষ্ট হওয়ার ভয় থাকে না।
চোখ
মুখের সাজটা হালকা থাকবে, তাই চোখের সাজ একটু ভারী হলে ভালো দেখাবে। সামান্য মোটা করে কাজল দিয়ে এর ওপর আইলাইনার দিন। সেকেলে ভাব আনতে চাইলে চোখের কোণটা টেনে দিন। এবার আলাদা আইল্যাশ না লাগিয়ে একবার মাশকারা লাগানোর পর সামান্য পাউডার লাগিয়ে নিন চোখের পাতায়। শুকিয়ে এলে আবার মাশকারা লাগান। এভাবে বারদুয়েক করলেই চোখের পাতা ভারী ও সুন্দর হবে।
টিপস : কাজল দেওয়ার আগে চোখের কোলটায় একটু পাউডার লাগিয়ে নিন। তাহলে কাজল ছড়িয়ে পড়বে না।
ঠোঁট
ঠোঁটে খুব হালকা রঙের লিপস্টিক বা লিপগ্লস লাগান। যেহেতু পোশাকেই রঙের ছড়াছড়ি থাকবে, তাই ঠোঁটের সাজ হবে স্নিগ্ধ।
টিপস : লিপস্টিক বা লিপগ্লস লাগানোর আগে একটু ফেস পাউডার লাগিয়ে নিলে সারা দিনের জন্য কোনো চিন্তা নেই।
টিপ
লাল, লাল এবং লাল। বৈশাখে লাল টিপের কোনো বিকল্প নেই। সিঁদুর-রঙা টিপ বৈশাখকে আরো বাঙ্ময় করে তুলবে। তবে কুমকুম ব্যবহার করে কয়েকটা রং মিলিয়ে কপালে টিপ এঁকে নেওয়া যায়।
টিপস : টিপ পরার সময় মুখের আকৃতির সঙ্গে মানানসই হচ্ছে কি না সেটা লক্ষ রাখুন। গোল মুখে লম্বাটে ও লম্বা মুখে গোল টিপ ভালো মানায়।
চুড়ি
বৈশাখ মানেই হাতভর্তি রেশমি চুড়ি। শাড়ির সঙ্গে হাত ভরে চুড়ি পরলেই ভালো লাগবে। অবশ্যই তা রং মিলিয়ে। সালোয়ার-কামিজের সঙ্গে কাঠ, মাটি বা ধাতুর বালা মানানসই। ব্লাউজের হাত ঘটি বা ম্যাগি হলে বাজুবন্ধ পরতে পারেন।
টিপস : সম্ভব হলে হাতটা ওয়েঙ্ করে নিন, তাহলে চুড়ি পরলে বেশি ভালো দেখাবে।
কানের দুল গলার মালা
লাল-সাদা শাড়ির সঙ্গে পুরনো আমলের ভারী ধাতুর ঝুমকা বা অ্যান্টিক রঙের দুল ভালো মানাবে। এ ছাড়া বিডস, পুঁতি বা কড়ির গয়নাও ভালো লাগবে। দিনের বেলা একটু ভারী দুল পরে, গলায় কিছু না পরাই ভালো। একান্তই পরতে চাইলে বিডস, কাঠ বা পুঁতির দুই লহরের লম্বা মালা পরা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে কানের দুল হবে ছোট। রাতের সাজটা জমকালো করতে চাইলে পাথর, ক্রিস্টাল বা ধাতুর গয়না মানানসই।
টিপস : শরীরের ঘাম যেকোনো গয়নার ঔজ্জ্বল্য নষ্ট করে। তাই এ ব্যাপারে খেয়াল রাখুন।
চুলের সাজ
যাঁদের ছোট চুল তাঁরা হালকা স্ট্রেইটনার বুলিয়ে চুলটা ছেড়ে দিন। মাঝারি বা লম্বা চুলে খোঁপা, বেণি দুটোই ভালো লাগবে। চুলের সামনের অংশটা একটু ফুলিয়ে তারপর বেণি করুন। বেণিটা সামনে এনে একটু দূরে দূরে একটা করে ছোট কোনো ফুল আটকে নিন। খোঁপা করতে চাইলে চুলের সামনের অংশটা একটু ফুলিয়ে পেছনে একটা ঝুঁটি করুন। পুরো চুলটাকে চার ভাগ করে চারটা বেণি করে নিন। এবার বেণিগুলো দিয়ে একটা খোঁপা করে খোঁপায় কাঠবেলির মালা জড়িয়ে নিন।
টিপস : সপ্তাহখানেক আগে চুলটা কেটে নিলে সেটিংসটা ভালো হয়। চুলের সেটিংসটা ঠিক রাখতে চাইলে একটু হেয়ার স্প্রে লাগিয়ে নিন। সারা দিন চুল ঠিক থাকবে।
হাত ও পায়ের সাজ
হাত-পা ম্যানিকিউর, পেডিকিউর করার পর সানস্ক্রিন লাগান। নখ ফাইল করে নেলপলিশ লাগিয়ে নিন। তারপর পা সাজানোর পালা। পায়ের আঙুলে আংটি পরুন। সঙ্গে নূপুর বা খাড়ু ভালো লাগবে। আলতাও পরতে পারেন।
সবশেষে সুগন্ধির হালকা ছোঁয়া আপনার সাজকে সম্পূর্ণ করে তুলবে।
ছেলেদের বৈশাখ
বৈশাখের ফতুয়া বা পাঞ্জাবিতে লাল-সাদার প্রাধান্য তো থাকবেই, সঙ্গে সাদা সালোয়ার। চাইলে একটা উড়নিও জড়াতে পারেন গলায়। পায়ে চটি বা নাগরা আর পছন্দের যেকোনো একটি সুগন্ধি।

পিঠা বিক্রি করে স্বাবলম্বী

পাঁচ বছর আগে কিডনি রোগে স্বামী মারা যাওয়ার পর শামেলা বেগম মেয়ে নিয়ে বিপদে পড়েছিলেন। সম্বল বলতে স্বামীর রেখে যাওয়া ফুটপাতে একটি চায়ের দোকান। সংসারের হাল ধরতে সেই চায়ের দোকানে ব্যবসা শুরু করেন তিনি। কিন্তু সমাজের মানুষ সেটিকে ভালো চোখে দেখেনি। ফলে চায়ের ব্যবসাও বন্ধ করে দিতে হয় কিছু দিন পর। ঘরে মেয়ে, মা-বাবা ও নিজের আহার জোগাড় করতে বাসা-বাড়িতেও কাজ করেন কিছু দিন। কিন্তু সংসার চলছিল না। এরপর শামেলা ফুটপাতে পিঠা বিক্রি শুরু করেন। কোনো রকমে পিঠা বিক্রি করেই চলত শামেলার সংসার। একসময় শামেলার সাহায্যে এগিয়ে আসে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা বেনিফিসিয়ারিজ ফ্রেন্ডশিপ ফোরাম (বিএফএফ)। শামেলাকে দেওয়া হয় পিঠা রাখার বাক্স ও নগদ কিছু টাকা। সে টাকা দিয়ে শামেলা নতুন উদ্যমে শুরু করেন পিঠা বিক্রি। প্রতিদিন ৪০০-৫০০ টাকার পিঠা বিক্রি করতে থাকেন।
একসময় বিক্রি আরও বেড়ে যায়। শামেলার সংসারে দুঃখ ঘুচতে থাকে। পিঠা বিক্রি করে কিছু টাকাও জমিয়েছেন। শহরের চুনাঘাটা বেড়িবাঁধের সরকারি জায়গায় কোনো রকমে মাথা গুঁজে থাকলেও এখন শামেলা স্বপ্ন দেখেন নিজের একটি জায়গা হবে।
শামেলা জানান, স্বামী মারা যাওয়ার পর অনেক দিন খেয়ে না খেয়ে দিন কাটিয়েছেন। মানুষের দ্বারে দ্বারে সাহায্যের আশায় গিয়েও কোনো লাভ হয়নি। কেউ সাহায্য করেনি, বরং নানাকথা শুনিয়েছে। আর এতে নিজের মনে জেদ চেপে বসে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মাটিকাটার কাজ করার পর বিকাল থেকে শুরু হয় পিঠা বিক্রির কাজ। কঠোর পরিশ্রম করে সমাজের মানুষকে শামেলা দেখিয়ে দিতে চান পরিশ্রম করলে সাফল্য আসবেই। আজ শামেলা কারও দয়ায় বেঁচে নেই। মা-বাবাকে নিয়ে বেশভালোই আছেন। পিঠা বিক্রি করে তিনি এখন স্বাবলম্বী। শামেলা তার এ অবস্থানে আসার জন্য বিএফএফের নির্বাহী পরিচালক ফজলুল হাদি সাবি্বরের কাছে কৃতজ্ঞ।

মাধ্যমিকের ৩২ বইয়ের ১৯০ অধ্যায় কঠিন

মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীরা ৩২টি পাঠ্য বইয়ের ১৯০টি অধ্যায়কে কঠিন বলে মনে করে। 'মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাক্রম মূল্যায়ন' শীর্ষক এক জরিপে এ তথ্য পাওয়া গেছে। জরিপের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ষষ্ঠ শ্রেণীর 'সামাজিক বিজ্ঞান, সাধারণ বিজ্ঞান, গার্হস্থ্য অর্থনীতি' বইয়ে দুটি অধ্যায়ের বিষয়বস্তু প্রায় একই রকম। অষ্টম শ্রেণীর বাংলা বইয়ের চারটি কবিতার ভাবার্থে মিল রয়েছে। অষ্টম ও নবম শ্রেণীর গণিত বইয়ের পিথাগোরাসের উপপাদ্যের প্রমাণও একই রকম। পর্যাপ্ত উদাহরণ না থাকায় পাঠ্য বই থেকে কিছু বিষয় বাদ দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করে শিক্ষার্থীরা। শিক্ষকরাও বলেছেন, পাঠ্য বইয়ে বেশ কিছু বিষয়ের পুনরাবৃত্তি ঘটেছে।
প্রতিবেদনটি গত বৃহস্পতিবার শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের হাতে হস্তান্তর করা হয়। মাধ্যমিক শিক্ষা খাতের উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থায়নে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের শিক্ষাক্রম শাখা গত বছর এ জরিপ পরিচালনা করে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ কালের কণ্ঠকে বলেন, 'প্রতিবেদন পেয়েছি। এখনো পুরোটা পড়া হয়নি। প্রতিবেদনের সুপারিশ অনুযায়ী যেখানে যা প্রয়োজন, তা করা হবে।'
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. মোস্তফা কামাল উদ্দিন কালের কণ্ঠকে জানান, আগামী শিক্ষাবর্ষের পাঠ্য বইয়ে প্রতিবেদনের সুপারিশ কার্যকর করা হতে পারে।
জরিপে সিলেবাসের বিষয়বস্তু, নির্দিষ্ট সময়ে পাঠদান, সিলেবাস শেষ না হওয়ার কারণ, পাঠ্য বইয়ের ভাষা, বইয়ে ছবির পর্যাপ্ততা, বিষয়বস্তুর সঙ্গে ছবির সম্পৃক্ততা, পাঠ্য বইয়ে ব্যবহৃত উদাহরণ, চিন্তা ও দক্ষতার প্রতিফলন ইত্যাদি বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর মতামত নেওয়া হয়।
সিলেবাস সম্পর্কে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৯২ শতাংশ শিক্ষক বলেছেন, বাংলা, ইংরেজি, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, জীববিজ্ঞান, গণিত, সাধারণ বিজ্ঞান, সামাজিক বিজ্ঞান, ইতিহাস, পৌরনীতি ও ভূগোল বিষয়ের সিলেবাস নির্ধারিত সময়ে শেষ হয় না। দীর্ঘ সিলেবাসই এর কারণ। ৭২ শতাংশ শিক্ষক বলেন, সিলেবাস দীর্ঘ হওয়ায় নির্ধারিত পিরিয়ডে তা শেষ করা যায় না। তবে ১৭ শতাংশ শিক্ষক বলেছেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও বিদ্যালয় বন্ধ থাকার জন্যও সিলেবাস শেষ করা যায় না। ৯ শতাংশ শিক্ষক এর জন্য শিক্ষক স্বল্পতা এবং সাড়ে ৬ শতাংশ শিক্ষক শ্রেণীকক্ষের অপ্রতুলতাকে দায়ী করেন। প্রতিবেদনে বলা হয়, সিলেবাস শেষ করার জন্য শিক্ষার্থীদের বেছে নেওয়া উপায়গুলো খুবই উদ্বেগজনক। সেগুলো হচ্ছে_প্রাইভেট পড়া, কোচিংয়ের সাহায্য নেওয়া, নোট বই ও সাজেশন অনুসারে পড়া। এর কোনোটিই শিক্ষা কার্যক্রমের সহায়ক নয়।
৩৮ শতাংশ বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা মনে করেন, বর্তমান পাঠ্য বইয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য জাতীয় কৃষ্টি ও ঐতিহ্য জানার বিষয়বস্তু নেই। ৪৪.৮ শতাংশ শিক্ষক বলেছেন, পাঠ্য বইয়ের বিষয়বস্তু শিক্ষার্থীদের চিন্তাশীল করছে না। ৫০.৪ শতাংশ শিক্ষক বলেন, শিক্ষার্থীরা প্রচলিত পাঠ্য বই পড়ে বিজ্ঞানমনস্ক হচ্ছে না। বিজ্ঞানের বিষয়গুলো শিক্ষার্থীবান্ধব করে উপস্থাপন করা হয়নি। প্রতিবেদনে বলা হয়, মাধ্যমিক শিক্ষাক্রমের অন্যতম উদ্দেশ্য হচ্ছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের বিকাশ ঘটানো। অথচ বিদ্যালয়ের ৪৪ শতাংশ শিক্ষকের মতে, বর্তমান পাঠ্যপুস্তক শিক্ষার্থীদের মধ্যে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের বিকাশে ব্যর্থ হচ্ছে।
পাঠ্যপুস্তকের যেসব বিষয় শিক্ষার্থীদের কঠিন মনে হয়, সে সম্পর্কেও জরিপে তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে রয়েছে ষষ্ঠ শ্রেণীর বাংলা দ্বিতীয় পত্রের 'লিঙ্গ ও বচন', ইংরেজি দ্বিতীয় পত্রের 'বাক্য গঠন ও রচনা লিখন', গণিতের পাটিগণিত অংশে 'অনুপাত, সমানুপাত, শতকরা', বীজগণিত অংশে 'সরল সমীকরণ ও সংখ্যা রেখা', জ্যামিতি অংশে 'সম্পাদ্য, উপপাদ্য ও সমান্তরাল রেখা', সাধারণ বিজ্ঞানের পদার্থ অধ্যায়ের 'বল, চাপ, গতি, বিদ্যুৎ শক্তি ও চুম্বক শক্তি' এবং রসায়ন অংশে 'ধাতু ও অধাতু এবং পানি'।
সপ্তম শ্রেণীতে কঠিন বিষয় হলো_ইংরেজি বইয়ের 'মডেল ভারব ও ন্যারেশন', গণিতের পাটিগণিত অংশে 'সমানুপাতিক ভাগ, ঐকিক নিয়ম', বীজগণিত অংশে 'বীজগণিতের প্রথম চারটি সূত্র প্রয়োগ', 'লসাগু, গসাগু ও বীজগণিতীয় ভগ্নাংশ', জ্যামিতি অংশে 'উপপাদ্য', সাধারণ বিজ্ঞানের পদার্থবিজ্ঞান অংশে 'আলো, চুম্বক ও বিদ্যুৎ', রসায়ন অংশে 'বায়ুমণ্ডল, কার্বন ডাই-অঙ্াইড, ভূত্বক ও শিলা', জীববিজ্ঞান অংশে 'উদ্ভিদের অঙ্গসংস্থান, কলা ও মানবদেহ' এবং সামাজিক বিজ্ঞানের 'মানচিত্র ও অক্ষাংশ'।
অষ্টম শ্রেণীর ইংরেজির 'র‌্যাপিড রিডার', 'ভয়েস', 'ন্যারেশন', গণিতের পাটিগণিত অংশে 'আবৃত দশমিক সংখ্যা, শতকরা পরিমাপ ও একক, মূলদ ও অমূলদ সংখ্যা এবং সুদকষা', বীজগণিত অংশে 'লেখ অঙ্কন ও প্রয়োগ এবং সরল সমীকরণ', জ্যামিতি অংশে 'উপপাদ্য' কঠিন বলে চিহ্নিত হয়েছে। এ ছাড়া সামাজিক বিজ্ঞান বইয়ের ইতিহাস ও ভূগোল অংশের চারটি অধ্যায় কঠিন বলে জানায় শিক্ষার্থীরা।
নবম ও দশম শ্রেণীর বাংলা প্রথম পত্রে কঠিন গদ্য হলো_রচনার শিল্পগুণ, শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব, দুরন্ত পথিক ও জাগো গো ভগিনী। দ্বিতীয় পত্রে ব্যাকরণের 'সমাস, ধ্বনিতত্ত্ব, প্রত্যয়, কারক ও ধাতু' অধ্যায়টি কঠিন। ইংরেজি প্রথম পত্রে 'ভোকাবুলারি', দ্বিতীয় পত্রে 'বাক্য গঠন, ন্যারেশন, প্রিপোজিশন' অংশ কঠিন।
গণিতে 'বাস্তব সংখ্যা, বীজগাণিতিক রাশি, লগারিদম, উৎপাদক বিশ্লেষণ, সামন্ত ধারা' ইত্যাদি অধ্যায় কঠিন। এ ছাড়া একই শ্রেণীর সামাজিক বিজ্ঞান বইয়ের ভূগোল অংশের চারটি অধ্যায়, অর্থনীতি অংশে দুটি, ইতিহাস অংশে দুটি ও পৌরনীতি অংশে একটি অধ্যায় কঠিন হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। পদার্থবিজ্ঞানে ১০টি, রসায়নবিজ্ঞানে সাতটি এবং জীববিজ্ঞানের পাঁচটি অধ্যায় কঠিন। উচ্চতর গণিতের আটটি অধ্যায় কঠিন। ইতিহাসে আটটি, ভূগোলে ছয়টি, পৌরনীতিতে দুটি, অর্থনীতিতে চারটি অধ্যায় কঠিন। কম্পিউটারের দুটি, ব্যবসায় পরিচিতি বিষয়ে তিনটি, হিসাববিজ্ঞানের তিনটি অধ্যায়কে কঠিন মনে করে শিক্ষার্থীরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়, পাঠ্য বইয়ে বিষয়বস্তুর উপস্থাপন আকর্ষণীয় নয়। অপ্রাসঙ্গিক তথ্য বেশি। বইয়ের ভাষা কঠিন ও মুখস্থ করতে হয়। বিষয়ের সঙ্গে অনুশীলনীর মিল নেই। হাতে-কলমে শেখার সুযোগ নেই। এ কারণে ২৮ শতাংশ শিক্ষার্থী বিভিন্ন বিষয় থেকে কিছু অধ্যায় বাদ দিতে বলেছে। তারা বলেছে, বাংলা বিষয়ে অভিযাত্রী, সাত সাগরের মাঝি, জয়যাত্রা, দুরন্ত পথিক, পূর্বাশার আলো বাদ দেওয়া প্রয়োজন। কারণ এসব কবিতা ও প্রবন্ধ একই উদ্দেশ্য বহন করে। 'সামাজিক বিজ্ঞান' বইয়ে সমাজবিজ্ঞানের সংজ্ঞা কমানো উচিত। ভূগোল অংশে সৌরতাপ, বায়ুচাপ, বায়ুপ্রবাহ অধ্যায় কমানো যেতে পারে। রসায়নবিজ্ঞানে জৈবযৌগ ও ধাতু নিষ্কাশন অংশ কমানো প্রয়োজন।
জরিপে দেখা গেছে, বেশির ভাগ শিক্ষক মনে করেন, পাঠ্য বইয়ে বিভিন্ন বিষয়বস্তুর পুনরাবৃত্তি ঘটেছে। এর মধ্যে ষষ্ঠ শ্রেণীর সাধারণ বিজ্ঞান ও গার্হস্থ্য অর্থনীতিতে 'খাদ্য ও পুষ্টি', ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণীর সামাজিক ও সাধারণ বিজ্ঞানে 'জনসংখ্যা ও পরিবেশ' নামের অধ্যায়ে প্রায় একই তথ্য দেওয়া হয়েছে। অষ্টম শ্রেণীর বাংলা বইয়ের প্রবন্ধ_'বাংলা ভাষার জন্মকথা', কবিতা_'একুশের কবিতা', 'অবাক সূর্যোদয়' একই অর্থ বহন করে। নবম ও দশম শ্রেণীর 'ব্যবসায় উদ্যোগ', 'হিসাববিজ্ঞান' ও 'ব্যবসায় পরিচিতি' বিষয়ের ধারণা প্রায় একই দেওয়া হয়েছে। অষ্টম ও নবম শ্রেণীর গণিত বইয়ে পিথাগোরাসের উপপাদ্যের প্রমাণ একইভাবে দেওয়া হয়েছে।

পহেলা বৈশাখে 'একদিন বনলতা সেন'

পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে বাজারে আসছে অরিন্দম পালের (ঝিনুক) আবৃত্তিতে ভিডিও ফিকশন 'একদিন বনলতা সেন'। এই প্রথমবারের মতো জীবনানন্দ দাশের কবিতা নিয়ে নির্মিত হয়েছে ভিডিও ফিকশন। এতে থাকছে কবির ১১টি বিখ্যাত কবিতা। এতে অভিনয় করেছেন মুকুল, দীপঙ্কর, সজীব, হাবীব, তমা, বর্ণা ও অর্পিতা। আবৃত্তি, আবহ সংগীত ও ফিকশনটি পরিচালনা করেছেন অরিন্দম পাল (ঝিনুক)। 'মনছবি' প্রডাকশন হাউসের নির্মাণে এটি বাজারে নিয়ে আসছে 'গীতালী'।

ঢাকা ফ্যাশন উইকে মিস ইন্ডিয়া উষসী

২৭ মে ঢাকার ওয়েস্টিন হোটেলে শুরু হচ্ছে 'ঢাকা ফ্যাশন উইক'। চলবে ৪ জুন পর্যন্ত। প্রতিবারই বাইরের দেশের কোনো না কোনো তারকা মডেল অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। এরই ধারাবাহিকতায় এবার আসবেন ২০১০ সালের মিস ইন্ডিয়া উষসী সেনগুপ্ত। আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, ৩ জুন ওয়েস্টিনের বলরুমে অনুষ্ঠেয় র‌্যাম্পে হাঁটবেন এ বাঙালি সুন্দরী। ফাইনালের দিন প্রতিষ্ঠিত সব ডিজাইনারের পোশাক পরেও তিনি র‌্যাম্পে অংশ নেবেন। বাংলাদেশ ও ভারতের ৩৭ ডিজাইনার এবারের আসরে অংশগ্রহণ করবেন। আসর শুরুর আগেই উষসী ঢাকায় এসে পেঁৗছবেন। কলকাতার মেয়ে উষসী বর্তমানে মুম্বাইয়ে থাকেন। তবে তাঁর পূর্বপুরুষের ঠিকানা নাকি বাংলাদেশেই, জানালেন ফ্যাশন উইকের নির্বাহী পরিচালক ফাখরুল ইসলাম চৌধুরী।
মিস ইন্ডিয়া হওয়ার আগে কলকাতার কেভি বালিগঞ্জ থেকে গণিতে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। সেন্ট জেভিয়ের কলেজ থেকে মানবিক শাখায়ও তাঁর ব্যাচেলর ডিগ্রি রয়েছে।

স্বীকারোক্তি

কলেজজীবনে গাঁজা সেবন করতেন বলে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন অস্কারজয়ী হলিউড অভিনেত্রী নাটালি পোর্টম্যান। এমন কি সিনেমা হলে গিয়ে ছবি দেখার সময়ও তিনি গাঁজা খেয়ে ঢুকতেন। তবে এখন তিনি গাঁজা স্পর্শও করেন না। ২৯ বছর বয়সী এই অভিনেত্রী বলেন, 'খুব দ্রুতই আমি বদভ্যাসটি ছেড়ে দিয়েছিলাম। কয়েক বছরের মধ্যে আমি গাঁজা স্পর্শও করিনি। কারণ আমি মনে করি, এখন আমার অনেক বয়স হয়েছে। রাত ১০টার মধ্যেই ঘুমাতে যাই। আগের মতো বুনো জীবনযাপন আর করতে পারি না।'

ডিজিটাল ঘটকালি

আধুনিক জীবনে ব্যস্ততার দরুন ছকে বাঁধা জীবন থেকে বেরিয়ে বিয়ের জন্য পাত্র-পাত্রী খোঁজার সময় হয়ে উঠা কঠিন। তাই বিয়ের কাজে সহযোগিতার জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বিভিন্ন ম্যারেজ মিডিয়া সেন্টার। ম্যারেজ মিডিয়াগুলো বন্ধু ও অভিভাবক হয়ে পাত্র-পাত্রী খোঁজার কাজে সহযোগিতা করে যাচ্ছে হরহামেশা। ম্যারেজ মিডিয়াগুলোকে আমরা সহজ বাংলায় ঘটকালির অফিস বলে থাকি। আর এর কর্তাব্যক্তি ঘটক, গ্রাম-বাংলায় ঘটকরা খুবই সম্মানের পাত্র। আধুনিক নগর জীবনেও নতুন পেশা হিসেবে ঘটকালি অন্য দশটা পেশার মতো স্থান করে নিয়েছে। ঢাকাসহ সারা বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে অসংখ্য ম্যারেজ মিডিয়া সেন্টার। তারা লিখিত (সবাই নয়) চুক্তির মাধ্যমে বিবাহের দায়িত্ব নেয়। সেখানে টাকার কথাও উল্লেখ করা থাকে। এ দেশে ঘটকালি পেশার পথিকৃৎ পুরুষ হলেন 'ঘটক পাখি ভাই'। তিনি দীর্ঘ ৩৯ বছর যাবৎ এ পেশায় আছেন। তবে এ ম্যারেজ মিডিয়াগুলোতে পাত্র-পাত্রীর ছবি ও বায়োডাটা দেখতে হলে আগে তাদের সেন্টারের সদস্য হতে হয় নির্দিষ্ট ফি দিয়ে। এরপর ছবি দেখা-দেখি ও কথা চালাচালি। অবশ্য এর জন্য গুণতে হয় টাকা। যা-ই হোক, আধুনিক নগর জীবনে ম্যারেজ মিডিয়া সেন্টার এক গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন। এর যেমন রয়েছে সুবিধা, ঠিক তেমনি রয়েছে নানাবিধ অসুবিধা। অভিযোগ রয়েছে, এসব ম্যারেজ মিডিয়াগুলোতে মানুষজন নানাভাবে প্রতারিত হচ্ছে অহরহ। এক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন জরুরি। পত্রিকাগুলোতেও শ্রেণীভুক্ত বিজ্ঞাপনের ক্ষেত্রে পাত্র-পাত্রীর বিজ্ঞাপন বেশ জায়গাজুড়ে থাকে। তা থেকে সহজেই এ বাস্তবতা উপলব্ধি করা যায়।

সিগারেট ও বিড়ির শুল্কে সমতা আসছে

এবার সিগারেট এবং বিড়ির কর বৈষম্য কমানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিড়ির সঙ্গে সিগারেটের দামের খুব একটা তফাৎ না হওয়ায় সাধারণ মানুষ বিড়ি খাওয়া কমিয়ে দিয়ে কম দামে সিগারেট পান করছে। ফলে বিড়ির চাহিদা কমে গেছে। এ খাত থেকে সরকারের রাজস্ব আদায় বাড়লেও সিগারেটে শুল্ক কমানোয় সিগারেট থেকে রাজস্ব আয় কমছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এনবিআর সূত্র জানায়, আগামী বাজেটে এ বৈষম্য দূর করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সূত্র জানায়, বিড়ির চাহিদা কমে যাওয়ায় এ শিল্প এখন ধ্বংসের পথে। ইতোমধ্যেই শতাধিক বিড়ি কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বেকার হয়ে গেছে প্রায় ২৫ লাখ শ্রমিক। এদের জন্য বিকল্প কোনো কর্মসংস্থানেরও ব্যবস্থা করা হচ্ছে না। তাই শহরমুখী জনস্রোত বাড়ছে।
সূত্র মতে, চলতি অর্থ বছরের বাজেটে (২০১০-১১) চার ধাপে সিগারেটের শুল্কায়ন করা হয়েছে। সর্বোচ্চ ধাপের জন্য ৫৮ শতাংশ, তৃতীয় ধাপের জন্য ৫৬ শতাংশ, দ্বিতীয় ধাপের জন্য ৫০ শতাংশ এবং প্রথম ধাপের জন্য ৩৩ শতাংশ হারে শুল্ক নির্ধারণ করা হয়। সর্বোচ্চ ধাপের সঙ্গে তার পরের ধাপের ব্যবধান ২ শতাংশ, দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপের ব্যবধান ৩ শতাংশ আর দ্বিতীয় ধাপের তুলনায় প্রথম ধাপের জন্য ব্যবধান ২০ শতাংশ। সেখানে বিড়িতে শুল্কায়ন করা হয় ১৫-১৮ শতাংশ। চতুর্থ ধাপের সিগারেটের শুল্কায়ন কম করায় বিড়ির বাজার দখল করেছে সিগারেট। ফলে ১২ বছর আগে যেখানে প্রতিবছর দেশে গড়ে ১ হাজার ২০০ কোটি শলাকা বিড়ি বিক্রি হতো এবং সিগারেট বিক্রি হতো ১৫০ কোটি শলাকা, সেখানে সর্বশেষ হিসাবে প্রতি বছর বিড়ি বিক্রি হচ্ছে ৪৮০ কোটি শলাকা। অথচ সিগারেটের বিক্রি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭০০ কোটিতে।