হীরার আবার গ্রহ হয় নাকি? অবিশ্বাস্য শোনালেও মহাকাশের নানা রহস্য দিনদিন মানুষকে আরও বেশি অবাক করে তুলছে। সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা এমন একটি নতুন গ্রহের সন্ধান পেয়েছেন, যাকে বলা হচ্ছে হীরার গ্রহ। পৃথিবী থেকে চার হাজার আলোকবর্ষ দূরে এ গ্রহের অবস্থান এ গ্রহে নাকি হীরা রয়েছে ঘনীভূত অবস্থায়।
অস্ট্রেলিয়া, ইতালি, জার্মানি, ব্রিটেন এবং আমেরিকার একদল মহাকাশ বিজ্ঞানী দাবি করেছেন, তারা এমন এক গ্রহের সন্ধান পেয়েছেন, যা সম্পূর্ণ হীরা দিয়ে তৈরি। যে গ্রহের রন্ধ্রে রন্ধ্রে রয়েছে মূল্যবান দামি রত্ন।
মাধ্যাকর্ষণের প্রভাবে নক্ষত্রদের চলার পথে ঘুরপাক খেতে খেতে একটি নক্ষত্র গ্রহে রূপান্তরিত হয়েছে। ছোট এ গ্রহটি চওড়ায় ৪০ হাজার মাইলের কম, পৃথিবীর ব্যাসের পাঁচগুণ। অর্থাৎ আমাদের সৌরজগতের সবচেয়ে বড় গ্রহ বৃহস্পতির চেয়ে ২০ গুণ বেশি ঘন। কিন্তু এ নক্ষত্রটি অবিরাম ঘুরতে থাকা তারকারাজির এত কাছাকাছি ছিল যে, যদি এর আকার আরেকটু বড় হত তা হলে মাধ্যাকর্ষণ প্রভাব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যেত। তারপরও কি প্রচণ্ড গতি তার। প্রতি মিনিটে এ গ্রহটি ঘোরে ১০ হাজার বার। অর্থাৎ মাত্র ২ ঘণ্টা ১০ মিনিটের মধ্যে এ গ্রহটি তার নক্ষত্রটিকে একবার করে পরিভ্রমণ করছে। বিজ্ঞানী দলের অন্যতম অস্ট্রেলিয়ার কমনওয়েলথ সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ অর্গানাইজেশনের ড. মিচেল কিথ বললেন, সন্ধান পাওয়া গ্রহটি ছোট, মূলত কার্বন এবং অক্সিজেন মিশ্রিত। গ্রহটির ভেতরের সব পদার্থই স্ফটিকে পরিণত হয়েছে। যা হীরার সঙ্গে তুলনা করা যেতে পারে। উল্লেখ্য, কার্বন ঘন হওয়ার মাধ্যমেই হীরা তৈরি হয়। তাই বিজ্ঞানীরা বলছেন, গ্রহটিতে কার্বনের ঘনত্ব অত্যন্ত বেশি হওয়ায় এর ভূপৃষ্ঠ সম্ভবত হীরায় পরিণত হয়েছে।
সন্ধান পাওয়া নক্ষত্রটির বৈজ্ঞানিক কোনো নাম এখনো দেওয়া হয়নি। অবশ্য এরই মধ্যে একে হীরক গ্রহ বলে ডাকছেন বিজ্ঞানীরা। কারণ অত্যন্ত উজ্জ্বল দেখতে গ্রহটিকে দূর থেকে দেখলে মনে হয়, যেন মহাকাশের অসীম শূন্যে একখণ্ড হীরার টুকরো জ্বলজ্বল করে জ্বলছে।
অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থিত ৬৪ মিটার লম্বা, বিশাল আকারের পার্কস রেডিও টেলিস্কোপ দিয়ে মহাশূন্যে এ রকম একটি নক্ষত্রের ওপর নজর রাখা হচ্ছিল। এমন সময় বিজ্ঞানীদের চোখে পড়ে নতুন এ গ্রহটি। এখন প্রশ্ন হলো, এ হীরক গ্রহে কি কোনো দিন পেঁৗছানো সম্ভব হবে? আপাতত সেটি অসম্ভব বলেই মনে হচ্ছে। কারণ এটি পৃথিবী থেকে চার হাজার আলোকবর্ষ দূরে। আর এক আলোকবর্ষ মানে ১০ ট্রিলিয়ন কিলোমিটার। তাই টুইংকেল টুইংকেল লিটল স্টার, হাউ আই ওয়ান্ডার হোয়াট ইউ আর্থ শিশুদের মতো বিজ্ঞানীদের মনের এ প্রশ্নটিও ঘুরপাক খাবে আরও বহুদিন। রকমারি ডেস্ক
No comments:
Post a Comment