মোবাইল শব্দটা উচ্চারণ করলেই সবার সামনে ভেসে ওঠে মোবাইল ফোনের ছবি। মোবাইল মানে কিন্তু কেবল ফোন নয়। মোবাইল শব্দের অর্থ হচ্ছে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে স্থানান্তরযোগ্য। আর তাই ফোন ছাড়াও আরও অনেক কিছুই মোবাইল হতে পারে। বিশ্বব্যাপী জীবনের গতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মোবাইল ফোন থেকে শুরু করে মোবাইল টয়লেট এমনকি মোবাইল বাড়ি পর্যন্ত দেখা যায় অহরহ। আমাদের দেশেও এর ব্যতিক্রম নয়। আমাদের মোবাইল কোর্টের কথাই ধরা যাক। ভেজালবিরোধী অভিযান কিংবা ট্রাফিক আইন ভঙ্গকারীদের শাস্তি প্রদানের জন্য বর্তমানে প্রায়ই বিভিন্ন স্থানে মোবাইল কোর্ট বসছে। শুধু তাই নয়, বিশ্বব্যাপী মোবাইল লাইব্রেরির ধারণাও এখন দারুণ জনপ্রিয়। মোবাইল লাইব্রেরিকে ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি বলা যেতে পারে। বিশেষভাবে নির্মিত মোটর যানে এই ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি স্থাপিত হয়। ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি এক শহর থেকে অন্য শহরে এমনকি শহর ছাড়িয়ে দূরবর্তী অঞ্চলের বইপ্রেমিক পাঠকের ঘরের দরজায় গাড়িভর্তি বই নিয়ে হাজির হয়। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের (১৯৩৯-১৯৪৫) পর থেকে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে সর্বপ্রথম মোবাইল লাইব্রেরির প্রচলন হয়। এ প্রসঙ্গে আমাদের দেশে অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের উদ্যোগে পরিচালিত বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ভ্রাম্যমাণ পাঠাগারের কথা বলা যেতে পারে। আমাদের দেশের বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে মোবাইল লাইব্রেরির অগ্রযাত্রায় মাইলফলক। মোবাইল হোম বা মোবাইল বাড়ির ধারণা এখন অনেকটাই প্রতিষ্ঠিত। সাধারণত মোবাইল হোম অনেক চাকা বা হুইলের ওপর স্থাপিত। বিশেষ উন্নত প্রযুক্তি ও গৃহ নির্মাণের হালকা সাজসরঞ্জামের মাধ্যমে স্থানান্তরযোগ্য বাড়ি তৈরির প্রচলন দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। সাধারণত মোবাইল হোমের দৈর্ঘ্য ১৫ থেকে ২০ মিটার, চওড়া ৩.৫ থেকে ৮.৫ মিটার হয়। মোবাইল হোমে শোবার ঘর, কিচেন, বাথরুম, টয়লেট সবকিছুরই ব্যবস্থা রয়েছে। আর বিশ্বব্যাপী মোবাইল ফোনের দোর্দণ্ড প্রতাপের কথা না বললেও চলে। তাই বলা চলে মোবাইলের দুনিয়া।
No comments:
Post a Comment