আগামী ১৮ মার্চ রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সামনে বড় আকারে
বিক্ষোভ সমাবেশ করবে আওয়ামী লীগ। এ ছাড়া জামায়াত-শিবিরের সহিংসতায়
ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা এবং যেসব এলাকায় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা হয়েছে, সেসব
এলাকাও পরিদর্শনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ জন্য এলাকাভিত্তিক কয়েকটি
দল গঠন করা হয়েছে। পাশাপাশি সারা দেশের মসজিদগুলোর ইমামদের সঙ্গেও বৈঠক
করবেন দলীয় নেতারা।
আজ শনিবার ধানমন্ডির দলীয় কার্যালয়ে ঢাকার পাশের জেলাগুলোর নেতাদের সঙ্গে
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের বৈঠকে এসব কর্মসূচি নেওয়া হয়। বৈঠক
শেষে দলীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ সংবাদ ব্রিফিংয়ে
কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
বৈঠকে আলোচ্য বিষয়
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ সম্প্রতি বেশ কয়েকটি
জেলায় বিএনপি-জামায়াত জোটের হাতে একরকম অসহায়ভাবে আত্মসমর্পণ করেছে।
ক্ষমতাসীন দল হলেও এসব এলাকায় দলীয় নেতা-কর্মীরা আতঙ্কগ্রস্ত এবং কোথাও
কোথাও বাড়ি-ঘর ছাড়া। এ অবস্থায় দলীয় অবস্থান সুসংহত করা এবং
নেতা-কর্মীদের মনোবল চাঙা করতে এ কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।
কাদের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদল
সংবাদ সম্মেলনে মাহবুব উল আলম হানিফ জানান, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয়
নেতাদের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলগুলো গঠন করা হয়েছে। প্রতিনিধিদলগুলোর মধ্যে
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরীর নেতৃত্বে বগুড়া,
সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিমের নেতৃত্বে জয়পুরহাট, সাধারণ সম্পাদক
সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের নেতৃত্বে চট্টগ্রামের সাতকানিয়া, উপদেষ্টা পরিষদের
সদস্য তোফায়েল আহমেদের নেতৃত্বে কক্সবাজার, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ওবায়দুল
কাদেরের নেতৃত্বে নোয়াখালী, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীর
নেতৃত্বে রংপুর, শেখ ফজলুল করিম সেলিমের নেতৃত্বে সাতক্ষীরা-খুলনা,
উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমুর নেতৃত্বে রাজশাহী, আবুল মাল আবদুল
মুহিত ও সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের নেতৃত্বে সিলেটের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা সফর করবে
এসব প্রতিনিধিদল।
প্রতিনিধি দলের প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্যবস্থা
সফর প্রসঙ্গে মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, সফর শেষে আওয়ামী লীগের এসব
প্রতিনিধিদলের দেওয়া প্রতিবেদন অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনের পুনর্বাসন
এবং অপরাধীদের শাস্তির আওতায় আনার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ইমামদের সঙ্গে বৈঠক
মসজিদের ইমামদের সঙ্গে বৈঠক সম্পর্কে মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, ইসলামকে
ধর্ম ব্যবসায়ীদের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য প্রতিটি মসজিদের ইমামের সঙ্গে
বৈঠক করা হবে। ইসলামের মান মর্যাদা রক্ষায় এ বৈঠক করার সিদ্ধান্ত নেওয়া
হয়েছে।
শাহবাগে ককটেল বিস্ফোরণের জন্য বিএনপি-জামায়াত দায়ী
মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, ইসলামের সঙ্গে স্বাধীনতাবিরোধীদের কোনো সম্পর্ক
নেই। তারা ধর্মকে ব্যবহার করে বারবার রাজনৈতিক ফায়দা নেওয়া চেষ্টা করেছে।
শাহবাগের নারী জাগরণ সমাবেশে ককটেল বিস্ফোরণের জন্য বিএনপি-জামায়াতকে
দায়ী করে তিনি বলেন, শাহবাগের বোমা হামলার জন্য বিএনপি ও জামায়াত দায়ী
বলে মানুষ মনে করে। শাহবাগের তরুণ প্রজন্ম স্বাধীন বিচার বিভাগকে খাটো করছে
বলে বক্তব্য দিয়ে বিএনপি অজ্ঞতার পরিচয় দিয়েছে। কারণ, শাহবাগ
যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি দাবি করেছে, ফাঁসির রায় ঘোষণা করেনি।
সংবাদ ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক
জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, খালিদ
মাহমুদ চৌধুরী। জেলা নেতাদের মধ্যে ঢাকার মাহবুবুর রহমান, নারায়ণগঞ্জের
আনোয়ার হোসেন, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন মেয়র সেলিনা হায়াত্ আইভী,
গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজমত উল্লাহ খানসহ মানিকগঞ্জ,
মুন্সিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকেরা উপস্থিত ছিলেন।